Ajker Patrika

জাপানে উচ্চশিক্ষা: বিনা মূল্যে ভিসা প্রসেসিং

জুবায়ের আহম্মেদ
আপডেট : ১৮ আগস্ট ২০২২, ১১: ৫৮
জাপানে উচ্চশিক্ষা: বিনা মূল্যে ভিসা প্রসেসিং

মেক্সট স্কলারশিপ কী?
মেক্সট জাপানের সরকারি বৃত্তি, যা মিনিস্ট্রি অব এডুকেশন, কালচার, স্পোর্টস, সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি কর্তৃক পরিচালনা করা হয়। এই বৃত্তি আন্ডারগ্র্যাজুয়েট, মাস্টার্স ও পিএইচডি লেভেলের শিক্ষার্থীদের প্রদান করা হয় এবং মেক্সট বৃত্তিধারীর পড়াশোনা, থাকা-খাওয়া, বিমান ভাড়া, স্বাস্থ্য বৃত্তিসহ সদ ধরনের খরচ বহন করে। শুধু তা-ই নয়, বিনা মূল্যে ভিসা প্রসেসিং ফিসহ ভিসা আবেদনের জন্য সম্পূর্ণ সহযোগিতা দেওয়া হয়। এ ছাড়া ভিসার জন্য কোনো ধরনের ব্যাংক ব্যালেন্সও দেখাতে হয় না। জাপানের অত্যাধুনিক জীবনযাত্রা এবং উন্নত শিক্ষাব্যবস্থার পাশাপাশি মেক্সট বৃত্তিধারীদের জন্য প্রতি মাসের ‘হাই রেঞ্জ স্টাইপেন’ এবং অন্যান্য সুবিধা এই বৃত্তিকে অনন্য করে তোলে।

কোথায় আবেদন করতে হয়?
এই স্কলারশিপে রিকমেন্ডেন্ট অ্যাম্বাসি এবং বিশ্ববিদ্যালয় দুভাবেই আবেদন করা যায়। অ্যাম্বাসির মাধ্যমে আবেদন এবং প্রাথমিক নির্বাচন বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমেই হয়। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় রিকমেন্ডেশনের মাধ্যমে আবেদন এবং নির্বাচন—সবকিছুই বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমেই হয়ে থাকে। উভয় ক্ষেত্রেই আবেদনকারীকে কয়েক ধাপ ইন্টারভিউ দিতে হয়। যার ফলাফল প্রতি ধাপের স্ক্রিনিংয়ের পর আবেদনকারীকে জানানো হয়।

কীভাবে আবেদন করবেন?
অ্যাম্বাসি রিকমেন্ডেশনের আবেদনের সার্কুলার বাংলাদেশ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রতিবছর এপ্রিল-মে মাসে দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় রিকমেন্ডেশনের আবেদন শুরু হয় প্রতিবছর নভেম্বর-ডিসেম্বর থেকে। এ ক্ষেত্রে আবেদনের জন্য জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনার একজন সুপারভাইজার বা প্রফেসর থাকতে হবে, যিনি আপনার অধ্যয়নকালে আপনাকে সুপারভাইজড করবেন। অতএব বিশ্ববিদ্যালয় রিকমেন্ডেশনের মাধ্যমে এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে চাইলে নভেম্বর-ডিসেম্বরের মধ্যে অবশ্যই বিভিন্ন প্রফেসরের সঙ্গে ই-মেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করে একজন সুপারভাইজার ঠিক করতে হবে।

কী কী কাগজপত্র লাগে?

  • সব ধরনের অ্যাকাডেমিক সার্টিফিকেট ও ট্রান্সক্রিপ্ট
  • পাসপোর্ট
  • জাতীয় পরিচয়পত্র (শুধু অ্যাম্বাসি রিকমেন্ডেন্ট আবেদনের ক্ষেত্রে)
  • সাম্প্রতিক ছবি
  • আইইএলটিএস/টোফেল
  • স্নাতক বা স্নাতকোত্তরের থিসিস বা প্রজেক্টের সারাংশ
  • রিকমেন্ডেশন লেটার
  • সিভি (শুধু অ্যাম্বাসি রিকমেন্ডেশন আবেদনের ক্ষেত্রে)
  • পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট (শুধু অ্যাম্বাসি রিকমেন্ডেশন আবেদনের ক্ষেত্রে)
  • চাকরির সার্টিফিকেট (যদি চাকরিজীবী হয়)
  • এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাকটিভিটিস সার্টিফিকেট (যদি থাকে)
  • পাবলিশ আর্টিকেল (যদি থাকে)

পরামর্শ
মেক্সট স্কলারশিপে আবেদন থেকে শুরু করে অ্যাওয়ারডেড হওয়া পর্যন্ত এটি একটি লম্বা প্রসেস। এ জন্য আগে থেকেই সঠিক পরিকল্পনা করে ধাপে ধাপে আগাতে হবে। এ ছাড়া স্কলারশিপ অনেক প্রতিযোগিতামূলক। কারণ পৃথিবীর সব মেধাবী ছাত্রছাত্রী এই বৃত্তির জন্য আবেদন করে থাকেন। অতএব আবেদনের জন্য আবশ্যক না হলেও এ-সম্পর্কিত ফিল্ডে আপনার ল্যাব ওয়ার্ক, বিভিন্ন কনফারেন্সে প্রেজেন্টেশন, আর্টিকেল পাবলিকেশন ইত্যাদি আপনাকে প্রতিযোগিতায় এক ধাপ এগিয়ে রাখবে। এ জন্য আশপাশে সুযোগ-সুবিধা খুঁজতে হবে। এ ক্ষেত্রে আপনার শিক্ষক এবং সিনিয়রদের কাছেও সাহায্য পেতে পারেন। আপনারা চাইলে আমার ইউটিউব লেসনগুলো দেখতে পারেন। সেখানে আমি বিস্তারিত আলোচনা করেছি উচ্চশিক্ষার খুঁটিনাটি সব বিষয় নিয়ে। ইউটিউব চ্যানেল লিংক এখানে

ধারাবাহিকতা বজায় রাখুন
যেকোনো স্কলারশিপে অ্যাওয়ার্ডেড হওয়া বা ফান্ড পাওয়া সত্যিই কষ্টসাধ্য এবং সময়সাপেক্ষ। এই পুরো প্রক্রিয়ায় অনেক উত্থান-পতন থাকবে। কিন্তু হাল ছেড়ে দেওয়া যাবে না। আমি বিশ্বাস করি প্রবল ইচ্ছাশক্তি এবং পরিশ্রম দিয়ে যেকোনো কিছু অর্জন করা সম্ভব। তাই লক্ষ্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত চেষ্টা করে যেতে হবে, সাফল্য আসবেই। এই যাত্রায় সবাইকে শুভকামনা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত