Ajker Patrika

উড়ন্ত গতিতে ফিরল পুঁজিবাজার

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
আপডেট : ১২ জানুয়ারি ২০২২, ০৯: ৫৩
Thumbnail image

নতুন বছরে উড়ন্ত গতি পেয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। টানা পাঁচ কার্যদিবস ধরে ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে সূচক। এ সময়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্যসূচক বেড়েছে ২৩০ পয়েন্ট। আর বাজার মূলধন বেড়েছে ১৫ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা। সূচকের অব্যাহত ইতিবাচক ধারায় আগ্রহ বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের। গতকাল মঙ্গলবার ডিএসইএক্স সূচকটি ৫৫ পয়েন্ট বা প্রায় ১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৪৯ পয়েন্টে। এর আগে সর্বশেষ গত ৭ ডিসেম্বর সূচকটি একই অবস্থানে ছিল। এরপর সেটি কমতে কমতে ২৬ ডিসেম্বর ৬ হাজার ৬৩০ পয়েন্টে নেমে গিয়েছিল।

এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শেয়ারবাজারে লেনদেন বৃদ্ধি ও সূচকের উত্থান সাধারণত একই সঙ্গে ঘটে। এই বাড়া-কমার বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক থাকতে হবে। অনেক বড় বড় ও ভালো কোম্পানি শেয়ারবাজারের বাইরে রয়েছে। এরা এলে বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। তবে ভালো কোম্পানিকে আনতে হলে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসিকে যৌথ উদ্যোগ নিতে হবে। এটা করতে না পারলে শেয়ারবাজারের হালচালে খুব একটা পরিবর্তন হবে না।’

বাজারের অব্যাহত উত্থান ও সূচক ৭ হাজারের ঘর অতিক্রম করার বিষয়ে জাতিসংঘের বিনিয়োগ সংস্থা আঙ্কটাডের সাবেক ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্স অফিসার ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক মুহাম্মদ মহসিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পুঁজিবাজার তখনই ভালো থাকে, যখন ব্যাংকিং খাতে তারল্যসংকট থাকে না। কিন্তু আমাদের এখানে ঘন ঘন তারল্যসংকট পুঁজিবাজারকে পেছনে টেনে ধরার জন্য অনেকাংশে দায়ী। এর ফলে বাজার স্থিতিশীল হতে পারে না। আর ডিসেম্বর ক্লোজিংসহ আরও কিছু মনস্তাত্ত্বিক কারণ তো আছেই। নতুন বছরে এ সমস্যাগুলো কেটে যাওয়ায় বাজার আবার গতি পেয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘বাজারকে দীর্ঘ সময়ের জন্য ভালো থাকতে হলে, ব্যাংকিং খাতের হেলথ ভালো রাখতে হবে। এ ছাড়া মুদ্রা পাচার রোধ করতে হবে। পাশাপাশি স্টক কিংবা বন্ড বাজারকে শক্তিশালী করতে হবে।’

গতকাল সূচকের পাশাপাশি লেনদেনেও বড় উত্থান হয়েছে শেয়ারবাজারে। দিন শেষে ঢাকার বাজারে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে ৪৯০ কোটি টাকা বেশি। গত প্রায় তিন মাসের ব্যবধানে গতকালই ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে। এর আগে সর্বশেষ গত ৭ অক্টোবর সর্বোচ্চ ২ হাজার ৪৯৭ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল। সরকারের মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে গত প্রায় ১০ কার্যদিবস ধরে শেয়ারবাজারে চাঙাভাব দেখা যাচ্ছে।

ডিএসইতে গতকাল লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে ৪টিই ছিল সরকারি খাতের কোম্পানি। কোম্পানিগুলো হলো পাওয়ার গ্রিড, তিতাস গ্যাস, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্‌ল ও বিএসসি। এ চার কোম্পানির সম্মিলিত লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৩০৮ কোটি টাকা, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের প্রায় সাড়ে ১৫ শতাংশ। আবার মূল্যবৃদ্ধির দিক থেকেও শীর্ষ চার কোম্পানিই ছিল সরকারের মালিকানাধীন। এগুলো হলো ইস্টার্ন কেব্‌লস, তিতাস গ্যাস, ন্যাশনাল টিউবস ও বিএসসি। এই চার কোম্পানির প্রতিটির দাম গতকাল গড়ে ১০ শতাংশ করে বেড়েছে। গতকাল ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৮৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪৬টির। আর ৪৩টির দাম অপরিবর্তিত ছিল।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৮৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৬২ কোটি ৭০ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩১০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৬৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১১৪টির এবং ৩১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত