Ajker Patrika

শেরপুরে ধানে ব্লাস্টের আক্রমণ

শেরপুর প্রতিনিধি
Thumbnail image

শেরপুরে ‘নেক ব্লাস্ট’ বা ঘাড় পচা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় ফলন নিয়ে শঙ্কায় কৃষকেরা। এ রোগের কারণে ধানগাছের শিষ শুকিয়ে ধানে চিটা হয়ে যাচ্ছে। একদিকে সম্প্রতি হয়ে যাওয়া শিলাবৃষ্টিতে বোরো আবাদের ক্ষতি, আরেকদিকে নেক ব্লাস্টের আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা। তাঁরা বলছেন, কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী কীটনাশক প্রয়োগ করেও এ রোগ থেকে ধানগাছ রক্ষা করা যাচ্ছে না।

জানা গেছে, শেরপুরে চলতি বোরো মৌসুমে ৯১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছে প্রায় ৯৫ হাজার ৬৯৬ হেক্টর জমিতে। অনেকেই ধার-দেনা ও ব্যাংক ঋণ করে আবাদ করেছেন। ধানগাছ ভালোই হয়েছিল।

 তবে যখন ধানের শিষ বের হয়ে পাকতে শুরু করেছে, তখনই সদরসহ জেলার বিভিন্ন এলাকার কয়েক শ একর জমির ধান নেক ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে। নেক ব্লাস্ট রোগের প্রাদুর্ভাবে ধানের শিষ আস্তে আস্তে শুকিয়ে সাদা হয়ে ধান চিটা হয়ে যাচ্ছে।

এ ছাড়া কদিন আগে শিলাবৃষ্টিতেও জেলার প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এ দুটি দুর্যোগে এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা। 
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, ২৫-২৬ হেক্টর জমি ব্লাস্ট রোগে ক্ষতি হয়েছে। তবে কৃষকদের দাবি, ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ ২০০ হেক্টর ছাড়িয়ে যাবে। 
শেরপুর সদর উপজেলার বাজিতখিলা ইউনিয়নের বাজিতখিলা, সুলতানপুর, পাকুড়িয়া ইউনিয়নের কিছু অংশ, চরশেরপুর, কামারেররচর ও ধলা ইউনিয়নসহ জেলার বেশ কিছু এলাকায় এ রোগের প্রভাব পড়েছে। এসব এলাকার অনেক খেতের ধানের শিষ সাদা হয়ে শুকিয়ে গেছে এবং ধান চিটা হয়ে যাচ্ছে।

শুক্রবার কথা হয় বেশ কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে। সদর উপজেলার চরশেরপুর এলাকার মো. আব্দুল মালেক বলেন, ‘আমার খেতে বোরো ধানের শিষ মইরা যাইতেছে। কৃষি কর্মকর্তার কাছ থেকে শুইনা কীটনাশক নিয়া ছিটাইতাছি। কিন্তু তাতে কোনো কাম হইতেছে না। আমি কর্জ কইরা এবার ধান আবাদ করছি। ধান যদি না হয়, তাইলে মাইনসেরে টাকা কেমনে দিমু।’

সুলতানপুর গ্রামের কৃষক মো. কবির হোসেন বলেন, ‘আমরা কষ্ট কইরা ঋণ কইরা ধান লাগাইছি। এবার আমগর ধান শিষে খাই নাই। ধান বেশ ভালো হইছে। কিন্তু এহনতো ধানে চিটা হয়ে যাইতাছে। ফলন না পাইলে যে ঋণ করছি তা পরিশোধ কেমনে করমু?’ আরেক কৃষক মো. মনু মিয়া বলেন, ‘ধান যা লাগাইছি সব তো আস্তে আস্তে শেষ হয়ে যাইতাছে। এহন ধানের শিষ বের হওয়ার সময়। আর এখনই ধানের শিষ নষ্ট হইয়া যাইতাছে। সামনের দিনগুলাতে খামু কী আর সংসার কীভাবে চালামু বুঝতাছি না।’ একই কথা জানান বাজিতখিলা এলাকার কৃষক নদর আলী, হোসেন আলীসহ অন্য কৃষকেরা।

তবে কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, ‘আবহাওয়ার কারণে এ রোগটি দেখা দিয়েছে। তবে পরিমাণ মোট আবাদের তুলনায় খুব বেশি না। ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করে সুফল পাওয়া যাচ্ছে।’

এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মোহিত কুমার দে বলেন, ‘জেলার যেসব জমিতে ব্রি-২৮ ও ৮৪ জাতের ধান চাষ করা হয়েছে, সেসব জমিতে এ নেক ব্লাস্ট রোগ বেশি দেখা দিয়েছে। প্রতিবছরই এ জাতের ধানে এই নেক ব্লাস্ট আক্রমণ করে থাকে। তাই আমরা কৃষকদের এ দুই জাতের ধান চাষ না করতে অনুরোধ করে থাকি।’ তিনি বলেন, ‘জেলায় ২৫-২৬ হেক্টর জমিতে নেক ব্লাস্ট দেখা দিয়েছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

বিয়ে করলেন সারজিস আলম

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়ছে শ্রীলঙ্কা, ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ কোথায় দেখবেন

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

সাবেক শিক্ষার্থীর প্রাইভেট কারে ধাক্কা, জাবিতে ১২ বাস আটকে ক্ষতিপূরণ আদায় ছাত্রদলের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত