চয়ন বিকাশ ভদ্র
শিল্পী এস এম সুলতান বড় ভালোবাসতেন মুচকুন্দ চাঁপা ফুল। সে জন্য তিনি সাতটি মুচকুন্দ চাঁপা সত্তরের দশকে যশোরের মাইকেল মধুসূদন কলেজ ক্যাম্পাসে রোপণ করেছিলেন। এ ফুল দেখতে ঠিক খোসা ছাড়ানো কলার মতো। রং ফ্যাকাশে হলুদ। তবে গন্ধ মনমাতানো, মিষ্টি নেশাধরা গন্ধ। এর অন্য নাম মুছকুন্দা।
ফুল সুন্দর হলেও এর গাছ দেখতে ততটা সুন্দর নয়। ময়মনসিংহ সার্কিট হাউস মাঠের উত্তর-পশ্চিম কোণে একটি মুচকুন্দগাছ রয়েছে। সেই গাছের পাতার আড়ালে আড়ালে লুকিয়ে আছে ফোটা ফুল।
মুচকুন্দ দীর্ঘাকৃতির চিরসবুজ বৃক্ষ। গাছ বাড়তে বাড়তে সোজা ওপরে উঠে যায়, মাথার দিকে কিছু পরিমাণ ডালপালা থাকে। এর বাকল ধূসর ও মসৃণ। পাতা দেখতে অনেকটা উদাল কিংবা উলট কম্বল পাতার মতো আকারে বেশ বড়। পাতার আকৃতির জন্যই মুচকুন্দ চেনা সহজ। এই আয়তনের পাতা সেগুনের থাকলেও মুচকুন্দের পাতার আকৃতি ভিন্ন। এর পাতার আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো, পাতার এক পিঠ উজ্জ্বল সবুজ ও মসৃণ, অন্য পিঠ রুক্ষ, রোমশ এবং সাদাটে ধূসর।
ফুল ফোটার মৌসুম বসন্ত থেকে পুরো বর্ষাকাল। মুচকুন্দ চাঁপা আড়াল বেশি পছন্দ করে। সম্ভবত এ কারণেই প্রকৃতি এর পাতাকে বেশ বড় করে তৈরি করেছে।
এ গাছের উচ্চতা ৫০ থেকে ৬০ ফুট। উচ্চতার জন্য গাছে ফুল দেখা কঠিন। তবে পুষ্পপ্রেমীদের নিরাশ হওয়ার কিছু নেই। ফুল বাসি হলে ঝরে পড়ে। পুরো মুচকুন্দ গাছের তলা বাসি ফুলে ছেয়ে যায়। এভাবেই মুচকুন্দ সংগ্রহ করতে হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম টেরোস্পার্মাম এসারিফোলিয়াম। টেরোস্পার্মাম গ্রিক শব্দ।
এর অর্থ পক্ষল বীজ। এসারিফোলিয়াম অর্থ ম্যাপলপত্রী। এটি মালভেসি পরিবারের সদস্য। এটি ইংরেজিতে বায়ুর ট্রি, ম্যাপল লিফ বায়ুর ট্রি, ডিনার প্লেট ট্রি নামে পরিচিত। একসময় দেশের আনাচকানাচে বা যেকোনো জঙ্গলে দেখা গেলেও এখন প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে মুচকুন্দ চাঁপা। একসময় এর পাতার প্যাকেটে তামাক ও গুড় বিক্রি হতো।
এ ফুলের কলি আঙুলাকৃতির, দীর্ঘ গোলাকার ও বাদামি-হলুদ রঙের। ফুটে যাওয়া মুচকুন্দের পাঁচটি মুক্ত বৃত্তাংশ মাংসল ও রোমশ। সুগন্ধের উৎস ফুলের বৃতি। শুকনা ফুলের বৃতির সুগন্ধ অটুট থাকে। এই ফুলের গন্ধ অনেক দূর যায়। এই গন্ধই পতঙ্গ আকর্ষণ করে এবং ফুলের পরাগায়ন হয়। এর পাপড়ির রং দুধসাদা, বেশ কোমল ও ফিতা-আকৃতির। পরাগ চক্র সোনালি সাদা, একগুচ্ছ রেশমি সুতার মতো নমনীয় ও উজ্জ্বল।
ফুল ঝরে পড়ার পরপরই আসে ফল। ফল বড়, ডিম্বাকৃতির, কাঠের মতো শক্ত এবং বাদামি রোমে ঢাকা। ফল পরিপক্ব হলে পাঁচ খণ্ডে বিভক্ত হয়ে ফেটে যায়। বীজ বাদামি ও পক্ষল। পাখা থাকার কারণে বীজ সহজে বাতাসে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এর কাঠ দৃঢ়, পালিশযোগ্য ও দীর্ঘস্থায়ী। তক্তা বানানোর কাজে ব্যবহৃত হয়। হাত-পা জ্বালাপোড়ায় পাতার ডগা ভেজানো রস উপকারী। ফুল জীবাণু ও কীটনাশক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এর বাকল ও পাতা বসন্ত রোগের মহৌষধ হিসেবে পরিচিত। পোকামাকড় কামড়ে দিলে এই গাছের পাতার রস লাগালে ব্যথা ভালো হয়।
মুচকুন্দ চাঁপার আদি নিবাস হিমালয়ের পাদদেশ, মিয়ানমার, আসাম ও চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চল। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পুরোনো ভবন, শিশু একাডেমি, জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান ও ঢাকার বলধা গার্ডেনে মুচকুন্দগাছ রয়েছে।
লেখক: অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ, মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজ, ময়মনসিংহ।
শিল্পী এস এম সুলতান বড় ভালোবাসতেন মুচকুন্দ চাঁপা ফুল। সে জন্য তিনি সাতটি মুচকুন্দ চাঁপা সত্তরের দশকে যশোরের মাইকেল মধুসূদন কলেজ ক্যাম্পাসে রোপণ করেছিলেন। এ ফুল দেখতে ঠিক খোসা ছাড়ানো কলার মতো। রং ফ্যাকাশে হলুদ। তবে গন্ধ মনমাতানো, মিষ্টি নেশাধরা গন্ধ। এর অন্য নাম মুছকুন্দা।
ফুল সুন্দর হলেও এর গাছ দেখতে ততটা সুন্দর নয়। ময়মনসিংহ সার্কিট হাউস মাঠের উত্তর-পশ্চিম কোণে একটি মুচকুন্দগাছ রয়েছে। সেই গাছের পাতার আড়ালে আড়ালে লুকিয়ে আছে ফোটা ফুল।
মুচকুন্দ দীর্ঘাকৃতির চিরসবুজ বৃক্ষ। গাছ বাড়তে বাড়তে সোজা ওপরে উঠে যায়, মাথার দিকে কিছু পরিমাণ ডালপালা থাকে। এর বাকল ধূসর ও মসৃণ। পাতা দেখতে অনেকটা উদাল কিংবা উলট কম্বল পাতার মতো আকারে বেশ বড়। পাতার আকৃতির জন্যই মুচকুন্দ চেনা সহজ। এই আয়তনের পাতা সেগুনের থাকলেও মুচকুন্দের পাতার আকৃতি ভিন্ন। এর পাতার আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো, পাতার এক পিঠ উজ্জ্বল সবুজ ও মসৃণ, অন্য পিঠ রুক্ষ, রোমশ এবং সাদাটে ধূসর।
ফুল ফোটার মৌসুম বসন্ত থেকে পুরো বর্ষাকাল। মুচকুন্দ চাঁপা আড়াল বেশি পছন্দ করে। সম্ভবত এ কারণেই প্রকৃতি এর পাতাকে বেশ বড় করে তৈরি করেছে।
এ গাছের উচ্চতা ৫০ থেকে ৬০ ফুট। উচ্চতার জন্য গাছে ফুল দেখা কঠিন। তবে পুষ্পপ্রেমীদের নিরাশ হওয়ার কিছু নেই। ফুল বাসি হলে ঝরে পড়ে। পুরো মুচকুন্দ গাছের তলা বাসি ফুলে ছেয়ে যায়। এভাবেই মুচকুন্দ সংগ্রহ করতে হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম টেরোস্পার্মাম এসারিফোলিয়াম। টেরোস্পার্মাম গ্রিক শব্দ।
এর অর্থ পক্ষল বীজ। এসারিফোলিয়াম অর্থ ম্যাপলপত্রী। এটি মালভেসি পরিবারের সদস্য। এটি ইংরেজিতে বায়ুর ট্রি, ম্যাপল লিফ বায়ুর ট্রি, ডিনার প্লেট ট্রি নামে পরিচিত। একসময় দেশের আনাচকানাচে বা যেকোনো জঙ্গলে দেখা গেলেও এখন প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে মুচকুন্দ চাঁপা। একসময় এর পাতার প্যাকেটে তামাক ও গুড় বিক্রি হতো।
এ ফুলের কলি আঙুলাকৃতির, দীর্ঘ গোলাকার ও বাদামি-হলুদ রঙের। ফুটে যাওয়া মুচকুন্দের পাঁচটি মুক্ত বৃত্তাংশ মাংসল ও রোমশ। সুগন্ধের উৎস ফুলের বৃতি। শুকনা ফুলের বৃতির সুগন্ধ অটুট থাকে। এই ফুলের গন্ধ অনেক দূর যায়। এই গন্ধই পতঙ্গ আকর্ষণ করে এবং ফুলের পরাগায়ন হয়। এর পাপড়ির রং দুধসাদা, বেশ কোমল ও ফিতা-আকৃতির। পরাগ চক্র সোনালি সাদা, একগুচ্ছ রেশমি সুতার মতো নমনীয় ও উজ্জ্বল।
ফুল ঝরে পড়ার পরপরই আসে ফল। ফল বড়, ডিম্বাকৃতির, কাঠের মতো শক্ত এবং বাদামি রোমে ঢাকা। ফল পরিপক্ব হলে পাঁচ খণ্ডে বিভক্ত হয়ে ফেটে যায়। বীজ বাদামি ও পক্ষল। পাখা থাকার কারণে বীজ সহজে বাতাসে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এর কাঠ দৃঢ়, পালিশযোগ্য ও দীর্ঘস্থায়ী। তক্তা বানানোর কাজে ব্যবহৃত হয়। হাত-পা জ্বালাপোড়ায় পাতার ডগা ভেজানো রস উপকারী। ফুল জীবাণু ও কীটনাশক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এর বাকল ও পাতা বসন্ত রোগের মহৌষধ হিসেবে পরিচিত। পোকামাকড় কামড়ে দিলে এই গাছের পাতার রস লাগালে ব্যথা ভালো হয়।
মুচকুন্দ চাঁপার আদি নিবাস হিমালয়ের পাদদেশ, মিয়ানমার, আসাম ও চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চল। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পুরোনো ভবন, শিশু একাডেমি, জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান ও ঢাকার বলধা গার্ডেনে মুচকুন্দগাছ রয়েছে।
লেখক: অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ, মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজ, ময়মনসিংহ।
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৮ দিন আগেআধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
০৮ মে ২০২৫