Ajker Patrika

হাওর-নদীতে বাড়ছে পানি, ডুবছে ফসল

নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০২২, ১৫: ৫৩
হাওর-নদীতে বাড়ছে পানি, ডুবছে ফসল

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার বিভিন্ন হাওর ও নদ-নদীতে অস্বাভাবিকভাবে পানি বাড়ার কারণে কৃষকের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বিশেষ করে নাসিরনগরে লঙ্গন, মেঘনা নদীর তীর ঘেঁষে চর ও বিলে রোপণ করা ধানি জমি ডুবতে শুরু করেছে। এদিকে পানি বাড়তে থাকায় অকাল বন্যায় ফসল হারানোর ভয়ে আধা পাকা অবস্থায় বোরো ধান কাটতে শুরু করেছেন কৃষকেরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ ও সুনামগঞ্জের নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নাসিরনগর উপজেলার বিভিন্ন হাওর ও নদীতে পানি বাড়ছে। পানি বাড়ায় চরের বেশ কিছু জমি তলিয়ে গেছে। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে হাওরের ধান তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন কৃষকেরা। এসব এলাকার কৃষকেরা কাঁচা ধান কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার গোয়ালনগর, ভিটাডুবি, রামপুর, নোয়াগাঁও, নাসিরপুর ও টেকানগরের বেশি কিছু নিচু এলাকার জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এভাবে যদি আর চার থেকে পাঁচ দিন পানি বাড়তে থাকে তাহলে উপজেলার সব কটি হাওর পানির নিচে তলিয়ে যাবে। উপজেলার গোয়ালনগর বাজারের পেছনে মেঘনা নদীর তীর ঘেঁষে জেগে ওঠা চরে এ বছর প্রায় দুই হাজার বিঘা জমিতে ধান চাষ হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরের প্রায় ৮০ শতাংশ ধান তলিয়ে গেছে।

উপজেলার গোয়ালনগর ইউনিয়নের কৃষক শরীফ মিয়া বলেন, ‘গোয়ালনগর চরের পাঁচ বিঘা জমির ধান দিয়া আমার সংসার চলে। ধান পাইলে পরিবার লইয়া চলতাম পারুম। না হইলে পথে বইতো হইব। এনজিও থেইক্যা যে লোন উঠাইছি, ইতা অহন কেমনে দিমু—হেই চিন্তায় আছি।’

একই ইউনিয়নের আরেক কৃষক সেলিম মিয়া বলেন, ‘চরে আমার ১০ বিঘা জমি আছে। কিন্তু এক বিঘা জমির ধানও কাটতাম পারছি না। সব পানির নিচে চলে গেছে। এখন পরিবার নিয়া কেমনে চলুম। যদি আর চার থেকে পাঁচ দিন পর পানিডা আইত, তাইলেও কিছু ধান উডাইতাম পারতাম।’

উপজেলার গোয়ালনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজহারুল হক বলেন, ‘আমাদের গোয়ালনগর ইউনিয়নে প্রায় ২৫০ বিঘা জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে বলে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানাতে পেরেছি। তবে উঁচু জমিতে এখনো পানি ওঠেনি।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাইদ তারেক বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ প্রায় ১০ হেক্টরের বেশি হবে না। যেসব জমিতে পানি উঠছে, সেসব জমিতে ধান চাষ করা হয় না। মূলত গরুর খাবার ঘাস হিসেবে ধানের চাষ হয়। পানি না আসলে ধান হয়। আর পানি আসলে তলিয়ে যায়।’

ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেহেদী হাসান খান শাওন বলেন, ‘বিষয়টি আমি জানার চেষ্টা করছি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত