Ajker Patrika

আঙুলের ছাপ নিয়ে বিড়ম্বনা

শিবালয় (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১: ১১
Thumbnail image

মানিকগঞ্জের শিবালয়ের সাত ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভোট গ্রহণ হয়েছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। গতকাল সোমবার ষষ্ঠ ধাপে এই ভোট গ্রহণ হয়। সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ হলেও ইভিএম নিয়ে বাধে বিপত্তি। অনেকেই ইভিএমে কীভাবে ভোট দিতে হয়, তা না জানায় ভোট গ্রহণে সময় লাগে। এতে ভোগান্তিতে পড়েন ভোট দেওয়ার জন্য কেন্দ্রের বাইরে অপেক্ষমাণ ভোটাররা। আবার ইভিএমে অনেকের আঙুলের ছাপ না মেলায় ভোট 
না দিয়েই কেন্দ্রে থেকে ফিরে গেছেন। তবে অনেকের ছাপ প্রথমে না এলেও আঙুলে জেল ব্যবহারের ফলে তা এসেছে।

সরেজমিন দেখা যায়, শিবালয় মডেল ইউপির আরিচা বেলায়েত হোসেন উচ্চবিদ্যালয়ের নারী কেন্দ্রের চারটি বুথে বেলা ১১টায়  ভোট পড়েছে মাত্র ১৪৬টি। যার মোট ভোটসংখ্যা প্রায় ১ হাজার ৮০০। অন্যদিকে শিবালয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পুরুষ কেন্দ্রের সমপরিমাণ বুথে একই সময়ে ভোট পড়ে মাত্র ২৫৩টি। এ কেন্দ্রে ভোটারের সংখ্যা প্রায় ২ হাজার ৩০০।

বাইরে লাইনে দাঁড়িয়ে এই কেন্দ্রের ভোটার মো. ওয়াজ উদ্দিন ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘মেশিনে ভোট দিতে অনেক দেরি হচ্ছে। প্রায় দেড় ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। কখন যে ভোট দিতে পারব তা বলা মুশকিল।’ এই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান বলেন, এখানে প্রথম ইভিএমে ভোট গ্রহণ চলছে। এতে সাধারণ ভোটাররা কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে পড়েছেন। কেউ কেউ ভোট দানের পদ্ধতি বুঝতে না পারায় ভোট গ্রহণে কিছুটা সময় বেশি ব্যয় হচ্ছে।’ 
আঙুলের ছাপ না মেলার প্রসঙ্গে মতিউর রহমান বলেন, অনেকের আঙুলের ছাপ ইভিএমে ‘শো’ না করায় জেল ব্যবহারের পাশাপাশি অতিরিক্ত ফিঙ্গার মেশিন ব্যবহার করা হয়েছে।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একই ইউনিয়নের ছোট আনুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দেখা যায় নারী-পুরুষ ভোটারদের দীর্ঘ সারি। কেন্দ্রে আসা মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘বাড়ির কাজ রাইখ্যা ভোট দিতে আইছি। সকালে আইছি-দুপুর হয়ে গেল কখন ভোট দিমু।’ ভোটকেন্দ্র থেকে বের হওয়া আলেয়া বলেন, ‘মেশিনে আঙুলের ছাপ নিতে দেরি হওয়ায় ব্যাটারা আঙুলে জেল মেখে দিয়েছে বলে ভোট দিতে পারছি।’ পছন্দের প্রার্থীকে প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোট দিতে পেরে বেজায় খুশি আলেয়া। এই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘এই কেন্দ্রের মোট ভোটার ২ হাজার ২০১ জন। যার মধ্যে নারী ভোটারের সংখ্যা বেশি। ভোটার উপস্থিতি উল্লেখ করার মতো হলেও বয়স্ক ও নারী ভোটাররা ভোট দিতে বেশি সময় নিচ্ছে।’ 
তেওতা ইউনিয়নের জমদুয়ারা প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। এই কেন্দ্রে ভোট নেওয়া হচ্ছে বিদ্যালয় আঙিনায় রঙিন কাপড়ে ঘেরা বুথে। এখানে এক সারিতে ডেকোরেটরের মধ্যমে তৈরি করা হয়েছে চারটি বুথ।

এখানে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বে থাকা রফিকুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ে পর্যাপ্তসংখ্যক কক্ষ না থাকায় বাইরে এই আয়োজন করা হয়েছে। ভোটারদের সুবিধার্থে এই ওয়ার্ডের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরাই ডেকোরেটরের অর্থ জুগিয়েছেন। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে শতভাগ ইভিএম ভোটিং মেশিনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ করা হয়েছে। তবে এই উপজেলায় প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোট গ্রহণ করায় সাধারণ ভোটারদের এক-তৃতীয়াংশ কিছুটা বিচলিত হয়ে পড়লেও বাকিরা স্বচ্ছন্দে ভোট দিয়েছেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত