Ajker Patrika

টাকা আত্মসাতের মামলায় ব্যাংক কর্মকর্তার কারাদণ্ড

আদালত প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ০২ মার্চ ২০২২, ১৬: ৩৯
টাকা আত্মসাতের মামলায় ব্যাংক কর্মকর্তার কারাদণ্ড

চট্টগ্রামে গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ মামলার রায়ে সোনালী ব্যাংকের সাবেক শাখা ব্যবস্থাপককে (ভারপ্রাপ্ত) ৯ বছর কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ৯ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্পেশাল জজ মুনশি আবদুল মজিদ গতকাল মঙ্গলবার এ রায় দেন।

আসামি মো. ইউনুস (৫০) সাতকানিয়া উপজেলার মইষ্যামুড়া এলাকার মৃত আলী হোসেনের ছেলে। তিনি পলাতক রয়েছেন। ১৯৯৯ সালে ৯ গ্রাহকের ৭৮ হাজার ৪০ টাকা তাঁদের হিসাবে জমা না দিয়ে তিনি আত্মসাৎ করেন।

আসামির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারার অপরাধে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, ৫ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর, ৪২০ ধারার দুই বছর জরিমানা, ২ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাস কারাদণ্ড, ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারার অপরাধে দুই বছর কারাদণ্ড, ২ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।

আসামি ১৯৯৯ সালে সোনালী ব্যাংক কৃষি শাখা সাতকানিয়া উপজেলার মরফলা বাজার শাখার ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে ছিলেন।

দুদকের পিপি অ্যাডভোকেট মাহমুদুল হক মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, আসামি ৯ গ্রাহকের জামানতের টাকা তহবিলে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। তিনি বলেন, ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আসামি বহু গ্রাহকের টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করতেন। এ গ্রাহকদের বেশির ভাগ নিরক্ষর, দরিদ্র। গ্রাহকের টাকা নিয়ে আসামি নিজের স্বাক্ষর করা ব্যাংক রসিদ দিতেন। পাস বইয়েও জমা হওয়ার অঙ্ক লিখে স্বাক্ষর দিতেন। কিন্তু ব্যাংকের শাখার বালামে তা তুলতেন না। এভাবে ৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি ১৫ লাখ ৭০ হাজার ২৯৮ টাকা আত্মসাৎ করেন। এ ঘটনায় ব্যাংকের পক্ষ থেকে ছয় বছরের জন্য ছয়টি পৃথক মামলা করা হয়।

২২ ফেব্রুয়ারি একটি আত্মসাতের মামলার রায়ে ৫ বছর কারাদণ্ডাদেশ দেন একই আদালত। এ ছাড়া ২৪ ফেব্রুয়ারি একই শাখার গ্রাহকের মাত্র ১০০ টাকা আত্মসাতের দায়ে ২ বছরের কারাদণ্ড ও ৪০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। এ নিয়ে ছয় মামলার মধ্যে তিন মামলায় রায় দেওয়া হয়েছে।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, সাতকানিয়ার মরফলা বাজারে শাখার সোনালী ব্যাংকের ইনচার্জ থাকাকালে তিনি ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ১৫ লাখ ৭০ হাজার ২৯৮ টাকা আত্মসাৎ করেন। শাখাটি খোলা হয়েছিল কৃষক ও স্বল্প আয়ের মানুষের ঋণ দেওয়া ও সঞ্চয়ের জন্য। প্রতি সোমবার ও বুধবার শাখাটির কার্যক্রম চলত। ব্যাংকিং সময় শেষে উপজেলা শাখায় কাগজপত্রসহ হিসাব জমা দেওয়ার নিয়ম ছিল ইউনুছের। কিন্তু তিনি গ্রাহকদের পাস বইয়ে টাকা জমা নেওয়ার স্বাক্ষর করলেও ব্যাংকের বালাম বইয়ে জমার হিসাব তুলতেন না। তিনি অক্ষরজ্ঞানহীন কতিপয় গ্রাহকদের টাকা আত্মসাৎ করতেন। এ ঘটনা ধরা পড়লে ব্যাংক অভ্যন্তরীণ তদন্ত করে। পরে ২০০১ সালের ৩১ মে সোনালী ব্যাংক সাতকানিয়া উপজেলা শাখার ব্যবস্থাপক আব্দুস সবুর সাতকানিয়া থানায় মামলা করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত