Ajker Patrika

ভবনের বরাদ্দ মিললেও স্থান জটিলতায় সংশয়

মুলাদী (বরিশাল) প্রতিনিধি
ভবনের বরাদ্দ মিললেও স্থান জটিলতায় সংশয়

বরিশালের মুলাদীতে এমপিওভুক্তের ৪৮ বছর পরও পাকা ভবন পায়নি সৈয়দা শাহাজাদী বেগম নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়। দীর্ঘ চার যুগ ধরে পুরোনো টিনের ঘরে চলছে পাঠদান। গরমের দিনে প্রচণ্ড দাবদাহে অতিষ্ঠ হয়ে যায় শিক্ষার্থীরা। বর্তমানে একটি তিনতলা ভবনের বরাদ্দ মিললেও প্রধান শিক্ষক ও স্থানীয়দের দ্বন্দ্বের কারণে বিদ্যালয়ে ভবন নির্মাণ সংশয়ে পড়েছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেছেন, বিদ্যালয়টি প্রথম যেখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, সেখানে তিনি ভবন নির্মাণের চেষ্টা করছেন।

এদিকে কৃষ্ণপুর থেকে সরিয়ে বিদ্যালয়টি আগের স্থানে নির্মাণ করা হলে ওই গ্রামটির শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়ার আশঙ্কা করেছেন অভিভাবকেরা। এ ছাড়া বিদ্যালয়টিও শিক্ষার্থীর সংকটে পড়বে বলে ধারণা করেছেন তাঁরা।

জানা গেছে, ১৯৭২ সালে গাছুয়া ইউনিয়নের উত্তর গাছুয়া এলাকায় সৈয়দা শাহাজাদী বেগম নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। এমপিওভুক্ত হয়েছে ১৯৭৪ সালে। শুরুতে কিছু শিক্ষার্থী থাকলেও পরে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যায়। বিদ্যালয়টির কাছাকাছি সৈয়দেরগাঁও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ইসলামাবাদ নেছারিয়া আলিম মাদ্রাসা থাকায় নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়টি প্রায় অচল হয়ে পড়ে। ফলে দীর্ঘদিনেও বিদ্যালয়টি নিম্নমাধ্যমিক থেকে মাধ্যমিক স্তরে উন্নীত হতে পারেনি।

ভাঙনে বিলীন হওয়ার উপক্রম হলে ২০১০ সালে সৈয়দা শাহাজাদী নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়টি জয়ন্তী নদীর উত্তর পাড়ে কৃষ্ণপুর গ্রামে সরিয়ে নেওয়া হয়। ওই এলাকায় কোনো বিদ্যালয় না থাকায় প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে নদীবেষ্টিত এলাকার ছেলেমেয়েরা বাড়ির কাছেই লেখাপড়া করার সুযোগ পায়। কৃষ্ণপুর গ্রামের মো. মোতালেব খন্দকার জানান, সৈয়দা শাহাজাদী বেগম নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়টি উত্তর গাছুয়া এলাকায় থাকাকালীন প্রায় শিক্ষার্থীশূন্য হয়ে পড়ে। স্কুলটি বন্ধ হওয়ারও উপক্রম হয়েছিল।

২০০৫-৬ সালের দিকে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বন্ধ হয়ে যায়। ২০১০ সালে নদীভাঙনের সময় বিদ্যালয়টি কৃষ্ণপুরে স্থানান্তর করা হয়। নদীবেষ্টিত এলাকায় অন্য কোনো বিদ্যালয় না থাকায় প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী বৃদ্ধি পায়। এখন বিদ্যালয়টি অনেক ভালোভাবে চলছে। বর্তমানে প্রায় ১৮০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। কিন্তু বিদ্যালয়ে পাকা ভবন না থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠদানে সমস্যা হচ্ছে।

একই গ্রামের মো. মিলু ব্যাপারী বলেন, বিদ্যালয়টি নিম্নমাধ্যমিক হলেও শিক্ষার্থীরা ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করতে পারছে।পার্শ্ববর্তী একটি বিদ্যালয় থেকে নবম শ্রেণির নিবন্ধন করে এসএসসি পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। ইতিমধ্যে বিদ্যালয়ের নামে ৫২ শতাংশ জমি দেওয়া হয়েছে। বিদ্যালয়ের একটি তিনতলা ভবন বরাদ্দ হয়েছিল। কিন্তু প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে ভবন নির্মাণে বাধা দিচ্ছেন। একটি ভবন হলে শিক্ষার্থীদের অনেক সুবিধা হতো।

বিদ্যালয়ের জমিদাতা দেলোয়ার হোসেন রাড়ী জানান, সৈয়দা শাহাজাদী বেগম নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ভাঙনকবলিত হয়ে অস্থায়ীভাবে কৃষ্ণপুরে আনা হয়েছিল। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বেড়েছে। বিদ্যালয়ে কোনো ভবন না থাকায় স্থানীয় সংসদ সদস্য বিদ্যালয়ের 
নামে ভবন বরাদ্দ দিয়েছেন। প্রধান শিক্ষক তাঁর বাড়ির কাছে ভবনটি করার জন্য বিদ্যালয়ে ভবনটি নির্মাণে বাধা দিচ্ছেন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফরোজা বেগম জানান, নদীভাঙনের ফলে বিদ্যালয়টি অস্থায়ীভাবে কৃষ্ণপুর এলাকায় স্থানান্তর করা হয়। ওই সময় চুক্তি ছিল, নদীভাঙন বন্ধ হলে বিদ্যালয়টি পূর্বের স্থানে নিয়ে যাওয়া হবে। ২০১৬ সাল থেকে নদী ভাঙছে না। তাই আগের স্থানে বিদ্যালয়টি সরিয়ে নিয়ে সেখানেই নতুন তিনতলা ভবন নির্মাণের চেষ্টা চলছে। তিনি আরও বলেন, নদীভাঙনকবলিত হওয়ায় দীর্ঘদিনে কোনো ভবন হয়নি। এতে পাঠদানে কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। বর্তমানে একটি তিনতলা ভবন বরাদ্দ হয়েছে। বিদ্যালয়ের স্থান নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় ভবনটি নির্মাণে দেরি হচ্ছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য সৈয়দা শাহাজাদী বেগম নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে একটি ভবন নির্মাণের জন্য নির্দেশনা (ডিও লেটার) দিয়েছেন। নিয়ম অনুযায়ী দ্রুত বিদ্যালয়ে ভবনটি নির্মাণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত