Ajker Patrika

বরগুনায় বেপরোয়া কিশোর গ্যাং, নির্লিপ্ত পুলিশ

রুদ্র রুহান, বরগুনা
Thumbnail image

তুচ্ছ ঘটনায় কলেজছাত্রকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টার ঘটনায় আবারও আলোচনা এসেছে বরগুনা সদরের চালিতাতলী এলাকার আলোচিত বাপ্পি-হাসিব কিশোর গ্যাং গ্রুপ। মাদকের টাকার জন্য এক তরুণকে মেরে থুতু চাটানো, যুবলীগ নেতাকে মারধরের পর ‘আব্বা’ ডাকিয়ে ভিডিও ধারণ, মাদক বিক্রিসহ বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

গ্রুপ লিডার বাপ্পি ও হাসিবের বিরুদ্ধে সদর থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্লিপ্ত ভূমিকায় অপরাধ করেও আইনের ফাঁক গলিয়ে বের হয়ে ফের অপরাধ সংঘটিত করে চলেছে গ্রুপটি।

১৮ মে তুচ্ছ ঘটনায় বরগুনা সদরের ক্রোক এলাকা থেকে বাবুল (২৩) নামের এক কলেজছাত্রকে ছুরি ঠেকিয়ে অপহরণ করে তিন কিলোমিটার দূরে হুজুরবাড়ি নামক স্থানে নিয়ে যায় বাপ্পি-হাসিব গ্যাং গ্রুপের ৭-৮ জন সদস্য। সেখানে নিয়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে বাবুলের ফোন থেকে বড় ভাই রিপনের মোবাইল ফোনে কল করে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এ সময় খবর পেয়ে ডিবি পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে বাবুলকে উদ্ধার করে এবং ঘটনাস্থল থেকে জিহাদ ও সিয়াম নামের দুজনকে আটক করে। এ ঘটনায় ওই  রাতেই বাবুলের ভাই রিপন বাদী হয়ে বাপ্পি, হাসিব, জিহাদ, সিয়াম, রাকিবসহ অজ্ঞাতনামা সাত-আটজনের বিরুদ্ধে বরগুনা সদর থানায় মামলা করেন।

অপহৃত বাবুলের বড় ভাই রিপন বলেন, ‘ঘটনার এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও মূল হোতা বাপ্পি, হাসিবসহ অন্য কোনো আসামি ধরা পড়েনি। আমার ভাই ভয়ে কলেজে যেতে চাইছে না।’

অপহৃত বাবুল বরগুনা সরকারি কলেজে অধ্যয়নরত। বাবুল বলেন, ‘সম্প্রতি বরগুনা সদরের এম চালিতাতলী এলাকায় অনিক নামের একজনকে মারধর করে কচুপাতার ওপর থুতু ফেলে তাকে চাটতে বাধ্য করে। এর প্রতিবাদ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওরা আমাকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করে।’

গত ১ জানুয়ারি রাত ৮টার দিকে এম বালিয়াতলী ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন গাজীকে (৪৮) বাপ্পি ও হাসিব নামের দুই তরুণের নেতৃত্বে চালিতাতলী বাজার থেকে ডেকে মাঠে নিয়ে মারধর করা হয়। মারধরের একপর্যায়ে বাপ্পিকে ‘আব্বা’ ডাকিয়ে ভিডিও ধারণ করা হয়েছে।

দেলোয়ার গাজী বলেন, ‘ঘটনার পর আমি মামলা করেছি। পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি। পরে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছে।’

এসব বিষয়ে অভিযুক্ত কিশোরদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি এবং তাঁদের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরও বন্ধ পাওয়া যায়। সদর থানার ওসি মো. আলী আহম্মেদ বলেন, ‘বাপ্পি ও হাসিব গ্রুপের দুই সদস্যকে সবশেষ ঘটনার দিন আটক করে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। একজন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী, তাই জামিন পেয়েছে। আমরা বাপ্পি ও হাসিবকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত