Ajker Patrika

ঝুঁকি নিয়ে ফেরিতে ওঠানামা

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬: ৩৫
ঝুঁকি নিয়ে ফেরিতে ওঠানামা

রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে ফেরিতে ওঠানামা করতে হয় যাত্রীদের। এতে ছোটখাটো দুর্ঘটনা ছাড়া প্রাণহানিও ঘটছে। ঝুঁকি এড়াতে নৌ-পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব থাকলেও নেই কোনো নজরদারি।

গতকাল সোমবার দৌলতদিয়া ৫ নম্বর ফেরিঘাটে দেখা যায়, ছোট-বড় যানবাহনের পাশাপাশি রয়েছে যাত্রীদেরও ভিড়। ঘাটে থাকা ফেরিতে দ্রুত গাড়িগুলো উঠে যাচ্ছে। ফেরি ভরে যাওয়ার পর ঘাট ছেড়ে পন্টুন ও ফেরির দূরত্ব থাকলেও ফেরির পকেট গেট দিয়ে লাফিয়ে উঠছে অনেকেই। অপরদিকে ঘাটে ফেরি ভেড়ার পর র‍্যাম নামানোর আগেই লাফিয়ে নামছেন অনেকেই। এতে যেকোনো সময় ঘটতে পারে প্রাণহানির মতো দুর্ঘটনা।

বেলা ১১টার সময় ৫ নম্বর ফেরিঘাটে ভেড়ে রো রো ফেরি শাহ জালাল। ঘাটে ভেড়ার সঙ্গে সঙ্গে র‍্যাম না নামাতেই যাত্রীরা নামতে শুরু করে। কেউ নামছে পকেট গেট দিয়ে লাফিয়ে আবার কেউ নামছে ফেরির রেলিং টপকে। ফেরি আনলোড হওয়ার পর আবার লোড হয়। ফেরিতে গাড়ি লোড হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু যাত্রীকেও উঠতে দেখা যায়।

এ সময় ফেরিতে উঠতে দৌড়াচ্ছিলেন কয়েকজন যুবক। কেন দৌড়াচ্ছেন জিজ্ঞেস করতেই তাঁরা বলেন, ভাই, এখন আমাদের সময় নাই, ফেরি ছেড়ে দিচ্ছে, তাড়াতাড়ি উঠতে হবে;’ বলে চলে যান।

রো রো ফেরি শাহ জালাল থেকে রেলিং টপকিয়ে নামেন যশোরের আবদুল আহাদ খান। কেন ঝুঁকি নিয়ে এভাবে নামলেন–জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভাই, ফেরি ভেড়ার পর র‍্যাম নামাতে একটু দেরি হয়। পকেট গেট দিয়ে অনেকেই নামছেন, সেখানে ভিড় দেখে এখান দিয়ে টপকে নামছি।’

জরুরি এমন কী কাজ যার জন্য এভাবে ঝুঁকি নিয়ে নামতে হলো? জবাবে তিনি বলেন, ‘তেমন কোনো কাজ নাই, শুধু আগে নামার জন্যই এভাবে নামা।’ 
এ সময় ফেরির পন্টুনে টিকিট বিক্রেতা সেলিম খান বলেন, ‘প্রতিনিয়ত ফেরিঘাট থেকে ছেড়ে দেওয়ার পর যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে ওঠানামা করে। আবার কখনো ফেরি ঘাটে ভিড়তে না ভিড়তেই যাত্রীরা হুড়োহুড়ি করে ওঠানামা করে। যে কারণে অনেক সময় যাত্রীদের ব্যাগ, লাগেজসহ অনেক কিছুই নদীতে পড়ে যায়।’  

এর আগে গত বুধবার মধ্যরাতে ফেরির সঙ্গে পন্টুনের ধাক্কায় মোজাফফর হোসেন ওরফে নান্নু (৭০) নামের এক বৃদ্ধ পদ্মা নদীতে পড়ে নিখোঁজ হন। পরের দিন বৃহস্পতিবার বিকেলে ফরিদপুরের সিঅ্যান্ডবি ঘাট এলাকার পদ্মা নদী থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ। মোজাফফর হোসেনের বাড়ি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার চৌরহাস কলোনি এলাকার ফুলতলা গ্রামে।

ফেরি ছেড়ে দেওয়ার পরও কেন গেট খোলা থাকে? এমন প্রশ্নের জবাবে শাহ জালাল ফেরির লস্কর মো. জামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমরা গাড়ি লোড করে ফেরি ছেড়ে দিই। অনেক সময়ই গেটগুলো বন্ধ করা হয়; তবে দুই-একবার ভুলে আটকানো হয় না। তবে উচিত গেটগুলো খেয়াল করে বন্ধ করে রাখা।’

দৌলতদিয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ জাকির হোসেন আজকের পত্রিকাকে জানান, ফেরির র‍্যাম ওঠানোর পর যাত্রী ওঠা নিষেধ থাকলেও যাত্রীরা তা মানে না। যাত্রীদের অসাবধানতার কারণেই গত বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে ফেরির পকেট দিয়ে নদীতে পড়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। তবে নৌ-পুলিশ সদস্যরা এ ধরনের পরিস্থিতি দেখলে সতর্ক করে থাকেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত