Ajker Patrika

নবীনগরে আগুন-আতঙ্ক

নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ জানুয়ারি ২০২২, ১১: ০৯
নবীনগরে আগুন-আতঙ্ক

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে গত এক সপ্তাহে বেশ কয়েকটি বসতঘর, দোকান, গাড়ি, মোটরসাইকেলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে গত সোমবার এক রাতেই পুড়েছে তিনটি বসতঘর। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, একটি চক্র প্রথমে মোবাইলে চাঁদা দাবি করে হুমকি দেয়, পরে সেই চাঁদা না পেলে রাতে তাঁর বসতঘরে আগুন দেন। চাঁদার বিষয়ে নবীনগর থানায় এর আগে বেশ কয়েকটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছিল।

নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমীনুর রশীদ ও সহকারী কমিশনার ভূমি (এসি ল্যান্ড) মোশারফ হোসেনের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শিগগিরই চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হবে। এর সঙ্গে জড়িত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল ভোররাতে নবীনগর সদরের পশু হাসপাতাল সড়ক-সংলগ্ন একটি বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। একই সঙ্গে আদালতসংলগ্ন শাহ সাহেব বাড়ি, সড়কে থাকা সাবেক সিভিল সার্জন সাদেক মিয়ার বহুতল ভবনের নিচতলায় এবং পূর্ব পাড়ায় নবীনগর বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি মনির হোসেনের বাসায়ও কে বা কারা আগুন দিয়ে পালিয়ে যান। আগুনে ডা. সাদেক মিয়ার বহুতল ভবনের নিচতলায় রাখা ৩০ লাখ টাকা মূল্যের একটি গাড়ি পুড়ে যায়। অন্যদিকে এসি ল্যান্ড যে ভবনে থাকেন, সেই ভবনের নিচতলায় রাখা একটি মোটরসাইকেলও আগুনে পুড়ে যায়। বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতির বাসার নিচতলায় থাকা আরেকটি মোটরসাইকেল ও তিনটি সাইকেল পুড়ে যায়।

বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মনির হোসেন বলেন, ‘আমার বাসার ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরায় (সিসি ক্যামেরা) দেখেছি, মুখে মাস্ক পরা একজন আগুন লাগাচ্ছেন। বিষয়টি স্থানীয় সাংসদসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবগত করেছি। থানায় অভিযোগ করব এখন।’

ডা. সাদেক মিয়া বলেন, ‘৩০ লাখ টাকা মূল্যের আমার নতুন গাড়িটি পুড়ে গেছে আগুনে। এ ঘটনার পর প্রচণ্ড আতঙ্কে রয়েছি। থানায় লিখিতভাবে জানিয়ে এর প্রতিকার চাইব।’

নবীনগরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও এসি ল্যান্ড মোশারফ হোসেন বলেন, ‘আমার বাসার পাশেও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার সময় আমি ও আমার স্ত্রী বাসায় ছিলাম না। তবে আমার বৃদ্ধ বাবা-মা বাসার তৃতীয় তলায় ছিলেন। ঘটনার পর তাঁরা দুজনেই ভীষণ ভয় পেয়েছেন। আমি এ ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। শিগগিরই ওসিকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে এর সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে।’

নবীনগর থানার ওসি আমীনুর রশীদ জানান, এ ঘটনায় জড়িত কাউকেই রেহাই দেওয়া হবে না। সে জন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।

এদিকে চাঁদাবাজির নতুন ধরন নিয়ে আতঙ্কে আছেন ব্যবসায়ীরা। থানায় জিডি করেও কোনো প্রতিকার না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা। নবীনগর বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি মো. মনির হোসেন, ব্যবসায়ী শেখ জামাল উদ্দিন, ব্যবসায়ী নারায়ণ চন্দ্র কর, ওয়ালী উল্লাসহ বেশ কয়েকটি দোকানে কয়েক মাস ধরে মোবাইল ফোনে কল করে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করেন। তাঁরা বলছেন, চাঁদা না দিলে আগুন লাগিয়ে দোকান পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত