Ajker Patrika

দশরথের ফাইনালে আমরাই ফেবারিট

নাজিম আল শমষের, ঢাকা
আপডেট : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১১: ৩৩
Thumbnail image

প্রশ্ন: ফাইনালে খেলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেই প্রতিশ্রুতির বোঝা কাঁধ থেকে নামিয়ে নিজেকে কতটা হালকা মনে হচ্ছে?

গোলাম রব্বানী ছোটন: মেয়েরা অনেক দিন থেকেই অনুশীলনের মধ্যে ছিল। আমাদের একটা আত্মবিশ্বাস ছিল যে এবারের সাফে অন্তত আমরা ভালো ফুটবল খেলব। মেয়েরা ম্যাচ ধরে ধরে খেলেছে, আমাদের পরিকল্পনা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হয়েছে।

আমাদের আরেকটা ইচ্ছা ছিল ঢাকায় আমরা যেমন দর্শকদের বিনোদন দিয়েছি, কাঠমান্ডুর দশরথেও সেই বিনোদন দেব। আমার মনে হয় পুরো নেপালেই এখন বাংলাদেশের মেয়েদের ফুটবলের জয়জয়কার চলছে। 

প্রশ্ন: ফেডারেশন থেকে শুরু করে সবার চাওয়া এখন আপনারা শিরোপা হাতে দেশে ফিরুন। প্রত্যাশার এই চাপ নিতে পারছে তো আপনার দল?

ছোটন: আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্যই ছিল ফাইনালে খেলা। লক্ষ্য পূরণ হওয়ায় মাঠে এখন মেয়েরা তাদের শতভাগ খেলাটা খেলতে পারবে। আমরা চাইব দেশকে শিরোপা উপহার দিতে।

প্রশ্ন: এবারের সাফে মেয়েরা যেভাবে খেলছে, আপনি নিজেও কি তাতে চমকে গেছেন? বিশেষ করে ভারতকে হারানোর পর।  

ছোটন: আগেই বলেছি, ফল কী হবে জানি না। তবে মেয়েরা ভালো ফুটবল খেলবে। বিশেষ করে মালয়েশিয়ার বিপক্ষে ভালো ফলের পরও ওরা সবাই কঠিন পরিশ্রম করেছে। ভালো খেলার বিশ্বাসটা আমাদের ভেতর ছিল।  

প্রশ্ন: মেয়েরা কোথায় এগিয়েছে বলে আপনি মনে করেন?

ছোটন: বয়সভিত্তিক ফুটবলে আমরা দক্ষিণ এশিয়ায় দাপট দেখিয়েছি। 
জাতীয় দল একটা পরিবর্তনের মধ্যে আছে। সাবিনা ছাড়া দলের সবারই বয়স ১৯-২০ বছরের মধ্যে। তবু দলটার কাছে সবার চাওয়া ছিল ভালো একটা ফল। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সবারই চাওয়া ছিল তা-ই। এই অল্প বয়সে মেয়েরা যে এত বড় প্রত্যাশার চাপ নিতে পারছে, এখানেই মনে হয় দলে বিশাল একটা পরিবর্তন এসেছে।

প্রশ্ন: অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের গোল করার দক্ষতা সম্পর্কে সবারই ধারণা আছে। কিন্তু এবারের সাফে তাঁকে একেবারেই ভিন্ন চেহারায় দেখা যাচ্ছে।

ছোটন: একেবারে অন্য পর্যায়ের সাবিনাকে আমরা দেখছি। ছয়টা সাফে খেলছে। কিন্তু এবার সে এক অন্য সাবিনা। ফিটনেস বলুন, মানসিকতা থেকে শুরু করে কৌশলগতভাবে সে এবার আলাদা। বিশেষ করে তাঁর নেতৃত্ব দেওয়ার গুণটা এবার বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। 

প্রশ্ন: চারিত্রিকভাবে আপনি নিজে একটু গুরুগম্ভীর মানুষ। কিন্তু এবার তো ভিন্ন এক ছোটনকেও আমরা দেখছি। মুখে হাসি। ডাগআউটেও আপনাকে হালকা-পাতলা নাচের তালে কোমর দোলাতে দেখা যাচ্ছে। মেয়েদের ফুটবল কি তবে কোচকেও পরিবর্তন করে ফেলল?

ছোটন: (হাসি) মেয়েরা এখন অনেক উৎফুল্ল। ভাবলাম, আমিও ওদের সঙ্গে একটু শামিল হই আরকি (হাসি)! ওদের এত কঠিন পরিশ্রমের পর ভালো কিছু দেখলে নিজের কাছেও ভালো লাগে। 

প্রশ্ন: ফাইনাল নিয়ে কতটা আশাবাদী?

ছোটন: দল এখন পর্যন্ত যেভাবে খেলছে, সব ছাপিয়ে স্বাগতিক নেপালের বিপক্ষে দশরথের ফাইনালে আমরাই ফেবারিট। 

প্রশ্ন: মাঠে শুধু ১১ নেপালির বিপক্ষেই ম্যাচ নয়, আপনাদের খেলতে হবে গ্যালারিভর্তি নেপালি সমর্থকদের বিপক্ষেও। কতটা চ্যালেঞ্জিং মনে হচ্ছে?

ছোটন: আমাদের একটা ভালো দিক আছে। একটা উদাহরণ দিই, মিয়ানমারে ২০১৯ সালে আমরা এএফসির অনূর্ধ্ব-১৬ দ্বিতীয় পর্বের বাছাইপর্বের ম্যাচ খেলতে গিয়েছিলাম। পুরো স্টেডিয়ামভর্তি দর্শক ছিল। ঢোল নিয়ে দর্শকেরা খেলা দেখতে এসেছিল, অনেক চিৎকার-চেঁচামেচি তারা করেছে। কিন্তু সেই ম্যাচে মেয়েরা খুব সহজেই জিতেছে। ভুটানেও আমরা একই দৃশ্য দেখেছি। এই দলের প্রতিপক্ষের মাঠে ভালো খেলার অভিজ্ঞতা আছে। এখানে নেপালের বিপক্ষে সেই অভিজ্ঞতা কাজে দেবে। 

প্রশ্ন: দলের সবার ভূমিকায় আপনি কতটা খুশি?

ছোটন: দলে আমাদের সবচেয়ে বেশি সংশয় ছিল গোলরক্ষক রুপনা চাকমাকে নিয়ে। কিন্তু রুপনা এখনো পর্যন্ত কোনো গোল হজম করেনি। যে যার পজিশনে নিজেদের সেরাটা দিতে উন্মুখ থাকে। যারা সাইড বেঞ্চে থাকছে, তাদের কথাও যদি বলি, তারাও সহজেই চাপ নিতে পারছে। বোঝাই যাচ্ছে না এরা বদলি হিসেবে মাঠে নামছে। মাঠে যে যার জায়গা থেকে সর্বোচ্চটা দিচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত