Ajker Patrika

সংসার চালাতে সঞ্চয়ে হাত লাগামহীন নিত্যপণ্যের দাম

মহিউদ্দিন রানা, ঈশ্বরগঞ্জ
আপডেট : ০৩ জুন ২০২২, ১২: ৪০
Thumbnail image

নিম্ন-মধ্যবিত্তসহ সব শ্রেণির মানুষের দৈনন্দিন আয়ের তুলনায় ভারী হচ্ছে ব্যয়ের পাল্লা। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার দরিদ্র ও নিম্নমধ্যবিত্তরা। এ অবস্থায় প্রতিদিনের খরচ মেটাতে সঞ্চয় ভাঙছেন তাঁরা। এভাবে বেশি দিন চললে সঞ্চয়ও শেষ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা তাঁদের।

ঈশ্বরগঞ্জ পৌর বাজারসহ ইউনিয়ন পর্যায়ের বাজার ঘুরে জানা গেছে, ধানের ভরা মৌসুমেও চালের বাজার অস্থির। ২৫ ও ৫০ কেজি চালের প্রতি বস্তায় দাম বেড়েছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। অন্যদিকে কয়েক দিনের ব্যবধানে বেড়েছে আটা এবং ডিমসহ অন্যান্য পণ্যের দামও।

এক কেজি খোলা আটা কিনতে লাগে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, যা আগে ছিল ২৮ থেকে ৩২ টাকা। এক হালি ডিমের দাম ছিল ২৮ থেকে ৩২ টাকা, বর্তমান মূল্য ৪০-৪৫ টাকা। ২৫ টাকা কেজির পেঁয়াজ হয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজির রসুন হয়ে গেছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা, ১০ টাকা কেজির বড় আলু হয়ে গেছে ২৫ টাকা আর ১৪-১৫ টাকা কেজির আলু বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। এ ছাড়াও বাজারে লাগামহীন দাম নিত্যপ্রয়োজনীয় শাক-সবজিরও।

শুধু তা-ই নয়, সপ্তাহের ব্যবধানে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে কনফেকশনারি পণ্যের দামও। ৫ টাকায় বিক্রি হতো অলটাইম রুটি, এখন বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়, ১৫ টাকারটা বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়। ১০ টাকার কেক বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়। এ ছাড়াও কয়েক দিনের ব্যবধানে দাম বেড়েছে সাবান ও কাপড় ধোয়ার পাউডারের।

৩৫ টাকার সাবানের দাম বেড়ে হয়েছে ৪৫ টাকা, ৫৫ টাকার ৫০০ গ্রাম হুইল পাউডারের দাম বেড়ে ৭০ টাকা হয়েছে। এভাবে প্রতিটি পণ্যেরই দাম বেড়েছে। হঠাৎই এমন দাম বাড়ায় অস্বস্তিতে পড়েছেন ক্রেতারা। বিক্রেতারা বলছেন, কোম্পানি দাম বাড়িয়ে দিলে তাঁদের তো কিছু করার নেই।

ষাটোর্ধ্ব রিকশাচালক মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ‘বাজারে জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমাদের আয় তো বাড়েনি। ঈদের পর একটা গরু কেনার জন্য কিছু টাকা সঞ্চয় করেছিলাম, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের লাগামহীন দামে সঞ্চয় ভেঙে সংসারে খরচ করছি। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের মতো নিম্নআয়ের মানুষের একসময় খেয়ে বেঁচে থাকাটাই কঠিন হয়ে পড়বে।’

একই কথা বলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষক। তিনি বলেন, ‘বাজারে হুটহাট জিনিসপাতির দাম বাড়লেও বেতন তো বাড়েনি। তাই বলে তো আর না খেয়ে থাকা যায় না। ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার খরচ এবং সংসার চালাতে বাধ্য হয়ে ব্যাংকের জমানো টাকা তুলে তুলে খরচ করছি।’

পৌর বাজারের ব্যবসায়ী মো. তফাজ্জল হোসেন, বিল্লাল হোসেনসহ আরও অনেকেই বলেন, পাইকারি বাজারসহ কোম্পানিগুলোর বাজারদরের সঙ্গে খুচরা পর্যায়ের দাম ওতপ্রোতভাবে জড়িত। পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীরা এবং কোম্পানিগুলো দাম বাড়িয়ে দিলে আমাদের তো কম বিক্রির সুযোগ নেই।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোসা. হাফিজা জেসমিন বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দর নিয়ন্ত্রণে প্রতিনিয়ত বাজারে অভিযান পরিচালনা করছি। ভোজ্যতেলের মজুতকারী ও বাজারমূল্যের তালিকা না থাকায় অনেক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকে অর্থদণ্ডও করেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত