Ajker Patrika

সহকারী জজ হওয়ার স্বপ্ন যাঁদের

শাহ বিলিয়া জুলফিকার। 
আপডেট : ১২ আগস্ট ২০২৩, ১২: ৪৪
Thumbnail image

প্রিলিমিনারির প্রস্তুতিতে জেনারেল পার্টের জন্য ১০ম থেকে ৪৩তম বিসিএস প্রিলিমিনারি ও বিজেএসের বিগত বছরের তৃতীয় থেকে ১৪তম প্রিলিমিনারির প্রশ্ন সমাধান করতে হবে। পরীক্ষার আগের তিন মাসের কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স পড়াও জরুরি। সঙ্গে ভালো কোনো পত্রিকা পড়লে ভালো হয়। কেউ শুধু এটুকু পড়লেই আমার বিশ্বাস, জেনারেলে ২০+ নম্বর পাবেন ইনশা আল্লাহ। আর আইন অংশের জন্য সিলেবাসের সব আইনের বেয়ার অ্যাক্টের গুরুত্বপূর্ণ ধারাগুলো বুঝে বুঝে পড়ে বইতেই সাইড নোট করে রাখা। আইন পাঠ পড়লে বাংলায় সহজে আইনের টার্মগুলো বোঝা যাবে। আইন পাঠে যে ধারাগুলো ছিল, ঠিক ওই ধারাগুলো বেয়ার অ্যাক্ট থেকে স্পষ্টভাবে পড়তে হবে। এর সঙ্গে অতিরিক্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধারাও পড়া থাকলে ভালো। তবে আমার ক্ষেত্রে আইন পাঠে উল্লিখিত ধারাগুলোই ভিত্তি ছিল।

লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি
বাংলা ব্যাকরণ ও সাহিত্য: এ অংশের জন্য ১০-৪৪তম বিসিএসে আসা বিগত সালের প্রশ্ন (শুধু যে টপিকগুলো বিজেএসের সিলেবাসের সঙ্গে মিল আছে, সেই অংশ) ও বিগত বিজেএসে আসা প্রশ্নগুলো সমাধান করতে হবে। এটা প্রশ্ন বিশ্লেষণে সহায়তা করবে। সঙ্গে বাংলা দ্বিতীয় পত্র (নবম-দশম শ্রেণির বোর্ড বই, মুনীর চৌধুরী, পুরোনো ভার্সন) থেকে ব্যাকরণ অংশ পড়তে হবে। এর মধ্যে ধ্বনিতত্ত্ব, ধ্বনির পরিবর্তন, কারক, সমাস, বাক্য শুদ্ধি, বাক্য রূপান্তর, এককথায় প্রকাশ, বাগধারা—এই টপিকগুলো বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে পড়া জরুরি। তা ছাড়া অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর স্যারের সাহিত্য জিজ্ঞাসা থেকে সাহিত্য অংশ (সিলেবাসে থাকা সাহিত্যিকদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানা), এককথায় প্রকাশ, বিপরীত শব্দ, বাগ্‌ধারা/প্রবাদ প্রবচন পড়তে হবে। এ বই থেকে এই টপিকগুলো বেশি কমন পড়ে থাকে। আর বাংলা-ইংরেজি লিখিত অংশের (চিঠি/আবেদন/রচনা/প্রতিবেদন ইত্যাদি) জন্য শুধু নিয়মগুলো জানতে যেকোনো বিসিএস লিখিত বই ফলো করা।

মো. সোহেল রানাইংরেজি গ্রামার ও সাহিত্য: এ অংশের জন্য বিসিএস ও বিজেএসের পুরোনো প্রশ্ন সমাধান করার পাশাপাশি গ্রামার অংশের জন্য প্রচলিত যেকোনো গ্রামার বই অনুসরণ করা। লিখিত অংশের (Letter/Application/Essay/Report/Precis ইত্যাদি) জন্য শুধু নিয়মগুলো জানতে যেকোনো বিসিএস লিখিত বই ফলো করা যায়।

গণিত: ষষ্ঠ-নবম শ্রেণির সাধারণ গণিত বই ফলো করতে হবে এই অংশের জন্য। গণিতের জন্য সরল (প্রায় সব সময় ক্লাস সিক্সের বই থেকে আসে), কাজ, নল-চৌবাচ্চা, ঐকিক নিয়ম, পরিমাপ, সুদাসল, শতকরা-লাভক্ষতি, সরল ও চক্রবৃদ্ধি মুনাফা, মান নির্ণয়, সমাধান ও সমাধান সেট নির্ণয়সংক্রান্ত অঙ্কগুলোই বেশি আসে। জ্যামিতির জন্য বৃত্তসংক্রান্ত একটা জ্যামিতি প্রায়ই এসে থাকে। সহজ টেকনিক হিসেবে বৃত্তসংক্রান্ত জ্যামিতিগুলো করে গেলেই একটা কমন পেতে পারেন।

বিজ্ঞান: বিজ্ঞানের জন্য বিগত বিসিএসে আসা বিজ্ঞান অংশের প্রশ্নগুলো পড়া। অনেক ক্ষেত্রেই বিগত সালের বিসিএসে আসা প্রশ্ন জুডিশিয়ারিতে আসে। সহায়ক হিসেবে যেকোনো বই ফলো করা যেতে পারে। তবে কেউ বিসিএস ও জুডিশিয়ারির বিগত সালের প্রশ্নগুলো সমাধান করলে আপনি প্রায় ১০-১২টি প্রশ্ন কমন পেতে পারেন। এ জন্য বাকি অংশের জন্য ষষ্ঠ থেকে নবম-দশম শ্রেণির সাধারণ বিজ্ঞান বই থেকে কিছু টপিক পড়লে মোটামুটি সর্বোচ্চ ২০টির মতো কমন পাওয়া পাবে। ২৫টি প্রশ্ন কখনো কারও কমন পড়ে, এমন কখনো শুনিনি আমি। যাঁরা সায়েন্স ব্যাকগ্রাউন্ডের, তাঁরা হয়তো কিছু ক্ষেত্রে বেসিক নলেজ দিয়ে ২৫টি প্রশ্নের উত্তর করে আসতে পারেন।
বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক: এ অংশের লিখিত পরীক্ষার আগের তিন মাসের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা গুগল থেকে দেখা এবং নিয়মিত পত্রিকা পড়ে আপডেট থাকতে হবে। এর বাইরে কোনো বই পড়ার প্রয়োজন নেই। কেউ চাইলে কোনো ভালো পাবলিকেশনের বই ফলো করতে পারেন। তাহলে প্রশ্ন নিয়ে ভালো ধারণা তৈরি হবে।

আইন: সিলেবাসের প্রতিটি আইনের গুরুত্বপূর্ণ ধারা, টপিক ও ডকট্রিনগুলো পড়তে হবে। আইন অংশে প্রায় ৫০-৬০ শতাংশ প্রশ্ন রিপিট হয় (হুবহু না হলেও অন্তত একই ধারা বা টপিক থেকেই প্রশ্ন হয়ে থাকে)। আইন অংশে ভালো করতে হলে, বিগত সালে আসা প্রশ্নগুলো অবশ্যই খুব ভালো করে পড়তে হবে।
যাঁরা প্রথমবার বিজেএস দেবেন, তাঁরা আইন অংশে প্রথমেই বিগত সালের লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নগুলো পড়ে নেবেন। এর পরে ধারণা নিয়ে ওই ধারা ও টপিকগুলো বেশি বেশি পড়বেন। আমি এটা আমার প্রথম বিজেএসে করেছিলাম। পাশাপাশি প্রতিটি আইনের মাদার সেকশনগুলো পড়তে হবে। ছোট ছোট অপ্রয়োজনীয় ধারা বাদ দিন।

মো. সোহেল রানা,সহকারী জজ, ১৫তম বিজেএস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত