Ajker Patrika

অনেক চাওয়ার পর শুধু আশ্বাস

উবায়দুল্লাহ বাদল, ঢাকা
আপডেট : ০৭ মার্চ ২০২৪, ১০: ২৩
অনেক চাওয়ার পর শুধু আশ্বাস

নিজেদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোসহ মাঠপর্যায়ের জনস্বার্থসংশ্লিষ্ট ৩৫৬টি প্রস্তাব ছিল জেলা প্রশাসকদের (ডিসি)। চার দিনের ডিসি সম্মেলনে তা উপস্থাপন করা হয়। তবে তাঁদের সুযোগ-সুবিধা-সংক্রান্ত বেশির ভাগ প্রস্তাবই আমলে নেওয়া হয়নি। মিলেছে শুধু আশ্বাস।

বরং ডিসিরা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাসহ অন্তত ৪০০ নির্দেশনা পেয়েছেন সরকারের নীতিনির্ধারকদের কাছ থেকে। রোজা সামনে রেখে বাজার পরিস্থিতির কঠোর নজরদারি করতে হবে। মজুত ও মূল্যবৃদ্ধি রোধে ডিসিদের কাজ করতে হবে। পাশাপাশি রেল ও খাসজমি উদ্ধারে ঝাঁপিয়ে পড়তে বলা হয়েছে। খাসজমি ইজারা দিতেও বারণ করা হয়েছে। গুজব ও সরকারের বিরুদ্ধে যেসব অপপ্রচার চলছে, তা প্রতিহত করে সত্যিকার চিত্র তুলে ধরতে হবে ডিসিদের।

উল্লিখিত বিষয়ে ক্ষমতাসীন দলের কেউ ডিসিদের কাজে হস্তক্ষেপ করবেন না বলে প্রধানমন্ত্রীসহ একাধিক জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন। সেই আশ্বাস নিয়ে ঢাকা ছেড়ে নিজ কর্মস্থলে ফিরেছেন ডিসিরা। একাধিক ডিসির সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, নিজেদের সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে কাঙ্ক্ষিত সাড়া না মেলায় কেউ কেউ হতাশও।

২০১৯ সালের ডিসি সম্মেলনে সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য একটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন এক ডিসি। বলেছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টি ‘সিভিল সার্ভিস কলেজ সিঙ্গাপুরের’ আদলে গঠন করা যেতে পারে। তখন নাকচ হওয়ার পর এ বছরও একই প্রস্তাব তোলা হয়। তবে এবার প্রস্তাবটি সরাসরি নাকচ হয়নি বলে একাধিক ডিসি জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ডিসি জানান, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুক্ত আলোচনায় বগুড়া ও মৌলভীবাজারের ডিসি তাঁদের জেলায় বিমানবন্দর নির্মাণের অনুরোধ জানালে এসব জায়গার কাছে বিমানবন্দরের দূরত্ব বিবেচনায় তা নাকচ করেন সরকারপ্রধান। শিক্ষা সনদ বন্ধক রেখে ব্যাংকঋণ দেওয়ার সুবিধা চালুর প্রস্তাব করলেও তা নাকচ করে দেওয়া হয়। তবে সরকারি স্বার্থসংশ্লিষ্ট মামলায় হার ঠেকাতে ও মামলাজট কমাতে একটি মনিটরিং সেল গঠনের প্রস্তাব করা হলে তাতে সায় দেন প্রধানমন্ত্রী।

এর বাইরেও মুক্ত আলোচনায় কিছু সুযোগ-সুবিধা ও স্থানীয় কিছু জনপ্রতিনিধির চাপের বিষয় তুলে ধরেন ডিসিরা। জবাবে বলা হয়, বিনা দ্বিধায় টেন্ডারবাজি, পেশিশক্তি, সন্ত্রাস, মাদক নির্মূল করবেন। এসবে জড়িতরা কে কোনো দল করে, তা দেখার দরকার নেই।

এ বছর প্রথমবারের মতো সাবেক তিন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা, খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ও কবির বিন আনোয়ার ডিসিদের সঙ্গে একটি কর্ম অধিবেশনে ছিলেন। এই প্রশাসন বিশেষজ্ঞরা কর্মকর্তাদের শুদ্ধাচার ও রাষ্ট্রাচার মেনে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার পরামর্শ দেন। তাঁরা এও বলেছেন, শুধু আমলাদের শুদ্ধাচার মানলে হবে না, রাজনীতিবিদদেরও এটা মানতে হবে। শুদ্ধাচার না মানার কারণে রাজনীতিবিদ ও আমলাদের দ্বন্দ্ব লেগেই থাকে। কোনোভাবেই জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে দ্বন্দ্বে যাওয়া যাবে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ডিসি হতাশা ব্যক্ত করে প্রায় অভিন্ন সুরে আজকের পত্রিকাকে বলেন, স্থানীয় কিছু দুষ্ট জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালী ব্যক্তি সরকারের উন্নয়নকাজে বাধার সৃষ্টি করেন। অনেক সময় তাঁরা মামলা-মোকদ্দমা পর্যন্ত করেন।

ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেছেন, খাসজমি ইজারা দেওয়ার বিষয়ে জিরো টলারেন্স ও ভূমিসংক্রান্ত স্বচ্ছতার বিষয়ে মন্ত্রণালয় নজরদারি করবে।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম ডিসিদের উদ্দেশে বলেছেন, এডিস মশার প্রকোপ বাড়ার শঙ্কা জানিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেছি। তাঁদের বলা হয়েছে এ ব্যাপারে এখনই পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য। তাঁরা জনসচেতনতার জন্য লিফলেট বিতরণ করছেন। তদারকি করবেন। আর রিপোর্ট করবেন। নদীনালা, খালবিল যাতে ভরাট না হয় সে জন্যও উদ্যোগী হতে বলা হয়েছে ডিসিদের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মেঘালয়ে হানিমুনে গিয়ে বর খুন, নিখোঁজ নববধূকে উদ্ধারে নেমেছে ড্রোন

ঈদের নামাজ পড়তে যাওয়ার পথে বাসচাপায় বাবা-ছেলে নিহত

গ্রামীণ ব্যাংক ঘিরে ‘নাশকতার পরিকল্পনা’ রাতভর পুলিশি পাহারা

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান বিচার ও কিছু প্রশ্ন

‘তাণ্ডব’ সিনেমার শো চলার সময় ছায়াবাণী হলে দর্শকদের ভাঙচুর, টাকা লুট

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত