Ajker Patrika

ব্যবসায়ীদের নিষিদ্ধ করেছে প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি

মধুপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১: ২৮
ব্যবসায়ীদের নিষিদ্ধ করেছে প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি

মধুপুরের পুস্তক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সারা দেশের পাইকারি দোকান ও প্রকাশকদের বই বেচাকেনাসহ সব ধরনের লেনদেন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির নিয়ম ভেঙে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কম দামে বই বিক্রি করায় তাঁদের এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। গত ২৮ দিন ধরে চলা অচলাবস্থার কারণে পাঠসহায়ক বইয়ের সংকট দেখা দিয়েছে উপজেলাজুড়ে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত জেলা শাখার মাধ্যমে উপজেলায় বাস্তবায়ন হয়ে থাকে। তাঁদের বেঁধে দেওয়া মূল্যে বই বেচাকেনা করা হয়। তাঁদের নিয়ম অনুসরণ করেই মধুপুরের ২৯ পুস্তক ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন ব্যবসা পরিচালনা করছেন। কিন্তু এসব ব্যবসায়ী গত বছরের এপ্রিল থেকে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে বইয়ের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কম মূল্যে বই বিক্রি করছেন। এতে নাখোশ হয়েছেন পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির জেলা ও কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা। তাঁরা সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে উপজেলার পুস্তক ব্যবসায়ীদের জরিমানা করেন। পরে গত ১৬ জানুয়ারি থেকে নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়।

পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি টাঙ্গাইল জেলা শাখার আবেদনের প্রেক্ষিতে পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক কাজী জহিরুল ইসলাম বুলবুল ও সদস্যসচিব কাজী শাহ আলম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে মধুপুরের পুস্তক ব্যবসায়ী এবং নাগরপুর ও মির্জাপুরের ২টি প্রতিষ্ঠানের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।

নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়, টাঙ্গাইল জেলা শাখার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সমিতির নীতিমালা ভঙ্গ করে ব্যবসা পরিচালনা করার দায়ে টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলার সকল পুস্তক ব্যবসায়ী, বাংলাদেশ লাইব্রেরি কলেজ রোড মির্জাপুর এবং কহিনুর লাইব্রেরি, নাগরপুর, টাঙ্গাইলের সঙ্গে ক্রয়-বিক্রয়সহ যাবতীয় লেনদেন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

ওই আদেশের পর শিক্ষক আরশেদ আলী, অভিভাবক শামছুন নাহার, নুরুন্নবীসহ অনেকেই জানিয়েছেন তাঁরা বই সংগ্রহ করতে একাধিকবার দোকানে গিয়েও বই পাননি।

বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি মধুপুর শাখা সূত্রে জানা গেছে, ‘করোনার কারণে আমরা গত বছরের এপ্রিল থেকে শতকরা ১০-১৫ ভাগ কম মূল্যে বই বিক্রি শুরু করি। এর ফলে আমাদের নিষিদ্ধ করা হয়েছে।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন পুস্তক ব্যবসায়ী জানান, সর্বোচ্চ ভালোমানের একটি উপন্যাস, গল্প বা কাব্যগ্রন্থের গায়ের মূল্যের চেয়ে ২০ থেকে ৩৫ শতাংশ কম দামে বিক্রি করলেও ব্যবসায়ীদের ক্ষতি নেই। ২৮ দিন ধরে তাদের সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেন বন্ধ করে দিয়েছে পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি। তারা গায়ের মূল্যে বই বিক্রি শুরু করলে এখনই সব নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে। কিন্তু তারা অন্যায়ের কাছে মাথা নত করতে রাজি না।

এ ব্যাপারে পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি মধুপুরের সভাপতি মো. আবদুল মালেক ও সাধারণ সম্পাদক মো. রুহুল আমিন বলেন, ‘আমরা দুর্যোগ বিবেচনায় নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কম দামে বিক্রি করেছি। এ কারণে পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি আমাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তারা আমাদের ওপর এক প্রকার মানসিক নির্যাতন চালাচ্ছে। আমরা ব্যবসার মাধ্যমে মানুষের সেবা করতে চাই। আমরা চাই জেলা কমিটির নেতারা মধুপুরের ব্যবসায়ীদের ওপর জারি করা অধ্যাদেশ প্রত্যাহার করে আলোচনায় বসুক।’

পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ বলেন, মধুপুরের পুস্তক ব্যবসায়ীরা সংগঠনবিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার দায়ে তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তাঁরা সংগঠনের বিরুদ্ধাচরণ থেকে সরে এলে অবশ্যই আমরা তাঁদের বিরুদ্ধে আরোপিত বিধিনিষেধ শিথিলের বিষয় বিবেচনা করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দুই ঘণ্টা আগে একই বিমানে ভ্রমণের দাবি এক ব্যক্তির, জানালেন ভয়াবহ তথ্য

নতুন করে তাবরিজের পর ইরানের শিরাজ শহরেও ইসরায়েলের হামলা

১০ মিনিটের দেরি বাঁচিয়ে দিল ভূমিকে, অল্পের জন্য ধরতে পারেননি বিধ্বস্ত বিমানটি

নির্বাচন নিয়ে ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের মধ্যে যে কথা হলো

ড. ইউনূস ‘হারমনি অ্যাওয়ার্ড’ পাওয়া দ্বিতীয় ব্যক্তি, প্রথম কে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত