Ajker Patrika

ইরাসমুস মুন্ডুস স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে চাইলে

আহম্মেদ বিন আব্দুস সালাম
ইরাসমুস মুন্ডুস স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে চাইলে

ইরাসমুস মুন্ডুস স্কলারশিপটি ইউরোপের একটি মর্যাদাপূর্ণ উচ্চতর স্টাডি প্রোগ্রাম। এটি আন্তর্জাতিকভাবে ইউরোপের নামকরা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে সমন্বিতভাবে প্রদান করা হয়। তবে অল্পকিছু প্রোগ্রামের ক্ষেত্রে এই স্কলারশিপের সমন্বয়কারী ইউনিভার্সিটি ইউরোপের বাইরেও অবস্থিত। এই স্কলারশিপের প্রতিষ্ঠানগুলো দুইয়ের অধিক দেশে হয়ে থাকে। প্রথম সেমিস্টার নির্দিষ্ট কোনো দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্পন্ন করার পর ভবিষ্যৎ গবেষণা এবং নির্দিষ্ট পছন্দের বিষয়টির ওপর বিবেচনা করে ছাত্রছাত্রীরা অন্য কোনো দেশের ইউনিভার্সিটিতে মোবিলিটি নির্বাচন করে। দুই বছরের মাস্টার্সের জন্য চার সেমিস্টারের কেউ চাইলে চারটা দেশের ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়ন করতে পারবেন।

তবে কমপক্ষে দুইটা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করতেই হবে। ডিগ্রি শেষের পর শিক্ষার্থীরা জয়েন্ট মাস্টার্স ডিগ্রি অথবা ডাবল বা মাল্টিপল ডিগ্রি সনদ পাবেন। এটা নির্ভর করে ওই নির্দিষ্ট সমন্বিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সিদ্ধান্তের ওপর।

অধ্যয়নের সুযোগ যেসব বিষয়ে 
ইরাসমুস মুন্ডুস স্কলারশিপে মোট ১৭৮টি মাস্টার্স প্রোগ্রাম রয়েছে। এগুলোকে কয়েকটি স্টাডি ক্ষেত্রের অধীনে বিবেচনা করা হয়। যেমন মানবিক, রসায়ন, অর্থনীতি, শিক্ষা, পরিবেশ এবং ভূ-বিজ্ঞান, তথ্যপ্রযুক্তি, আইন, গণিত, জীববিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান, দর্শন ইত্যাদি।

আবেদনের যোগ্যতা
আবেদন করতে হলে অবশ্যই ব্যাচেলর ডিগ্রি থাকতে হবে। আবার পড়াবস্থায় আবেদন করা যাবে, যদি স্কলারশিপের মাস্টার্স প্রোগ্রাম শুরু হওয়ার আগে ব্যাচেলর ডিগ্রি শেষ করেন। তা ছাড়া বিশেষভাবে আবেদনের যোগ্যতা নির্ভর করে নির্দিষ্ট মাস্টার্স প্রোগ্রামের ওপর। যেমন ভাষাগত দক্ষতা (আইইএলটিএস, টোফেল, পিটিই ইত্যাদি) ল্যাঙ্গুয়েজ স্কোর কত হবে, নির্দিষ্ট কোনো কোর্স ব্যাচেলরে থাকতে হবে।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র 
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নির্ভর করে নির্দিষ্ট প্রোগ্রামের চাহিদার ওপর। তবে সব ক্ষেত্রে সুপারিশপত্র (বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক কর্তৃক অথবা উচ্চতর কর্মকর্তা কর্তৃক অফিশিয়াল পত্র স্বাক্ষরিত), লেটার অব মোটিভেশন অথবা স্টেটমেন্ট অব পারপাস, ইউরোপাস ফরমেটেড কারিকুলাম ভাইটে (CV), স্নাতক ডিপ্লোমার কিংবা স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমার সনদ এবং ট্রান্সক্রিপ্ট অব রেকর্ডস, পাসপোর্ট, ভাষাগত যোগ্যতার সনদ ইত্যাদি অবশ্যই লাগবে। তা ছাড়া কিছু ক্ষেত্রে এক্সট্রা কারিকুলার, কো-কারিকুলার সনদ, চাকরির অভিজ্ঞতা সনদ অতিরিক্ত মান যুক্ত করে।

স্কলারশিপে সুযোগ-সুবিধা 
স্কলারশিপে ব্যাপক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। প্রথমত, পড়াশোনা কিংবা গবেষণার জন্য সব অর্থ ব্যয় স্কলারশিপ থেকে বহন করা হয়। যেমন শিক্ষার্থীদের সেমিস্টার ফি নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। তা ছাড়া প্রোগ্রাম কান্ট্রি বিবেচনা করে প্রতিবছর একটা পরিবহন খরচও দেয়। শিক্ষার্থীর দেশ/বসবাসের জায়গার দূরত্বের ওপর ভিত্তি করে প্রতিবছর ২ হাজার বা ৩ হাজার ইউরো দেওয়া হয়। স্কলারশিপ পাওয়ার পর এককালীন ইনস্টলেশন খরচ হিসেবে ১ হাজার ইউরো দেওয়া হয়। প্রতি মাসে স্টাইপেন্ড হিসেবে শিক্ষার্থীকে ১ হাজার ইউরো করে দেওয়া, যা দিয়ে শিক্ষার্থীরা থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করতে পারেন। বর্তমানে নতুন প্রোগ্রামের আওতায় প্রতি মাসে স্টাইপেন্ড বৃদ্ধি করে ১ হাজার ৪০০ ইউরো করা হয়েছে।

পড়াশোনা শেষে সুযোগ-সুবিধা 
পড়াশোনা শেষ করার পর অনেক দেশে এক বছরের জব-সার্চিং ভিসা দেওয়া হয়। অনেকে গবেষণা প্রতিষ্ঠানে জব খুঁজে নেয়। কোনো বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা অর্গানাইজেশনের অধীনে পিএইচডি ডিগ্রিতে যোগদান করেন, যেখানে চাকরির মতোই অনেকে পারিশ্রমিক পেয়ে থাকেন। ইউরোপের অনেক দেশে এ রকম লম্বা সময় নিয়ে চাকরি করলে ওই দেশের নিয়মকানুন অনুযায়ী নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।

কীভাবে আবেদন 
আবেদন করতে https://www. eacea.ec.europa.eu/scholarships/erasmus-mundus-catalogue_en ওয়েবসাইট ভিজিট করতে হবে।

আহম্মেদ বিন আব্দুস সালাম, ইরাসমুস মুন্ডুস মাস্টার্স ইন সয়েল সায়েন্স, ওন্দকুজ মায়িজ ইউনিভার্সিটি, তুরস্ক।
অনুলিখন: আনিসুল ইসলাম নাঈম

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত