Ajker Patrika

কর্মকর্তাদের বিদেশ যাওয়া নিয়ে কঠোর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়

রাশেদ রাব্বি, ঢাকা
আপডেট : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯: ৩১
কর্মকর্তাদের বিদেশ যাওয়া নিয়ে কঠোর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়

পবিত্র হজ পালনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩০ দিন এবং ওমরাহ পালনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০ দিনের ছুটি পাবেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে স্বার্থসংশ্লিষ্টতা থাকলে তাদের টাকায় বিদেশে সভা-সেমিনারে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে না। অনুমোদনের বেশি ছুটি ভোগ করলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। 

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় এমন নানা নির্দেশনা জারি করেছে। গত ২৪ আগস্ট মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন-১ শাখা থেকে জারি করা এই অফিস আদেশে ১০টি সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, গত ২ মে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রীর সভাপতিত্বে একটি সভা হয়। সেখানে মন্ত্রী বলেন, প্রতিদিন মন্ত্রণালয়ের কমপক্ষে ১০-১২ জন কর্মকর্তা হজ, ওমরাহ, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণ, দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণ, আলোচক, অসুস্থ আত্মীয় দেখতে বিদেশে যান। অনেক কর্মকর্তা আফ্রিকার দরিদ্র দেশগুলোতেও প্রশিক্ষণে যাচ্ছেন। অনেকে বছরে একাধিকবার বিদেশে যাচ্ছেন। এমনকি একই বিভাগ থেকে কয়েকজন কর্মকর্তা একসঙ্গে একই প্রশিক্ষণে যাচ্ছেন। এতে ওই বিভাগের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ছে। এসব বিষয়ে তিনি একটি গাইডলাইনের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন।

মন্ত্রণালয়ের সূত্র বলেছে, ওই ১০ সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে পবিত্র হজ পালনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩০ দিন, ওমরাহ পালনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০ দিন ছুটি পাওয়া যাবে। তীর্থস্থান পরিদর্শনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ছয় দিন ছুটি মঞ্জুরের আবেদন অগ্রায়ন হবে। আবেদন মঞ্জুরের ক্ষেত্রে আমন্ত্রণকারী সংস্থা, অর্থায়নকারী সংস্থার সক্ষমতা ও প্রাসঙ্গিকতা যাচাই করতে হবে। ছুটি নিয়ে বিদেশ গিয়ে নির্ধারিত সময়ে ফিরে আসতে হবে। না ফিরলে ছুটি ভূতাপেক্ষ মঞ্জুরের বিষয়ে আরও কঠোর হতে হবে। প্রয়োজনে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তৃতীয় পক্ষ বা কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, যার সঙ্গে অংশগ্রহণকারী কর্মকর্তার স্বার্থের সংশ্লেষণ থাকতে পারে, এমন প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে কোনো প্রশিক্ষণ বা সেমিনারে অংশ নিতে আবেদন করা যাবে না। বৈদেশিক প্রশিক্ষণ, সেমিনার, সিম্পোজিয়ামের কোনো একটি কর্মসূচিতে অংশ নিতে একই সঙ্গে বা পৃথকভাবে একই প্রতিষ্ঠানের একাধিক কর্মকর্তা আবেদন করতে পারবেন না। বৈদেশিক প্রশিক্ষণ, সেমিনার, সিম্পোজিয়ামে অংশগ্রহণ শেষে অর্জিত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে প্রতিবেদন তৈরি করে দেশে আসার ১০ কর্মদিবসের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে দিতে হবে। প্রতিবেদন না দিলে ভবিষ্যতে বিদেশে কোনো কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারবেন না। এ ছাড়া বৈদেশিক প্রশিক্ষণ, সেমিনার, সিম্পোজিয়ামে অংশ নিতে আবেদন অগ্রায়নের ক্ষেত্রে কোনো কর্মকর্তার অংশ নেওয়ার যৌক্তিকতা এবং এতে দেশের কল্যাণের বিষয়টি প্রতিষ্ঠান প্রধানকে উল্লেখ করতে হবে। প্রতিষ্ঠানপ্রধানের সুপারিশ ছাড়া কোনো আবেদন মন্ত্রণালয়ে বিবেচিত হবে না।

বৈদেশিক প্রশিক্ষণ, সেমিনার, সিম্পোজিয়ামে দলগতভাবে অংশগ্রহণের সময় দলনেতার নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে। 

এ বিষয়ে জানতে গত সোম ও গতকাল মঙ্গলবার স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করেও যোগাযোগ করা যায়নি। 

গাইডলাইন কমিটির সদস্য ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম এই সিদ্ধান্তের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, অপ্রয়োজনীয় ও অযৌক্তিক বিদেশ ভ্রমণ বন্ধে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত