Ajker Patrika

মেডিকেলে মেয়ের ভর্তির সুযোগ বাবার কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ

আল মামুন জীবন, বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও)
আপডেট : ০৮ এপ্রিল ২০২২, ১৫: ৪২
মেডিকেলে মেয়ের ভর্তির সুযোগ বাবার কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ

স্বপ্ন মানুষকে বাঁচতে শেখায়। স্বপ্নই মানুষকে সফল করে। আর এটি দেখতে ভয় কিসের? হোক না তা আফতাবর রহমানের মতো একজন ভ্যান চালকের স্বপ্ন। ভ্যান চালিয়ে পরিবার পরিচালনার পাশাপাশি তিন সন্তানকে উচ্চশিক্ষিত করছেন তিনি।

আফতাবরের একমাত্র ছেলে মুন্না আলী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বাংলা বিভাগে পড়ছেন। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন তাঁর মেয়ে আলপনা আক্তার। বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন, আর ছোট মেয়েকে পড়ছে উচ্চমাধ্যমিকে। তিন মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে পরিবারের খবরগুলো অনেক আনন্দের হলেও ঢাবির পাশাপাশি মেডিকেলে মেয়েকে পড়ানোর খরচের চিন্তা ভ্যানচালক আফতাবর রহমানকে দিশেহারা করছে।

আফতাবর রহমানের বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড়পলাশবাড়ী ইউনিয়নের ধারিয়া বেলসাড়া গ্রামে। ভিটেমাটি আর ভ্যান গাড়ি ছাড়া কোনো সম্পদ নেই তাঁর।

আফতাবর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভ্যান চালিয়ে ছেলেকে ঢাবিতে, মেয়ে দুটোকে পড়াচ্ছি। ছেলে মুন্না আলীর ঢাবিতে ভর্তির সময় ২৫ শতক আবাদি জমির ৫ শতক জমি বিক্রির টাকা দিয়ে ভর্তি করিয়েছি। পরে তার পড়ালেখা খরচ জোগাতে বাকি ২০ শতক জমিও বিক্রি করতে হয়। এ ছাড়া প্রতি মাসে পড়ালেখা খরচ-বাবদ ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা ছেলের কাছে পাঠানো হয়। অন্য দুই মেয়ের পড়ালেখা খরচ এবং সাংসারিক ব্যয় বহনের একমাত্র মাধ্যম আমার ভ্যান গাড়িটি। একদিন বের হলেই সংসারে খরচে টান পড়ে।’

আফতাবরের স্ত্রী মাজেদা খাতুন বলেন, ‘আমাদের রক্তের শেষ বিন্দু থাকা পর্যন্ত সন্তানদের পড়ালেখা চালিয়ে নিয়ে যাব। মানবিক কারণে যদি কেউ সহযোগিতার হাত বাড়াতে চান, তাহলে আমরা সহযোগিতা নিব।’

আলপনা আক্তার বলেন, ‘বাবা অনেক কষ্ট করে পড়ালেখা করাচ্ছেন। চিকিৎসক হয়ে বাবা, মাসহ অসহায় মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখব।’ বাবার স্বপ্ন পূরণে সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি।

সমিউদ্দিন স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বেলাল রব্বানী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সমাজে এখনো অনেক অভিভাবক মেয়েদের বোঝা মনে করেন। সামর্থ্য থাকার পরেও পড়ালেখা না করিয়ে বিয়ে দিয়ে দায়ভার থেকে মুক্তি নেন। কিন্তু অভাবের মধ্যেও ভ্যান চালক বাবা তাঁর সন্তানদের নিয়ে স্বপ্ন দেখেছেন, এটা আমাদের জন্য অনুকরণীয়।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যোবায়ের হোসেন বলেন, ‘চাইলে ভ্যান চালক বাবার সন্তানদের পড়ালেখা ব্যয় বহনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

পারভেজ হত্যায় অংশ নেয় ছাত্র, অছাত্র ও কিশোর গ্যাং সদস্য

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত