Ajker Patrika

আবারও পরীক্ষার্থীদের ওপর হামলা, উত্তেজনা

কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
আবারও পরীক্ষার্থীদের ওপর হামলা, উত্তেজনা

কুষ্টিয়ার কুমারখালীর পান্টিতে এক সপ্তাহের ব্যবধানে আবারও এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে পান্টি বাজারসংলগ্ন নির্মাণাধীন সেতুর বিকল্প সড়কের ওপর এ ঘটনা ঘটে। এতে সজল বিশ্বাস (১৬) ও আকাশ বিশ্বাস নামের দুই পরীক্ষার্থী আহত হয়েছে। তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

আহত সজল বিশ্বাস উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের চর এতমামপুর গ্রামের ফরিদ বিশ্বাসের ছেলে।

আর আকাশ বিশ্বাস একই গ্রামের আশরাফুল বিশ্বাসের ছেলে। তারা যদুবয়রা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। তাদের পরীক্ষা কেন্দ্র পান্টি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়।

এদিকে এ হামলার ঘটনায় যদুবয়রা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দুপক্ষে উত্তেজনা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

আহত শিক্ষার্থীরা জানায়, পরীক্ষা শেষে বখাটেরা কয়েকজন ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার চেষ্টা করে। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। পরে একটি অটোরিকশায় করে পাঁচজন ছাত্রী ও তিন বন্ধু বাড়ি ফিরছিল। পান্টি বাজারের নির্মাণাধীন সেতুর ওপর গাড়ি থামিয়ে বখাটেরা তাদের কিলঘুষি মারতে থাকে। পরে লোকজন ছুটে এলে তারা দৌড়ে পালিয়ে যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পান্টি এলাকার কিশোর গ্যাংয়ের দুই সদস্যের নেতৃত্বে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলে একজনের পরীক্ষার প্রবেশপত্র পাওয়া গেছে। সে ওই এলাকার এক মাছ বিক্রেতার ছেলে। তারা স্থানীয় ছাত্রলীগের ছত্রচ্ছায়ায় এলাকায় কিশোর গ্যাং পরিচালনা করে।

কিশোর গ্যাংয়ের এক সদস্যের ভাই বলেন, ‘তাকে দেখলাম কাগজপত্র ফেলে দৌড়ে পালিয়ে গেল।

ছেলেটা ছাত্রলীগের সঙ্গে মিশে খারাপ হয়ে গেছে। বারবার চেষ্টা করেও আমরা পারিবারিকভাবে তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি। আপনারা এবার শাসন করে দেন।’

এ বিষয়ে যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান মিজান বলেন, প্রতিপক্ষের নেতা সাবু ও ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলামের ইন্ধনে আমার সমর্থিত পরীক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়েছে। হামলায় দুজন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় থানায় মামলা করা হবে।’

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে যদুবয়রা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য কামরুজ্জামান সাবু বলেন, ‘পান্টিতে কে বা কারা হামলা করেছে জানি না। তবে পান্টির ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের লোকজন যদুবয়রাতে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। ইতিমধ্যে আমার এক সমর্থকের দোকানে হামলা করেছে।’

পান্টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামিউর রহমান সুমন বলেন, ‘যদুবয়রা ইউপি চেয়ারম্যানের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। পান্টিতে কী ঘটেছে জানি না। তবে বারবার পরীক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। প্রয়োজনে যদুবয়রার চেয়ারম্যানকে সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, বিষয়টি নিয়ে পুলিশ কাজ করছে।

এর আগে গত শনিবার দুপুরে উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের পূর্বাশা ক্লাব এলাকায় এসএসসির দুই পরীক্ষার্থীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এক পরীক্ষার্থীর ভাই, চাচা, ছাত্রলীগ নেতাসহ চারজন গুরুতর আহত হন। পরে থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত