Ajker Patrika

আরব্য উপন্যাসের নতুন অধ্যায় জাবেউর

ক্রীড়া ডেস্ক
আপডেট : ০৮ জুলাই ২০২২, ১২: ১৯
Thumbnail image

আরবের কোনো ঔপন্যাসিককে গ্র্যান্ড স্লাম নিয়ে লিখতে বলা হলে গল্পের মূল নারী চরিত্রকে কত দূর তুলতেন? শেষ ষোলো, বড়জোর কোয়ার্টার ফাইনাল। সেমিফাইনাল-ফাইনালে তোলার মতো উচ্চাভিলাষী লেখা নিশ্চয়ই লিখতে বসতেন না তিনি।

আরব বিশ্ব থেকে নারী টেনিস খেলোয়াড় দূরে থাক, কোনো পুরুষও যে কখনো শেষ চারে উঠতে পারেননি! তবে ওনস জাবেউর এসে উপন্যাসের মোড় তো বটেই, ইতিহাসটাই বদলে দিয়েছেন।

এবারের উইম্বলডনে একের পর এক চমক দেখিয়ে আরবের অনেক প্রথমের সঙ্গে জড়িয়ে গেছেন জাবেউর। গত রাতে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন ২৭ বছর বয়সী তিউনিসিয়ান। টেনিসের উন্মুক্ত যুগে নারী-পুরুষ মিলিয়ে আরব বিশ্বের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে গ্র্যান্ড স্লামের ফাইনালে উঠেছেন তিনি। সেটিও বান্ধবী তাতিয়ানা মারিয়াকে হারিয়ে! জাবেউরের পক্ষে ম্যাচের ফল ৬-২,৩-৬, ৬-১।

লন্ডনের অল ইংল্যান্ড লন টেনিসের সেন্টার কোর্টে প্রথম আর তৃতীয় সেটের ফলই বলে দেয়, কতটা দাপুটে ছিলেন জাবেউর। মাঝে ‘স্যান্ডউইচ’ হয়ে থাকা দ্বিতীয় সেট জিতে মারিয়া ঘুরে দাঁড়ানোর হালকা ইঙ্গিতটাই দিয়েছিলেন মাত্র। আগামীকাল সন্ধ্যায় স্বপ্নের ফাইনালে জাবেউরের প্রতিপক্ষ এলেনা রাইবাকিনা। গত রাতে আরেক সেমিফাইনালে রাশিয়ায় জন্ম নেওয়া কাজাখস্তানির কাছে পাত্তাই পাননি ২০১৯ সালের উইম্বলডন জয়ী সিমোনা হালেপ। ৩০ বছর বয়সী রোমানিয়ান উড়ে গেছেন ৬-৩,৬-৩ গেমে।

১৯৬০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার সান্ড্রা রেইনল্ডস ফাইনালে উঠেছিলেন। সেটিই সর্বশেষ কোনো আফ্রিকান নারীর গ্র্যান্ড স্লামে সেরা সাফল্য। আর আরব বিশ্বের পুরুষদের মধ্যে সবচেয়ে সফল মরক্কোর হিশাম আরাজি শেষবার ২০০৪ সালে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিলেন। সেই আরাজির আশীর্বাদ নিয়েই কাল খেলতে নেমেছিলেন জাবেউর।

প্রথমবার উইম্বলডনের ফাইনালে ওঠার পর উজ্জীবিত ওনস জাবেউর। গত রাতে লন্ডনেআরব বসন্তের শুরুটা হয়েছিল জাবেউরের দেশ তিউনিসিয়া থেকেই। সেখান থেকে শাসকদের বিরুদ্ধে গণবিপ্লবের ঢেউ আছড়ে পড়ে আরবের অন্য দেশে। এবার বৃহৎ মঞ্চে সেই বিপ্লবের চূড়ান্ত পরিণতি দেখার অপেক্ষায় তিনি। সব মিলিয়ে জাবেউর আরব-আফ্রিকা দুই ভূখণ্ডের মানুষকেই গর্বিত করেছেন।

রক্ষণশীল তিউনিসিয়ার নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে এত দূর আসা জাবেউর বলেছেন, ‘অনেক দিনের ত্যাগ ও পরিশ্রমের পর স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। সত্যিই খুব আনন্দিত।’

দুই কন্যাসন্তানকে রেখে উইম্বলডন খেলতে এসেছিলেন জাবেউরের প্রতিপক্ষ মারিয়া। একজন আবার দুধের শিশু। মারিয়া রান্নাবান্নায় বা সাংসারিক কাজে ব্যস্ত থাকলে জাবেউরই বাচ্চাদের দেখাশোনা করেন। বলতে গেলে, আরব কন্যা মারিয়ার পরিবারেই অংশ। বান্ধবীকে হারিয়ে দিলেও তাঁকে নিয়ে গর্বিত তিনি, ‘ও দারুণ লড়াই করেছে। আমি চাই, ও যেন এখনই টেনিস না ছাড়ে। যত দিন প্রয়োজন পড়ে ওর সন্তানদের দেখভাল করব। ওর পরিবারকে আরও ভালোবাসব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত