Ajker Patrika

চেয়ারম্যান করলেন ৩০ টাকা নেওয়া হলো কয়েক গুণ

লালমনিরহাট প্রতিনিধি
আপডেট : ৩১ মার্চ ২০২২, ১২: ৫৮
Thumbnail image

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য ক্রয়ের ফ্যামিলি কার্ড পেতে উপকারভোগীদের গুনতে হচ্ছে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা। লালমনিরহাট সদর উপজেলার বড়বাড়ি ও আদিতমারী উপজেলার ভাদাই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এই টাকা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

রমজান মাস সামনে রেখে বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার ভর্তুকি দিয়ে ন্যায্যমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়। এ কারণে নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে টিসিবির পণ্য বিক্রি করতে উপকারভোগীদের তালিকা প্রণয়ন করার দায়িত্ব পায় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ। তালিকা চূড়ান্ত করার পর উপকারভোগীদের হাতে ফ্যামিলি কার্ড তুলে দেওয়া হয়। কার্ডধারীরা আসন্ন রমজানে দুই কিস্তিতে টিসিবির পণ্য ক্রয়ের সুযোগ পাবেন। কার্ড ছাড়া কেউ এ সুবিধা পাবেন না। তাই সরকারের পক্ষ থেকে স্বচ্ছতার সঙ্গে তালিকা প্রণয়ন ও বিনা মূল্যে কার্ড পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

এদিকে সদর উপজেলার বড়বাড়ি ইউপির চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হবি কার্ডপ্রতি খরচ বাবদ ৩০ টাকা করে নিয়ে কার্ড প্রদান করতে সদস্যদের নির্দেশ দেন। চেয়ারম্যানের এমন অলিখিত নির্দেশনার সুযোগ পেয়ে ইউপি সদস্যরা কার্ডপ্রতি ২০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন বলে ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের অভিযোগ। আদিতমারী উপজেলার ভাদাই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কৃষ্ণ কান্ত রায় বিদুর বাসাবাড়ির ডিজিটাল হোল্ডিং নাম্বার প্লেটের নামে ২২০ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। যাঁরা ২২০ টাকা দিচ্ছেন, তাঁদের দেওয়া হচ্ছে টিসিবির কার্ড।

বড়বাড়ি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের জিনাত আলী বলেন, ‘ইউপি সদস্য আমার আত্মীয় হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে ১০০ টাকা দিয়ে কার্ড নিতে হয়েছে। টাকা ছাড়া কার্ড কাউকে দেওয়া হচ্ছে না।’

বড়বাড়ি ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘৫০০ টাকা মেম্বারকে গুনে দিয়ে তবেই এ কার্ড পেয়েছি। কার্ড ছাড়া তো কম দামের পণ্য পাওয়া যাবে না।’

বড়বাড়ি ইউপির ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আশরাফুল আলম বলেন, ‘চেয়ারম্যান কার্ডের খরচ বাবদ ৩০ টাকা করে নিতে বলেছেন, তাই নিয়েছি। টাকা ছাড়া চেয়ারম্যান কার্ডে স্বাক্ষর করবেন না বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। এ সময় কেউ চা খাওয়ার জন্য আরও ১০০ টাকা মিলে মোট ২০০ টাকাও দিয়েছেন।’

বড়বাড়ি ইউপির চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হবি বলেন, ‘সরকার কার্ড তৈরির নির্দেশনা দিলেও জনবল বা খরচের জন্য কোনো বরাদ্দ দেয়নি। দুই হাজার ৪০০ কার্ড তৈরি করতে যাঁরা শ্রম দিয়েছেন, তাঁদের পারিশ্রমিক বাবদ কার্ডপ্রতি ৩০ টাকা নেওয়া হয়েছে। এর বেশি কেউ নিলে এর জবাব তিনি দেবেন।’

ভাদাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কৃষ্ণ কান্ত রায় বিদুর বলেন, ‘এর আগে বাসাবাড়ির ডিজিটাল নাম্বার প্লেটের জন্য টাকা দেওয়ার কথা বলা হলেও উপকারভোগীরা দেননি। এখন সুযোগ হয়েছে, তাই নিচ্ছি।’

আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জি. আর. সারোয়ার বলেন, টাকা নিয়ে কার্ড দেওয়া হচ্ছে—এ অভিযোগের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে টাকা নেওয়ার সত্যতা পাওয়ায় তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত