Ajker Patrika

ভেজাল কয়েল ছড়াচ্ছে বিষ

রেজা মাহমুদ, সৈয়দপুর (নীলফামারী)
আপডেট : ২৩ অক্টোবর ২০২১, ১৮: ৩৬
ভেজাল কয়েল ছড়াচ্ছে বিষ

নীলফামারীর সৈয়দপুরে তৈরি হচ্ছে নিম্নমানের ভেজাল মশার কয়েল। এ ছাড়া বাজারে বিক্রি হচ্ছে উচ্চমাত্রার ক্ষতিকারক চায়না কয়েল। অনুমোদনহীন এসব কয়েলের ধোঁয়া পরিবেশে ছড়াচ্ছে বিষ। এতে শিশুসহ সব বয়সী মানুষ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

ক্রেতাদের অভিযোগ, একশ্রেণির অসাধু ও মুনাফালোভী ব্যবসায়ী এ অবৈধ মশার কয়েল উৎপাদন ও বাজারজাতে জড়িত। স্থানীয় বাজারে এসব কয়েলে সয়লাব হলেও সংশ্লিষ্টদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। তবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার ও সংরক্ষণ অধিদপ্তরের জেলা সহকারী পরিচালক বোরহান উদ্দীন জানিয়েছেন, শিগগির অনুমোদনহীন কয়েল কারখানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া বিক্রেতাদের বিরুদ্ধেও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে বলে জানান তিনি।

জানা যায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মশার কয়েলে সর্বোচ্চ শূন্য দশমিক ৩ মাত্রার অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট বা কেমিক্যাল ব্যবহারের নির্দেশনা রয়েছে। অধ্যাদেশ অনুসারে মশার কয়েল উৎপাদন, বাজারজাত ও সংরক্ষণে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অনুমোদন বাধ্যতামূলক। এ ছাড়া অনুমোদনের পর পাবলিক হেলথ প্রডাক্ট (পিএইচপি) নম্বর ও বিএসটিআইয়ের অনুমোদন নিয়েই সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে বালাইনাশক পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করার কথা।

কিন্তু এ উপজেলায় এ আইন মানা হচ্ছে না। শহরের গোলাহাট, মিস্ত্রিপাড়া, ইসলামবাগ, টার্মিনাল, কাজীরহাটসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৫০-৬০টি মশার কয়েল তৈরির কারখানা গড়ে উঠেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাসাবাড়ি ভাড়া নিয়ে এসব কারখানায় ক্ষতিকর মশার কয়েল উৎপাদন করা হয়। এসব কারখানায় নামীদামি ব্র্যান্ডের মশার কয়েলও তৈরি হয়। দেখতে হুবহু আসল মশার কয়েলের মতো। ভুয়া পিএইচপি নম্বর ও বিএসটিআইয়ের লোগো ব্যবহার করে আকর্ষণীয় মোড়কে এসব কয়েল বাজারে ছাড়া হচ্ছে, যা কিনে মানুষ প্রতারিত হচ্ছে। এসব কয়েলে ব্যবহার করা হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক পদার্থ; যা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা বিভিন্ন প্রাণঘাতী রোগের মুখে বেশি পড়ছেন এসব ভেজাল ও নিম্নমানের মশার কয়েলের ধোঁয়ায়। অনুমোদনহীন বিষাক্ত মশার কয়েলে শুধু মানুষ নয়, অন্য প্রাণীরও ক্ষতি হয়। অন্যদিকে কয়েল উৎপাদন কারখানার শ্রমিকদের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বিএসটিআইয়ের অনুমতি তালিকার বাইরে বাজারে সেভেন ভোস্টার, সুপার ডিসকভারি, প্যাগোডা গোল্ড, তুলসীপাতা, সেফগার্ড, লিজার্ড মেগা, বস সুপার, ম্যাজিক, সোলার, মাছরাঙা মেঘা, বাংলা কিলার, হান্টার, বিচ্ছু, চমক, সুপার যাদু, রকেট ও সুপার যাদু ব্র্যান্ডের কয়েল অবাধে বিক্রি হচ্ছে। এসব কয়েলের গায়ে ঢাকা, ভৈরব কিংবা চট্টগ্রাম লেখা থাকলেও পূর্ণাঙ্গ কোনো ঠিকানা নেই।

শহরের ইসলামবাগ এলাকার দোকানদার আলামিন বলেন, ‘কোম্পানির লোক এসে কয়েল দিয়ে যায়। তাই এসব বিক্রি করছি। বিএসটিআইয়ের অনুমোদন আছে কি না তা খেয়াল করিনি।’

সৈয়দপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলেমুল বাশার বলেন, অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট বা কেমিক্যাল ব্যবহারের ফলে ক্যানসার, শ্বাসনালিতে প্রদাহসহ বিকলাঙ্গের মতো ভয়াবহ রোগ হতে পারে। এমনকি গর্ভের শিশুও এতে ক্ষতির শিকার হতে পারে। খাদ্যে ফরমালিন ও পানিতে আর্সেনিকের প্রভাব যেমন দীর্ঘমেয়াদি, তেমনি এসব কয়েলের বিষাক্ত উপাদান মানুষের শরীরে দীর্ঘমেয়াদি জটিল রোগের বাসা তৈরি করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৩ আগস্ট বিমানবন্দরে বাধা পান তাপস, হাসিনাকে অনুরোধ করেন অফিসারের সঙ্গে কথা বলতে- অডিও ফাঁস

শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনালে অবতরণ করল প্রথম ফ্লাইট

স্ত্রী রাজি নন, সাবেক সেনাপ্রধান হারুনের মরদেহের ময়নাতদন্ত হবে না: পুলিশ

বাকৃবির ৫৭ শিক্ষকসহ ১৫৪ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা

সাবেক সেনাপ্রধান হারুন ছিলেন চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্ট হাউসে, দরজা ভেঙে বিছানায় মিলল তাঁর লাশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত