Ajker Patrika

বাড়ছে রোগী, সংকট ওষুধের

আনোয়ার হোসেন, মনিরামপুর (যশোর) 
আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২: ৫০
বাড়ছে রোগী, সংকট ওষুধের

মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীর চাপ বেড়েছে। আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত রোগ ছাড়াও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অনেকেই ভর্তি হচ্ছেন হাসপাতালে। এদিকে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়লেও দেখা দিয়েছে ওষুধের সংকট।

চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীরা বলছেন, দু-একটি ওষুধ ছাড়া বাকি সব ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওষুধসংকটের বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

গত বৃহস্পতিবার সরেজমিন দেখা গেছে, ৫০ শয্যার এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মহিলা ওয়ার্ডে ২৩ জন, শিশু ওয়ার্ডে ১৬ জন এবং পুরুষ ওয়ার্ডে ২৪ জনসহ মোট ৬৩ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। যার মধ্যে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশু ছিল ৬ জন। এদিকে বহির্বিভাগেও বেড়েছে রোগীর চাপ। বহির্বিভাগে ৩৫০-৪০০ জন রোগী নিয়মিত রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।

আরও দেখা গেছে, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের জন্য স্যালাইন ছাড়া আর কোনো ওষুধ নেই হাসপাতালে। জ্বরের সিরাপের সরবরাহ থাকলেও তা পাচ্ছেন না সব রোগী। বহির্বিভাগে রোগীরা এক সপ্তাহ ধরে গ্যাসের ওষুধ পাচ্ছেন না। হাসপাতালে ভর্তি ডায়রিয়া বা পেটের পীড়ায় আক্রান্ত শিশুদের জিংক সিরাপ, ফেমোটেক, ইমিস্টেট, জি-ম্যাক্স, পেডিয়াভিট, রেসিকা ১০, একটেরিয়া ওষুধ বাইরে থেকে কেনা লাগছে।

মনিরামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দোতলার ১৩ নম্বর বেডে ভর্তি রয়েছেন বাঙালীপুর গ্রাম থেকে আসা শিশু ইব্রাহিম। বৃহস্পতিবার কথা হয় তার মা রহিমা খাতুনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘জ্বর, বমি ও পায়খানা হওয়ায় গত মঙ্গলবার ছেলেকে হাসপাতালে এনেছি। আমার স্বামী দিনমজুর। দুটো খাবার স্যালাইন, একটা তরল স্যালাইন ও জ্বরের সিরাপ ছাড়া হাসপাতাল থেকে আর কোনো ওষুধই পাইনি। ৫-৬ রকমের ওষুধ বাইরের ওষুধের দোকান থেকে কিনতে হয়েছে।’

হাসপাতালের একই ওয়ার্ডের ৭ নম্বর বেডে ভর্তি শিশু আব্দুল্লাহর মা নার্গিস খাতুন বলেন, ‘ছেলেটার পেটের সমস্যা। মঙ্গল দুপুরের দিকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। হাসপাতাল থেকে দুটো খাবার স্যালাইন, একটা তরল স্যালাইন ছাড়া কিছুই পাইনি। জ্বরের সিরাপসহ ৭ রকমের ওষুধ বাইরে থেকে কিনেছি।’

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) অনুপ বসু বলেন, ‘হঠাৎ আবহাওয়ার পরিবর্তন হয়েছে। ৪-৫ দিন ধরে রাতে ঠান্ডা আর দিনে গরম পড়ছে। ফলে জ্বর, পেটের পীড়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে মানুষ হাসপাতালে আসছেন।’

মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্টোর কিপার মহিতোষ দাস বলেন, ‘বহির্বিভাগে গ্যাসের ওষুধের চাহিদা অনেক বেশি। কিন্তু আমরা চাহিদার অর্ধেক গ্যাসের ওষুধ পাই। ৪-৫ দিন ধরে ওষুধের সংকট দেখা দিয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের জন্য বমি ও গ্যাসের সিরাপের সরবরাহ থাকে না। ভর্তি রোগীরা অন্য সব ওষুধ পান।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তন্ময় বিশ্বাস বলেন, ‘আবহাওয়া পরিবর্তন হওয়ায় বহির্বিভাগ ও ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। বহির্বিভাগে গ্যাসের ওষুধের সংকট থাকায় হাসপাতালের ফার্মেসিতে কম করে সরবরাহ দেওয়া হচ্ছে। গ্যাসের ওষুধের চাহিদা বেশি হওয়ায় অল্প সময়ের মধ্যে তা ফুরিয়ে যাচ্ছে।’

তন্ময় বিশ্বাস আরও বলেন, ‘ডায়রিয়া রোগীদের জন্য বমি ও গ্যাসের সিরাপের সরবরাহ নেই। হাসপাতালে যে ওষুধ আছে রোগীরা তা পাচ্ছেন। অনেক সময় ডায়রিয়া দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে কিছু ওষুধ রোগীদের কিনতে হচ্ছে। হাসপাতালে ওষুধের যে সংকট দেখা দিয়েছে তা স্বল্প সময়ের মধ্যেই নিরসন হবে বলে আশা করি।’ ভবিষ্যতে সুযোগ থাকলে সব ধরনের ওষুধ সরবরাহের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আ.লীগের এমপি শাম্মীর বাসায় ১০ লাখ টাকা চাঁদাবাজি ও ভাগ-বাঁটোয়ারার বিবরণ দিলেন রিয়াদ

কোটি টাকা আত্মসাৎ করে লাপাত্তা: কে এই ফ্লাইট এক্সপার্ট এমডি সালমান, বাবার হাত ধরে যাঁর উত্থান

গঙ্গাচড়ায় হিন্দুপল্লিতে হামলাকারীদের উসকানি, স্থানীয় সাংবাদিক গ্রেপ্তার

কিশোরগঞ্জে হর্টিকালচারের উপপরিচালকের বিরুদ্ধে ‘সমকামিতার’ অভিযোগ, মামলা বাবুর্চির

অতিরিক্ত ফি দাবি করায় বিমানবন্দর স্টাফের চোয়াল ভেঙে দিলেন যাত্রী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত