Ajker Patrika

সংসার চালাতে হিমশিম

কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ এপ্রিল ২০২২, ১১: ৩৬
Thumbnail image

নিত্যপণ্যের দাম লাগামহীনভাবে বেড়েই চলছে। এতে বিপাকে পড়েছেন জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার মধ্যম আয় ও খেটে খাওয়া হাজারো মানুষ।

পবিত্র রমজান মাসের আগ মুহূর্ত থেকে এখন পর্যন্ত প্রতি কেজি সুগন্ধি চালের দাম বেড়েছে ২০ টাকা। সুগন্ধি চাল এখন খোলা প্রতি কেজি ১০০-১১০ টাকা এবং প্যাকেটজাত ১২০-১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ রমজানের আগে খোলা চাল প্রতি কেজি ৮০-৯০ টাকা এবং প্যাকেটজাত ১০০-১১০ টাকায় বিক্রি হয়।

দিনমজুর আব্দুল মোমিন (৪৫)। পরিবারের ৬ জন সদস্য এবং পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তাঁর আয়-রোজগার ছাড়া চলে না সংসার। কাঁচাবাজার করতে এসে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘মাঠে কাজ নাই। বাড়িত বসে সময় কাটছে। ঘরে যা মজুত ছিল, তা-ও প্রায় শেষের পথে। এখন পরিবার-পরিজন নিয়ে কীভাবে সংসার চালামু সেটা নিয়েই দুশ্চিন্তায় আছি। কত দিন ধরে ছলপলেরা গরুর গোশত খাবার চাই। কামাই-রোজগার নাই বলে সেই গোশতও কিনবার পারি না। সারা দিন কামাই করে ৩০০-৪০০ টাকা পাই। যা দিয়ে চাল, ডাল, তেল কিনতেই শেষ। এখন ডাল-ভাত খেয়ে কোনোভাবে বেঁচে আছি।’

শুধু আব্দুল মোমিন নন, নিত্যপণ্যের দাম এভাবে বাড়তে থাকায় বিপাকে পড়েছেন জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার মধ্যম আয় ও খেটে খাওয়া হাজারো মানুষ।

গতকাল সোমবার উপজেলা বিভিন্ন হাটবাজার ঘুরে দেখা গেছে, নিত্যপণ্যের দাম আকাশছোঁয়া। প্রতি কেজি করলা ৬০ টাকা, পটোল ৬০ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা, লতিরাজ ৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা, শসা ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লেবুর প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়।

খুচরা সবজি ব্যবসায়ী জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘রমজানের আগে বেগুন বিক্রি হয়েছে ২৫-৩০ টাকায়। আজকে সেই বেগুন প্রতি কেজি ৫০ টাকা। পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে কিনে এনে বেশি দামে বিক্রি করছি।’

পুনট হাটে কাঁচাবাজার করতে আসা উপজেলার মূলগ্রামের আব্দুর রহিম বলেন, ‘কৃষিকাজের ওপরে আমার সংসার চলে। পরিবারের চারজন সদস্য। যেভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে সেখানে এখন বেঁচে থাকাই কষ্টকর হয়ে পড়েছে।’ তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘হামাগোরক দেখার কেউ নাই। হামরা মরলে কি আর বাঁচলে কি?’

অন্যদিকে চালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রি-ধান ৪৯ প্রতি কেজি ৪৪ টাকা, স্বর্ণা-৫ প্রতি কেজি ৪৩ টাকা ও কাটারীভোগ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। প্রতি কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে সুগন্ধি চালে।

সুগন্ধি চালের দাম বাড়া নিয়ে মোস্তফা স্টোরের স্বত্বাধিকারী রুদ্র ফারদিন বলেন, রমজানের আগ মুহূর্ত থেকে এখন পর্যন্ত প্রতি কেজি সুগন্ধি চালের দাম বেড়েছে ২০ টাকা। সুগন্ধি চাল খোলা প্রতি কেজি ১০০-১১০ টাকা এবং প্যাকেটজাত ১২০-১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ রমজানের আগে খোলা চাল প্রতি কেজি ৮০-৯০ টাকা এবং প্যাকেটজাত ১০০-১১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) টুকটুক তালুকদার বলেন, পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে বাজার তদারকি অব্যাহত রয়েছে। এর অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে বেশি দামে ভোজ্যতেল বিক্রি করায় কয়েকটি দোকানিকে জরিমানা করা হয়েছে। উপজেলায় এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত