Ajker Patrika

‘বাঁধ থেকে সরে আশ্রয় নেব কোথায়’

জয়নুল আবেদীন, সাঘাটা (গাইবান্ধা)
আপডেট : ১৪ জুন ২০২২, ১৫: ৪৩
Thumbnail image

‘ভিক্ষা করলে জীবন বাঁচে, না করলে না খ্যায়া থাকি, বান্দোত থেক্যা আশ্রায় কোনা (টুকু) ভাংগ্যা দিলে হামি কুটি যামু, কার কাছে যামু ভাই, হামার মাথার ওপর তো কোনো মানুষ নাই।’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলেন পবনতাইড় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে বসবাস করা তাহেরা বেগম। তাঁর মতো এ আকুতি এখন বাঁধে মাথা গোঁজার ঠাঁই পাওয়া বহু মানুষের। এদের মধ্যে বেশির ভাগ পরিবার নদীভাঙনে বাস্তুভিটা হারিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে।

তারা জানায়, ‘দীর্ঘ ৩০-৩৫ বছর বাঁধে আশ্রয় নিয়ে পরিবার-পরিজনসহ কোনো রকমে জীবন নির্বাহ করে আসছি। বাঁধে থাকার ইচ্ছা নেই, বাস্তুভিটা না থাকায় বাধ্য হয়ে আছি। এখন বাঁধ থেকে সরে কোথায় গিয়ে আশ্রয় নেব এই চিন্তায় ঘুম ও খানা হারাম হয়ে গেছে।’

জানা গেছে, সাঘাটা উপজেলার যমুনা নদীর ডান তীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। বন্যার হাত থেকে উপজেলাকে রক্ষা করতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ১৯৬৫ সালে বাঁধটি নির্মাণ করে। ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বাঁধটি নির্মাণ করায় এলাকার হাজার হাজার একর জমির ফসল বন্যার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। ধীরে ধীরে বাঁধে গড়ে উঠেছে অসংখ্য অবৈধ বাড়িঘর ও স্থাপনা। পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধটি সংস্কারের উদ্যোগ নিলেও বসতি ও স্থাপনার কারণে তা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় বাঁধটি পুনঃসংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে প্রকল্পের টেন্ডার সম্পন্ন করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী বাঁধ থেকে বাড়িঘরসহ সব স্থাপনা জরুরি ভিত্তিতে সরিয়ে নেওয়ার জন্য সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন বাস্তুভিটাহীন ছিন্নমূল মানুষ।

সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন জানান, তদন্ত করে বাঁধে বসবাস করা বাস্তুহারা মানুষের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত