হাসান মামুন

এপ্রিলের শুরু থেকে তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর বাইরেও এসি বিক্রি বেড়ে গেছে। মিডিয়াও ভালো বিজ্ঞাপন পাচ্ছে এর বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে। তবে গ্রামের দিকেও যাঁরা এসি কিনছেন, তাঁরা সেটা চালাতে পারছেন কতক্ষণ? বিদ্যুৎ কতক্ষণ পাচ্ছেন? এ ক্ষেত্রে এমন প্রশ্ন তোলা জরুরি যে, সাধারণ ওষুধের দোকানগুলোয় এসি সংযোজিত হচ্ছে কি না। তার সুযোগও আছে কত শতাংশ দোকানে!
দুই লাখের বেশি ওষুধের দোকান রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে, যেগুলো নিবন্ধিত। রাজধানীতেও অনেক অনিবন্ধিত ওষুধের দোকান রয়েছে। প্রশ্ন হলো, এমনকি নিবন্ধিত কত শতাংশ দোকানে তাপমাত্রা কাম্য পর্যায়ে রেখে ওষুধ বিক্রি হচ্ছে? এ বিষয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে বেশি দিন হয়নি; যদিও উচ্চ তাপমাত্রার সমস্যাটা দীর্ঘদিনের। এবার এ ক্ষেত্রে নাকি ৭৬ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে। এপ্রিলের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেশের সিংহভাগ অঞ্চলের ওপর দিয়েই বয়ে গেছে তাপপ্রবাহ—মৃদু থেকে মাঝারি, মাঝারি থেকে তীব্র, তীব্র থেকে অতি তীব্র। এই মুহূর্তে এটা অবশ্য কিছুটা কমে আসছে বৃষ্টিপাত শুরুর কারণে। তবে তাপপ্রবাহ আবার বাড়বে; এমনকি আগের জায়গায় ফিরে যাওয়ার পূর্বাভাসও রয়েছে।
এবারের তাপপ্রবাহে ওষুধের গুণমান রক্ষা নিয়ে মিডিয়া তৎপর হয়ে উঠেছে আরও। তাতে নড়েচড়ে বসেছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরও।তারা বিক্রেতাদের নির্দেশনা দিয়েছেন, কত তাপমাত্রায় ওষুধ রাখতে হবে! এই নির্দেশনা অবশ্য ওষুধের প্যাকেটের গায়েই লেখা থাকে।প্যাকেটের ভেতরে থাকা লিফলেটেও থাকে। সেটা নতুন করে বলার কিছু নেই। প্রশাসনের কাজ বরং নির্দেশনা মানতে বাধ্য করা।
দেখেশুনে মনে হচ্ছে, তাদের মনিটরিংও খুব দুর্বল। সে বিষয়ে প্রশ্ন তুললে অবশ্য বলা হবে আমাদের লোকবলের অভাব! জরুরি অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠানে লোকবলের অভাব রয়েছে বৈকি। আবার দেখা যাবে, অনেক জায়গায় আছে অতিরিক্ত কিংবা অপ্রয়োজনীয় লোকবল।
তাদের পোষা হচ্ছে জনগণের অর্থে। এটা সেই অর্থ, সরকার যা লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী আহরণ করতে পারছে না। তার মানে, সরকারের জন্যও এটা কষ্টার্জিত অর্থ। সেই অর্থে জরুরি কাজগুলো সম্পন্ন করা নিশ্চয়ই বেশি প্রয়োজন।
এসিও বেশি করে লাগানো দরকার ওষুধের দোকানগুলোয়, যেখানে অনেক স্পর্শকাতর ওষুধ থাকে। জেলা বা উপজেলা সদরে যার একটা জনপ্রিয় ওষুধের দোকান আছে, হয়তো দেখা যাবে এই গরমে তিনি বাসায় নতুন এসি কিনে লাগিয়েছেন। কিন্তু তার দোকানে চলছে আগের মতোই একটা বা দুটো সিলিং ফ্যান। তিনি হয়তো জানেনই না, উচ্চ তাপমাত্রা চলতে থাকলে ওষুধ নষ্ট হয়ে যেতে পারে মেয়াদেরও আগে।
জানাশোনা ও জানতে চাওয়ার জায়গাটায় আমাদের ঘাটতি অনেক; এমনকি সংশ্লিষ্টদের। এ বিষয়ে করা কোনো কোনো রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ওষুধের দোকানে ফ্রিজ থাকলেও তাতে কত তাপমাত্রায় কী কী ওষুধ রাখতে হবে, সে বিষয়েও অনেকেরই সঠিক জ্ঞান নেই। ফ্রিজের বাইরে যেসব ওষুধ রাখা হয়, সেগুলোর কাম্য তাপমাত্রাও যে বিভিন্ন, সেটা জানা তো আরও পরের কথা।
মানার প্রশ্ন আসে তারও পরে। ওষুধ বিক্রেতাদের বরং বাড়তি দায়িত্ব রয়েছে ক্রেতাদের এর সংরক্ষণ বিষয়ে সঠিক নির্দেশনা দেওয়ার। ওষুধের দোকানে অন্তত একজন উপযুক্ত ফার্মাসিস্ট থাকার কথা, ক্রেতারা যার পরামর্শ নেবেন। যেমন—কোনো ওষুধ চট করে পাওয়া না গেলে একই গ্রুপের কোনটি খাওয়া যেতে পারে ইত্যাদি বিষয়ে।
এখানে যে প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হচ্ছে, সেটা অবশ্য পূরণ করতে পারে কেবল ‘মডেল ফার্মেসি’। রাজধানীসহ বড় বড় শহরে এ ধরনের কিছু ফার্মেসি গড়ে উঠেছে বটে। তবে সেগুলোর সংখ্যা এখনো হাজার পেরোয়নি। কোনো কোনো রিপোর্ট বলছে, ৫০০-এর বেশি হবে না। অথচ মডেল ফার্মেসি নিয়ে কত কথাবার্তা হচ্ছে! বলা হচ্ছে, যেখানে-সেখানে যেনতেনভাবে ওষুধের দোকান দেওয়া যাবে না। ওষুধের জন্য কাম্য পর্যায়ে তাপমাত্রা রেখে তবেই ব্যবসাটা করতে হবে।
ওষুধ তো আর দশটা পণ্যের মতো নয়। এর ব্যবসাও সবার করার কথা নয়। ওষুধের দোকান খুলে বসা প্রতিটি লোকের তাই পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। লাগবে মোটিভেশনও। বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, কাঁচাবাজারে অন্যান্য পণ্য বিক্রি করা দোকানের একাংশেও বিক্রি হচ্ছে ওষুধ। ওপরে টিনের চালা। তার ওপরে গাছের ছায়াও নেই। তার ওপরে আছে মেঘমুক্ত আকাশ থেকে আগুন ঢালা একটা গ্রীষ্মের সূর্য!
শুধু ওষুধের দোকান তো নয়; কোম্পানির যে গাড়ি বা যাদের হাতে ওষুধ পৌঁছে দেওয়া হয়, সে ক্ষেত্রেও কি কাম্য তাপমাত্রা বজায় রাখা হচ্ছে? সব ওষুধ হয়তো অল্প সময়ের উচ্চ তাপমাত্রায় নষ্ট হবে না। তবে কিছু ওষুধ অবশ্যই এ অবস্থায় গুণমান হারাবে। বিশেষজ্ঞরা এমনটাই বলছেন। ইনসুলিন, চোখের ড্রপ ইত্যাদি খুবই স্পর্শকাতর।
ওষুধ কোম্পানির গুদামে আর পরিবহনের সময় এর তাপমাত্রা অবশ্যই রক্ষা করতে হবে। এ অবস্থায় ‘কোল্ড চেইন’ নিয়ে আলোচনা স্বভাবতই বাড়ছে। বলা হচ্ছে, এ খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো গেলে সুফল মিলবে শুধু ওষুধে নয়; খাদ্যপণ্য সংরক্ষণেও। আমরা তো উৎপাদিত খাদ্যপণ্যের অনেকটাই হারাই তা সঠিকভাবে সংরক্ষণে ব্যর্থ বলে। যেমন—প্রয়োজন অনুযায়ী পেঁয়াজ উৎপাদন করেও এর প্রায় এক-চতুর্থাংশ হারিয়ে আবার তা আমদানি করি কষ্টার্জিত বিদেশি মুদ্রায়। আমরা কিন্তু এখনো রয়েছি বিদেশি মুদ্রার সংকটে!
অন্যান্য খাদ্যপণ্যে কোল্ড চেইন দেরিতে গড়ে তোলা গেলেও আমাদের চলবে মনে হয়। কিন্তু একেবারেই চলবে না ওষুধ সংরক্ষণে এটা দ্রুত গড়ে না তুললে। আমরা ওষুধ উৎপাদনে ‘স্বয়ংসম্পূর্ণ’ হয়েছি। বিদেশি বিভিন্ন উৎস থেকে ব্যাপকভাবে কাঁচামাল এনে হলেও চাহিদার ৯৫ শতাংশ ওষুধ দেশেই তৈরি করছি। এখানে উৎপাদিত ওষুধ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত বাজারের দেশগুলোয়ও হচ্ছে রপ্তানি। বিদেশে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে দেশীয় ওষুধ কোম্পানির প্ল্যান্ট। কিন্তু দেশের রোগী ও ক্রেতারা যেসব দোকান থেকে ওষুধ কিনছেন, সেগুলোর সিংহভাগে নেই নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় এর গুণমান রক্ষার ব্যবস্থা। এ ক্ষেত্রে এমনটা বলার সুযোগ কিন্তু নেই যে, মানুষকে কি ‘করে খেতে’ দেবেন না?
এর জবাবে সাফ বলে দিতে হবে, ওষুধের ব্যবসাটা ‘করে খাওয়ার’ নয়। জনস্বাস্থ্যের দিক থেকে এই অনিয়ম ‘অ্যাফোর্ড’ করা যাবে না। সরকারি হাসপাতাল আর স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও যথাযথ তাপমাত্রায় ওষুধ সংরক্ষণের ব্যবস্থা আছে কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে। বিশেষত টিকাদান কার্যক্রমে ব্যবহৃত উপাদানগুলোর কোল্ড চেইন ঠিকঠাক থাকা জরুরি। করোনা মোকাবিলায় টিকাদান কার্যক্রমে আমরা সাফল্য দেখিয়েছি বলে দাবি করা হয়। সেটা আন্তর্জাতিকভাবেও প্রশংসিত হয়েছে। কিন্তু এটা অটুট থাকবে না বছরের পর বছর চলমান তাপপ্রবাহে প্রত্যন্ত এলাকার ওষুধের দোকানসহ সব ক্ষেত্রে এর গুণমান রক্ষার ব্যবস্থা করা না গেলে। বিশ্বজুড়েই তাপমাত্রা বাড়ছে সন্দেহ নেই। আর এটা বাড়ছে মূলত শিল্পোন্নত দেশগুলোর কর্মকাণ্ডে। তবে এসব বলে স্থানীয় কর্তব্য উপেক্ষা করে চলা আর যাবে না।
দেশে তাপমাত্রা যেভাবে বাড়ছে এবং বছরের সুদীর্ঘ সময় ধরে ও দিনের লম্বা সময় যে উচ্চ তাপমাত্রা থাকছে, তাতে ফার্মেসিগুলোকে মানসম্মত করে তুলতে উদ্যোগ নেওয়ার সময় কিন্তু পেরিয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন। প্রয়োজনে এই খাতে স্বল্প সুদে ঋণ জোগাতে হবে। জনস্বাস্থ্য রক্ষার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত বলে এ কাজে বিদেশি সহায়তাও মিলতে পারে। সেই চেষ্টা করা দরকার এবং এর সদ্ব্যবহার জরুরি।
ওষুধ উৎপাদকেরাও কি এ কাজে সহায়তা জোগাতে পারেন না? তাঁদের উৎপাদিত ওষুধ কীভাবে কোথায় বিক্রি হয়, সে বিষয়ে তারাও কি উদাসীন থাকতে পারেন? প্রেসক্রিপশন প্রদানকারীদের সঙ্গে ওষুধ বিক্রেতাদেরও তাঁরা নানান ‘প্রণোদনা’ জুগিয়ে থাকেন। আর এর সবই গিয়ে ঢোকে ওষুধের দামে। হালে বেশ কিছু ওষুধের দাম বেড়েছে নতুন করে। এ বিষয়ে হাইকোর্টের একটি রুলও প্রণিধানযোগ্য।
এ অবস্থায় তাঁদের নতুনভাবে চিন্তাভাবনা করতে হবে বলেই মনে হচ্ছে। আর যাঁরা ওষুধ ক্রেতা ও সেবনকারী, তাঁদেরও উদাসীনতা পরিহারের সময় পেরিয়ে যাচ্ছে দ্রুত। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে কেমন দোকান থেকে ওষুধ কিনবেন এবং ঘরে কীভাবে সংরক্ষণ করবেন, সেটা তাঁদের নিজ দায়িত্বে বুঝে নিতে হবে। কেউ তো তাঁদের দায়িত্ব নিচ্ছে না! তাপমাত্রা কাম্য পর্যায়ে আসার আগপর্যন্ত অন্তত তাদের কড়া সতর্কতা বজায় রাখতে হবে।
দেশে কত হৃদ্রোগী! ডায়াবেটিসের রোগী! কিডনি সমস্যায় জর্জরিত কত মানুষ! অনেকে ক্যানসারের চিকিৎসা নিচ্ছে! কত শিশু ও প্রবীণ এই গরমে ভুগছে মৌসুমি রোগব্যাধিতে। এবারও চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গু। এ অবস্থায় এসির মতো ওষুধের ব্যবসাও জমজমাট। শুধু নেই তাপপ্রবাহে এর গুণমান রক্ষার জোরালো উদ্যোগ!
লেখক: সাংবাদিক, বিশ্লেষক

এপ্রিলের শুরু থেকে তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর বাইরেও এসি বিক্রি বেড়ে গেছে। মিডিয়াও ভালো বিজ্ঞাপন পাচ্ছে এর বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে। তবে গ্রামের দিকেও যাঁরা এসি কিনছেন, তাঁরা সেটা চালাতে পারছেন কতক্ষণ? বিদ্যুৎ কতক্ষণ পাচ্ছেন? এ ক্ষেত্রে এমন প্রশ্ন তোলা জরুরি যে, সাধারণ ওষুধের দোকানগুলোয় এসি সংযোজিত হচ্ছে কি না। তার সুযোগও আছে কত শতাংশ দোকানে!
দুই লাখের বেশি ওষুধের দোকান রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে, যেগুলো নিবন্ধিত। রাজধানীতেও অনেক অনিবন্ধিত ওষুধের দোকান রয়েছে। প্রশ্ন হলো, এমনকি নিবন্ধিত কত শতাংশ দোকানে তাপমাত্রা কাম্য পর্যায়ে রেখে ওষুধ বিক্রি হচ্ছে? এ বিষয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে বেশি দিন হয়নি; যদিও উচ্চ তাপমাত্রার সমস্যাটা দীর্ঘদিনের। এবার এ ক্ষেত্রে নাকি ৭৬ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে। এপ্রিলের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেশের সিংহভাগ অঞ্চলের ওপর দিয়েই বয়ে গেছে তাপপ্রবাহ—মৃদু থেকে মাঝারি, মাঝারি থেকে তীব্র, তীব্র থেকে অতি তীব্র। এই মুহূর্তে এটা অবশ্য কিছুটা কমে আসছে বৃষ্টিপাত শুরুর কারণে। তবে তাপপ্রবাহ আবার বাড়বে; এমনকি আগের জায়গায় ফিরে যাওয়ার পূর্বাভাসও রয়েছে।
এবারের তাপপ্রবাহে ওষুধের গুণমান রক্ষা নিয়ে মিডিয়া তৎপর হয়ে উঠেছে আরও। তাতে নড়েচড়ে বসেছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরও।তারা বিক্রেতাদের নির্দেশনা দিয়েছেন, কত তাপমাত্রায় ওষুধ রাখতে হবে! এই নির্দেশনা অবশ্য ওষুধের প্যাকেটের গায়েই লেখা থাকে।প্যাকেটের ভেতরে থাকা লিফলেটেও থাকে। সেটা নতুন করে বলার কিছু নেই। প্রশাসনের কাজ বরং নির্দেশনা মানতে বাধ্য করা।
দেখেশুনে মনে হচ্ছে, তাদের মনিটরিংও খুব দুর্বল। সে বিষয়ে প্রশ্ন তুললে অবশ্য বলা হবে আমাদের লোকবলের অভাব! জরুরি অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠানে লোকবলের অভাব রয়েছে বৈকি। আবার দেখা যাবে, অনেক জায়গায় আছে অতিরিক্ত কিংবা অপ্রয়োজনীয় লোকবল।
তাদের পোষা হচ্ছে জনগণের অর্থে। এটা সেই অর্থ, সরকার যা লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী আহরণ করতে পারছে না। তার মানে, সরকারের জন্যও এটা কষ্টার্জিত অর্থ। সেই অর্থে জরুরি কাজগুলো সম্পন্ন করা নিশ্চয়ই বেশি প্রয়োজন।
এসিও বেশি করে লাগানো দরকার ওষুধের দোকানগুলোয়, যেখানে অনেক স্পর্শকাতর ওষুধ থাকে। জেলা বা উপজেলা সদরে যার একটা জনপ্রিয় ওষুধের দোকান আছে, হয়তো দেখা যাবে এই গরমে তিনি বাসায় নতুন এসি কিনে লাগিয়েছেন। কিন্তু তার দোকানে চলছে আগের মতোই একটা বা দুটো সিলিং ফ্যান। তিনি হয়তো জানেনই না, উচ্চ তাপমাত্রা চলতে থাকলে ওষুধ নষ্ট হয়ে যেতে পারে মেয়াদেরও আগে।
জানাশোনা ও জানতে চাওয়ার জায়গাটায় আমাদের ঘাটতি অনেক; এমনকি সংশ্লিষ্টদের। এ বিষয়ে করা কোনো কোনো রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ওষুধের দোকানে ফ্রিজ থাকলেও তাতে কত তাপমাত্রায় কী কী ওষুধ রাখতে হবে, সে বিষয়েও অনেকেরই সঠিক জ্ঞান নেই। ফ্রিজের বাইরে যেসব ওষুধ রাখা হয়, সেগুলোর কাম্য তাপমাত্রাও যে বিভিন্ন, সেটা জানা তো আরও পরের কথা।
মানার প্রশ্ন আসে তারও পরে। ওষুধ বিক্রেতাদের বরং বাড়তি দায়িত্ব রয়েছে ক্রেতাদের এর সংরক্ষণ বিষয়ে সঠিক নির্দেশনা দেওয়ার। ওষুধের দোকানে অন্তত একজন উপযুক্ত ফার্মাসিস্ট থাকার কথা, ক্রেতারা যার পরামর্শ নেবেন। যেমন—কোনো ওষুধ চট করে পাওয়া না গেলে একই গ্রুপের কোনটি খাওয়া যেতে পারে ইত্যাদি বিষয়ে।
এখানে যে প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হচ্ছে, সেটা অবশ্য পূরণ করতে পারে কেবল ‘মডেল ফার্মেসি’। রাজধানীসহ বড় বড় শহরে এ ধরনের কিছু ফার্মেসি গড়ে উঠেছে বটে। তবে সেগুলোর সংখ্যা এখনো হাজার পেরোয়নি। কোনো কোনো রিপোর্ট বলছে, ৫০০-এর বেশি হবে না। অথচ মডেল ফার্মেসি নিয়ে কত কথাবার্তা হচ্ছে! বলা হচ্ছে, যেখানে-সেখানে যেনতেনভাবে ওষুধের দোকান দেওয়া যাবে না। ওষুধের জন্য কাম্য পর্যায়ে তাপমাত্রা রেখে তবেই ব্যবসাটা করতে হবে।
ওষুধ তো আর দশটা পণ্যের মতো নয়। এর ব্যবসাও সবার করার কথা নয়। ওষুধের দোকান খুলে বসা প্রতিটি লোকের তাই পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। লাগবে মোটিভেশনও। বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, কাঁচাবাজারে অন্যান্য পণ্য বিক্রি করা দোকানের একাংশেও বিক্রি হচ্ছে ওষুধ। ওপরে টিনের চালা। তার ওপরে গাছের ছায়াও নেই। তার ওপরে আছে মেঘমুক্ত আকাশ থেকে আগুন ঢালা একটা গ্রীষ্মের সূর্য!
শুধু ওষুধের দোকান তো নয়; কোম্পানির যে গাড়ি বা যাদের হাতে ওষুধ পৌঁছে দেওয়া হয়, সে ক্ষেত্রেও কি কাম্য তাপমাত্রা বজায় রাখা হচ্ছে? সব ওষুধ হয়তো অল্প সময়ের উচ্চ তাপমাত্রায় নষ্ট হবে না। তবে কিছু ওষুধ অবশ্যই এ অবস্থায় গুণমান হারাবে। বিশেষজ্ঞরা এমনটাই বলছেন। ইনসুলিন, চোখের ড্রপ ইত্যাদি খুবই স্পর্শকাতর।
ওষুধ কোম্পানির গুদামে আর পরিবহনের সময় এর তাপমাত্রা অবশ্যই রক্ষা করতে হবে। এ অবস্থায় ‘কোল্ড চেইন’ নিয়ে আলোচনা স্বভাবতই বাড়ছে। বলা হচ্ছে, এ খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো গেলে সুফল মিলবে শুধু ওষুধে নয়; খাদ্যপণ্য সংরক্ষণেও। আমরা তো উৎপাদিত খাদ্যপণ্যের অনেকটাই হারাই তা সঠিকভাবে সংরক্ষণে ব্যর্থ বলে। যেমন—প্রয়োজন অনুযায়ী পেঁয়াজ উৎপাদন করেও এর প্রায় এক-চতুর্থাংশ হারিয়ে আবার তা আমদানি করি কষ্টার্জিত বিদেশি মুদ্রায়। আমরা কিন্তু এখনো রয়েছি বিদেশি মুদ্রার সংকটে!
অন্যান্য খাদ্যপণ্যে কোল্ড চেইন দেরিতে গড়ে তোলা গেলেও আমাদের চলবে মনে হয়। কিন্তু একেবারেই চলবে না ওষুধ সংরক্ষণে এটা দ্রুত গড়ে না তুললে। আমরা ওষুধ উৎপাদনে ‘স্বয়ংসম্পূর্ণ’ হয়েছি। বিদেশি বিভিন্ন উৎস থেকে ব্যাপকভাবে কাঁচামাল এনে হলেও চাহিদার ৯৫ শতাংশ ওষুধ দেশেই তৈরি করছি। এখানে উৎপাদিত ওষুধ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত বাজারের দেশগুলোয়ও হচ্ছে রপ্তানি। বিদেশে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে দেশীয় ওষুধ কোম্পানির প্ল্যান্ট। কিন্তু দেশের রোগী ও ক্রেতারা যেসব দোকান থেকে ওষুধ কিনছেন, সেগুলোর সিংহভাগে নেই নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় এর গুণমান রক্ষার ব্যবস্থা। এ ক্ষেত্রে এমনটা বলার সুযোগ কিন্তু নেই যে, মানুষকে কি ‘করে খেতে’ দেবেন না?
এর জবাবে সাফ বলে দিতে হবে, ওষুধের ব্যবসাটা ‘করে খাওয়ার’ নয়। জনস্বাস্থ্যের দিক থেকে এই অনিয়ম ‘অ্যাফোর্ড’ করা যাবে না। সরকারি হাসপাতাল আর স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও যথাযথ তাপমাত্রায় ওষুধ সংরক্ষণের ব্যবস্থা আছে কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে। বিশেষত টিকাদান কার্যক্রমে ব্যবহৃত উপাদানগুলোর কোল্ড চেইন ঠিকঠাক থাকা জরুরি। করোনা মোকাবিলায় টিকাদান কার্যক্রমে আমরা সাফল্য দেখিয়েছি বলে দাবি করা হয়। সেটা আন্তর্জাতিকভাবেও প্রশংসিত হয়েছে। কিন্তু এটা অটুট থাকবে না বছরের পর বছর চলমান তাপপ্রবাহে প্রত্যন্ত এলাকার ওষুধের দোকানসহ সব ক্ষেত্রে এর গুণমান রক্ষার ব্যবস্থা করা না গেলে। বিশ্বজুড়েই তাপমাত্রা বাড়ছে সন্দেহ নেই। আর এটা বাড়ছে মূলত শিল্পোন্নত দেশগুলোর কর্মকাণ্ডে। তবে এসব বলে স্থানীয় কর্তব্য উপেক্ষা করে চলা আর যাবে না।
দেশে তাপমাত্রা যেভাবে বাড়ছে এবং বছরের সুদীর্ঘ সময় ধরে ও দিনের লম্বা সময় যে উচ্চ তাপমাত্রা থাকছে, তাতে ফার্মেসিগুলোকে মানসম্মত করে তুলতে উদ্যোগ নেওয়ার সময় কিন্তু পেরিয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন। প্রয়োজনে এই খাতে স্বল্প সুদে ঋণ জোগাতে হবে। জনস্বাস্থ্য রক্ষার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত বলে এ কাজে বিদেশি সহায়তাও মিলতে পারে। সেই চেষ্টা করা দরকার এবং এর সদ্ব্যবহার জরুরি।
ওষুধ উৎপাদকেরাও কি এ কাজে সহায়তা জোগাতে পারেন না? তাঁদের উৎপাদিত ওষুধ কীভাবে কোথায় বিক্রি হয়, সে বিষয়ে তারাও কি উদাসীন থাকতে পারেন? প্রেসক্রিপশন প্রদানকারীদের সঙ্গে ওষুধ বিক্রেতাদেরও তাঁরা নানান ‘প্রণোদনা’ জুগিয়ে থাকেন। আর এর সবই গিয়ে ঢোকে ওষুধের দামে। হালে বেশ কিছু ওষুধের দাম বেড়েছে নতুন করে। এ বিষয়ে হাইকোর্টের একটি রুলও প্রণিধানযোগ্য।
এ অবস্থায় তাঁদের নতুনভাবে চিন্তাভাবনা করতে হবে বলেই মনে হচ্ছে। আর যাঁরা ওষুধ ক্রেতা ও সেবনকারী, তাঁদেরও উদাসীনতা পরিহারের সময় পেরিয়ে যাচ্ছে দ্রুত। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে কেমন দোকান থেকে ওষুধ কিনবেন এবং ঘরে কীভাবে সংরক্ষণ করবেন, সেটা তাঁদের নিজ দায়িত্বে বুঝে নিতে হবে। কেউ তো তাঁদের দায়িত্ব নিচ্ছে না! তাপমাত্রা কাম্য পর্যায়ে আসার আগপর্যন্ত অন্তত তাদের কড়া সতর্কতা বজায় রাখতে হবে।
দেশে কত হৃদ্রোগী! ডায়াবেটিসের রোগী! কিডনি সমস্যায় জর্জরিত কত মানুষ! অনেকে ক্যানসারের চিকিৎসা নিচ্ছে! কত শিশু ও প্রবীণ এই গরমে ভুগছে মৌসুমি রোগব্যাধিতে। এবারও চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গু। এ অবস্থায় এসির মতো ওষুধের ব্যবসাও জমজমাট। শুধু নেই তাপপ্রবাহে এর গুণমান রক্ষার জোরালো উদ্যোগ!
লেখক: সাংবাদিক, বিশ্লেষক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

এপ্রিলের শুরু থেকে তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর বাইরেও এসি বিক্রি বেড়ে গেছে। মিডিয়াও ভালো বিজ্ঞাপন পাচ্ছে এর বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে।
০৬ মে ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

এপ্রিলের শুরু থেকে তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর বাইরেও এসি বিক্রি বেড়ে গেছে। মিডিয়াও ভালো বিজ্ঞাপন পাচ্ছে এর বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে।
০৬ মে ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

এপ্রিলের শুরু থেকে তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর বাইরেও এসি বিক্রি বেড়ে গেছে। মিডিয়াও ভালো বিজ্ঞাপন পাচ্ছে এর বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে।
০৬ মে ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

এপ্রিলের শুরু থেকে তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর বাইরেও এসি বিক্রি বেড়ে গেছে। মিডিয়াও ভালো বিজ্ঞাপন পাচ্ছে এর বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে।
০৬ মে ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫