Ajker Patrika

কুঠিবাড়ি রক্ষাবাঁধে ধস, আতঙ্ক

মিজানুর রহমান নয়ন, কুমারখালী (কুষ্টিয়া)
আপডেট : ০৭ মার্চ ২০২২, ১৫: ১৮
Thumbnail image

তিন বছরের মাথায় কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি রক্ষাবাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। এক সপ্তাহে পদ্মাপাড়ের শিলাইদহ ইউনিয়নের কোমরকান্দি এলাকায় প্রায় ১৫০ মিটার বাঁধ ধসে গেছে। তবে এ নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বা সংশ্লিষ্টদের কোনো মাথা ব্যথা নেই। এখন পর্যন্ত বাঁধ রক্ষায় নেওয়া হয়নি কোনো উদ্যোগ। এদিক, বাঁধে ধসের ঘটনায় আতঙ্কিত পদ্মাপাড়ের মানুষ। ঝুঁকিতে পড়েছে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত কুঠিবাড়ি ও আশপাশের এলাকা।

স্থানীয়রা ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রতিনিধি বলেন, প্রকল্পটি নিয়ে শুরু থেকে অভিযোগ ছিল। ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির মধ্যে দিয়ে ২০১৮ সালের ৩০ জুন অসম্পূর্ণ প্রকল্পকে সম্পূর্ণ দেখিয়ে কাগজে-কলমে প্রকল্পটি হস্তান্তর করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রকল্পের নির্ধারিত পরিকল্পনাসহ নকশা লঙ্ঘন, অর্থ অপচয় এবং বরাদ্দকৃত টাকা প্রয়োজনীয় খাতে ব্যয় না করায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রকল্পটি বর্তমানে ধ্বংসের মুখে। এ নিয়ে কারও মাথা ব্যথা নেই। ধস ঠেকানো না গেলে কুঠিবাড়িসহ আশপাশের ফসল জমি, মাঠ, ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে যাবে।

পাউবো ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত কুঠিবাড়ি রক্ষার জন্য ৩ দশমিক ৭২০ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু নির্মাণকাজ শেষ না হতেই ওই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর বাঁধে প্রথম ভাঙন দেখা যায়। সে সময় বাঁধের প্রায় ১০০ মিটার নদীতে বিলীন হয়ে যায়।

সূত্র আরও জানায়, এবার আবার শুকনা মৌসুমে কোমরকান্দি এলাকায় ১৫০ মিটার বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে কুঠিবাড়িসহ আশপাশের বিশাল জনপদ। আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে পদ্মাপাড়ের মানুষ।

গতকাল রোববার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, কোমরকান্দি এলাকায় পদ্মা নদীর তীর রক্ষাবাঁধের প্রায় ১৫০ মিটার ধসে গেছে। ধস অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু কোনো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে কোমরকান্দি গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘সপ্তাহখানেক আগে বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। নির্মাণের সময় পাইলিং কাজে অনিয়ম থাকায় অসময়ে বাঁধ ধসে যাচ্ছে। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।’ স্থানীয় কৃষক আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘কাজে অনিয়ম থাকায় বাঁধ ভেঙে গেছে। ভাঙন ঠেকানো না গেলে কুঠিবাড়িসহ আশপাশের এলাকার কৃষিজমি, ফসল, ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে যাবে।’

কোমরকান্দি গ্রামের মরিয়ম খাতুন বলেন, ‘শেষ আশাটুকুও ভেঙে গেল। ব্যাটারা কাজে ফাঁকি দিছে। টাকা মারে খাইছে। এখন আমরা দিশেহারা।’ কলেজছাত্রী বাসনা খাতুন বলেন, ‘এ বাঁধ দিয়েই নিয়মিত কলেজে যাওয়া আসা করি। নির্মাণকাজে ত্রুটি থাকায় ভেঙে যাচ্ছে। ভাঙনরোধ করা দরকার।’

কুঠিবাড়ির কাস্টডিয়ান মখলেসুর রহমান বলেন, ‘ঢাকায় ট্রেনিংয়ে আছি। এটা আমাদের কাজ নয়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ব্যাপার। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিতান কুমার মন্ডল বলেন, ‘প্রশাসনের পক্ষ থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ড, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন জায়গায় চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে দৃশ্যমান কোনো কাজ পানি উন্নয়ন বোর্ড এখনো শুরু করেনি।’

কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবছার উদ্দিনের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি তা ধরেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন সিরামিক শিল্পের মালিকেরা

গণ-অভ্যুত্থান ও পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে যা বললেন সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল ইকবাল করিম

বগুড়ায় আওয়ামী লীগের পাঁচ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

নির্বাচিত সরকারের আশায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি থেকে পিছু হটলেন তিতুমীর শিক্ষার্থীরা

ফরিদপুরে মাছ ধরা নিয়ে আ.লীগ-বিএনপির সংঘর্ষ, বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত