সম্পাদকীয়
মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলার ডুমুরশিয়া হাইস্কুল মাঠে হয়ে গেল ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা। নতুন প্রজন্মের কাছে লাঠিখেলার ঐতিহ্য তুলে ধরার জন্যই এই আয়োজন করা হয়েছিল। লাঠিখেলা হয় বাদ্যের তালে তালে। কীভাবে প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করতে হবে কিংবা কীভাবে প্রতিপক্ষের আক্রমণ ঠেকাতে হবে, তার কৌশলগুলোই দেখিয়ে থাকেন লাঠিয়ালেরা।
ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যাবে, বিশেষভাবে তৈরি বাঁশ হাতে বিভিন্ন কায়দায় কৌশল দেখিয়ে একশ্রেণির মানুষ জীবিকা নির্বাহ করতেন। সে সময় ঘন গিঁটযুক্ত বাঁশগুলোয় লোহার রিং মুড়িয়ে ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা হতো। সেই লাঠি হাতে টাকার বিনিময়ে জমিদার বা তালুকদারের ভাড়াটে হয়ে তাঁরা কাজ করতেন। জমিদারদের মধ্যে ঝগড়া হলে তাঁদের সাহায্যে লাগতেন লাঠিয়ালেরা। আবার অবাধ্য প্রজাদের শায়েস্তা করার জন্যও তাঁরা হাতে তুলে নিতেন লাঠি। আরেকটু গুছিয়ে বললে বলতে হয়, জমিদারদের স্থাপনায় তিনটি জরুরি শাখা ছিল। একটির নেতৃত্বে থাকতেন খাজনা আদায়কারী নায়েব ও গোমস্তা। আরেকটি ছিল জমাদার ও মৃধার নেতৃত্বে কলহবিবাদে যুদ্ধ করার মতো বাহিনী, আর ছিল আইনি যুদ্ধ চালানোর জন্য উকিল। সালিস ব্যর্থ হলে তখন পাঠানো হতো লাঠিয়াল।
লাঠিয়ালদের প্রভাব কমতে থাকে পুলিশ প্রশাসন পুনর্বিন্যস্ত হলে। ১৮৬০ সালে, অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথের জন্মের এক বছর আগে উন্নত শাসনের জন্য জেলাগুলোকে কয়েকটি মহকুমায় বিন্যস্ত করা হয়। ১৮৭০ সাল থেকে শুরু হয় চৌকিদারি বা গ্রাম্য পুলিশি ব্যবস্থা। সাবেক লাঠিয়ালদের কেউ কেউ চৌকিদার হিসেবে নিযুক্ত হন এবং সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫০ সালে জমিদারি প্রথা উচ্ছেদ করা হলে শ্রেণিগতভাবে লাঠিয়ালদের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যায়। কেউ এ বিষয়ে আগ্রহী হলে বাংলাপিডিয়ায় এসংক্রান্ত ভুক্তিতে আরও বিশদ জানতে পারবেন।
ইতিহাসে একসময় লাঠিয়ালদের প্রভাব ছিল। এখন প্রভাব নেই, কিন্তু লাঠিখেলার মাধ্যমে সেই ঐতিহ্য টিকে আছে। এ কথা সবাই জানেন, প্রজাসাধারণের জন্য লাঠিয়ালদের উপস্থিতি মনে কোনো আরাম এনে দিত না, বরং লাঠিয়াল আসা মানেই ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া। ভালো সংবাদ হলো, বর্তমানে জনপ্রিয় একটি খেলা হিসেবেই শুধু টিকে আছে লাঠিয়ালদের কীর্তি। বিভিন্ন এলাকায় বাদ্যের তালে তালে লাঠি হাতে শারীরিক কসরত দেখানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে এই ঐতিহ্য।
লাঠিখেলা এভাবেই আনন্দ দিক মানুষকে। এভাবেই নিরীহ, বিষহীন একটি খেলা হিসেবে টিকে থাকুক।
এই সূত্র ধরেই বলি, আমাদের রাজনীতির যে সহিংস রূপ, সেটাকেও কি ঐতিহ্য হিসেবে খেলার মাঠে নিয়ে যাওয়া যায় না? ভবিষ্যতের মানুষ মাঠে গিয়ে দেখবে, কোনো এক সময়ে আমরা কতটা নিষ্ঠুর ও নৃশংস ছিলাম! এখন শুধু সহিংসতার কসরতগুলো দেখানো হয় খেলার মাঠে। সেখানে প্রতীকীভাবে বাস পোড়ানো হবে, গুলি করা হবে, ছোড়া হবে টিয়ার শেল, চলবে সশস্ত্র পিকেটিং ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু আমরা এখনো সহিংসই হচ্ছি। এখন পর্যন্ত আমাদের রাজনীতিকেরা সহিংসতাকে রাজনীতি থেকে বিদায় করতে পারলেন না—এই আফসোস কবে কাটবে আমাদের?
মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলার ডুমুরশিয়া হাইস্কুল মাঠে হয়ে গেল ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা। নতুন প্রজন্মের কাছে লাঠিখেলার ঐতিহ্য তুলে ধরার জন্যই এই আয়োজন করা হয়েছিল। লাঠিখেলা হয় বাদ্যের তালে তালে। কীভাবে প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করতে হবে কিংবা কীভাবে প্রতিপক্ষের আক্রমণ ঠেকাতে হবে, তার কৌশলগুলোই দেখিয়ে থাকেন লাঠিয়ালেরা।
ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যাবে, বিশেষভাবে তৈরি বাঁশ হাতে বিভিন্ন কায়দায় কৌশল দেখিয়ে একশ্রেণির মানুষ জীবিকা নির্বাহ করতেন। সে সময় ঘন গিঁটযুক্ত বাঁশগুলোয় লোহার রিং মুড়িয়ে ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা হতো। সেই লাঠি হাতে টাকার বিনিময়ে জমিদার বা তালুকদারের ভাড়াটে হয়ে তাঁরা কাজ করতেন। জমিদারদের মধ্যে ঝগড়া হলে তাঁদের সাহায্যে লাগতেন লাঠিয়ালেরা। আবার অবাধ্য প্রজাদের শায়েস্তা করার জন্যও তাঁরা হাতে তুলে নিতেন লাঠি। আরেকটু গুছিয়ে বললে বলতে হয়, জমিদারদের স্থাপনায় তিনটি জরুরি শাখা ছিল। একটির নেতৃত্বে থাকতেন খাজনা আদায়কারী নায়েব ও গোমস্তা। আরেকটি ছিল জমাদার ও মৃধার নেতৃত্বে কলহবিবাদে যুদ্ধ করার মতো বাহিনী, আর ছিল আইনি যুদ্ধ চালানোর জন্য উকিল। সালিস ব্যর্থ হলে তখন পাঠানো হতো লাঠিয়াল।
লাঠিয়ালদের প্রভাব কমতে থাকে পুলিশ প্রশাসন পুনর্বিন্যস্ত হলে। ১৮৬০ সালে, অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথের জন্মের এক বছর আগে উন্নত শাসনের জন্য জেলাগুলোকে কয়েকটি মহকুমায় বিন্যস্ত করা হয়। ১৮৭০ সাল থেকে শুরু হয় চৌকিদারি বা গ্রাম্য পুলিশি ব্যবস্থা। সাবেক লাঠিয়ালদের কেউ কেউ চৌকিদার হিসেবে নিযুক্ত হন এবং সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫০ সালে জমিদারি প্রথা উচ্ছেদ করা হলে শ্রেণিগতভাবে লাঠিয়ালদের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যায়। কেউ এ বিষয়ে আগ্রহী হলে বাংলাপিডিয়ায় এসংক্রান্ত ভুক্তিতে আরও বিশদ জানতে পারবেন।
ইতিহাসে একসময় লাঠিয়ালদের প্রভাব ছিল। এখন প্রভাব নেই, কিন্তু লাঠিখেলার মাধ্যমে সেই ঐতিহ্য টিকে আছে। এ কথা সবাই জানেন, প্রজাসাধারণের জন্য লাঠিয়ালদের উপস্থিতি মনে কোনো আরাম এনে দিত না, বরং লাঠিয়াল আসা মানেই ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া। ভালো সংবাদ হলো, বর্তমানে জনপ্রিয় একটি খেলা হিসেবেই শুধু টিকে আছে লাঠিয়ালদের কীর্তি। বিভিন্ন এলাকায় বাদ্যের তালে তালে লাঠি হাতে শারীরিক কসরত দেখানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে এই ঐতিহ্য।
লাঠিখেলা এভাবেই আনন্দ দিক মানুষকে। এভাবেই নিরীহ, বিষহীন একটি খেলা হিসেবে টিকে থাকুক।
এই সূত্র ধরেই বলি, আমাদের রাজনীতির যে সহিংস রূপ, সেটাকেও কি ঐতিহ্য হিসেবে খেলার মাঠে নিয়ে যাওয়া যায় না? ভবিষ্যতের মানুষ মাঠে গিয়ে দেখবে, কোনো এক সময়ে আমরা কতটা নিষ্ঠুর ও নৃশংস ছিলাম! এখন শুধু সহিংসতার কসরতগুলো দেখানো হয় খেলার মাঠে। সেখানে প্রতীকীভাবে বাস পোড়ানো হবে, গুলি করা হবে, ছোড়া হবে টিয়ার শেল, চলবে সশস্ত্র পিকেটিং ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু আমরা এখনো সহিংসই হচ্ছি। এখন পর্যন্ত আমাদের রাজনীতিকেরা সহিংসতাকে রাজনীতি থেকে বিদায় করতে পারলেন না—এই আফসোস কবে কাটবে আমাদের?
বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ দিন আগেগাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪দেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২০ নভেম্বর ২০২৪