Ajker Patrika

সকালে ধানখেতে সেচ বিকেলে ফাটল

সাদ্দাম হোসেন, ঠাকুরগাঁও
সকালে ধানখেতে সেচ বিকেলে ফাটল

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বিলপাড়া গ্রামের আব্দুর রহিম চলতি মৌসুমে পাঁচ বিঘা জমিতে রোপা আমন লাগিয়েছেন। কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি না হওয়ায় খেত শুকিয়ে যাচ্ছে। ফসল বাঁচাতে ডিজেলচালিত শ্যালো মেশিন দিয়ে সেচ দিচ্ছেন তিনি। তবে জমিতে পানি বেশি সময় থাকছে না। আব্দুর রহিম বলেন, ‘সকালে পানি দিলে বিকেলে এসে দেখি নাই। 
খেত ফেটে যাচ্ছে। তীব্র দাবদাহে ধানগাছও শুকিয়ে যাচ্ছে। একই জমিতে বারবার সেচ দেওয়ায় আবাদ খরচ বেড়ে যাচ্ছে।’

ঠাকুরগাঁওয়ে আমন চাষ করে শুধু আব্দুর রহিম নন, বিপাকে পড়েছেন জেলার অধিকাংশ কৃষক। কৃষকেরা বলছেন, শিগগিরই ভারী বৃষ্টিপাত না হলে ও দাবদাহ অব্যাহত থাকলে আমন ধানের চাষ ব্যাহত হবে, তেমনি উৎপাদনও কম হতে পারে। কৃষি বিভাগ বলছে, উৎপাদন যাতে ব্যাহত না হয়, এ জন্য বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন ও বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সেচ পাম্পগুলো চালু রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে।

জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা গেছে, কিছু কিছু এলাকায় নিচু জমিতে সামান্য পানি থাকলেও উঁচু জমির পানি শুকিয়ে গেছে। এসব উঁচু জমিতে পানি না থাকায় রোদে জমির মাটি ফেটে যাচ্ছে।

হরিপুর উপজেলার কাঁঠালডাঙ্গী গ্রামের কৃষক দেবেন্দ্র নাথ বলেন, ‘আমন ধানের চাষ বৃষ্টির ওপর নির্ভর করে। গত বছরও সেচের পানিতে আমন চাষ করতে হয়েছিল। চলতি বছর আষাঢ়-শ্রাবণ মাসেও বৃষ্টি হয়নি। এ সময় বৃষ্টিপাত না হওয়ায় আমরা বিপাকে পড়েছি।’

কাঁঠালডাঙ্গী গ্রামের কৃষক নেলভেলু রায় বলেন, ‘একে তো অনাবৃষ্টি, এর ওপর বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিকমতো থাকে না। এর মধ্যে সার ও ডিজেলের দামও বেড়েছে। আমরা একেবারে দিশেহারা হয়ে গেছি। এত খরচ কীভাবে উঠবে? কূলকিনারা খুঁজে পাচ্ছি না। আমাদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।’

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের আগস্ট মাসে গড়ে ২ হাজার ২৯৫ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়। এখন পর্যন্ত ৮৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। অন্যদিকে এ মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে জেলায় ১ লাখ ৩৭ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

এদিকে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবকে দায়ী করেছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আব্দুল আজিজ। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জেলার আমন চাষ মূলত বৃষ্টিনির্ভর। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এ সমস্যা তৈরি হয়েছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মেঘালয়ে হানিমুনের সময় ভাড়াটে খুনি দিয়ে স্বামীকে হত্যা, উত্তর প্রদেশে নববধূর আত্মসমর্পণ

ভিকারুননিসার ছাত্রী মেয়েকে সাঁতার শেখাচ্ছিলেন বাবা, ডুবে প্রাণ গেল দুজনেরই

মেঘালয়ে মধুচন্দ্রিমায় খুন—কীভাবে এক নববধূ হয়ে উঠলেন হত্যাকারী

কানাডার লেকে বোট উল্টে বাংলাদেশের পাইলট ও গার্মেন্টস ব্যবসায়ীর মৃত্যু

হাসিনার মতো মাফিয়াকে বিতাড়িত করেছি, এখন আমরাই বড় মাফিয়া: এনসিপি নেতা জুবাইরুল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত