Ajker Patrika

পানির অভাবে কালচে পাট, লোকসানে চাষি

ফয়সাল পারভেজ, মাগুরা
আপডেট : ১৯ আগস্ট ২০২২, ১২: ৫০
Thumbnail image

চলতি মৌসুমে পাটের ফলন ভালো হলেও পানির অভাবে ঠিকমতো জাগ দিতে পারেননি কৃষকেরা। এতে পাটের আঁশ কালচে হয়ে গেছে। এসব পাট বাজারে বিক্রি করতে এসে ভাল দাম পাচ্ছেন না তাঁরা। গুনতে হচ্ছে লোকসান।

উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাট বিক্রি করতে এসে দাম না পেয়ে খরচের টাকা তোলাই এখন চাষিদের লক্ষ্য। এ নিয়ে চাষিদের মধ্যে হতাশা দেখা গেছে।

গতকাল বুধবার মাগুরা নতুনবাজারের পাশের পাইকারি পাটের হাটে সদরের আঠারখাদা থেকে পাট বিক্রি করতে আসেন কৃষক শুকুর মিয়া। তিনি ভ্যানে করে পাট নিয়ে এসেছেন। কিন্তু তাঁর পাট কেউ কিনছেন না। পাইকাররা বলছেন, ‘এই পাট কেনার মতো নয়। সব পাট নষ্ট হয়ে গেছে।’

কৃষক শুকুর মিয়া জানান, পাট মাঠ থেকে কাটার পর পানির অভাবে ঠিকমতো জাগ দিতে পারেননি। পরে বাড়ির পাশে একটা গর্ত খুঁড়ে তাতে টিউবওয়েলের পানিতে ১৫ দিন ভিজিয়ে রেখেছিলেন। এখন পাটের আঁশ তুলে রোদে শুকিয়ে বাজারে এনে দেখেন, তাঁর পাট কেউ নিতে চাইছেন না।

অপর কৃষক খাইরুল বিশ্বাস সদরের মঘী ইউনিয়ন থেকে পাট এনে এখানে বিক্রি করেছেন ৫ মণ। তিনি বলেন, ‘হিসাব ছিল প্রতি মণ পাট ২ হাজার ৬০০ টাকা করে পাব। কিন্তু পাটের মান খারাপ হওয়ায় ২ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করতে পেরেছি। এখন খরচ ওঠানোই দায় হয়ে গেছে।’

খাইরুল বিশ্বাস আরও জানান, এবার অনাবৃষ্টির কারণে ঠিকমতো পাট জাগ দিতে পারেননি। শুকিয়ে যাওয়া পুকুরে পানির সেচ দিতে হয়েছে। টানা ২০ দিন সেচখরচ প্রতি মণে ২০০ টাকা, শ্রমিকখরচ ৭০০ টাকা করে পড়েছে। এ ছাড়া পাটের আঁশ ছাড়ানো থেকে শুরু করে প্রতিটি কাজে শ্রমিক লেগেছে। এতে কৃষকদের হাতে নিজের শ্রমের টাকাও থাকবে না।

পাট ব্যবসায়ী ইমন হোসেন বলেন, ‘সোনালি রঙের পাটের চাহিদা বেশি। কিন্তু এবার যে পাট বাজারে আসছে তার বেশির ভাগই কালচে। এ জন্য আমরাও বিপাকে পড়েছি। কারণ, ভালো পাট এবার শত ভাগের মধ্যে ৫ ভাগ পাচ্ছি। এতে নিম্নমানের এসব পাট কিনতে হচ্ছে অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে।’

মাগুরা পাট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আব্দুস সালাম জানান, এবার অনাবৃষ্টির কারণে পাট চাষের প্রথম থেকেই কৃষকদের খুব বেগ পেতে হয়েছে। পাট কাটার পর জলাশয়ে পানি না থাকায় ভালো করে পাট জাগ দেওয়া যায়নি। ফলে আমাদের কাছে যেসব পাট আসছে তার মান খুবই খারাপ। এসব পাট মান বুঝে প্রতি মণ ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সুফি মো. রফিকুজ্জামান বলেন, ‘এবার বৃষ্টি কম হওয়ার কারণে পাট নিয়ে কৃষকেরা খুব বিপদের মধ্যে আছেন। জাগ দেওয়ার মতো পানি খালবিলে তেমন নেই। ফলে অনেকে সেচ দিয়ে পাট জাগ দিচ্ছেন। এটা খুবই ব্যয়বহুল। আমরা পরামর্শ দিয়েছি, পাট ফেলে না রেখে এভাবে সেচ দিয়ে হলেও যেন পাট জাগ দেওয়া হয়।’

রফিকুজ্জামান আরও বলেন, জেলায় ৯০ শতাংশ পাট কাটা হয়ে গেছে। এবার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৫ হাজার ৮৬৫ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষ। হয়েছে ৩৬ হাজার ৯৩০ হাজার হেক্টর জমিতে। তবে পাটের মান নির্ভর করে অনেকটাই জাগ দেওয়ার ওপর। যত পানি থাকবে ততটাই পাটের সোনালি রং ফুটে উঠবে। এবার পানির স্বল্পতার কারণে আঁশে ভালো রঙ আসেনি। তাই মানসম্মত পাট এবার কমই দেখা যেতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

বিয়ে করলেন সারজিস আলম

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়ছে শ্রীলঙ্কা, ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ কোথায় দেখবেন

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

সাবেক শিক্ষার্থীর প্রাইভেট কারে ধাক্কা, জাবিতে ১২ বাস আটকে ক্ষতিপূরণ আদায় ছাত্রদলের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত