Ajker Patrika

এমন সড়কেও ঈদযাত্রা!

অরূপ রায়, সাভার
আপডেট : ২৩ এপ্রিল ২০২২, ০৯: ০৮
এমন সড়কেও ঈদযাত্রা!

ঢাকার সাভারের আশুলিয়া বাজার থেকে বাইপাইল পর্যন্ত আবদুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়কের কোথাও কোথাও গত বুধবার হওয়া বৃষ্টির পানি জমে আছে। কোথাও আবার সুরকি উঠে গেছে। সড়কের পাশে কাঁচা নর্দমা ও আবর্জনার স্তূপ, আবার কোথাও ভাসমান দোকান। কোথাও যানবাহন থেমে আছে, কোথাও চলছে ধীরগতিতে। এই অবস্থায় ঈদযাত্রায় যানজটের আশঙ্কা করছেন এই সড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও চালকেরা।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) সূত্রে জানা গেছে, আশুলিয়ার শিল্পাঞ্চলসহ প্রতিদিন উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার কয়েক হাজার যানবাহন চলাচল করে আবদুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়কে। এ ছাড়া গাজীপুর হয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়ে গেলে যানবাহনের শ্রমিকেরা বিকল্প হিসেবে এই সড়ক ব্যবহার করে থাকেন।

এদিকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের জন্য কয়েক মাস আগে ১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কটি সেতু বিভাগের কাছে হস্তান্তর করার পর থেকে সংস্কার বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় গুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

গতকাল শুক্রবার সরেজমিন দেখা যায়, ইউনিক থেকে জামগড়া পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন জায়গায় পিচ ও খোয়া উঠে গেছে। সেখানে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় খানাখন্দ। যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সড়কের ওই অংশে বিভিন্ন স্থানে ইট বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে সেখানে পানি জমে আছে। পানির ওপর দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন।

এ কারণে ওইসব জায়গায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। যানজট দেখা যায় জিরাব বাসস্ট্যান্ড ও আশুলিয়ার তুরাগ নদের ওপর নির্মিত সেতুর দুই পাড়ে। এ ছাড়া সড়কের দুই পাশে স্থানে স্থানে ভাসমান দোকান ও আবর্জনার স্তূপ চোখে পড়ে।

দ্রুতগামী নামের এক বাসের চালক আবুল কালাম বলেন, ঈদের সময় ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কের যানজট এড়াতে যানবাহন শ্রমিকেরা আবদুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়ক ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু সড়টির এই বেহালের উন্নতি না হলে এবারের ঈদে ঘরমুখো মানুষ ও পরিবহন শ্রমিকেরা এই সড়কে চরম ভোগান্তির শিকার হবেন।

পণ্যবাহী ট্রাকের চালক আব্দুস সালাম বলেন, আশুলিয়ায় তুরাগ নদের ওপর নির্মিত সেতু সরু ও জরাজীর্ণ। ওই সেতুর ওপর দিয়ে স্বাভাবিক গতিতে যানবাহন চলাচল করতে পারে না। এ কারণে সেতুর দুই পাড়ে প্রতিদিনই যানজটের সৃষ্টি হয়।

ইউনিক এলাকার এবিকে ক্ল্যাসিকাল ফার্নিচারের মালিক খলিলুর রহমান বলেন, ইউনিক থেকে জামগড়া পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে কয়েক শ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও কারখানা রয়েছে। এ এলাকার পানি বের হওয়ার জন্য সড়কের একপাশে কাঁচা নর্দমা থাকলেও কার্যকর নয়। সড়কে জমে থাকা পানি ওই নর্দমা দিয়ে বের হওয়া তো দূরের কথা, নর্দমা উপচে পানি আরও সড়কে চলে যায়।

একই এলাকার আরএল ডিজাইনের মালিক রাফিউ হোসেন বলেন, কয়েক লাখ শ্রমিকের বাস সড়কের দুই পাশের বিভিন্ন গ্রামে। ফুটপাত না থাকায় এসব শ্রমিকের অধিকাংশই দল বেঁধে সড়কের কাদাপানি মাড়িয়ে চলাচল করেন। এ কারণেও সড়কটিতে যানবাহনের গতি কমে যায়।

জিরাব এলাকার নিউ আমেনা মোটরসের মালিক জামাল হোসেন মুন্সি বলেন, ঈদ এলেই সড়কটির সংস্কার করা হয়। তড়িঘড়ি করে কোনো রকমে কাজ শেষ করা হয়, যা ঈদের এক-দেড় মাসের মধ্যে নষ্ট হয়ে যায়। এ ধরনের মেরামত সরকারি অর্থের অপচয় বলে মনে করেন তিনি।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ ঢাকার নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আল মামুন বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের জন্য কয়েক মাস আগে সড়কটি সেতু বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ কারণে তাঁরা সড়কের সংস্কার বা মেরামতের কাজ থেকে বিরত রয়েছেন।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী মো. ফেরদৌস বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ পেয়েছে, সড়কটি তাদেরই সংস্কার করার কথা। ঈদের আগে তারাই সংস্কার করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত