Ajker Patrika

সৈকতে ৫ টন প্লাস্টিকের দানব

কক্সবাজার প্রতিনিধি
Thumbnail image

দূর থেকে দেখে মনে হবে বিশালাকৃতির ‘দানব’ দাঁড়িয়ে আছে। সবেমাত্র সাগর থেকে কূলে উঠে এসেছে। মূলত পাঁচ টন প্লাস্টিক বর্জ্য দিয়ে তৈরি ৩৪ ফুটের অস্থায়ী ভাস্কর্য এটি।

এই দানব দেখতে কক্সবাজার সৈকতের লাবণী ও সুগন্ধা পয়েন্টের মাঝামাঝি সিগাল পয়েন্টে ভিড় করছেন পর্যটকেরা।

সাগর ও নদ-নদীর পরিবেশ-প্রতিবেশ প্লাস্টিক বর্জ্য কীভাবে গ্রাস করছে, তা তুলে ধরতে গত বৃহস্পতিবার কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও এশিয়াটিক মার্কেটিং কমিউনিকেশন লিমিটেডের সহায়তায় এই প্লাস্টিকের দানব তৈরি করেছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। আর এসব প্লাস্টিক সংগ্রহ করা হয়েছে সেন্ট মার্টিনসহ বিভিন্ন স্থান থেকে।

এদিন প্লাস্টিক দানবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান।

১৫ দিন এই প্লাস্টিক দানব প্রদর্শন করা হবে।

পর্যটক ও স্থানীয়রা বলছেন, দানব রূপে তুলে ধরা এই ভাস্কর্য প্লাস্টিকের দূষণের বিরুদ্ধে মানুষের বিবেককে নাড়া দেবে।

এক মাস ধরে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত ও সেন্ট মার্টিন দ্বীপে প্লাস্টিক দূষণরোধে প্লাস্টিকের বিনিময়ে উপহার কর্মসূচি শুরু করে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। এই ক্যাম্পেইনে পর্যটক ও স্থানীয় লোকজন প্লাস্টিক বর্জ্য কুড়িয়ে জমা দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সংগ্রহ করেছেন। গত বুধবার এসব প্লাস্টিক দেশের একমাত্র প্রবালসমৃদ্ধ দ্বীপ সেন্ট মার্টিন থেকে ট্রলারে করে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে আনা হয়। এরপর তৈরি করা হয় প্লাস্টিকের এই দানব।

আয়োজকেরা বলছেন, ৩৪ ফুটের বিশাল এই দানব আকৃতির ভাস্কর্যটি তৈরি করা হয়েছে নানা ধরনের প্রায় পাঁচ টন প্লাস্টিক বর্জ্য দিয়ে; যা দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ ভাস্কর্য।

মানুষের মধ্যে প্লাস্টিকের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরতে এমন আয়োজন করা হয়।

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের বোর্ড সদস্য জামাল উদ্দিন বলেন, প্লাস্টিকের পণ্য ব্যবহারের পর সেগুলো যত্রতত্র ফেলে দেওয়া হয়। এর ফলে সেগুলো সাগরে মিশে গিয়ে সেখানকার পরিবেশ-প্রতিবেশ দূষণের শিকার হচ্ছে। এ কারণে জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের পাশাপাশি মানব দেহেও ক্ষতিকর প্রভাব দেখা দিচ্ছে। মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরির জন্য এই প্লাস্টিক বর্জ্যের দানব তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, ‘কক্সবাজারে দিন দিন প্লাস্টিকের বর্জ্যের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে সাগরের পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র্য। এখনই পরিকল্পিত উদ্যোগ নিয়ে প্লাস্টিক দূষণ রোধে সচেতনতা বাড়ানো জরুরি। তাহলেই ভয়াবহ পরিণতি থেকে রক্ষা সম্ভব।’

বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ও সমুদ্রবিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর বলেন, ‘প্লাস্টিক বর্জ্যের দূষণের কারণে সেন্ট মার্টিন ও সোনাদিয়া দ্বীপের প্রাকৃতিক পরিবেশ এখন বিপন্ন। প্লাস্টিকের কুফল তুলে ধরা এ প্রদর্শনী প্রশংসার দাবি রাখে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত