মইনুল হাসান, ফ্রান্স
পরিদের মধ্যে রূপে-গুণে অনন্য এবং সবার থেকে সুন্দর লাভ্যানডিন। একমাত্র তারই চোখের রং বেগুনি। আর কারও এমন মায়াবী রঙের চোখ হয় না। লাভ্যানডিন থাকে পৃথিবী থেকে অনেক অনেক দূরে, মহাকাশের শান্ত মণ্ডল ছুঁয়ে মেঘের মধ্যে খুব সুন্দর একটি পরির দেশে।
একদিন সে জেনে যায় যে পৃথিবীতে অনেক রঙের, অনেক মনমাতানো সৌরভের ফুল আছে। ফুল, পাখি আর মৌমাছির এই পৃথিবীর প্রতি এক দুর্নিবার আকর্ষণ বোধ করে লাভ্যানডিন। আর তাই সে পরিদের দেশ ছেড়ে পৃথিবীতে চলে আসে। তার ইচ্ছা, স্বর্গের মতো এ পৃথিবীতে সে চিরদিনের জন্য এক স্থায়ী আবাস গড়বে।
অনেক দিন আগের কথা, একদিন সে অনেক দূরের পথ পাড়ি দিয়ে পৃথিবীতে পাহাড় আর সমুদ্রের মাঝে একটি উপত্যকায় এসে পৌঁছায়। সেখানে পৌঁছেই তার মন খুব খারাপ হয়ে যায়। কারণ লাভ্যানডিন যেখানে এসে পৃথিবীকে স্পর্শ করেছিল, সেটি ছিল মরুভূমির মতো প্রাণহীন এক বিরান প্রান্তর। সেখানে গাছপালা, ফুল-ফল, পাখি– কিছুই নেই। ভীষণ আশাহত ও বিষণ্ন পরি-কন্যার চোখ অশ্রুসজল হলো, বড় বড় ফোঁটায় ঝরে পড়ল বেগুনি অশ্রু। লাভ্যানডিনের বেগুনি অশ্রু ধারায় ভিজে গেল দক্ষিণ ফ্রান্সের প্রভান্স অঞ্চলের অনুর্বর রুক্ষ ও শুষ্ক মাটি। পরিণত হলো সুফলা ভূমিতে।
কিছুদিনের মধ্যে যত দূর দৃষ্টি যায় তত দূরের দিগন্ত ছুঁয়ে ছেয়ে গেল একটি আকর্ষণীয় এবং ভীষণ মিষ্টি সুবাসের বর্ষজীবী একটি গুল্মে। সেই থেকে প্রতিবছর জুন মাসের মাঝামাঝি অদ্ভুত সুন্দর ছোট ছোট বেগুনি ফুলে ছেয়ে যায় ল্যাভেন্ডারের গুল্ম, উপচে পড়ে ফুল। গাঢ় নীল আকাশের নিচে চারদিকে শুধু পাগল করা বেগুনি রঙের উচ্ছল, উজ্জ্বল আভা, এক বিস্ময়কর সৌন্দর্য। অনুচ্চ পাহাড়ের ঢাল বেয়ে দিগন্ত প্রসারিত আঙুরের বাগান, সারি সারি বহু পুরোনো জলপাইগাছ ছাড়িয়ে নীল সমুদ্রের বাতাসে ভেসে বেড়ায় মনমাতানো সুগন্ধ। চারদিকে ফুল আর ফুল। ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছির বিরামহীন আনাগোনা, পাখিদের অকারণ অবাধ্য উচ্ছলতা, সে এক স্বপ্নের চেয়ে সুন্দর ভূমধ্যসাগরের পশ্চিম অববাহিকায় বিশাল ফুলের রাজ্য। আগস্ট পর্যন্ত তার রেশ থাকে।
ফ্রান্সের দক্ষিণের ল্যাভেন্ডার গুল্মের অপার্থিব সৌন্দর্যে মোহিত হয়ে সুগন্ধিপ্রিয় ফরাসিদের কেউ একজন বহুকাল আগে বেগুনি অশ্রুজলের পরি-কন্যা লাভ্যানডিনের উপকথা বলেছিলেন। আজও তা মানুষের মুখে মুখে সমান জনপ্রিয়।
ল্যাভেন্ডারের ঔষধি গুণ
প্রাচীনকাল থেকে রোমান ও গ্রিকরা ল্যাভেন্ডারের ঔষধি গুণের কথা জানত। রোমান রাজরাজড়াদের স্নানে ল্যাভেন্ডারের নির্যাস ছিল প্রতিদিনের সঙ্গী। তা ছাড়া দামি কাপড় পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে ল্যাভেন্ডার সেই প্রাচীনকাল থেকেই সমান জনপ্রিয়। ছত্রাক সংক্রমণ, প্রদাহ নিরাময়ে, ক্ষতস্থান দ্রুত সারাতে এবং পেশির ব্যথা উপশমে, চুলের উজ্জ্বলতা বাড়াতে, ত্বকের যত্নে ল্যাভেন্ডারের নির্যাস, উদ্বায়ী তেলযুক্ত বহু ক্রিম ও লোশন বাজারে পাওয়া যায়।
ল্যাভেন্ডারের সুগন্ধি
এই ফুলের নির্যাসের ঘ্রাণে দিনভর ফুরফুরে মেজাজে থাকতে পছন্দ করত প্রাচীনকালের অভিজাত ও শৌখিন ফরাসিরা। সৌগন্ধিকদের কাছে সুগন্ধি ল্যাভেন্ডার খুবই প্রিয়। ফ্রান্সের দক্ষিণ উপকূলে ‘ফুলের রাজধানী’ গ্রাস শহর। আলপ্সের কোলে মহিমাময় নির্জন পাহাড়ঘেরা ছবির চেয়ে সুন্দর এই শহরের আরেক নাম ‘সুগন্ধি শহর’। বেশির ভাগ ল্যাভেন্ডারের নির্যাস পাতন প্রক্রিয়ায় উৎপাদন করা হয় গ্রাস নামের এ শহরে। ফ্রান্সের বিখ্যাত পারফিউম তৈরির কারখানাগুলো এখানেই। এ ছাড়া এ শহরে ছোট-বড় বহু প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে এই চমৎকার বেগুনি রঙের ফুলটি ঘিরে। প্রসাধনী ও পারফিউম তৈরিতে ল্যাভেন্ডারের নির্যাস ব্যবহার করা হয়; বিশেষ করে পুরুষদের পারফিউমে এর ব্যবহার বেশি হয়ে থাকে।
সুগন্ধি সাবান, শ্যাম্পু থেকে শুরু করে হাজারো রকমের প্রসাধনী ও সুগন্ধি তৈরিতে ল্যাভেন্ডারের ব্যবহার ব্যাপক। কয়েকটি পারফিউমের নাম উল্লেখ না করলেই নয়। ইভস স্যাঁ লরের ‘লা নুই দ্য ওঁম (পুরুষের রাত)’, প্যাকো রাবানের ‘ফ্যান্টম’, গারল্যাঁর ‘এরিতাজ’ (উত্তরাধিকার)। নারীদের জন্য পারফিউম তৈরিতেও এ নির্যাসের ব্যবহার করা হয়েছে। শ্যানেলের অনেক প্রসাধনী ও পারফিউমে ল্যাভেন্ডারের নির্যাস স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছে। আসলে ল্যাভেন্ডার বাদ দিয়ে বহু পারফিউম ও প্রসাধনী তৈরির কথা ভাবা যায় না। অনেকটা কিংবদন্তির পরি-কন্যা লাভ্যানডিনের মতো ল্যাভেন্ডার প্রসাধনী ও সুগন্ধির বিশাল জগতে এক সত্যিকারের কিংবদন্তি। অনেকটাই তুলনাহীন এক অলৌকিক সৃষ্টি, যেন স্বর্গ থেকে বিচ্যুত বেগুনি অশ্রুজলের ফুল।
পরিদের মধ্যে রূপে-গুণে অনন্য এবং সবার থেকে সুন্দর লাভ্যানডিন। একমাত্র তারই চোখের রং বেগুনি। আর কারও এমন মায়াবী রঙের চোখ হয় না। লাভ্যানডিন থাকে পৃথিবী থেকে অনেক অনেক দূরে, মহাকাশের শান্ত মণ্ডল ছুঁয়ে মেঘের মধ্যে খুব সুন্দর একটি পরির দেশে।
একদিন সে জেনে যায় যে পৃথিবীতে অনেক রঙের, অনেক মনমাতানো সৌরভের ফুল আছে। ফুল, পাখি আর মৌমাছির এই পৃথিবীর প্রতি এক দুর্নিবার আকর্ষণ বোধ করে লাভ্যানডিন। আর তাই সে পরিদের দেশ ছেড়ে পৃথিবীতে চলে আসে। তার ইচ্ছা, স্বর্গের মতো এ পৃথিবীতে সে চিরদিনের জন্য এক স্থায়ী আবাস গড়বে।
অনেক দিন আগের কথা, একদিন সে অনেক দূরের পথ পাড়ি দিয়ে পৃথিবীতে পাহাড় আর সমুদ্রের মাঝে একটি উপত্যকায় এসে পৌঁছায়। সেখানে পৌঁছেই তার মন খুব খারাপ হয়ে যায়। কারণ লাভ্যানডিন যেখানে এসে পৃথিবীকে স্পর্শ করেছিল, সেটি ছিল মরুভূমির মতো প্রাণহীন এক বিরান প্রান্তর। সেখানে গাছপালা, ফুল-ফল, পাখি– কিছুই নেই। ভীষণ আশাহত ও বিষণ্ন পরি-কন্যার চোখ অশ্রুসজল হলো, বড় বড় ফোঁটায় ঝরে পড়ল বেগুনি অশ্রু। লাভ্যানডিনের বেগুনি অশ্রু ধারায় ভিজে গেল দক্ষিণ ফ্রান্সের প্রভান্স অঞ্চলের অনুর্বর রুক্ষ ও শুষ্ক মাটি। পরিণত হলো সুফলা ভূমিতে।
কিছুদিনের মধ্যে যত দূর দৃষ্টি যায় তত দূরের দিগন্ত ছুঁয়ে ছেয়ে গেল একটি আকর্ষণীয় এবং ভীষণ মিষ্টি সুবাসের বর্ষজীবী একটি গুল্মে। সেই থেকে প্রতিবছর জুন মাসের মাঝামাঝি অদ্ভুত সুন্দর ছোট ছোট বেগুনি ফুলে ছেয়ে যায় ল্যাভেন্ডারের গুল্ম, উপচে পড়ে ফুল। গাঢ় নীল আকাশের নিচে চারদিকে শুধু পাগল করা বেগুনি রঙের উচ্ছল, উজ্জ্বল আভা, এক বিস্ময়কর সৌন্দর্য। অনুচ্চ পাহাড়ের ঢাল বেয়ে দিগন্ত প্রসারিত আঙুরের বাগান, সারি সারি বহু পুরোনো জলপাইগাছ ছাড়িয়ে নীল সমুদ্রের বাতাসে ভেসে বেড়ায় মনমাতানো সুগন্ধ। চারদিকে ফুল আর ফুল। ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছির বিরামহীন আনাগোনা, পাখিদের অকারণ অবাধ্য উচ্ছলতা, সে এক স্বপ্নের চেয়ে সুন্দর ভূমধ্যসাগরের পশ্চিম অববাহিকায় বিশাল ফুলের রাজ্য। আগস্ট পর্যন্ত তার রেশ থাকে।
ফ্রান্সের দক্ষিণের ল্যাভেন্ডার গুল্মের অপার্থিব সৌন্দর্যে মোহিত হয়ে সুগন্ধিপ্রিয় ফরাসিদের কেউ একজন বহুকাল আগে বেগুনি অশ্রুজলের পরি-কন্যা লাভ্যানডিনের উপকথা বলেছিলেন। আজও তা মানুষের মুখে মুখে সমান জনপ্রিয়।
ল্যাভেন্ডারের ঔষধি গুণ
প্রাচীনকাল থেকে রোমান ও গ্রিকরা ল্যাভেন্ডারের ঔষধি গুণের কথা জানত। রোমান রাজরাজড়াদের স্নানে ল্যাভেন্ডারের নির্যাস ছিল প্রতিদিনের সঙ্গী। তা ছাড়া দামি কাপড় পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে ল্যাভেন্ডার সেই প্রাচীনকাল থেকেই সমান জনপ্রিয়। ছত্রাক সংক্রমণ, প্রদাহ নিরাময়ে, ক্ষতস্থান দ্রুত সারাতে এবং পেশির ব্যথা উপশমে, চুলের উজ্জ্বলতা বাড়াতে, ত্বকের যত্নে ল্যাভেন্ডারের নির্যাস, উদ্বায়ী তেলযুক্ত বহু ক্রিম ও লোশন বাজারে পাওয়া যায়।
ল্যাভেন্ডারের সুগন্ধি
এই ফুলের নির্যাসের ঘ্রাণে দিনভর ফুরফুরে মেজাজে থাকতে পছন্দ করত প্রাচীনকালের অভিজাত ও শৌখিন ফরাসিরা। সৌগন্ধিকদের কাছে সুগন্ধি ল্যাভেন্ডার খুবই প্রিয়। ফ্রান্সের দক্ষিণ উপকূলে ‘ফুলের রাজধানী’ গ্রাস শহর। আলপ্সের কোলে মহিমাময় নির্জন পাহাড়ঘেরা ছবির চেয়ে সুন্দর এই শহরের আরেক নাম ‘সুগন্ধি শহর’। বেশির ভাগ ল্যাভেন্ডারের নির্যাস পাতন প্রক্রিয়ায় উৎপাদন করা হয় গ্রাস নামের এ শহরে। ফ্রান্সের বিখ্যাত পারফিউম তৈরির কারখানাগুলো এখানেই। এ ছাড়া এ শহরে ছোট-বড় বহু প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে এই চমৎকার বেগুনি রঙের ফুলটি ঘিরে। প্রসাধনী ও পারফিউম তৈরিতে ল্যাভেন্ডারের নির্যাস ব্যবহার করা হয়; বিশেষ করে পুরুষদের পারফিউমে এর ব্যবহার বেশি হয়ে থাকে।
সুগন্ধি সাবান, শ্যাম্পু থেকে শুরু করে হাজারো রকমের প্রসাধনী ও সুগন্ধি তৈরিতে ল্যাভেন্ডারের ব্যবহার ব্যাপক। কয়েকটি পারফিউমের নাম উল্লেখ না করলেই নয়। ইভস স্যাঁ লরের ‘লা নুই দ্য ওঁম (পুরুষের রাত)’, প্যাকো রাবানের ‘ফ্যান্টম’, গারল্যাঁর ‘এরিতাজ’ (উত্তরাধিকার)। নারীদের জন্য পারফিউম তৈরিতেও এ নির্যাসের ব্যবহার করা হয়েছে। শ্যানেলের অনেক প্রসাধনী ও পারফিউমে ল্যাভেন্ডারের নির্যাস স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছে। আসলে ল্যাভেন্ডার বাদ দিয়ে বহু পারফিউম ও প্রসাধনী তৈরির কথা ভাবা যায় না। অনেকটা কিংবদন্তির পরি-কন্যা লাভ্যানডিনের মতো ল্যাভেন্ডার প্রসাধনী ও সুগন্ধির বিশাল জগতে এক সত্যিকারের কিংবদন্তি। অনেকটাই তুলনাহীন এক অলৌকিক সৃষ্টি, যেন স্বর্গ থেকে বিচ্যুত বেগুনি অশ্রুজলের ফুল।
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
৬ দিন আগেভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫