Ajker Patrika

যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা: বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অ্যাপ্লিকেশন প্রসেস

শাবাব তাসরিফ জামান
আপডেট : ০৬ জুলাই ২০২২, ০৯: ০৮
যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা: বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অ্যাপ্লিকেশন প্রসেস

কমন অ্যাপ অ্যাপ্লিকেশন
খুবই যত্নসহকারে অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করতে হবে। আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মূলত ‘কমন অ্যাপ’ বা ‘কোয়ালিশন অ্যাপ’-এর মাধ্যমে আবেদন নেয়, যদিও টেক্সাসের জন্য আলাদা অ্যাপ্লিকেশন আছে। সবগুলোই প্রায় একই। 

১. প্রথমত, গ্রেডস্ এবং স্যাট স্কোর ঠিকমতো দিতে হবে, ট্রান্সক্রিপ্ট কাউন্সিলর আপলোড করবে। মাঝে মাঝে কিছু বিশ্ববিদ্যালয় অফিশিয়াল টেস্ট (SAT, ACT) স্কোর চায়, সে ক্ষেত্রে যাদের অধীনে পরীক্ষা, তাদের কাছ থেকে স্কোর পাঠাতে হবে, কিছু খরচ আছে সে ক্ষেত্রে।

২. এরপর আসে অ্যাওয়ার্ডস সেকশন, যেখানে নিজের অর্জন করা পুরস্কারগুলোর নাম লিখতে হবে। যেহেতু আমি ‘কমন অ্যাপ’ দ্বারা আবেদন পাঠিয়েছি, সুতরাং আমাকে আমার সেরা ৫টি পুরস্কার নির্বাচন করে দিতে হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমার উপদেশ-নিজের সেরা ৫টি পুরস্কার বাছাই করে এখানে দেওয়া যায়, তবে কেউ যদি আরও পুরস্কার নিয়েও লিখতে চায়, সে অ্যাকটিভিটিস সেকশন বা অতিরিক্ত ইনফরমেশন সেকশন ব্যবহার করতে পারে। ওই ৫টি পুরস্কার আন্তর্জাতিক, জাতীয়, আঞ্চলিক ও স্কুলভিত্তিক এই অর্ডারে দেওয়া উত্তম। 

‘কমন অ্যাপ’-এ অ্যাকটিভিটিসের ক্ষেত্রে সেরা ১০টি ইসিএ বাছাই করে লিখতে হবে এবং আরও ইসিএ থাকলে সেগুলো আর কোথাও না লেখাটাই উত্তম। তবে অন্য আবেদনগুলোয় অন্য লিমিট থাকতে পারে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইসিএগুলো আগে দেওয়া উচিত এবং একই ক্যাটাগরির ইসিএগুলো একত্রে রাখাটা ভালো দেখায়। ইসিএর বর্ণনাগুলো যত সংক্ষেপে লেখা যায় অ্যাডমিশন অফিসার যেন বুঝতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।  

ভর্তির প্রসেস  
ভর্তির প্রসেসটা কিছুটা এমন: দুজন অ্যাডমিশন অফিসার অ্যাপ্লিকেন্টের পুরো অ্যাপ্লিকেশন পড়ে এবং ১-৬-এর মধ্যে মার্ক করে; যেখানে ৬ সর্বোচ্চ এবং ১ সর্বনিম্ন। এরপর একটি কমিটির সামনে পুরো অ্যাপ্লিকেশন তুলে ধরা হয় এবং ভোটিং হয়-‘অ্যাক্সেপ্ট’ ‘ওয়েটলিস্ট’ বা ‘রিজেকশন’। যেই অ্যাপ্লিকেন্টকে কমিটি যোগ্য মনে করে, তাকেই নেওয়া হয়। যদিও অফিসারদের ডিসিশনের ওপর অ্যাপ্লিকেন্টের হাত নেই, প্রাথমিক পর্যায় পার করার জন্য অ্যাপ্লিকেন্টকে ভালো রেজাল্ট এবং স্যাটে অন্তত ১৪৫০ পেতে হবে। সুতরাং পড়াশোনা ভালো রেখে স্যাটের জন্যও প্রস্তুতি নিতে হবে এবং অ্যাপ্লিকেশনটি সুন্দরভাবে প্রস্তুত করে, নিজেকে ভালো করে প্রদর্শন করতে হবে। অ্যাপ্লিকেশনটি শেষ হলে পরিবারের সদস্য, বন্ধু ও কাউন্সিলরকে দেখিয়ে নেওয়াটা ভালো হবে। এমনভাবে অ্যাপ্লিকেশনটি দেখতে হবে যেন মানুষটি আপনাকে চেনে না। 

এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাকটিভিটিস 
যারা টপ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়তে চায়, তাদের জন্য বলতে চাই, যত তাড়াতাড়ি এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাকটিভিটিস শুরু করা যায়, তত ভালো। নিজের কোন কোন ইসিএ পছন্দ, তা বের করতে হবে এবং শুধু দুই-তিনটি ক্যাটাগরির-অ্যাকটিভিটিসের ওপর মনোযোগ দেওয়াটাই সর্বোত্তম। এটাকে বলা হয় ‘স্পাইক’ এবং এটি একটি সফল অ্যাপ্লিকেশনের পেছনে বড় অবদান রাখে। যদি দুজন অ্যাপ্লিকেন্টকে পাশাপাশি রাখা হয়, একজন যে হরেক রকমের অ্যাকটিভিটিস করেছে এবং আরেকজন যে একই ক্যাটাগরির অধীনে তিন-চারটি অ্যাকটিভিটিস করেছে, তবে পরের জনই বেশি গুরুত্ব পাবে। কারণ তার ডেডিকেশন দৃশ্যমান। যদিও একই ক্যাটাগরির দুই-তিনটি অ্যাকটিভিটি থাকাই যথেষ্ট, তবুও যত বেশি থাকে ততই ভালো। এর কারণ অ্যাডমিশন অফিসাররা অলরাউন্ডার অ্যাপ্লিকেন্ট খোঁজেন না; বরং তাদের উদ্দেশ্য এমন একটি ক্লাস গড়তে চায়, যে ক্লাস সব রকমের ট্যালেন্টের স্টুডেন্টই আছে। 

অলিম্পিয়াডই সবকিছু নয়
আমাদের অনেকেরই ধারণা থাকে অলিম্পিয়াড ব্যাকগ্রাউন্ড থাকলেই ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া যায়। কিন্তু ধারণাটি ঠিক নয়। টপ বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেতে হলে অলিম্পিয়াড ব্যাকগ্রাউন্ড জরুরি নয়, তবে থাকলে অবশ্যই চান্স বেড়ে যায়। দিন শেষে আসল ব্যাপার হচ্ছে একজন অ্যাপ্লিকেন্ট তার ইসিএর প্রতি ডেডিকেশন 
এবং তার রচনা দ্বারা অ্যাডমিশন অফিসারকে সন্তুষ্ট করতে 
পেরেছে কি না। 

অ্যাপ্লিকেশনের একেকটি অংশ যেন রঙের মতো
আমার বিশ্বাস, আমার চান্স পাওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছে Essayগুলো, যেগুলো আমি অনেক যত্নসহকারে লিখেছি এবং বারবার পড়ে সংশোধন করেছি। পাশাপাশি, যেহেতু প্রিন্সটন সমাজসেবাকে বেশ প্রাধান্য দেয়, সুতরাং আমার সমাজসেবার কাজগুলো, যেমন TMSS Internship, Unstitched Women’s Tapestry এবং Cancer Together Dhaka, আমার অ্যাপ্লিকেশনকে সাহায্য করেছে এবং আমার আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পর্যায়ের অ্যাওয়ার্ডগুলোও বেশ সাহায্য করেছে। পাশাপাশি ECAগুলো আমার ডেডিকেশন তুলে ধরেছে এবং পুরো অ্যাপ্লিকেশনেই আমি বলতে চেয়েছি যে আমার জ্ঞান এবং স্কিলস দ্বারা মানুষের কল্যাণ করতে চাই, যা আমার বিশ্বাস অ্যাডমিশন অফিসার পুরোপুরি বুঝতে পেরেছেন। অ্যাপ্লিকেশনের একেকটি অংশ যেন রঙের মতো এবং পুরো অ্যাপ্লিকেশনে সেই রঙের দ্বারা আমি একটি পরিপূর্ণ ছবি এঁকেছি। 

অনুলিখন: সাদিয়া আফরিন হীরা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদল পুনর্বিন্যাস আনছে ভারত, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলে

গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে কক্সবাজার ভ্রমণ: ৫ নেতাকে শোকজ করল এনসিপি

‘বাবার অসুস্থতায় পরামর্শ নিতে’ চিকিৎসকের বাসায় নারী, দুজনকে পুলিশে দিল স্থানীয়রা

১৪৬ যাত্রী নিয়ে ব্যাংককের পথে এক ঘণ্টা উড়ে মিয়ানমার থেকে ফিরে এল বিমানের সেই ফ্লাইট

৬ বছর পর চীন সফরে যাচ্ছেন মোদি, আসবেন পুতিনও

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত