Ajker Patrika

প্রতিশ্রুতিতে আটকে আছে সেতু, নড়বড়ে সাঁকোই ভরসা

দাকোপ (খুলনা) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ মার্চ ২০২২, ১২: ৩১
প্রতিশ্রুতিতে আটকে আছে সেতু, নড়বড়ে সাঁকোই ভরসা

দাকোপের পানখালী ইউনিয়নের বারুইখালী খালে বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে এলাকার হাজার হাজার মানুষ। স্থানীয়রা কয়েক মাস পর পর নিজ খরচে সাঁকোটি মেরামত করে আসছেন। অন্তত ৩০ বছর ধরে এ ভোগান্তি সহ্য করে যাচ্ছেন খোনা ও সাতঘরিয়া গ্রামের মানুষ।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বিভিন্ন সময় জনপ্রতিনিধিরা সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন হয়নি আজও। এ বিষয়ে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তারা মনে করেন, বারুইখালী খালের ওপর একটি সেতু নির্মাণ করা হলে পালটে যাবে এলাকার দৃশ্যপট।

সরেজমিনে খোনা এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, খামার বাড়ি সংলগ্ন বারুইখালী খালের দুই পাশে কয়েক হাজার মানুষের বসবাস। তাদের চলাচলের একমাত্র ভরসা ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের একটি নড়বড়ে সাঁকো। বিকল্প কোনো পথ না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত এই সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করেন গ্রামবাসী।

এলাকাবাসী বহুদিন ধরে সরকারি খরচে একটি সেতু নির্মাণের জন্য জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। কিন্তু আজও সেতুর ব্যবস্থা হয়নি। স্থানীয়রা কয়েক মাস পর পর নিজ খরচে সাঁকোটি মেরামত করে আসছেন। প্রায় ১২০ ফুট দৈর্ঘ্যের বাঁশের সাঁকোটি যেন গ্রামবাসীর গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, এলাকাবাসীর চাঁদায় নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে স্বাধীনতার পর থেকে ওই খাল পেরিয়ে স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় অধিবাসীরা যাতায়াত করে আসছে। এ ছাড়া বিভিন্ন মাঠের ফসল নিয়ে কৃষকেরা এ সাঁকো পার হয় দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে। এ ছাড়া মুমূর্ষু রোগীদের হাসপাতাল কিংবা ডাক্তারের কাছে আনা-নেওয়ার সময় বিপাকে পড়তে হয় মানুষকে। তারা তাদের এই ভোগান্তি দূরীকরণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

কথা হয় নারায়ণ বৈরাগী নামের ৮০ বছর বয়সের এক বৃদ্ধের সঙ্গে। তিনি সাঁকো পার হওয়ার সময় জানান, আমাদের এই ভোগান্তি কেউ দেখতে আসেন না। দুঃখ ভরা মনে বলেন, এই ভোগান্তি কবে শেষ হবে জানি না। কতবার কত লোক এসে শুধু মাপামাপিই করে, সেতু আর হয় না। খোনা গ্রামের নির্মল রায় জানান, এখানে একটি সেতু হলে আমাদের অনেক ভালো হতো। প্রতি দিন ঝুঁকি নিয়ে আমাদের এই খাল পার হতে হয়। তা ছাড়া ছোট ছোট বাচ্চার সাঁকো পার হতে ভয় পায়। এখানে একটা সেতু হলে তারা নিশ্চিন্তে স্কুলে যেতে পারত।

স্থানীয় ইউপি সদস্য বাবু শেখ জানান, বহু বছর ধরে এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে এই বাঁশের সাঁকোটি নির্মাণ করে চলাচল করছেন। এতে গ্রামবাসীর দুর্ভোগের শেষ নেই। এখানে একটি সেতু নির্মাণ খুবই জরুরি।

পানখালী ইউপি চেয়ারম্যান শেখ সাব্বির আহম্মেদ জানান, বাঁশের সাঁকোর স্থানে সরকারি অর্থায়নে একটি সেতু নির্মাণ করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকৌশলীকে অবহিত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে দাকোপ উপজেলা প্রকৌশলী ননী গোপাল জানান, সাঁকোটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত