ড. মইনুল ইসলাম

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী সিটি করপোরেশনের গৃহকর বাড়ানোর জন্য করহার নির্ধারণে ১৯৮৬ সালের ‘দ সিটি করপোরেশন ট্যাক্সেশন রুলস’ অধ্যাদেশটি অনুসরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমি মনে করি এটা মারাত্মক ভুল সিদ্ধান্ত। ২০২১ সালে আমি তাঁকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলাম যে ভূতপূর্ব মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ২০১৬ সালে একই অধ্যাদেশের ভিত্তিতে গৃহকর নির্ধারণ করতে গিয়ে তাঁর জনপ্রিয়তা হারিয়ে চরম বিপদে পড়েছিলেন। ওই অধ্যাদেশের ভিত্তিতে বর্ধিত গৃহকর বিদ্যমান করের তুলনায় ছয় থেকে দশ গুণ বেড়ে যাওয়ায় ব্যাপক আন্দোলন সৃষ্টি হয়েছিল।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীও ওই আন্দোলনে শরিক হয়েছিলেন। এর কিছুদিনের মধ্যে একই ভুল অধ্যাদেশ অনুসরণ করতে গিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তদানীন্তন মেয়র সাঈদ খোকনকেও ব্যাপক আন্দোলন মোকাবিলা করতে হয়েছিল। ঢাকা ও চট্টগ্রামের আন্দোলনের তীব্রতায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ব্যাপারটা স্থগিত হয়েছিল। দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে যে মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেওয়া রেজাউল করিম চৌধুরী ভুল অধ্যাদেশটির সংশোধনের উদ্যোগ না নিয়ে আবারও ওটাই অনুসরণে গৃহকর বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। ইতিমধ্যেই করদাতাদের কাছে নতুনভাবে নির্ধারিত গৃহকরের চাহিদাপত্র পৌঁছে গেছে। সাবেক মেয়র নাছির উদ্দীনের মতো পত্রপত্রিকায় মেয়র রেজাউল করিম মন্তব্য করে চলেছেন যে সংক্ষুব্ধ করদাতা সিটি করপোরেশনের কাছে আপিল করলে গৃহকর কমিয়ে দেওয়া হবে।
এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ঘুষ-দুর্নীতির ফ্লাডগেট যে খুলে দেওয়া হচ্ছে, সেটা কি তিনি বুঝতে পারছেন না? অযৌক্তিকভাবে গৃহকর বাড়িয়ে দিয়ে আপিলের মাধ্যমে তা কমিয়ে দিলে শুধু দুর্নীতিই বাড়বে। সরকারকেও উপলব্ধি করতে হবে যে বাড়িভাড়ার আয়ের ভিত্তিতে গৃহকর নির্ধারণ মারাত্মক ভুল পদ্ধতি। গৃহকর যেহেতু সম্পত্তি কর (প্রোপার্টি ট্যাক্স), তাই সারা বিশ্বের সিটি গভর্নমেন্টগুলো সম্পত্তির লোকেশন, স্থাপনার মান ও ধরন এবং আয়তনের ভিত্তিতে হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ করে থাকে। করদাতার বাড়িভাড়ার আয়ের ভিত্তিতে যেহেতু এনবিআর কর্তৃক আয়কর নির্ধারিত হয়, তাই আবার হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণেও যদি বাড়িভাড়ার আয়কেই নির্ধারক বিবেচনা করা হয়, তাহলে ‘ডবল ট্যাক্সেশন অব ইনকাম’ সমস্যার উদ্ভব হবে, যা করনীতির চরম লঙ্ঘন বিধায় বাতিলযোগ্য।
২০১৭ সালের ১৩ অক্টোবর একটি জাতীয় দৈনিকের প্রধান শিরোনাম হিসেবে যে চাঞ্চল্যকর খবরটা প্রকাশিত হয়েছিল তা হলো, দেশের ১১টি সিটি করপোরেশনে মোট ছয় ধরনের গৃহকরের হার বলবৎ রয়েছে, যেখানে ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনে বার্ষিক সর্বনিম্ন ১২ শতাংশ, খুলনা সিটি করপোরেশনে ১৬ শতাংশ, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে ১৭ শতাংশ, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে ১৯ শতাংশ, সিলেট ও রংপুর সিটি করপোরেশনে ২০ শতাংশ এবং রাজশাহী ও বরিশাল সিটি করপোরেশনে ২৭ শতাংশ হারে গৃহকর আদায় করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু এই ছয় রকমের গৃহকরের হারের ফলে রাজশাহী ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের করদাতারা অন্য ৯ নগরীর করদাতাদের চেয়ে বেশি পরিমাণ গৃহকর দিচ্ছেন বলে ধারণা করলে ভুল হবে। কারণ, এই ১১টি সিটি করপোরেশনে বাড়ির ভ্যালুয়েশনে কোনো ইউনিফর্ম পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় না। বাংলাদেশের ১১টি সিটি করপোরেশনের গৃহকর নির্ধারণ ও আদায়ের পদ্ধতিগুলোতে চরম নৈরাজ্য বিরাজ করছে। অতএব অবিলম্বে দেশের সব সিটি করপোরেশনের গৃহকর নির্ধারণ পদ্ধতিকে ইউনিফর্ম করার জন্য একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিশন (বা কমিটি) গঠন করে কমিশনের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কর্তৃক অবিলম্বে সংসদে একটি আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া ফরজ হয়ে গেছে। কারণ, ১৯৮৬ সালের ‘দ্য সিটি করপোরেশন ট্যাক্সেশন রুলস’ অনুসরণে এই ১১টি সিটি করপোরেশনের যেখানেই গৃহকর নির্ধারণের উদ্যোগ নেওয়া হবে, সেখানেই করদাতাদের তোপের মুখে পড়তে হবে কর্তৃপক্ষকে।

বর্তমানে এই ১১টি সিটি করপোরেশনের কোনোটিতেই গৃহকরের হার নির্ধারণের ভিত্তি হিসেবে বাড়িভাড়ার আয়কে এখনো ব্যবহার করা হয় না। অথচ ১৯৮৬ সালের দ্য সিটি করপোরেশন ট্যাক্সেশন রুলস অধ্যাদেশটি জারি করা হয়েছিল দেশের তদানীন্তন চারটি সিটি করপোরেশন—ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রাজশাহীর জন্য। অধ্যাদেশ জারির ৩৬ বছর পার হয়ে গেলেও দেশের রাজধানী ঢাকাসহ কোনো নগরেই বাড়িভাড়ার আয়ের ভিত্তিতে গৃহকর নির্ধারণের ব্যবস্থা বাস্তবায়িত হয়নি। দেখা যাচ্ছে, খোদ ঢাকা সিটি করপোরেশনে বাড়ির মেঝের আয়তন বর্গফুটের ভিত্তিতে হিসাব করে প্রতি বর্গফুট চার টাকা থেকে শুরু করে ষোলো টাকা ধরে সম্পত্তির ভ্যালুয়েশন নির্ধারণ করে ওই ভ্যালুয়েশনের ওপর ১২ শতাংশ হারে গৃহকর নির্ধারণের নিয়ম অনুসরণ করা হচ্ছে। ১৯৮৬ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে তিনবার গৃহকর পুনর্মূল্যায়ন করা হয়েছে, প্রতিবারই বাড়ির মেঝের আয়তন বর্গফুটের ভিত্তিতে ভ্যালুয়েশন করে তা করা হয়েছে। প্রতিবারই নতুন নির্ধারিত গৃহকর পুরোনো গৃহকরের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি নির্ধারিত হলেও এগুলো নিয়ে ২৯ বছরে ব্যাপক প্রতিবাদ-প্রতিরোধ আন্দোলন দেখা যায়নি। কারণ, ওই বর্ধিত গৃহকরের পরিমাণ কোনোবারই করদাতাদের কাছে অস্বাভাবিক ও অসহনীয় বিবেচিত হয়নি। কিন্তু ২০১৬ সালে নাছির উদ্দীন ১৯৮৬ সালের ওই অধ্যাদেশের ভিত্তিতে বাংলাদেশের ১১টি সিটি করপোরেশনের মধ্যে চট্টগ্রামে প্রথম বাড়িভাড়ার আয়ের ভিত্তিতে গৃহকর পুনর্মূল্যায়ন শুরু করেন। এর ফলে ব্যাপক ক্ষোভ ও আন্দোলন হয়েছিল।
আমি আবারও বলছি, বিশ্বের কোথাও হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়িভাড়ার আয়ের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয় না। কারণ, হোল্ডিং ট্যাক্স প্রকৃতপক্ষে যেহেতু সম্পত্তি কর বা প্রোপার্টি ট্যাক্স, তাই বিশ্বের সব সিটি করপোরেশনে প্রোপার্টি ট্যাক্সের নিয়মে এই কর আদায় করা হয়। নিয়মটি হলো: বিশ্বের প্রোপার্টি ট্যাক্স আরোপ করা হয় সম্পত্তির ভ্যালুয়েশনের ভিত্তিতে। আর সম্পত্তির ভ্যালুয়েশন করা হয় ওই সম্পত্তির অবস্থান ও আয়তনের (বর্গমিটার) ভিত্তিতে। নগরীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোয় হোল্ডিং ট্যাক্সের হার প্রতি বর্গমিটারে সবচেয়ে বেশি হবে, এর পরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে এই হার ক্রমেই কমবে। এভাবে নগরীর কেন্দ্রে যে হারে হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারিত হবে তা ক্রমেই কমতে কমতে শহরতলিতে এসে সর্বনিম্ন হবে। বাড়ির গুণগত মানের ভিত্তিতেও ভ্যালুয়েশন বাড়বে বা কমবে। যেমন মার্বেল পাথর বা টাইলসের মেঝে হলে প্রতি বর্গমিটারে যে ভ্যালুয়েশন হবে, মোজাইকের হলে তার চেয়ে কমবে। শুধু সিমেন্টের মেঝে হলে ভ্যালুয়েশন আরও কমে যাবে।
টিনের ছাউনির পাকা ঘর হলে ভ্যালুয়েশন একেবারেই কমে যাবে। বেড়ার ঘর হলে হয়তো কোনো গৃহকরই ধার্য হবে না। ২০১৬ সালে আমি নিজের উদ্যোগে ভারতের কলকাতা নগরী থেকে ওখানকার গৃহকর নির্ধারণের পদ্ধতি সম্পর্কে খবরাখবর সংগ্রহ করে এনেছিলাম। কলকাতা সিটি করপোরেশনেও সম্পত্তির অবস্থান, বাড়ির মেঝের আয়তন ও বাড়ির গুণগত মান বিবেচনা করে হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ করা হয়। ভারতের সব সিটি করপোরেশনে একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।
মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীও নিজের উদ্যোগে কলকাতা, দিল্লি ও মুম্বাইয়ের মতো সিটি করপোরেশনের গৃহকর পদ্ধতি সম্পর্কে খবরাখবর সংগ্রহ করে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারেন। এরপর তাঁর দায়িত্ব হবে ১৯৮৬ সালের দ্য সিটি করপোরেশন ট্যাক্সেশন রুলস অধ্যাদেশ সংশোধনের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো। একটি ভুল অধ্যাদেশের ভিত্তিতে সিটি করপোরেশনগুলোর গৃহকর আদায়ের ‘তুঘলকি জবরদস্তি’ সমর্থনযোগ্য হতে পারে না। স্বৈরাচার এরশাদের আমলে বাড়িভাড়ার আয়ের ভিত্তিতে গৃহকর নির্ধারণের যে ধারণা বেরিয়ে এসেছে, সেটাকে অপরিবর্তনীয় বিবেচনা করা ক্ষমতাসীন মহাজোট সরকারের জন্য বড় ভুল হয়ে যাচ্ছে। ১৯৮৬ সালের দ্য সিটি করপোরেশন ট্যাক্সেশন রুলস যথাযথ সংশোধন করে একটি নতুন আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য আমি সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি। এই আইন প্রণীত হওয়া পর্যন্ত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন আগের নিয়মে গৃহকর আদায় অব্যাহত রাখুক—এটাই আমার প্রত্যাশা।
লেখক: অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর, অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী সিটি করপোরেশনের গৃহকর বাড়ানোর জন্য করহার নির্ধারণে ১৯৮৬ সালের ‘দ সিটি করপোরেশন ট্যাক্সেশন রুলস’ অধ্যাদেশটি অনুসরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমি মনে করি এটা মারাত্মক ভুল সিদ্ধান্ত। ২০২১ সালে আমি তাঁকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলাম যে ভূতপূর্ব মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ২০১৬ সালে একই অধ্যাদেশের ভিত্তিতে গৃহকর নির্ধারণ করতে গিয়ে তাঁর জনপ্রিয়তা হারিয়ে চরম বিপদে পড়েছিলেন। ওই অধ্যাদেশের ভিত্তিতে বর্ধিত গৃহকর বিদ্যমান করের তুলনায় ছয় থেকে দশ গুণ বেড়ে যাওয়ায় ব্যাপক আন্দোলন সৃষ্টি হয়েছিল।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীও ওই আন্দোলনে শরিক হয়েছিলেন। এর কিছুদিনের মধ্যে একই ভুল অধ্যাদেশ অনুসরণ করতে গিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তদানীন্তন মেয়র সাঈদ খোকনকেও ব্যাপক আন্দোলন মোকাবিলা করতে হয়েছিল। ঢাকা ও চট্টগ্রামের আন্দোলনের তীব্রতায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ব্যাপারটা স্থগিত হয়েছিল। দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে যে মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেওয়া রেজাউল করিম চৌধুরী ভুল অধ্যাদেশটির সংশোধনের উদ্যোগ না নিয়ে আবারও ওটাই অনুসরণে গৃহকর বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। ইতিমধ্যেই করদাতাদের কাছে নতুনভাবে নির্ধারিত গৃহকরের চাহিদাপত্র পৌঁছে গেছে। সাবেক মেয়র নাছির উদ্দীনের মতো পত্রপত্রিকায় মেয়র রেজাউল করিম মন্তব্য করে চলেছেন যে সংক্ষুব্ধ করদাতা সিটি করপোরেশনের কাছে আপিল করলে গৃহকর কমিয়ে দেওয়া হবে।
এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ঘুষ-দুর্নীতির ফ্লাডগেট যে খুলে দেওয়া হচ্ছে, সেটা কি তিনি বুঝতে পারছেন না? অযৌক্তিকভাবে গৃহকর বাড়িয়ে দিয়ে আপিলের মাধ্যমে তা কমিয়ে দিলে শুধু দুর্নীতিই বাড়বে। সরকারকেও উপলব্ধি করতে হবে যে বাড়িভাড়ার আয়ের ভিত্তিতে গৃহকর নির্ধারণ মারাত্মক ভুল পদ্ধতি। গৃহকর যেহেতু সম্পত্তি কর (প্রোপার্টি ট্যাক্স), তাই সারা বিশ্বের সিটি গভর্নমেন্টগুলো সম্পত্তির লোকেশন, স্থাপনার মান ও ধরন এবং আয়তনের ভিত্তিতে হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ করে থাকে। করদাতার বাড়িভাড়ার আয়ের ভিত্তিতে যেহেতু এনবিআর কর্তৃক আয়কর নির্ধারিত হয়, তাই আবার হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণেও যদি বাড়িভাড়ার আয়কেই নির্ধারক বিবেচনা করা হয়, তাহলে ‘ডবল ট্যাক্সেশন অব ইনকাম’ সমস্যার উদ্ভব হবে, যা করনীতির চরম লঙ্ঘন বিধায় বাতিলযোগ্য।
২০১৭ সালের ১৩ অক্টোবর একটি জাতীয় দৈনিকের প্রধান শিরোনাম হিসেবে যে চাঞ্চল্যকর খবরটা প্রকাশিত হয়েছিল তা হলো, দেশের ১১টি সিটি করপোরেশনে মোট ছয় ধরনের গৃহকরের হার বলবৎ রয়েছে, যেখানে ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনে বার্ষিক সর্বনিম্ন ১২ শতাংশ, খুলনা সিটি করপোরেশনে ১৬ শতাংশ, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে ১৭ শতাংশ, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে ১৯ শতাংশ, সিলেট ও রংপুর সিটি করপোরেশনে ২০ শতাংশ এবং রাজশাহী ও বরিশাল সিটি করপোরেশনে ২৭ শতাংশ হারে গৃহকর আদায় করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু এই ছয় রকমের গৃহকরের হারের ফলে রাজশাহী ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের করদাতারা অন্য ৯ নগরীর করদাতাদের চেয়ে বেশি পরিমাণ গৃহকর দিচ্ছেন বলে ধারণা করলে ভুল হবে। কারণ, এই ১১টি সিটি করপোরেশনে বাড়ির ভ্যালুয়েশনে কোনো ইউনিফর্ম পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় না। বাংলাদেশের ১১টি সিটি করপোরেশনের গৃহকর নির্ধারণ ও আদায়ের পদ্ধতিগুলোতে চরম নৈরাজ্য বিরাজ করছে। অতএব অবিলম্বে দেশের সব সিটি করপোরেশনের গৃহকর নির্ধারণ পদ্ধতিকে ইউনিফর্ম করার জন্য একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিশন (বা কমিটি) গঠন করে কমিশনের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কর্তৃক অবিলম্বে সংসদে একটি আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া ফরজ হয়ে গেছে। কারণ, ১৯৮৬ সালের ‘দ্য সিটি করপোরেশন ট্যাক্সেশন রুলস’ অনুসরণে এই ১১টি সিটি করপোরেশনের যেখানেই গৃহকর নির্ধারণের উদ্যোগ নেওয়া হবে, সেখানেই করদাতাদের তোপের মুখে পড়তে হবে কর্তৃপক্ষকে।

বর্তমানে এই ১১টি সিটি করপোরেশনের কোনোটিতেই গৃহকরের হার নির্ধারণের ভিত্তি হিসেবে বাড়িভাড়ার আয়কে এখনো ব্যবহার করা হয় না। অথচ ১৯৮৬ সালের দ্য সিটি করপোরেশন ট্যাক্সেশন রুলস অধ্যাদেশটি জারি করা হয়েছিল দেশের তদানীন্তন চারটি সিটি করপোরেশন—ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রাজশাহীর জন্য। অধ্যাদেশ জারির ৩৬ বছর পার হয়ে গেলেও দেশের রাজধানী ঢাকাসহ কোনো নগরেই বাড়িভাড়ার আয়ের ভিত্তিতে গৃহকর নির্ধারণের ব্যবস্থা বাস্তবায়িত হয়নি। দেখা যাচ্ছে, খোদ ঢাকা সিটি করপোরেশনে বাড়ির মেঝের আয়তন বর্গফুটের ভিত্তিতে হিসাব করে প্রতি বর্গফুট চার টাকা থেকে শুরু করে ষোলো টাকা ধরে সম্পত্তির ভ্যালুয়েশন নির্ধারণ করে ওই ভ্যালুয়েশনের ওপর ১২ শতাংশ হারে গৃহকর নির্ধারণের নিয়ম অনুসরণ করা হচ্ছে। ১৯৮৬ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে তিনবার গৃহকর পুনর্মূল্যায়ন করা হয়েছে, প্রতিবারই বাড়ির মেঝের আয়তন বর্গফুটের ভিত্তিতে ভ্যালুয়েশন করে তা করা হয়েছে। প্রতিবারই নতুন নির্ধারিত গৃহকর পুরোনো গৃহকরের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি নির্ধারিত হলেও এগুলো নিয়ে ২৯ বছরে ব্যাপক প্রতিবাদ-প্রতিরোধ আন্দোলন দেখা যায়নি। কারণ, ওই বর্ধিত গৃহকরের পরিমাণ কোনোবারই করদাতাদের কাছে অস্বাভাবিক ও অসহনীয় বিবেচিত হয়নি। কিন্তু ২০১৬ সালে নাছির উদ্দীন ১৯৮৬ সালের ওই অধ্যাদেশের ভিত্তিতে বাংলাদেশের ১১টি সিটি করপোরেশনের মধ্যে চট্টগ্রামে প্রথম বাড়িভাড়ার আয়ের ভিত্তিতে গৃহকর পুনর্মূল্যায়ন শুরু করেন। এর ফলে ব্যাপক ক্ষোভ ও আন্দোলন হয়েছিল।
আমি আবারও বলছি, বিশ্বের কোথাও হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়িভাড়ার আয়ের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয় না। কারণ, হোল্ডিং ট্যাক্স প্রকৃতপক্ষে যেহেতু সম্পত্তি কর বা প্রোপার্টি ট্যাক্স, তাই বিশ্বের সব সিটি করপোরেশনে প্রোপার্টি ট্যাক্সের নিয়মে এই কর আদায় করা হয়। নিয়মটি হলো: বিশ্বের প্রোপার্টি ট্যাক্স আরোপ করা হয় সম্পত্তির ভ্যালুয়েশনের ভিত্তিতে। আর সম্পত্তির ভ্যালুয়েশন করা হয় ওই সম্পত্তির অবস্থান ও আয়তনের (বর্গমিটার) ভিত্তিতে। নগরীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোয় হোল্ডিং ট্যাক্সের হার প্রতি বর্গমিটারে সবচেয়ে বেশি হবে, এর পরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে এই হার ক্রমেই কমবে। এভাবে নগরীর কেন্দ্রে যে হারে হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারিত হবে তা ক্রমেই কমতে কমতে শহরতলিতে এসে সর্বনিম্ন হবে। বাড়ির গুণগত মানের ভিত্তিতেও ভ্যালুয়েশন বাড়বে বা কমবে। যেমন মার্বেল পাথর বা টাইলসের মেঝে হলে প্রতি বর্গমিটারে যে ভ্যালুয়েশন হবে, মোজাইকের হলে তার চেয়ে কমবে। শুধু সিমেন্টের মেঝে হলে ভ্যালুয়েশন আরও কমে যাবে।
টিনের ছাউনির পাকা ঘর হলে ভ্যালুয়েশন একেবারেই কমে যাবে। বেড়ার ঘর হলে হয়তো কোনো গৃহকরই ধার্য হবে না। ২০১৬ সালে আমি নিজের উদ্যোগে ভারতের কলকাতা নগরী থেকে ওখানকার গৃহকর নির্ধারণের পদ্ধতি সম্পর্কে খবরাখবর সংগ্রহ করে এনেছিলাম। কলকাতা সিটি করপোরেশনেও সম্পত্তির অবস্থান, বাড়ির মেঝের আয়তন ও বাড়ির গুণগত মান বিবেচনা করে হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ করা হয়। ভারতের সব সিটি করপোরেশনে একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।
মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীও নিজের উদ্যোগে কলকাতা, দিল্লি ও মুম্বাইয়ের মতো সিটি করপোরেশনের গৃহকর পদ্ধতি সম্পর্কে খবরাখবর সংগ্রহ করে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারেন। এরপর তাঁর দায়িত্ব হবে ১৯৮৬ সালের দ্য সিটি করপোরেশন ট্যাক্সেশন রুলস অধ্যাদেশ সংশোধনের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো। একটি ভুল অধ্যাদেশের ভিত্তিতে সিটি করপোরেশনগুলোর গৃহকর আদায়ের ‘তুঘলকি জবরদস্তি’ সমর্থনযোগ্য হতে পারে না। স্বৈরাচার এরশাদের আমলে বাড়িভাড়ার আয়ের ভিত্তিতে গৃহকর নির্ধারণের যে ধারণা বেরিয়ে এসেছে, সেটাকে অপরিবর্তনীয় বিবেচনা করা ক্ষমতাসীন মহাজোট সরকারের জন্য বড় ভুল হয়ে যাচ্ছে। ১৯৮৬ সালের দ্য সিটি করপোরেশন ট্যাক্সেশন রুলস যথাযথ সংশোধন করে একটি নতুন আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য আমি সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি। এই আইন প্রণীত হওয়া পর্যন্ত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন আগের নিয়মে গৃহকর আদায় অব্যাহত রাখুক—এটাই আমার প্রত্যাশা।
লেখক: অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর, অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
ড. মইনুল ইসলাম

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী সিটি করপোরেশনের গৃহকর বাড়ানোর জন্য করহার নির্ধারণে ১৯৮৬ সালের ‘দ সিটি করপোরেশন ট্যাক্সেশন রুলস’ অধ্যাদেশটি অনুসরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমি মনে করি এটা মারাত্মক ভুল সিদ্ধান্ত। ২০২১ সালে আমি তাঁকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলাম যে ভূতপূর্ব মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ২০১৬ সালে একই অধ্যাদেশের ভিত্তিতে গৃহকর নির্ধারণ করতে গিয়ে তাঁর জনপ্রিয়তা হারিয়ে চরম বিপদে পড়েছিলেন। ওই অধ্যাদেশের ভিত্তিতে বর্ধিত গৃহকর বিদ্যমান করের তুলনায় ছয় থেকে দশ গুণ বেড়ে যাওয়ায় ব্যাপক আন্দোলন সৃষ্টি হয়েছিল।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীও ওই আন্দোলনে শরিক হয়েছিলেন। এর কিছুদিনের মধ্যে একই ভুল অধ্যাদেশ অনুসরণ করতে গিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তদানীন্তন মেয়র সাঈদ খোকনকেও ব্যাপক আন্দোলন মোকাবিলা করতে হয়েছিল। ঢাকা ও চট্টগ্রামের আন্দোলনের তীব্রতায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ব্যাপারটা স্থগিত হয়েছিল। দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে যে মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেওয়া রেজাউল করিম চৌধুরী ভুল অধ্যাদেশটির সংশোধনের উদ্যোগ না নিয়ে আবারও ওটাই অনুসরণে গৃহকর বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। ইতিমধ্যেই করদাতাদের কাছে নতুনভাবে নির্ধারিত গৃহকরের চাহিদাপত্র পৌঁছে গেছে। সাবেক মেয়র নাছির উদ্দীনের মতো পত্রপত্রিকায় মেয়র রেজাউল করিম মন্তব্য করে চলেছেন যে সংক্ষুব্ধ করদাতা সিটি করপোরেশনের কাছে আপিল করলে গৃহকর কমিয়ে দেওয়া হবে।
এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ঘুষ-দুর্নীতির ফ্লাডগেট যে খুলে দেওয়া হচ্ছে, সেটা কি তিনি বুঝতে পারছেন না? অযৌক্তিকভাবে গৃহকর বাড়িয়ে দিয়ে আপিলের মাধ্যমে তা কমিয়ে দিলে শুধু দুর্নীতিই বাড়বে। সরকারকেও উপলব্ধি করতে হবে যে বাড়িভাড়ার আয়ের ভিত্তিতে গৃহকর নির্ধারণ মারাত্মক ভুল পদ্ধতি। গৃহকর যেহেতু সম্পত্তি কর (প্রোপার্টি ট্যাক্স), তাই সারা বিশ্বের সিটি গভর্নমেন্টগুলো সম্পত্তির লোকেশন, স্থাপনার মান ও ধরন এবং আয়তনের ভিত্তিতে হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ করে থাকে। করদাতার বাড়িভাড়ার আয়ের ভিত্তিতে যেহেতু এনবিআর কর্তৃক আয়কর নির্ধারিত হয়, তাই আবার হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণেও যদি বাড়িভাড়ার আয়কেই নির্ধারক বিবেচনা করা হয়, তাহলে ‘ডবল ট্যাক্সেশন অব ইনকাম’ সমস্যার উদ্ভব হবে, যা করনীতির চরম লঙ্ঘন বিধায় বাতিলযোগ্য।
২০১৭ সালের ১৩ অক্টোবর একটি জাতীয় দৈনিকের প্রধান শিরোনাম হিসেবে যে চাঞ্চল্যকর খবরটা প্রকাশিত হয়েছিল তা হলো, দেশের ১১টি সিটি করপোরেশনে মোট ছয় ধরনের গৃহকরের হার বলবৎ রয়েছে, যেখানে ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনে বার্ষিক সর্বনিম্ন ১২ শতাংশ, খুলনা সিটি করপোরেশনে ১৬ শতাংশ, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে ১৭ শতাংশ, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে ১৯ শতাংশ, সিলেট ও রংপুর সিটি করপোরেশনে ২০ শতাংশ এবং রাজশাহী ও বরিশাল সিটি করপোরেশনে ২৭ শতাংশ হারে গৃহকর আদায় করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু এই ছয় রকমের গৃহকরের হারের ফলে রাজশাহী ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের করদাতারা অন্য ৯ নগরীর করদাতাদের চেয়ে বেশি পরিমাণ গৃহকর দিচ্ছেন বলে ধারণা করলে ভুল হবে। কারণ, এই ১১টি সিটি করপোরেশনে বাড়ির ভ্যালুয়েশনে কোনো ইউনিফর্ম পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় না। বাংলাদেশের ১১টি সিটি করপোরেশনের গৃহকর নির্ধারণ ও আদায়ের পদ্ধতিগুলোতে চরম নৈরাজ্য বিরাজ করছে। অতএব অবিলম্বে দেশের সব সিটি করপোরেশনের গৃহকর নির্ধারণ পদ্ধতিকে ইউনিফর্ম করার জন্য একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিশন (বা কমিটি) গঠন করে কমিশনের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কর্তৃক অবিলম্বে সংসদে একটি আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া ফরজ হয়ে গেছে। কারণ, ১৯৮৬ সালের ‘দ্য সিটি করপোরেশন ট্যাক্সেশন রুলস’ অনুসরণে এই ১১টি সিটি করপোরেশনের যেখানেই গৃহকর নির্ধারণের উদ্যোগ নেওয়া হবে, সেখানেই করদাতাদের তোপের মুখে পড়তে হবে কর্তৃপক্ষকে।

বর্তমানে এই ১১টি সিটি করপোরেশনের কোনোটিতেই গৃহকরের হার নির্ধারণের ভিত্তি হিসেবে বাড়িভাড়ার আয়কে এখনো ব্যবহার করা হয় না। অথচ ১৯৮৬ সালের দ্য সিটি করপোরেশন ট্যাক্সেশন রুলস অধ্যাদেশটি জারি করা হয়েছিল দেশের তদানীন্তন চারটি সিটি করপোরেশন—ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রাজশাহীর জন্য। অধ্যাদেশ জারির ৩৬ বছর পার হয়ে গেলেও দেশের রাজধানী ঢাকাসহ কোনো নগরেই বাড়িভাড়ার আয়ের ভিত্তিতে গৃহকর নির্ধারণের ব্যবস্থা বাস্তবায়িত হয়নি। দেখা যাচ্ছে, খোদ ঢাকা সিটি করপোরেশনে বাড়ির মেঝের আয়তন বর্গফুটের ভিত্তিতে হিসাব করে প্রতি বর্গফুট চার টাকা থেকে শুরু করে ষোলো টাকা ধরে সম্পত্তির ভ্যালুয়েশন নির্ধারণ করে ওই ভ্যালুয়েশনের ওপর ১২ শতাংশ হারে গৃহকর নির্ধারণের নিয়ম অনুসরণ করা হচ্ছে। ১৯৮৬ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে তিনবার গৃহকর পুনর্মূল্যায়ন করা হয়েছে, প্রতিবারই বাড়ির মেঝের আয়তন বর্গফুটের ভিত্তিতে ভ্যালুয়েশন করে তা করা হয়েছে। প্রতিবারই নতুন নির্ধারিত গৃহকর পুরোনো গৃহকরের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি নির্ধারিত হলেও এগুলো নিয়ে ২৯ বছরে ব্যাপক প্রতিবাদ-প্রতিরোধ আন্দোলন দেখা যায়নি। কারণ, ওই বর্ধিত গৃহকরের পরিমাণ কোনোবারই করদাতাদের কাছে অস্বাভাবিক ও অসহনীয় বিবেচিত হয়নি। কিন্তু ২০১৬ সালে নাছির উদ্দীন ১৯৮৬ সালের ওই অধ্যাদেশের ভিত্তিতে বাংলাদেশের ১১টি সিটি করপোরেশনের মধ্যে চট্টগ্রামে প্রথম বাড়িভাড়ার আয়ের ভিত্তিতে গৃহকর পুনর্মূল্যায়ন শুরু করেন। এর ফলে ব্যাপক ক্ষোভ ও আন্দোলন হয়েছিল।
আমি আবারও বলছি, বিশ্বের কোথাও হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়িভাড়ার আয়ের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয় না। কারণ, হোল্ডিং ট্যাক্স প্রকৃতপক্ষে যেহেতু সম্পত্তি কর বা প্রোপার্টি ট্যাক্স, তাই বিশ্বের সব সিটি করপোরেশনে প্রোপার্টি ট্যাক্সের নিয়মে এই কর আদায় করা হয়। নিয়মটি হলো: বিশ্বের প্রোপার্টি ট্যাক্স আরোপ করা হয় সম্পত্তির ভ্যালুয়েশনের ভিত্তিতে। আর সম্পত্তির ভ্যালুয়েশন করা হয় ওই সম্পত্তির অবস্থান ও আয়তনের (বর্গমিটার) ভিত্তিতে। নগরীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোয় হোল্ডিং ট্যাক্সের হার প্রতি বর্গমিটারে সবচেয়ে বেশি হবে, এর পরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে এই হার ক্রমেই কমবে। এভাবে নগরীর কেন্দ্রে যে হারে হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারিত হবে তা ক্রমেই কমতে কমতে শহরতলিতে এসে সর্বনিম্ন হবে। বাড়ির গুণগত মানের ভিত্তিতেও ভ্যালুয়েশন বাড়বে বা কমবে। যেমন মার্বেল পাথর বা টাইলসের মেঝে হলে প্রতি বর্গমিটারে যে ভ্যালুয়েশন হবে, মোজাইকের হলে তার চেয়ে কমবে। শুধু সিমেন্টের মেঝে হলে ভ্যালুয়েশন আরও কমে যাবে।
টিনের ছাউনির পাকা ঘর হলে ভ্যালুয়েশন একেবারেই কমে যাবে। বেড়ার ঘর হলে হয়তো কোনো গৃহকরই ধার্য হবে না। ২০১৬ সালে আমি নিজের উদ্যোগে ভারতের কলকাতা নগরী থেকে ওখানকার গৃহকর নির্ধারণের পদ্ধতি সম্পর্কে খবরাখবর সংগ্রহ করে এনেছিলাম। কলকাতা সিটি করপোরেশনেও সম্পত্তির অবস্থান, বাড়ির মেঝের আয়তন ও বাড়ির গুণগত মান বিবেচনা করে হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ করা হয়। ভারতের সব সিটি করপোরেশনে একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।
মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীও নিজের উদ্যোগে কলকাতা, দিল্লি ও মুম্বাইয়ের মতো সিটি করপোরেশনের গৃহকর পদ্ধতি সম্পর্কে খবরাখবর সংগ্রহ করে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারেন। এরপর তাঁর দায়িত্ব হবে ১৯৮৬ সালের দ্য সিটি করপোরেশন ট্যাক্সেশন রুলস অধ্যাদেশ সংশোধনের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো। একটি ভুল অধ্যাদেশের ভিত্তিতে সিটি করপোরেশনগুলোর গৃহকর আদায়ের ‘তুঘলকি জবরদস্তি’ সমর্থনযোগ্য হতে পারে না। স্বৈরাচার এরশাদের আমলে বাড়িভাড়ার আয়ের ভিত্তিতে গৃহকর নির্ধারণের যে ধারণা বেরিয়ে এসেছে, সেটাকে অপরিবর্তনীয় বিবেচনা করা ক্ষমতাসীন মহাজোট সরকারের জন্য বড় ভুল হয়ে যাচ্ছে। ১৯৮৬ সালের দ্য সিটি করপোরেশন ট্যাক্সেশন রুলস যথাযথ সংশোধন করে একটি নতুন আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য আমি সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি। এই আইন প্রণীত হওয়া পর্যন্ত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন আগের নিয়মে গৃহকর আদায় অব্যাহত রাখুক—এটাই আমার প্রত্যাশা।
লেখক: অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর, অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী সিটি করপোরেশনের গৃহকর বাড়ানোর জন্য করহার নির্ধারণে ১৯৮৬ সালের ‘দ সিটি করপোরেশন ট্যাক্সেশন রুলস’ অধ্যাদেশটি অনুসরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমি মনে করি এটা মারাত্মক ভুল সিদ্ধান্ত। ২০২১ সালে আমি তাঁকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলাম যে ভূতপূর্ব মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ২০১৬ সালে একই অধ্যাদেশের ভিত্তিতে গৃহকর নির্ধারণ করতে গিয়ে তাঁর জনপ্রিয়তা হারিয়ে চরম বিপদে পড়েছিলেন। ওই অধ্যাদেশের ভিত্তিতে বর্ধিত গৃহকর বিদ্যমান করের তুলনায় ছয় থেকে দশ গুণ বেড়ে যাওয়ায় ব্যাপক আন্দোলন সৃষ্টি হয়েছিল।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীও ওই আন্দোলনে শরিক হয়েছিলেন। এর কিছুদিনের মধ্যে একই ভুল অধ্যাদেশ অনুসরণ করতে গিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তদানীন্তন মেয়র সাঈদ খোকনকেও ব্যাপক আন্দোলন মোকাবিলা করতে হয়েছিল। ঢাকা ও চট্টগ্রামের আন্দোলনের তীব্রতায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ব্যাপারটা স্থগিত হয়েছিল। দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে যে মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেওয়া রেজাউল করিম চৌধুরী ভুল অধ্যাদেশটির সংশোধনের উদ্যোগ না নিয়ে আবারও ওটাই অনুসরণে গৃহকর বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। ইতিমধ্যেই করদাতাদের কাছে নতুনভাবে নির্ধারিত গৃহকরের চাহিদাপত্র পৌঁছে গেছে। সাবেক মেয়র নাছির উদ্দীনের মতো পত্রপত্রিকায় মেয়র রেজাউল করিম মন্তব্য করে চলেছেন যে সংক্ষুব্ধ করদাতা সিটি করপোরেশনের কাছে আপিল করলে গৃহকর কমিয়ে দেওয়া হবে।
এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ঘুষ-দুর্নীতির ফ্লাডগেট যে খুলে দেওয়া হচ্ছে, সেটা কি তিনি বুঝতে পারছেন না? অযৌক্তিকভাবে গৃহকর বাড়িয়ে দিয়ে আপিলের মাধ্যমে তা কমিয়ে দিলে শুধু দুর্নীতিই বাড়বে। সরকারকেও উপলব্ধি করতে হবে যে বাড়িভাড়ার আয়ের ভিত্তিতে গৃহকর নির্ধারণ মারাত্মক ভুল পদ্ধতি। গৃহকর যেহেতু সম্পত্তি কর (প্রোপার্টি ট্যাক্স), তাই সারা বিশ্বের সিটি গভর্নমেন্টগুলো সম্পত্তির লোকেশন, স্থাপনার মান ও ধরন এবং আয়তনের ভিত্তিতে হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ করে থাকে। করদাতার বাড়িভাড়ার আয়ের ভিত্তিতে যেহেতু এনবিআর কর্তৃক আয়কর নির্ধারিত হয়, তাই আবার হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণেও যদি বাড়িভাড়ার আয়কেই নির্ধারক বিবেচনা করা হয়, তাহলে ‘ডবল ট্যাক্সেশন অব ইনকাম’ সমস্যার উদ্ভব হবে, যা করনীতির চরম লঙ্ঘন বিধায় বাতিলযোগ্য।
২০১৭ সালের ১৩ অক্টোবর একটি জাতীয় দৈনিকের প্রধান শিরোনাম হিসেবে যে চাঞ্চল্যকর খবরটা প্রকাশিত হয়েছিল তা হলো, দেশের ১১টি সিটি করপোরেশনে মোট ছয় ধরনের গৃহকরের হার বলবৎ রয়েছে, যেখানে ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনে বার্ষিক সর্বনিম্ন ১২ শতাংশ, খুলনা সিটি করপোরেশনে ১৬ শতাংশ, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে ১৭ শতাংশ, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে ১৯ শতাংশ, সিলেট ও রংপুর সিটি করপোরেশনে ২০ শতাংশ এবং রাজশাহী ও বরিশাল সিটি করপোরেশনে ২৭ শতাংশ হারে গৃহকর আদায় করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু এই ছয় রকমের গৃহকরের হারের ফলে রাজশাহী ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের করদাতারা অন্য ৯ নগরীর করদাতাদের চেয়ে বেশি পরিমাণ গৃহকর দিচ্ছেন বলে ধারণা করলে ভুল হবে। কারণ, এই ১১টি সিটি করপোরেশনে বাড়ির ভ্যালুয়েশনে কোনো ইউনিফর্ম পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় না। বাংলাদেশের ১১টি সিটি করপোরেশনের গৃহকর নির্ধারণ ও আদায়ের পদ্ধতিগুলোতে চরম নৈরাজ্য বিরাজ করছে। অতএব অবিলম্বে দেশের সব সিটি করপোরেশনের গৃহকর নির্ধারণ পদ্ধতিকে ইউনিফর্ম করার জন্য একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিশন (বা কমিটি) গঠন করে কমিশনের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কর্তৃক অবিলম্বে সংসদে একটি আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া ফরজ হয়ে গেছে। কারণ, ১৯৮৬ সালের ‘দ্য সিটি করপোরেশন ট্যাক্সেশন রুলস’ অনুসরণে এই ১১টি সিটি করপোরেশনের যেখানেই গৃহকর নির্ধারণের উদ্যোগ নেওয়া হবে, সেখানেই করদাতাদের তোপের মুখে পড়তে হবে কর্তৃপক্ষকে।

বর্তমানে এই ১১টি সিটি করপোরেশনের কোনোটিতেই গৃহকরের হার নির্ধারণের ভিত্তি হিসেবে বাড়িভাড়ার আয়কে এখনো ব্যবহার করা হয় না। অথচ ১৯৮৬ সালের দ্য সিটি করপোরেশন ট্যাক্সেশন রুলস অধ্যাদেশটি জারি করা হয়েছিল দেশের তদানীন্তন চারটি সিটি করপোরেশন—ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রাজশাহীর জন্য। অধ্যাদেশ জারির ৩৬ বছর পার হয়ে গেলেও দেশের রাজধানী ঢাকাসহ কোনো নগরেই বাড়িভাড়ার আয়ের ভিত্তিতে গৃহকর নির্ধারণের ব্যবস্থা বাস্তবায়িত হয়নি। দেখা যাচ্ছে, খোদ ঢাকা সিটি করপোরেশনে বাড়ির মেঝের আয়তন বর্গফুটের ভিত্তিতে হিসাব করে প্রতি বর্গফুট চার টাকা থেকে শুরু করে ষোলো টাকা ধরে সম্পত্তির ভ্যালুয়েশন নির্ধারণ করে ওই ভ্যালুয়েশনের ওপর ১২ শতাংশ হারে গৃহকর নির্ধারণের নিয়ম অনুসরণ করা হচ্ছে। ১৯৮৬ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে তিনবার গৃহকর পুনর্মূল্যায়ন করা হয়েছে, প্রতিবারই বাড়ির মেঝের আয়তন বর্গফুটের ভিত্তিতে ভ্যালুয়েশন করে তা করা হয়েছে। প্রতিবারই নতুন নির্ধারিত গৃহকর পুরোনো গৃহকরের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি নির্ধারিত হলেও এগুলো নিয়ে ২৯ বছরে ব্যাপক প্রতিবাদ-প্রতিরোধ আন্দোলন দেখা যায়নি। কারণ, ওই বর্ধিত গৃহকরের পরিমাণ কোনোবারই করদাতাদের কাছে অস্বাভাবিক ও অসহনীয় বিবেচিত হয়নি। কিন্তু ২০১৬ সালে নাছির উদ্দীন ১৯৮৬ সালের ওই অধ্যাদেশের ভিত্তিতে বাংলাদেশের ১১টি সিটি করপোরেশনের মধ্যে চট্টগ্রামে প্রথম বাড়িভাড়ার আয়ের ভিত্তিতে গৃহকর পুনর্মূল্যায়ন শুরু করেন। এর ফলে ব্যাপক ক্ষোভ ও আন্দোলন হয়েছিল।
আমি আবারও বলছি, বিশ্বের কোথাও হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়িভাড়ার আয়ের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয় না। কারণ, হোল্ডিং ট্যাক্স প্রকৃতপক্ষে যেহেতু সম্পত্তি কর বা প্রোপার্টি ট্যাক্স, তাই বিশ্বের সব সিটি করপোরেশনে প্রোপার্টি ট্যাক্সের নিয়মে এই কর আদায় করা হয়। নিয়মটি হলো: বিশ্বের প্রোপার্টি ট্যাক্স আরোপ করা হয় সম্পত্তির ভ্যালুয়েশনের ভিত্তিতে। আর সম্পত্তির ভ্যালুয়েশন করা হয় ওই সম্পত্তির অবস্থান ও আয়তনের (বর্গমিটার) ভিত্তিতে। নগরীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোয় হোল্ডিং ট্যাক্সের হার প্রতি বর্গমিটারে সবচেয়ে বেশি হবে, এর পরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে এই হার ক্রমেই কমবে। এভাবে নগরীর কেন্দ্রে যে হারে হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারিত হবে তা ক্রমেই কমতে কমতে শহরতলিতে এসে সর্বনিম্ন হবে। বাড়ির গুণগত মানের ভিত্তিতেও ভ্যালুয়েশন বাড়বে বা কমবে। যেমন মার্বেল পাথর বা টাইলসের মেঝে হলে প্রতি বর্গমিটারে যে ভ্যালুয়েশন হবে, মোজাইকের হলে তার চেয়ে কমবে। শুধু সিমেন্টের মেঝে হলে ভ্যালুয়েশন আরও কমে যাবে।
টিনের ছাউনির পাকা ঘর হলে ভ্যালুয়েশন একেবারেই কমে যাবে। বেড়ার ঘর হলে হয়তো কোনো গৃহকরই ধার্য হবে না। ২০১৬ সালে আমি নিজের উদ্যোগে ভারতের কলকাতা নগরী থেকে ওখানকার গৃহকর নির্ধারণের পদ্ধতি সম্পর্কে খবরাখবর সংগ্রহ করে এনেছিলাম। কলকাতা সিটি করপোরেশনেও সম্পত্তির অবস্থান, বাড়ির মেঝের আয়তন ও বাড়ির গুণগত মান বিবেচনা করে হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ করা হয়। ভারতের সব সিটি করপোরেশনে একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।
মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীও নিজের উদ্যোগে কলকাতা, দিল্লি ও মুম্বাইয়ের মতো সিটি করপোরেশনের গৃহকর পদ্ধতি সম্পর্কে খবরাখবর সংগ্রহ করে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারেন। এরপর তাঁর দায়িত্ব হবে ১৯৮৬ সালের দ্য সিটি করপোরেশন ট্যাক্সেশন রুলস অধ্যাদেশ সংশোধনের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো। একটি ভুল অধ্যাদেশের ভিত্তিতে সিটি করপোরেশনগুলোর গৃহকর আদায়ের ‘তুঘলকি জবরদস্তি’ সমর্থনযোগ্য হতে পারে না। স্বৈরাচার এরশাদের আমলে বাড়িভাড়ার আয়ের ভিত্তিতে গৃহকর নির্ধারণের যে ধারণা বেরিয়ে এসেছে, সেটাকে অপরিবর্তনীয় বিবেচনা করা ক্ষমতাসীন মহাজোট সরকারের জন্য বড় ভুল হয়ে যাচ্ছে। ১৯৮৬ সালের দ্য সিটি করপোরেশন ট্যাক্সেশন রুলস যথাযথ সংশোধন করে একটি নতুন আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য আমি সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি। এই আইন প্রণীত হওয়া পর্যন্ত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন আগের নিয়মে গৃহকর আদায় অব্যাহত রাখুক—এটাই আমার প্রত্যাশা।
লেখক: অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর, অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী সিটি করপোরেশনের গৃহকর বাড়ানোর জন্য করহার নির্ধারণে ১৯৮৬ সালের ‘দ সিটি করপোরেশন ট্যাক্সেশন রুলস’ অধ্যাদেশটি অনুসরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমি মনে করি এটা মারাত্মক ভুল সিদ্ধান্ত। ২০২১ সালে আমি তাঁকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলাম যে ভূতপূর্ব মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দ
১৩ আগস্ট ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী সিটি করপোরেশনের গৃহকর বাড়ানোর জন্য করহার নির্ধারণে ১৯৮৬ সালের ‘দ সিটি করপোরেশন ট্যাক্সেশন রুলস’ অধ্যাদেশটি অনুসরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমি মনে করি এটা মারাত্মক ভুল সিদ্ধান্ত। ২০২১ সালে আমি তাঁকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলাম যে ভূতপূর্ব মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দ
১৩ আগস্ট ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী সিটি করপোরেশনের গৃহকর বাড়ানোর জন্য করহার নির্ধারণে ১৯৮৬ সালের ‘দ সিটি করপোরেশন ট্যাক্সেশন রুলস’ অধ্যাদেশটি অনুসরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমি মনে করি এটা মারাত্মক ভুল সিদ্ধান্ত। ২০২১ সালে আমি তাঁকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলাম যে ভূতপূর্ব মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দ
১৩ আগস্ট ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী সিটি করপোরেশনের গৃহকর বাড়ানোর জন্য করহার নির্ধারণে ১৯৮৬ সালের ‘দ সিটি করপোরেশন ট্যাক্সেশন রুলস’ অধ্যাদেশটি অনুসরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমি মনে করি এটা মারাত্মক ভুল সিদ্ধান্ত। ২০২১ সালে আমি তাঁকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলাম যে ভূতপূর্ব মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দ
১৩ আগস্ট ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫