ড. আর এম দেবনাথ
‘ব্যাংকের ৯৫ শতাংশ আমানতকারী সম্পূর্ণ নিরাপদ: গভর্নর’—এই হচ্ছে খবরের শিরোনাম। বড়ই স্বস্তিদায়ক খবর। স্বস্তিদায়ক এই কারণে যে বেশ কিছুদিন যাবৎই ব্যাংকের আমানত নিয়ে নানা কথা হচ্ছে। বিশেষ করে ব্যাংকের টাকা লুট হওয়ার প্রেক্ষাপটে। ব্যাংকের টাকা লুটের সঙ্গে সম্পর্কিত ঋণখেলাপি সমস্যাটা দীর্ঘদিনের। দিনে দিনে এই সমস্যা তীব্র হয়েছে। সরকার পরিবর্তন হয়েছে। নতুন সরকার গঠিত হয়েছে এক মাসের ওপর হলো। এই প্রেক্ষাপটে নানা নতুন সমস্যা, সম্ভাবনা ইত্যাদির আলোচনা সামনে আসছে। অনেক ব্যাংকের বোর্ড ভেঙে নতুন বোর্ড গঠিত হয়েছে। ব্যাংকিংয়ের ওপর টাস্কফোর্স গঠিত হবে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে। নিয়ম-কানুনে পরিবর্তন আসছে।
প্রচুর আশাবাদ প্রতিদিন প্রকাশিত হচ্ছে। সাবধান বাণীও আছে। বোঝাই যায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেতৃত্বে একটা বড় ধরনের পরিবর্তন হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় বড় খবর এল আমানতকারীদের স্বার্থ সম্পর্কে। কোত্থেকে? বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে। এই ব্যাংকটির প্রধান কাজই হলো আমানতকারীদের স্বার্থ দেখা, সুবিধা-অসুবিধা দেখা। শুধু স্বার্থই নয়, সেবা নিশ্চিত করাও তাদের কাজ। এই কাজের ফাঁকেই তারা অন্য কাজ করে। যেমন মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ। এই দুই কাজই প্রধান। যদিও এ ক্ষেত্রে তাদের অবদান বহুদিন থেকেই প্রশ্নবিদ্ধ। আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষায় তারা অমনোযোগী, তাঁদের সেবা সুনিশ্চিত করার ক্ষেত্রে তারা উদাসীন।
সব ব্যাংক তদারকি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংককে তদারকিতে রাখার কোনো ব্যবস্থা নেই। তাদের ব্যর্থতা যে দেশের সর্বনাশ ডেকে আনছে, এই প্রশ্নও কেউ করে না। আলোচনা শুধু ঋণখেলাপ সমস্যা, বড় বড় জালিয়াতি। অথচ কেউ প্রশ্ন করে না কেন একটা সুস্থ-সবল দক্ষ কেন্দ্রীয় ব্যাংক থাকা সত্ত্বেও দেশের ব্যাংকিংব্যবস্থা এমন একটা নাজুক অবস্থায় পৌঁছাল। এমনই প্রেক্ষাপটে ভালো খবর দিলেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি বললেন, ব্যাংকের ৯৫ শতাংশ আমানতকারী সম্পূর্ণ নিরাপদ। এর চেয়ে উত্তম আশাবাদ আর হয় না। কারণ, ৯৫ শতাংশ আমানতকারীর বাইরে রয়েছেন আরও ৫ শতাংশ। তাঁদের আমানতের খবর কী?
আরও প্রশ্ন—৯৫ শতাংশ আমানতকারীর আমানত দেশের মোট আমানতের কত অংশ? আর ৫ শতাংশ আমানতকারীর আমানত দেশের মোট আমানতের কত অংশ? আমার কাছে সর্বশেষ তথ্য নেই, তবে বোধগম্য যে বড় বড় আমানতের পরিমাণই বেশি। ছোট ছোট আমানতের বরকত বেশি। এরাই ‘কোর’ আমানতকারী। কিন্তু সিংহভাগ আমানত হচ্ছে বড় বড় আমানত। বর্তমান ক্ষেত্রে ২ লাখ টাকার ওপরের আমানত। এখন পর্যন্ত ব্যাংকে যাঁরা ১ লাখ টাকা পর্যন্ত আমানত রেখেছেন, তাঁদের আমানত বিমার মাধ্যমে সুরক্ষিত। এখন থেকে তা হবে ২ লাখ টাকা। অর্থাৎ কোনো ব্যাংক যদি ‘লাল বাতি’ জ্বালায়, তাহলে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত যাঁদের আমানত আছে, তাঁরা তাঁদের পুরো টাকা ফেরত পেয়ে যাবেন। ভালো খবর।
কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়, ২ লাখ টাকার ওপরে যাঁরা আমানত রেখেছেন তাঁদের টাকা কী হবে? এই প্রশ্নটি এখন জরুরি এই কারণে যে বাংলাদেশ ব্যাংকই বলছে, গোটা দশেক ব্যাংক নাকি ইতিমধ্যেই দেউলিয়া অথবা দেউলিয়া হওয়ার পথে। খুবই উদ্বেগজনক খবর। কারণ ৫ শতাংশ আমানতকারীর সিংহভাগ টাকা দিয়েই ব্যাংকিং খাত চলছে। ঋণ যেমন বড় বড়, আপাতত বড় বড়। বাজার অর্থনীতির ফল আরকি! এই অর্থনীতিতে বড়রাই বড় হবে, ছোটরা পেছনে পড়বে। এটাই নিয়তি। এখন প্রশ্ন, সিংহভাগ আমানতের (ডিপোজিট) গ্যারান্টি কী? এই সম্পর্কে কোনো অনিশ্চিত বাণী সমূহ ক্ষতি বয়ে আনবে। অতএব পরিষ্কার ভাষায় বলা দরকার, তাঁদের আমানতও নিরাপদ। দুই অর্থ হতে পারে, এমন কোনো বক্তব্য এই মুহূর্তে কাম্য নয়—আশা করি বিষয়টি গভর্নর মহোদয় বোঝেন।
আমানতকারীদের স্বার্থের কথা বললে তা শুধু আমানতের টাকা দেখতে পাওয়ার মধ্যে সীমিত নয়। এর মধ্যে আরেকটি বিষয়ও আছে। আমানতকারীরা ব্যাংকে টাকা জমান কিছু লাভের/সুদের আশায়। সাধারণভাবে সেই সুদের হার হওয়া উচিত মূল্যস্ফীতির হারের ওপরে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে তা নয়। মজার ঘটনা হচ্ছে, আমরা পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি এখন ব্যাংকে ব্যাংকে চলছে মন্দা। কিন্তু তাদের ‘স্প্রেড’ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২১ সালে যে স্প্রেডের হার ছিল মাত্র ২ দশমিক ৮৯ শতাংশ, তা ২০২৪-এ এসে উন্নীত হয়েছে ৫ দশমিক ৪৯ শতাংশে। এর অর্থ কী? এর অর্থ ব্যাংক যে হারে ঋণগ্রহীতার কাছ থেকে সুদ আদায় করে, সেই তুলনায় আমানতকারীদের সুদ দেয় কম। যেমন, ২০২৪ সালে ব্যাংকগুলো ঋণগ্রহীতাদের কাছ থেকে সুদ আদায় করেছে ১১ দশমিক ৫১ শতাংশ। বিপরীতে আমানতকারীদের সুদ দিয়েছে মাত্র ৬ দশমিক ৩ শতাংশ। ফল হচ্ছে ‘স্প্রেড’ ৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ, যা খুবই উঁচু।
বাংলাদেশ ব্যাংক বরাবরই আমানতকারীদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে স্প্রেডের হার নির্ধারণ করে দেয়। এই হার সাধারণভাবে ৩-৪ শতাংশ হতে পারে বা হয়। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, দন্তহীন কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের এই নিয়ম কাউকে দিয়ে মানাতে পারেনি। দেশে যে একটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক আছে, কেউ আমরা বুঝলাম না। রাজনীতি, মালিকানা, অর্থনীতি, ব্যাংকিং, কেন্দ্রীয় ব্যাংকিং—সব একসঙ্গে করে আমরা আমাদের নিজেদের সর্বনাশ নিজেরা ডেকে এনেছি। তা না হলে বছরের পর বছর ধরে কোনো আমানতকারীকে ন্যায্য সুদ দেওয়া হচ্ছে না—দেওয়া হচ্ছে না আমানতের খরার মধ্যেও। ব্যাংক তার ঋণখেলাপ সমস্যার সমস্ত ভারটাই আমানতকারীদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিচ্ছে। এবং আমরা জানি ঋণখেলাপি কারা।
খেলাপিদের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে ব্যাংক আমানতের ওপর বেশি সুদ দিতে চায় না। বেশি বেশি প্রফিট দেখিয়ে খারাপ ঋণের বিপরীতে ‘প্রভিশন’ রাখার ব্যবস্থা আরকি। এই অত্যাচার থেকে আমানতকারীদের কে রক্ষা করবে? অবশ্যই রক্ষা করতে হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে। বর্তমান সময়ে তা আহসান এইচ মনসুর সাহেবের কাজ। তাঁর ঘাড়ের ওপর চেপে বসে আছে বহু সমস্যা। আশা করি, সুস্থির মাথায় তিনি বাস্তবানুক পন্থায় সমাধানের পথে এগোবেন। দীর্ঘদিনের সমস্যা সমাধানও হতে হবে ধীরে ধীরে। তাড়াতাড়ি করার কোনো সুযোগ নেই।
লেখক: সাবেক শিক্ষক, ঢাবি; অর্থনীতি বিশ্লেষক
‘ব্যাংকের ৯৫ শতাংশ আমানতকারী সম্পূর্ণ নিরাপদ: গভর্নর’—এই হচ্ছে খবরের শিরোনাম। বড়ই স্বস্তিদায়ক খবর। স্বস্তিদায়ক এই কারণে যে বেশ কিছুদিন যাবৎই ব্যাংকের আমানত নিয়ে নানা কথা হচ্ছে। বিশেষ করে ব্যাংকের টাকা লুট হওয়ার প্রেক্ষাপটে। ব্যাংকের টাকা লুটের সঙ্গে সম্পর্কিত ঋণখেলাপি সমস্যাটা দীর্ঘদিনের। দিনে দিনে এই সমস্যা তীব্র হয়েছে। সরকার পরিবর্তন হয়েছে। নতুন সরকার গঠিত হয়েছে এক মাসের ওপর হলো। এই প্রেক্ষাপটে নানা নতুন সমস্যা, সম্ভাবনা ইত্যাদির আলোচনা সামনে আসছে। অনেক ব্যাংকের বোর্ড ভেঙে নতুন বোর্ড গঠিত হয়েছে। ব্যাংকিংয়ের ওপর টাস্কফোর্স গঠিত হবে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে। নিয়ম-কানুনে পরিবর্তন আসছে।
প্রচুর আশাবাদ প্রতিদিন প্রকাশিত হচ্ছে। সাবধান বাণীও আছে। বোঝাই যায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেতৃত্বে একটা বড় ধরনের পরিবর্তন হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় বড় খবর এল আমানতকারীদের স্বার্থ সম্পর্কে। কোত্থেকে? বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে। এই ব্যাংকটির প্রধান কাজই হলো আমানতকারীদের স্বার্থ দেখা, সুবিধা-অসুবিধা দেখা। শুধু স্বার্থই নয়, সেবা নিশ্চিত করাও তাদের কাজ। এই কাজের ফাঁকেই তারা অন্য কাজ করে। যেমন মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ। এই দুই কাজই প্রধান। যদিও এ ক্ষেত্রে তাদের অবদান বহুদিন থেকেই প্রশ্নবিদ্ধ। আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষায় তারা অমনোযোগী, তাঁদের সেবা সুনিশ্চিত করার ক্ষেত্রে তারা উদাসীন।
সব ব্যাংক তদারকি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংককে তদারকিতে রাখার কোনো ব্যবস্থা নেই। তাদের ব্যর্থতা যে দেশের সর্বনাশ ডেকে আনছে, এই প্রশ্নও কেউ করে না। আলোচনা শুধু ঋণখেলাপ সমস্যা, বড় বড় জালিয়াতি। অথচ কেউ প্রশ্ন করে না কেন একটা সুস্থ-সবল দক্ষ কেন্দ্রীয় ব্যাংক থাকা সত্ত্বেও দেশের ব্যাংকিংব্যবস্থা এমন একটা নাজুক অবস্থায় পৌঁছাল। এমনই প্রেক্ষাপটে ভালো খবর দিলেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি বললেন, ব্যাংকের ৯৫ শতাংশ আমানতকারী সম্পূর্ণ নিরাপদ। এর চেয়ে উত্তম আশাবাদ আর হয় না। কারণ, ৯৫ শতাংশ আমানতকারীর বাইরে রয়েছেন আরও ৫ শতাংশ। তাঁদের আমানতের খবর কী?
আরও প্রশ্ন—৯৫ শতাংশ আমানতকারীর আমানত দেশের মোট আমানতের কত অংশ? আর ৫ শতাংশ আমানতকারীর আমানত দেশের মোট আমানতের কত অংশ? আমার কাছে সর্বশেষ তথ্য নেই, তবে বোধগম্য যে বড় বড় আমানতের পরিমাণই বেশি। ছোট ছোট আমানতের বরকত বেশি। এরাই ‘কোর’ আমানতকারী। কিন্তু সিংহভাগ আমানত হচ্ছে বড় বড় আমানত। বর্তমান ক্ষেত্রে ২ লাখ টাকার ওপরের আমানত। এখন পর্যন্ত ব্যাংকে যাঁরা ১ লাখ টাকা পর্যন্ত আমানত রেখেছেন, তাঁদের আমানত বিমার মাধ্যমে সুরক্ষিত। এখন থেকে তা হবে ২ লাখ টাকা। অর্থাৎ কোনো ব্যাংক যদি ‘লাল বাতি’ জ্বালায়, তাহলে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত যাঁদের আমানত আছে, তাঁরা তাঁদের পুরো টাকা ফেরত পেয়ে যাবেন। ভালো খবর।
কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়, ২ লাখ টাকার ওপরে যাঁরা আমানত রেখেছেন তাঁদের টাকা কী হবে? এই প্রশ্নটি এখন জরুরি এই কারণে যে বাংলাদেশ ব্যাংকই বলছে, গোটা দশেক ব্যাংক নাকি ইতিমধ্যেই দেউলিয়া অথবা দেউলিয়া হওয়ার পথে। খুবই উদ্বেগজনক খবর। কারণ ৫ শতাংশ আমানতকারীর সিংহভাগ টাকা দিয়েই ব্যাংকিং খাত চলছে। ঋণ যেমন বড় বড়, আপাতত বড় বড়। বাজার অর্থনীতির ফল আরকি! এই অর্থনীতিতে বড়রাই বড় হবে, ছোটরা পেছনে পড়বে। এটাই নিয়তি। এখন প্রশ্ন, সিংহভাগ আমানতের (ডিপোজিট) গ্যারান্টি কী? এই সম্পর্কে কোনো অনিশ্চিত বাণী সমূহ ক্ষতি বয়ে আনবে। অতএব পরিষ্কার ভাষায় বলা দরকার, তাঁদের আমানতও নিরাপদ। দুই অর্থ হতে পারে, এমন কোনো বক্তব্য এই মুহূর্তে কাম্য নয়—আশা করি বিষয়টি গভর্নর মহোদয় বোঝেন।
আমানতকারীদের স্বার্থের কথা বললে তা শুধু আমানতের টাকা দেখতে পাওয়ার মধ্যে সীমিত নয়। এর মধ্যে আরেকটি বিষয়ও আছে। আমানতকারীরা ব্যাংকে টাকা জমান কিছু লাভের/সুদের আশায়। সাধারণভাবে সেই সুদের হার হওয়া উচিত মূল্যস্ফীতির হারের ওপরে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে তা নয়। মজার ঘটনা হচ্ছে, আমরা পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি এখন ব্যাংকে ব্যাংকে চলছে মন্দা। কিন্তু তাদের ‘স্প্রেড’ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২১ সালে যে স্প্রেডের হার ছিল মাত্র ২ দশমিক ৮৯ শতাংশ, তা ২০২৪-এ এসে উন্নীত হয়েছে ৫ দশমিক ৪৯ শতাংশে। এর অর্থ কী? এর অর্থ ব্যাংক যে হারে ঋণগ্রহীতার কাছ থেকে সুদ আদায় করে, সেই তুলনায় আমানতকারীদের সুদ দেয় কম। যেমন, ২০২৪ সালে ব্যাংকগুলো ঋণগ্রহীতাদের কাছ থেকে সুদ আদায় করেছে ১১ দশমিক ৫১ শতাংশ। বিপরীতে আমানতকারীদের সুদ দিয়েছে মাত্র ৬ দশমিক ৩ শতাংশ। ফল হচ্ছে ‘স্প্রেড’ ৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ, যা খুবই উঁচু।
বাংলাদেশ ব্যাংক বরাবরই আমানতকারীদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে স্প্রেডের হার নির্ধারণ করে দেয়। এই হার সাধারণভাবে ৩-৪ শতাংশ হতে পারে বা হয়। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, দন্তহীন কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের এই নিয়ম কাউকে দিয়ে মানাতে পারেনি। দেশে যে একটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক আছে, কেউ আমরা বুঝলাম না। রাজনীতি, মালিকানা, অর্থনীতি, ব্যাংকিং, কেন্দ্রীয় ব্যাংকিং—সব একসঙ্গে করে আমরা আমাদের নিজেদের সর্বনাশ নিজেরা ডেকে এনেছি। তা না হলে বছরের পর বছর ধরে কোনো আমানতকারীকে ন্যায্য সুদ দেওয়া হচ্ছে না—দেওয়া হচ্ছে না আমানতের খরার মধ্যেও। ব্যাংক তার ঋণখেলাপ সমস্যার সমস্ত ভারটাই আমানতকারীদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিচ্ছে। এবং আমরা জানি ঋণখেলাপি কারা।
খেলাপিদের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে ব্যাংক আমানতের ওপর বেশি সুদ দিতে চায় না। বেশি বেশি প্রফিট দেখিয়ে খারাপ ঋণের বিপরীতে ‘প্রভিশন’ রাখার ব্যবস্থা আরকি। এই অত্যাচার থেকে আমানতকারীদের কে রক্ষা করবে? অবশ্যই রক্ষা করতে হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে। বর্তমান সময়ে তা আহসান এইচ মনসুর সাহেবের কাজ। তাঁর ঘাড়ের ওপর চেপে বসে আছে বহু সমস্যা। আশা করি, সুস্থির মাথায় তিনি বাস্তবানুক পন্থায় সমাধানের পথে এগোবেন। দীর্ঘদিনের সমস্যা সমাধানও হতে হবে ধীরে ধীরে। তাড়াতাড়ি করার কোনো সুযোগ নেই।
লেখক: সাবেক শিক্ষক, ঢাবি; অর্থনীতি বিশ্লেষক
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ জানুয়ারি ২০২৫গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪