Ajker Patrika

অদম্য নবনীতা

সম্পাদকীয়
আপডেট : ০৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১১: ৫৮
অদম্য নবনীতা

নবনীতা দেব সেন গিয়েছিলেন যোড়হাটে এক সাহিত্যসভায়। ইচ্ছে হলো সেখান থেকে যাবেন তাওয়াংয়ে। তাওয়াং এমন দুর্গম, যেখানে আদিবাসী মানুষ আর সেনাসদস্যরাই আছেন। সেখানে পারমিট নিয়ে যেতে হয়। মেয়েদের তো সেখানে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না।

কিন্তু নবনীতা যাবেন। শীত থেকে নিজেকে রক্ষা করার মতো জামাকাপড় নেই। তবু যাবেন। পারমিট জোগাড় হয়নি, তবু যাবেন। কোথায় গিয়ে উঠবেন, জানেন না, তবু যাবেন।

তেজপুরে এসে উঠলেন কয়েক পুরুষ ধরে এখানে থাকা এক বাঙালি পরিবারে। নবনীতাকে তারা চেনেন লেখার সূত্র ধরে। যত দিন ইচ্ছে, এখানে থাকা যাবে—এমনটাই ভাবছে এই বোস পরিবার। মিসেস বোস, অর্থাৎ যাঁকে এরই মধ্যে আলোদি বানিয়ে ফেলেছেন নবনীতা, তিনি একেবারেই চান না, নবনীতা তাওয়াংয়ে যান। অধ্যাপক বোসও তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে একমত। শুধু তাঁদের ছেলে শমী মা-বাবাকে বলে যাচ্ছে, ‘কেন মাসিকে যেতে দিচ্ছ না তোমরা? কুম্ভমেলায় কি ওকে যেতে দিতে তোমরা? মাসি তো গেছে। এ কারণেই না তোমরা বইটা পড়েছ!’

পারমিট আনার জন্য ইনারলাইন সরকারি অফিসে যাওয়া হলো। যিনি পারমিট দেবেন, তিনি তখন ইটানগরে। দুই-তিন দিন পর ফিরবেন তেজপুর। তাওয়াংয়ের এক ডাক্তারের জিপগাড়ি খারাপ হয়ে গেছে। তিনি একটি রেশন ট্রাকে করে ফিরবেন। তাঁর সঙ্গে ঝুলে পড়তে চাইলেন নবনীতা। কিন্তু সেটাও হলো না। তখন বোস পরিবারের কাছে টেলিফোন গাইডটা চাইলেন। সেখানে পাওয়া গেল পরিচিত এক নাম। ইটানগরে গভর্নরের উপদেষ্টার নাম মি. হাউন্ড, সে কথাই বলেছিলেন বিজয় হেনড্রিকে, সেখানকার এমএলএ। তাঁকে ফোন করলেন নবনীতা। অপর পাশ থেকে কেউ বলল, ‘নমস্কার। আমি হাউন্ড বলছি।’

 সিরিয়াস কণ্ঠে নবনীতা বললেন, ‘আমি ডক্টর নবনীতা দেব সেন বলছি।’

 ‘ও, ডক্টর দেব সেন? কালই আপনার একটা ইন্টারভিউ শুনলাম গৌহাটি রেডিওতে। তেজপুরে কবে এলেন?’

বেশি কথায় না গিয়ে নবনীতা তাওয়াংয়ের পারমিট চাইলেন এবং বিকেল পাঁচটার মধ্যেই হয়ে গেল সে পারমিট! এরপর তাওয়াং।

সূত্র: নবনীতা দেব সেন, ট্রাকবাহনে ম্যাকমাহনে, পৃষ্ঠা ৬৮-৭৩

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইউটিউবে ১০০০ ভিউতে আয় কত

বাকৃবির ৫৭ শিক্ষকসহ ১৫৪ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা

বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে পারে সরকার, ভয়ে কলকাতায় দিলীপ কুমারের আত্মহত্যা

স্ত্রী রাজি নন, সাবেক সেনাপ্রধান হারুনের মরদেহের ময়নাতদন্ত হবে না: পুলিশ

সাবেক সেনাপ্রধান হারুন ছিলেন চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্ট হাউসে, দরজা ভেঙে বিছানায় মিলল তাঁর লাশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত