Ajker Patrika

মুগ ডালের খেতে পানি দুশ্চিন্তায় ঋণগ্রস্ত কৃষক

তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০২২, ১১: ২৩
মুগ ডালের খেতে পানি দুশ্চিন্তায় ঋণগ্রস্ত কৃষক

বরগুনার তালতলীতে ফসল রক্ষা বাঁধ কেটে ঘেরে পানি ওঠানোর কারণে প্রায় ১৭ একর মুগ ডালের খেত তলিয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ অবস্থায় ঋণ নিয়ে মুগ ডাল চাষ করায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা। তবে ঘেরমালিকের দাবি, তাঁর রেকর্ডীয় জমির ওপরের বাঁধ কেটে পানি উঠিয়েছেন। এতে যদি কোনো কৃষকের ক্ষতি হয়, তাতে তাঁর কিছু করার নেই।

জানা গেছে, উপজেলার খোট্টার চর এলাকায় গত বছর প্রায় ৩৮ লাখ টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করে। এই বাঁধ নির্মাণে কারণে এই এলাকার কৃষকেরা ফসল ফলানোর স্বপ্ন দেখেন। বিভিন্ন এনজিও থেকে ৯ জন কৃষক ঋণ নিয়ে এ বছর ১৭ একর জমিতে মুগ ডাল চাষ করেন। এতে প্রায় ৪ লাখ টাকা খরচ হয়। তবে ঘরে মুগ ডাল ওঠানোর আগেই স্থানীয় প্রভাবশালী নবী হোসেন জোমাদ্দার তাঁর ব্যক্তিগত ঘেরে মাছ চাষের জন্য ফসল রক্ষা বাঁধ কেটে জোয়ারের পানি ওঠায়। এতে ওই এলাকার ৯ জন কৃষকের ১৭ একর জমির মুগ ডাল পানিতে ভাসতে থাকে। কৃষকেরা বলেন, জোয়ারের পানিতে খেত তলিয়ে গাছ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যাবে। মুগ ডাল চাষে লাভ তো হবেই না, উল্টো ঋণ পরিশোধও করতে পারবে না। তবে এই বিষয়ে নবী হোসেন জমাদ্দারকে কৃষকেরা একাধিকবার বাঁধ কাটতে নিষেধ করলেও তিনি শোনেননি। এ অবস্থায় দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন এসব কৃষক। প্রতিদিন এভাবে পানি ওঠানামা করলে ফসলের ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা তাঁদের।

গতকাল মঙ্গলবার বেলা ৩টার দিকে সরেজমিন দেখা গেছে, বাঁধ কেটে ওঠানো পানিতে মুগ ডালের গাছ তলিয়ে গেছে। এ সময় কৃষক ইসমাইল ও ইব্রাহিম বলেন, ‘বাবা-ছেলে এনজিও ও মানুষের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে মুগ ডাল চাষ করি। আমরা ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের পর এই মুগ ডাল চাষ করি। নবী হোসেনের কারণে ঋণ পরিশোধ তো দূরের কথা, পালানোর পথও খুঁজে পাইব না। তাঁর বিরুদ্ধে আমরা অবস্থান নিলেও কিছুই করতে পারব না। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানানোর পরও কোনো ব্যবস্থা নেননি।’

আরেক কৃষক খলিল মিস্ত্রী বলেন, ‘নিজে অসুস্থ থেকে ও দিনে কাঠমিস্ত্রির কাজ করে সেই টাকা দিয়ে এই মুগডাল চাষ করেছি। গায়ের জোরে বাঁধ কেটে ঘেরে পানি ওঠানোর কারণে আজ আমার স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে। আমি কী জন্য এত কষ্ট করলাম। আমি এখন কার কাছে যাব। কী করব নিজেই জানি না। আমাদের দুঃখ দেখার কেউ নেই।’

এ বিষয়ে নবী হোসেন জোমাদ্দার বলেন, ‘আমার রেকর্ডিও জমির ওপরের বাঁধ কেটে পানি উঠাইছি। আমার লাখ লাখ টাকার মাছ বাঁচানোর জন্য পানি উঠাইছি। এতে যদি কোনো কৃষকের ক্ষতি হয়, তাতে আমার কিছু করার নেই।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সি এম রেজাউল করিম বলেন, ‘আমাদের অনুমতি না নিয়েই তিনি বাঁধ কেটেছেন। এ ছাড়া বাঁধ কেটে পানি ওঠানোর প্রশ্নেই আসে না। এ বিষয়ে কৃষকেরা যদি কোনো আইনি ব্যবস্থা নিতে চান। তাহলে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।’

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) বরগুনা জেলা কর্মকর্তা মো. প্রিন্স মল্লিক বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। আমাদের সহকারী প্রকৌশলী দিয়ে খোঁজখবর নিয়ে দেখছে। যদি এমন কিছু হয়ে থাকে, তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

ঘন ঘন নাক খুঁটিয়ে স্মৃতিভ্রংশ ডেকে আনছেন না তো!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত