সম্পাদকীয়
প্রবাদটি বুঝিয়ে দেয়, বিভিন্ন দেশের মধ্যে কূটনৈতিক তৎপরতা চালানোর সময় যে বৈঠকগুলো হয়, সেগুলোয় বাবুর্চিখানা খুব বড় ভূমিকা রাখে।
রাজা-বাদশাহ, প্রেসিডেন্ট-প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্কের দূরত্ব কমিয়ে দেয় এই রান্নাঘর। সে কথারই প্রতিধ্বনি পাওয়া যায় ফরাসি কূটনীতিক ফিলিপ ফোরের বক্তব্যে। তিনি একবার বলেছিলেন, ‘কূটনীতিবিদেরা রান্নাঘরকে সব সময় ব্যবহার করেছেন যুদ্ধংদেহি সম্পর্ককে কোমল করার অস্ত্র হিসেবে। সংঘর্ষের তাপমাত্রা কমাতে রান্নাঘরের তুলনা নেই।’
বিশ্বায়নের যুগে খাওয়া-দাওয়া শুধু ক্ষুন্নিবৃত্তি নিবারণের কারণ হিসেবে টিকে থাকেনি; বরং বড় বড় ভূরাজনৈতিক সংকট নিরসনে তার রয়েছে শান্তিময় অবদান।
ফরাসি রান্নাঘরের প্রভাব যখন কূটনীতিতে বাড়ছিল, তখন ফরাসি সাংবাদিক আলবের্ত ম্যুসে ‘লা মঁদ’ পত্রিকায় ১৯৫৬ সালে লিখলেন: ‘কোনো সন্দেহ নেই, ফ্রান্সই সর্বপ্রথম কূটনৈতিক রাজনীতিতে রান্নাঘরকে নিজের পক্ষে ব্যবহার করতে সক্ষম হয়েছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন তো বলেইছিলেন, ‘খাদ্য হচ্ছে কূটনীতির প্রাচীনতম অস্ত্র’। মন্ত্রী হওয়ার পর বিদেশ সফরে তিনি সব সময় যুক্তরাষ্ট্রের সেরা বাবুর্চিদের নিয়ে যেতেন। মার্কিন দূতাবাসে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সেই শেফ যুক্তরাষ্ট্রের সেরা রান্নাগুলো করতেন, এভাবেই নতুন নতুন মার্কিন খাবারের স্বাদ পেত বিদেশের মানুষ।
ফরাসি কূটনীতিকদের মধ্যে সবচেয়ে সফল শার্ল মোরিস দে তালেইরান-পেরিগোর ফরাসি দেশের জন্য জটিল রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সময়ে তাঁর দায়িত্ব পালন করেছেন। ভিয়েনা কংগ্রেসের সময় (১৮১৪-১৮১৫) ফ্রান্সের রাজা অষ্টাদশ ল্যুদভিক যখন শার্ল মোরিসকে পরামর্শ দিচ্ছিলেন, তখন মোরিস বলেছিলেন: ‘মহামান্য রাজা, আপনার লিখিত পরামর্শের চেয়ে আমার বেশি দরকার হচ্ছে হাঁড়ি-পাতিল।’ সে সময় প্রখ্যাত শেফ মারি আন্তুয়ান কারেমকে সঙ্গে নিয়ে রান্নাঘরের কূটনীতি চালিয়েছিলেন শার্ল মোরিস। এবং পরস্পর শত্রুভাবাপন্ন রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে উষ্ণ সম্পর্ক স্থাপনে অবদান রেখেছিলেন।
এ ব্যাপারে সাদ্দাম হোসেনও পিছিয়ে ছিলেন না। আহমদ হাসান আল বকর যখন ইরাকের প্রেসিডেন্ট, তখন সাদ্দাম হোসেন ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। সে সময় ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন জ্যাক শিরাক। প্যারিসের এক বাগানে সামুদ্রিক মাছের জম্পেশ এক খাদ্যোৎসব করলেন সাদ্দাম, যা জ্যাক শিরাকের মন কেড়ে নিল। ফ্রান্স ও ইরাকের মধ্যে এই খাদ্যোৎসব এক বন্ধন সৃষ্টি করেছিল। অনেক ধরনের সহযোগিতার মধ্যে একটির উল্লেখ করা যায়। ২০০২ সালে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ইরাক আক্রমণবিষয়ক মার্কিন প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছিল ফ্রান্স।
আজকের শত্রু-দেশ কাল হয়ে যাচ্ছে মিত্র, ঘটছে উল্টো ঘটনাও। সবকিছুই তারা করছে বিশ্বে শান্তি আনার উপায় নির্ধারণে। অথচ তারা যদি পরস্পরকে শীতল চোখে না দেখে একে অন্যের দিকে বাড়িয়ে দিত সহযোগিতার উষ্ণ হাত, তাহলে অনেক সংকট থেকেই রক্ষা পেত পৃথিবী। আর এ ক্ষেত্রে খাদ্য-সংস্কৃতি হয়ে উঠতে পারত অনেক বড় বন্ধু।
প্রবাদটি বুঝিয়ে দেয়, বিভিন্ন দেশের মধ্যে কূটনৈতিক তৎপরতা চালানোর সময় যে বৈঠকগুলো হয়, সেগুলোয় বাবুর্চিখানা খুব বড় ভূমিকা রাখে।
রাজা-বাদশাহ, প্রেসিডেন্ট-প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্কের দূরত্ব কমিয়ে দেয় এই রান্নাঘর। সে কথারই প্রতিধ্বনি পাওয়া যায় ফরাসি কূটনীতিক ফিলিপ ফোরের বক্তব্যে। তিনি একবার বলেছিলেন, ‘কূটনীতিবিদেরা রান্নাঘরকে সব সময় ব্যবহার করেছেন যুদ্ধংদেহি সম্পর্ককে কোমল করার অস্ত্র হিসেবে। সংঘর্ষের তাপমাত্রা কমাতে রান্নাঘরের তুলনা নেই।’
বিশ্বায়নের যুগে খাওয়া-দাওয়া শুধু ক্ষুন্নিবৃত্তি নিবারণের কারণ হিসেবে টিকে থাকেনি; বরং বড় বড় ভূরাজনৈতিক সংকট নিরসনে তার রয়েছে শান্তিময় অবদান।
ফরাসি রান্নাঘরের প্রভাব যখন কূটনীতিতে বাড়ছিল, তখন ফরাসি সাংবাদিক আলবের্ত ম্যুসে ‘লা মঁদ’ পত্রিকায় ১৯৫৬ সালে লিখলেন: ‘কোনো সন্দেহ নেই, ফ্রান্সই সর্বপ্রথম কূটনৈতিক রাজনীতিতে রান্নাঘরকে নিজের পক্ষে ব্যবহার করতে সক্ষম হয়েছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন তো বলেইছিলেন, ‘খাদ্য হচ্ছে কূটনীতির প্রাচীনতম অস্ত্র’। মন্ত্রী হওয়ার পর বিদেশ সফরে তিনি সব সময় যুক্তরাষ্ট্রের সেরা বাবুর্চিদের নিয়ে যেতেন। মার্কিন দূতাবাসে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সেই শেফ যুক্তরাষ্ট্রের সেরা রান্নাগুলো করতেন, এভাবেই নতুন নতুন মার্কিন খাবারের স্বাদ পেত বিদেশের মানুষ।
ফরাসি কূটনীতিকদের মধ্যে সবচেয়ে সফল শার্ল মোরিস দে তালেইরান-পেরিগোর ফরাসি দেশের জন্য জটিল রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সময়ে তাঁর দায়িত্ব পালন করেছেন। ভিয়েনা কংগ্রেসের সময় (১৮১৪-১৮১৫) ফ্রান্সের রাজা অষ্টাদশ ল্যুদভিক যখন শার্ল মোরিসকে পরামর্শ দিচ্ছিলেন, তখন মোরিস বলেছিলেন: ‘মহামান্য রাজা, আপনার লিখিত পরামর্শের চেয়ে আমার বেশি দরকার হচ্ছে হাঁড়ি-পাতিল।’ সে সময় প্রখ্যাত শেফ মারি আন্তুয়ান কারেমকে সঙ্গে নিয়ে রান্নাঘরের কূটনীতি চালিয়েছিলেন শার্ল মোরিস। এবং পরস্পর শত্রুভাবাপন্ন রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে উষ্ণ সম্পর্ক স্থাপনে অবদান রেখেছিলেন।
এ ব্যাপারে সাদ্দাম হোসেনও পিছিয়ে ছিলেন না। আহমদ হাসান আল বকর যখন ইরাকের প্রেসিডেন্ট, তখন সাদ্দাম হোসেন ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। সে সময় ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন জ্যাক শিরাক। প্যারিসের এক বাগানে সামুদ্রিক মাছের জম্পেশ এক খাদ্যোৎসব করলেন সাদ্দাম, যা জ্যাক শিরাকের মন কেড়ে নিল। ফ্রান্স ও ইরাকের মধ্যে এই খাদ্যোৎসব এক বন্ধন সৃষ্টি করেছিল। অনেক ধরনের সহযোগিতার মধ্যে একটির উল্লেখ করা যায়। ২০০২ সালে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ইরাক আক্রমণবিষয়ক মার্কিন প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছিল ফ্রান্স।
আজকের শত্রু-দেশ কাল হয়ে যাচ্ছে মিত্র, ঘটছে উল্টো ঘটনাও। সবকিছুই তারা করছে বিশ্বে শান্তি আনার উপায় নির্ধারণে। অথচ তারা যদি পরস্পরকে শীতল চোখে না দেখে একে অন্যের দিকে বাড়িয়ে দিত সহযোগিতার উষ্ণ হাত, তাহলে অনেক সংকট থেকেই রক্ষা পেত পৃথিবী। আর এ ক্ষেত্রে খাদ্য-সংস্কৃতি হয়ে উঠতে পারত অনেক বড় বন্ধু।
সৈয়দ মুজতবা আলীর ‘দেশে বিদেশে’ বইয়ের হরফুন মৌলা বা সকল কাজের কাজী আবদুর রহমানের বলা একটি বাক্য—‘ইনহাস্ত ওয়াতানাম’—‘এই আমার জন্মভূমি’। সে কথা বলার সময় আফগানি আবদুর রহমানের চোখেমুখে যে অম্লান দ্যুতি ছড়িয়ে পড়েছিল, সে কথা দিব্যি অনুভব করে নেওয়া যায়...
১৫ ঘণ্টা আগেবিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৮ দিন আগেগাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪