Ajker Patrika

ইঁদুরের হানা, দুশ্চিন্তায় কৃষক

কামাল হোসেন, কয়রা
আপডেট : ০৪ মার্চ ২০২২, ১২: ৫২
ইঁদুরের হানা, দুশ্চিন্তায় কৃষক

খুলনার কয়রায় আমন ধানের মৌসুমে ভালো ফলন হয়নি। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বোরোতে আশার আলো দেখছিলেন কৃষক। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ইঁদুর। অনেক খেতের ধানগাছ কেটে ফেলছে ইঁদুর। এতে কৃষকের কপালে পড়ছে দুশ্চিন্তার ভাঁজ।

কয়রা উপজেলার জদুর বিল, হেতালখালির বিল, আবাদের বিল ও মধ্য মহারাজপুর বিলে গিয়ে দেখা গেছে, ইঁদুরে কাটা ধানগাছগুলো মনে হচ্ছে কেউ যেন ধারালো কাঁচি দিয়ে কেটে দিয়েছে। ইঁদুর নিধনেও হিমশিম খাচ্ছেন কৃষক। ইঁদুর নিধনে ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি কেউ কেউ সনাতন পদ্ধতিতে বাঁশ ও কাঠের তৈরি ইঁদুর মারার ফাঁদ ব্যবহার করছেন। আবার অনেক খেতে বৈদ্যুতিক তার দিয়ে ইঁদুর মারার ফাঁদ ব্যবহার করতেও দেখা গেছে।

জদুর বিলের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমন মৌসুমে ১০ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছিলাম। কিন্তু জলাবদ্ধতার কারণে ফলন হয়নি। ১০ বিঘাতে খরচ হয়েছে প্রায় ৭০ হাজার টাকা। সেখানে ধান পেয়েছি ২০ মণ। আমনের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ৮ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছি। ধান গাছের বয়স দুই মাস। কিন্তু এখনই দেখা দিয়েছে ইঁদুরের উৎপাত। রাতে ধানগাছগুলো কেটে সাবাড় করে দিচ্ছে। ওষুধের পাশাপাশি ইঁদুর মারার যন্ত্র ব্যবহার করছি। তাতেও ভালো কাজ হচ্ছে না।’

কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘জলাবদ্ধতার কারণে আমনের ভালো ফলন না হওয়ায় বোরো ধানে ব্যাপক হারে ইঁদুর লেগেছে। ইঁদুরের উৎপাতে এখন আমার মাথা কাজ করছে না। ইঁদুর যেভাবে উৎপাত শুরু করেছে, তাতে শেষ পর্যন্ত ধান ঘরে তোলা কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে।’

বোরোচাষি আবুল হোসেন সরদার বলেন, ‘ইঁদুর নিধনে ওষুধের পাশাপাশি ইঁদুর মারার কল ব্যবহার করেও ভালো ফল পাওয়া যাচ্ছে না। এক প্রকার বাধ্য হয়ে বৈদ্যুতিক তার দিয়ে তৈরি ইঁদুর মারার ফাঁদ ব্যবহার করছি। তারপরও রাতে দু-একটা গোছ কেটে দিচ্ছে।’

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে কয়রা উপজেলায় ৪ হাজার ২৬ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেখানে এবার ৪ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ৩ হাজার ৪৯০ হেক্টরে হাইব্রিড ও ১ হাজার ৩৬০ হেক্টরে উচ্চফলনশীল (উফশি) চারা রোপণ করা হয়েছে। এদিকে বোরো আবাদ বাড়াতে সরকারিভাবে ১ হাজার ৫০০ কৃষককে বীজ ও সার দিয়ে সহায়তা করা হয়েছে।

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হামিদ বলেন, ‘বোরো খেতে ইঁদুরের উৎপাত বেড়েছে। ইঁদুর কৃষকের অনেক ক্ষতি করছে। আমরা ইঁদুর নিধনে কৃষকদের নানা পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করে যাচ্ছি।’ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, উপজেলা কৃষি দপ্তর থেকে ইঁদুর নিধনে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। দেশি পদ্ধতিতে ইঁদুর মারার ফাঁদ, গর্তে পানি ভরিয়ে ইঁদুর তাড়ানোর চেষ্টা চলছে।

তিনি আরও বলেন, ইঁদুর মারার জন্য ল্যানিরাট, ক্রর‍্যাট-ই জাতীয় কীটনাশক প্রয়োগের ফলে ইঁদুর অনেক সময় খেতে না মরে অন্য জায়গায় মরে। আমরা কৃষকদের বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়ে আসছি এবং এর ফলও তাঁরা পাচ্ছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তোমাদের যে কিছু করিনি, তা-ই ভাগ্য—ডাকাতির সময় দুই কিশোরীকে সাবেক সেনা কর্মকর্তা

গাজীপুরে সাংবাদিককে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা

সাধুর বেশে এসে সাবেক স্ত্রীকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা

ইরানে সরকার উৎখাতের পরিকল্পনা জানত রাশিয়া, তেহরানে বিতর্ক তুঙ্গে

গাজীপুরে ইট দিয়ে সাংবাদিকের পা থেঁতলে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত