Ajker Patrika

বাঁধের মাটি কেটে সড়ক নির্মাণ

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০২২, ১৫: ০৪
বাঁধের মাটি কেটে সড়ক নির্মাণ

জামালপুরের ইসলামপুরে বাঁধের মাটি কেটে সড়ক নির্মাণকাজ করা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা যমুনা নদীর ভাঙন থেকে মুক্তির চেয়ে নতুন করে ভাঙন আশঙ্কায় রয়েছেন।

গত শুক্রবার দুপুরে উপজেলার চিনাডুলী ইউনিয়নে ওই বাঁধ কাম সড়কে মাটি কাটার কাজ উদ্বোধন করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ড. এনামুর রহমান।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বন্যার দুর্যোগ মোকাবিলায় যমুনার বামতীর সংরক্ষণ পাইলিং বাঁধ এলাকার পশ্চিম বামনা মামুন ডাক্তারের বাড়ি থেকে নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের উলিয়া পর্যন্ত বাঁধ কাম রাস্তা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এতে

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় অধীনে কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্পের আওতায় ১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।

প্রকল্পের সভাপতি নিযুক্ত করা হয় চিনাডুলী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস ছালামকে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রকল্পের মাটি কাটার কাজ শুরু হয়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, যমুনা নদীর বামতীর সংরক্ষণে নির্মিত পাইলিং বাঁধের কাছে চুক্তিভিত্তিক ভেকু বসিয়ে মাটি কেটে গাড়িতে করে বাঁধ কাম সড়ক প্রকল্পে ভরাট করা হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, বাঁধ নির্মাণের খবরে প্রথমে খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু এখন দেখি বাঁধের কাছ থেকে মাটি কেটে বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে পাইলিং বাঁধ দেবে যেতে পারে। ফলে আমরা বন্যা ও ভাঙন আশঙ্কায় রয়েছি।

প্রকল্পের সভাপতি চিনাডুলী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস ছালাম বলেন, বাঁধ এলাকা থেকে মাটি উত্তোলন করে বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে ঠিকই। তবে, পরবর্তীতে যমুনা নদীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে বাঁধ এলাকার গর্তগুলো ভরাট করে দেওয়া হবে।

জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ইসলামপুর উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের বিস্তীর্ণ জনপদ যমুনা নদীর ভাঙন থেকে রক্ষায় ২০১৮ সালে কুলকান্দি থেকে গুঠাইল ঘাট পর্যন্ত ৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে আড়াই কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ পাইলিং বাঁধ নির্মাণ করা হয়। ২০২০ সালের জুন মাসে বাঁধটির নির্মাণকাজ শেষ হয়।

প্রকল্পের তদারকির দায়িত্বে থাকা জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান বলেন, বাঁধের কাছ থেকে মাটি উত্তোলন করে বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। যা কার্যাদেশ বহির্ভূত। তা ছাড়া বাঁধ এলাকা থেকে মাটি কেটে বাঁধ নির্মাণ করা হলে বাঁধ টেকসই করবে না। কিন্তু প্রকল্পের সভাপতি না তোয়াক্কা করছেন না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

বাঁধ নির্মাণকাজের দেখভালের দায়িত্বে থাকা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. মামুনার রশীদ বলেন, বাঁধের কাছ থেকে মাটি কেটে বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে ঠিকই। তবে, যেখানে থেকে মাটি কেটে গর্ত করা হচ্ছে, তা বালু দিয়ে ভরাট করাও হচ্ছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান টিটু বলেন, কোনোক্রমেই বাঁধের কাছ থেকে মাটি উত্তোলন করে প্রকল্পে দেওয়া ঠিক হবে না। কার্যাদেশ অনুযায়ী কাজ না করা হলে বিধি মোতাবেক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাঈদ বলেন, যমুনা নদীর বামতীর সংরক্ষণ বাঁধ কাম পাইলিংয়ের সীমানা থেকে অন্তত ৪০০ মিটারের মধ্যে মাটি বা বালু উত্তোলন করা ঠিক হবে না। তবে, এ হিসাব বাঁধের একেক স্থানে একেক রকম। মোট কথা, আগে নদীর তীর সংরক্ষণ বাঁধ রক্ষায় অগ্রাধিকার দিতে হবে। তারপর বাঁধ কাম রাস্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত