মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী

এই মুহূর্তে সাধারণ মানুষের আলোচনা-সমালোচনার প্রধান বিষয় হচ্ছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। তবে এর শুরুটা বছর দুই আগে থেকেই লক্ষ করা গেছে। বাজারে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কিছু বাস্তব কারণ তখন ছিল। প্রথমত, করোনার অতিমারিতে বিশ্ব অর্থনীতি বড় ধরনের ধাক্কায় পড়েছিল। দ্বিতীয়ত, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। তৃতীয়ত, বর্তমানে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধও বিশ্ব অর্থনীতিতে নতুন করে সংকট বাড়িয়ে তোলে।
বাংলাদেশ প্রধানত আমদানিনির্ভর দেশ। বিশ্ব অর্থনৈতিক এই সংকটের কালে চরম মুদ্রাস্ফীতি, ডলারসংকট, টাকার অবমূল্যায়ন ইত্যাদি কারণে আমদানি করা পণ্যের দাম ও পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় বেশ কিছু পণ্যের দাম আকস্মিকভাবে বেড়ে গেছে। আমাদের বাজারব্যবস্থা এখন পর্যন্ত নিয়মনীতিতে পরিচালিত হয় না। সে কারণে আজ একটি পণ্যের দাম বাড়ছে তো কাল অন্যটির দামও বাড়ানো হচ্ছে। পণ্যের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে নানা অজুহাত, ডান হাত, বাম হাত, কালো হাত ও সিন্ডিকেটের হাতের কথা সবারই জানা বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ব্যবসা-বাণিজ্যে আগে যেটুকু নীতি মেনে চলা হতো, এখন সুযোগ বুঝে ব্যবসায়ীদের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করছে না। লাভ এবং লোভ কী পরিমাণ অনিয়ন্ত্রিতভাবে আমাদের বাজারব্যবস্থায় জায়গা করে নিয়েছে তা সবার জানা। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে কোনোভাবেই তাল মিলিয়ে চলা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে নিম্ন এবং সীমিত আয়ের মানুষদের কেনাকাটায় বড় ধরনের টান পড়ে গেছে। এ নিয়ে সাধারণ এমনকি মধ্যবিত্ত ঘরেও একধরনের চাপ পরিলক্ষিত হচ্ছে, যা সহজে মেটানোর কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
সরকার এক-দেড় বছর থেকে টিসিবির মাধ্যমে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ন্যায্যমূল্যে কয়েকটি পণ্য সরবরাহ করছে। যার সুফলভোগী প্রায় এক কোটি পরিবার। এটি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ—এতে সন্দেহ নেই। কিন্তু অতি ঘনবসতিপূর্ণ এ দেশে এমন সহায়তাও যেন যথেষ্ট নয়। সরকারের পক্ষে এভাবে সব মানুষকে ন্যায্যমূল্যে পণ্যসামগ্রী কেনাকাটার ব্যবস্থা করাও মোটের ওপর অসম্ভব ব্যাপার। সরকার দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি রোধ করার জন্য নানাভাবে নানা উদ্যোগ নিলেও খুব একটা সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক এই সংকটে অনেক দেশ এখন বেশ অস্থিরতার ভেতর দিয়ে সময় পার করছে। আমাদের অর্থনৈতিক ভিত্তি গত পনেরো বছরে যথেষ্ট সবল হওয়ায় দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক আচরণকে এখনো মানুষ হজম করে চলতে পারছে। মানুষের মধ্যে বাজার নিয়ে অস্বস্তি ও ক্ষোভ আছে, কিন্তু না খেয়ে থাকার মতো কোনো পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি। এর কারণ হচ্ছে প্রায় দেড় দশক ধরে খাদ্য উৎপাদনে আমাদের বড় ধরনের সফলতা অর্জিত হয়েছে। সে কারণে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীরও নিয়মিত মুখে অন্ন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় প্রয়োজনীয় কেনাকাটা অনেকের পক্ষেই করা সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থার মধ্যে একদিকে যেমন কিছু বাস্তবতা আছে, অন্যদিকে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির প্রবণতাও গোটা বাজারব্যবস্থার মধ্যে বিরাজ করছে। এখন প্রয়োজন হচ্ছে বাজারব্যবস্থা থেকে অব্যবস্থাপনা, মজুতদারি, কারসাজি, চাঁদাবাজি এবং কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির সূক্ষ্ম বিষয়গুলো রোধের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
গত দেড়-দুই বছরের বাজারের অস্বাভাবিক আচরণ দেখেই আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ইশতেহারে দ্রব্যমূল্যকে নিয়ন্ত্রণে আনার বিষয়টি এক নম্বর তালিকায় স্থান দিয়েছে। নির্বাচনে জয়লাভের পরপরই দলীয়প্রধান শেখ হাসিনা সরকারের অগ্রাধিকার পাওয়া বিষয়গুলোর মধ্যে দ্রব্যমূল্যের চ্যালেঞ্জ এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণের কথা জানিয়েছেন। সরকার গঠনেও এবার তিনি বেশ কিছু নতুন মুখ মন্ত্রিসভায় এনেছেন।
যাঁরা এরই মধ্যে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য নানাভাবে উদ্যোগ নিচ্ছেন বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় প্রতিদিনই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নামিয়ে আনার বিষয়ে তাঁর অবস্থান ও দৃষ্টিভঙ্গির কথা জানিয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন; বিশেষ করে যেসব কৃষিজ পণ্য দেশে উৎপাদিত হয়, সেগুলো আরও কীভাবে বেশি বেশি উৎপাদন করা যায়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন। দেশের এক ইঞ্চি জমিও যাতে পতিত না থাকে, সে জন্য তিনি সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছেন। অবশ্য তিনি অনেক আগে থেকেই এ কথাগুলো বলে আসছেন। বঙ্গবন্ধুও দেশ স্বাধীন হওয়ার পর একই কথা বলতেন। শেখ হাসিনা সরকার কৃষির ওপর শুরু থেকেই জোর দিয়েছিল বলেই দেশে খাদ্যশস্যের উৎপাদন অনেক গুণ বেড়েছে।
আমাদের জনসংখ্যা একদিকে যেমন দ্রুতগতিতে বাড়ছে, অন্যদিকে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও উন্নয়ন বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে বিপুলসংখ্যক মানুষ বাসস্থান নির্মাণের জন্য জমি ব্যবহার করছে। গ্রামাঞ্চলে খাল-বিল, পুকুর ভরাট করে বাড়িঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। চাষাবাদের জমিতেও রাস্তাঘাট, বসতি, এলাকা, বাজার, ইটভাটাসহ নানা স্থাপনা অপরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে। ফলে চাষাবাদযোগ্য জমি যেমন নষ্ট হচ্ছে, তেমনি খাল-বিল ও পুকুরে মাছ উৎপাদন ভয়ানকভাবে কমে গেছে। প্রয়োজনীয় তরিতরকারি, খাদ্যশস্য উৎপাদনের জায়গা অনেক এলাকাতেই ভয়ানকভাবে কমে গেছে।
আমাদের গ্রামীণ সমাজে অপরিকল্পিতভাবে উর্বর জমি নষ্ট করার ফলে এখন অনেক এলাকাতেই চাষাবাদের পরিসর কমে গেছে। মানুষ শহরের মতো বাজার থেকে কেনার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। কিন্তু বাজারের চাহিদা মোতাবেক তরিতরকারি, শাকসবজি, মাছ, মাংস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় শস্য কেনাকাটার ওপর নির্ভরশীলতা বেড়ে গেছে তাদের। তবে চাহিদা মোতাবেক গ্রামীণ বাজারগুলোতে এখন আর সরবরাহ হচ্ছে না। ফলে খাদ্যশস্য, মাছ-মাংস, তরিতরকারিসহ কাঁচামালের দাম শহরের মতোই সরবরাহের ওপর নির্ভর করছে, দামও সারা দেশেই মোবাইল এবং মিডিয়ার কল্যাণে গ্রাম-শহরভেদে একই রকম।
অন্যদিকে দেশের যেসব অঞ্চলে এসব পণ্যসামগ্রী উৎপাদিত হয়, সেখানকার উৎপাদকদের চেয়ে ফড়িয়া এবং আড়তদারেরা নিজেদের সুবিধামতো বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন, অধিক মুনাফা তুলে নেওয়ার ফন্দি-ফিকির করে যাচ্ছেন। প্রকৃত কৃষক এবং পণ্য উৎপাদনকারীরা দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতির সময়েও ফড়িয়া, মহাজন, আড়তদারদের কারসাজির কারণে খুব একটা লাভ ঘরে তুলে নিতে পারছেন না। অনেকেই কৃষিজ জমি এখন ফসল উৎপাদনে খরচের সঙ্গে তাল মেলাতে পারছেন না। ফলে চাষবাস করার যোগ্য জমি অনেক এলাকায় পতিত থেকে যাচ্ছে। জমি এখন কেনাবেচার লাভজনক পণ্যে পরিণত হয়েছে।
কিন্তু খাদ্যশস্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় তরিতরকারি উৎপাদনে আগ্রহী মানুষের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে আমাদের কাঁচাবাজারে। সুতরাং সরকারকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে খাদ্যশস্য, তরিতরকারি, কাঁচামাল উৎপাদনের বাস্তব চিত্রটি আগে জরিপ করে দেখতে হবে। এরপর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের সহায়তায় দেশে চাষযোগ্য ভূমির পরিকল্পনা এবং কার্যকর ফসল উৎপাদনের ব্যবস্থা চালু করতে হবে। জমির অপব্যবহার, বেচাকেনা, পণ্য হিসেবে ব্যবহার করার প্রবণতা রোধ করতে হবে। স্থানীয় সরকার এবং উপজেলা প্রশাসনকে দুর্নীতিমুক্তভাবে কৃষিজ জমির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে বহুমুখী সমবায় সমিতি বা ব্যবস্থা চালুর মাধ্যমে কৃষি ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করার কোনো বিকল্প নেই।
ভারতে কয়েক যুগ ধরে বাজারব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একটি বিশেষ কমিশন কার্যকর ভূমিকা পালন করে আসছে। সে কারণে কোনো পণ্যের দামই যথেচ্ছভাবে সেখানে ওঠানামা করতে পারে না। আমাদের দেশে ২০১২ সালে কমপিটিশন কমিশন গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু এর কোনো কার্যকারিতা দেখা যাচ্ছে না। সরকারের এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী উৎপাদনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এর সঙ্গে যেসব সমস্যা প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করছে, সেগুলো দূর করতে হবে। কৃষিজ পণ্য উৎপাদনে কৃষকদের স্বার্থ সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় আইন এবং প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো পণ্য উৎপাদিত অঞ্চল থেকে কোথায়
কোথায় সরবরাহ করা যাবে দেশব্যাপী, এর একটি নেটওয়ার্কও কার্যকর করার উদ্যোগ নিতে হবে।
মধ্যস্বত্বভোগীর অবস্থান তুলে দিয়ে বাজার পর্যন্ত সমিতির মাধ্যমে সরবরাহের ব্যবস্থা করা আবশ্যক হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে যেসব পণ্য বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়, সেগুলোর ব্যাপারেও তথ্যভিত্তিক আমদানি সচল রাখতে হবে। একচেটিয়া কারবারি ও করপোরেট হাউসগুলোর আধিপত্য বিস্তার, বাজার মেনুপুলেট করার সব কারসাজি বন্ধ করতে হবে। এরপরই কেবল বাজার ব্যবস্থাপনা তৈরি হতে পারে। দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়া বাজার থেকে সরানোর বিকল্প কেবলই চাহিদা মোতাবেক পণ্যসামগ্রীর সরবরাহ ও মূল্যব্যবস্থা নিশ্চিত করার ওপর নির্ভর করবে।
লেখক: অধ্যাপক, ইতিহাসবিদ ও কলামিস্ট

এই মুহূর্তে সাধারণ মানুষের আলোচনা-সমালোচনার প্রধান বিষয় হচ্ছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। তবে এর শুরুটা বছর দুই আগে থেকেই লক্ষ করা গেছে। বাজারে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কিছু বাস্তব কারণ তখন ছিল। প্রথমত, করোনার অতিমারিতে বিশ্ব অর্থনীতি বড় ধরনের ধাক্কায় পড়েছিল। দ্বিতীয়ত, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। তৃতীয়ত, বর্তমানে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধও বিশ্ব অর্থনীতিতে নতুন করে সংকট বাড়িয়ে তোলে।
বাংলাদেশ প্রধানত আমদানিনির্ভর দেশ। বিশ্ব অর্থনৈতিক এই সংকটের কালে চরম মুদ্রাস্ফীতি, ডলারসংকট, টাকার অবমূল্যায়ন ইত্যাদি কারণে আমদানি করা পণ্যের দাম ও পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় বেশ কিছু পণ্যের দাম আকস্মিকভাবে বেড়ে গেছে। আমাদের বাজারব্যবস্থা এখন পর্যন্ত নিয়মনীতিতে পরিচালিত হয় না। সে কারণে আজ একটি পণ্যের দাম বাড়ছে তো কাল অন্যটির দামও বাড়ানো হচ্ছে। পণ্যের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে নানা অজুহাত, ডান হাত, বাম হাত, কালো হাত ও সিন্ডিকেটের হাতের কথা সবারই জানা বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ব্যবসা-বাণিজ্যে আগে যেটুকু নীতি মেনে চলা হতো, এখন সুযোগ বুঝে ব্যবসায়ীদের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করছে না। লাভ এবং লোভ কী পরিমাণ অনিয়ন্ত্রিতভাবে আমাদের বাজারব্যবস্থায় জায়গা করে নিয়েছে তা সবার জানা। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে কোনোভাবেই তাল মিলিয়ে চলা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে নিম্ন এবং সীমিত আয়ের মানুষদের কেনাকাটায় বড় ধরনের টান পড়ে গেছে। এ নিয়ে সাধারণ এমনকি মধ্যবিত্ত ঘরেও একধরনের চাপ পরিলক্ষিত হচ্ছে, যা সহজে মেটানোর কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
সরকার এক-দেড় বছর থেকে টিসিবির মাধ্যমে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ন্যায্যমূল্যে কয়েকটি পণ্য সরবরাহ করছে। যার সুফলভোগী প্রায় এক কোটি পরিবার। এটি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ—এতে সন্দেহ নেই। কিন্তু অতি ঘনবসতিপূর্ণ এ দেশে এমন সহায়তাও যেন যথেষ্ট নয়। সরকারের পক্ষে এভাবে সব মানুষকে ন্যায্যমূল্যে পণ্যসামগ্রী কেনাকাটার ব্যবস্থা করাও মোটের ওপর অসম্ভব ব্যাপার। সরকার দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি রোধ করার জন্য নানাভাবে নানা উদ্যোগ নিলেও খুব একটা সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক এই সংকটে অনেক দেশ এখন বেশ অস্থিরতার ভেতর দিয়ে সময় পার করছে। আমাদের অর্থনৈতিক ভিত্তি গত পনেরো বছরে যথেষ্ট সবল হওয়ায় দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক আচরণকে এখনো মানুষ হজম করে চলতে পারছে। মানুষের মধ্যে বাজার নিয়ে অস্বস্তি ও ক্ষোভ আছে, কিন্তু না খেয়ে থাকার মতো কোনো পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি। এর কারণ হচ্ছে প্রায় দেড় দশক ধরে খাদ্য উৎপাদনে আমাদের বড় ধরনের সফলতা অর্জিত হয়েছে। সে কারণে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীরও নিয়মিত মুখে অন্ন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় প্রয়োজনীয় কেনাকাটা অনেকের পক্ষেই করা সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থার মধ্যে একদিকে যেমন কিছু বাস্তবতা আছে, অন্যদিকে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির প্রবণতাও গোটা বাজারব্যবস্থার মধ্যে বিরাজ করছে। এখন প্রয়োজন হচ্ছে বাজারব্যবস্থা থেকে অব্যবস্থাপনা, মজুতদারি, কারসাজি, চাঁদাবাজি এবং কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির সূক্ষ্ম বিষয়গুলো রোধের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
গত দেড়-দুই বছরের বাজারের অস্বাভাবিক আচরণ দেখেই আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ইশতেহারে দ্রব্যমূল্যকে নিয়ন্ত্রণে আনার বিষয়টি এক নম্বর তালিকায় স্থান দিয়েছে। নির্বাচনে জয়লাভের পরপরই দলীয়প্রধান শেখ হাসিনা সরকারের অগ্রাধিকার পাওয়া বিষয়গুলোর মধ্যে দ্রব্যমূল্যের চ্যালেঞ্জ এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণের কথা জানিয়েছেন। সরকার গঠনেও এবার তিনি বেশ কিছু নতুন মুখ মন্ত্রিসভায় এনেছেন।
যাঁরা এরই মধ্যে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য নানাভাবে উদ্যোগ নিচ্ছেন বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় প্রতিদিনই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নামিয়ে আনার বিষয়ে তাঁর অবস্থান ও দৃষ্টিভঙ্গির কথা জানিয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন; বিশেষ করে যেসব কৃষিজ পণ্য দেশে উৎপাদিত হয়, সেগুলো আরও কীভাবে বেশি বেশি উৎপাদন করা যায়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন। দেশের এক ইঞ্চি জমিও যাতে পতিত না থাকে, সে জন্য তিনি সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছেন। অবশ্য তিনি অনেক আগে থেকেই এ কথাগুলো বলে আসছেন। বঙ্গবন্ধুও দেশ স্বাধীন হওয়ার পর একই কথা বলতেন। শেখ হাসিনা সরকার কৃষির ওপর শুরু থেকেই জোর দিয়েছিল বলেই দেশে খাদ্যশস্যের উৎপাদন অনেক গুণ বেড়েছে।
আমাদের জনসংখ্যা একদিকে যেমন দ্রুতগতিতে বাড়ছে, অন্যদিকে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও উন্নয়ন বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে বিপুলসংখ্যক মানুষ বাসস্থান নির্মাণের জন্য জমি ব্যবহার করছে। গ্রামাঞ্চলে খাল-বিল, পুকুর ভরাট করে বাড়িঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। চাষাবাদের জমিতেও রাস্তাঘাট, বসতি, এলাকা, বাজার, ইটভাটাসহ নানা স্থাপনা অপরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে। ফলে চাষাবাদযোগ্য জমি যেমন নষ্ট হচ্ছে, তেমনি খাল-বিল ও পুকুরে মাছ উৎপাদন ভয়ানকভাবে কমে গেছে। প্রয়োজনীয় তরিতরকারি, খাদ্যশস্য উৎপাদনের জায়গা অনেক এলাকাতেই ভয়ানকভাবে কমে গেছে।
আমাদের গ্রামীণ সমাজে অপরিকল্পিতভাবে উর্বর জমি নষ্ট করার ফলে এখন অনেক এলাকাতেই চাষাবাদের পরিসর কমে গেছে। মানুষ শহরের মতো বাজার থেকে কেনার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। কিন্তু বাজারের চাহিদা মোতাবেক তরিতরকারি, শাকসবজি, মাছ, মাংস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় শস্য কেনাকাটার ওপর নির্ভরশীলতা বেড়ে গেছে তাদের। তবে চাহিদা মোতাবেক গ্রামীণ বাজারগুলোতে এখন আর সরবরাহ হচ্ছে না। ফলে খাদ্যশস্য, মাছ-মাংস, তরিতরকারিসহ কাঁচামালের দাম শহরের মতোই সরবরাহের ওপর নির্ভর করছে, দামও সারা দেশেই মোবাইল এবং মিডিয়ার কল্যাণে গ্রাম-শহরভেদে একই রকম।
অন্যদিকে দেশের যেসব অঞ্চলে এসব পণ্যসামগ্রী উৎপাদিত হয়, সেখানকার উৎপাদকদের চেয়ে ফড়িয়া এবং আড়তদারেরা নিজেদের সুবিধামতো বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন, অধিক মুনাফা তুলে নেওয়ার ফন্দি-ফিকির করে যাচ্ছেন। প্রকৃত কৃষক এবং পণ্য উৎপাদনকারীরা দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতির সময়েও ফড়িয়া, মহাজন, আড়তদারদের কারসাজির কারণে খুব একটা লাভ ঘরে তুলে নিতে পারছেন না। অনেকেই কৃষিজ জমি এখন ফসল উৎপাদনে খরচের সঙ্গে তাল মেলাতে পারছেন না। ফলে চাষবাস করার যোগ্য জমি অনেক এলাকায় পতিত থেকে যাচ্ছে। জমি এখন কেনাবেচার লাভজনক পণ্যে পরিণত হয়েছে।
কিন্তু খাদ্যশস্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় তরিতরকারি উৎপাদনে আগ্রহী মানুষের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে আমাদের কাঁচাবাজারে। সুতরাং সরকারকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে খাদ্যশস্য, তরিতরকারি, কাঁচামাল উৎপাদনের বাস্তব চিত্রটি আগে জরিপ করে দেখতে হবে। এরপর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের সহায়তায় দেশে চাষযোগ্য ভূমির পরিকল্পনা এবং কার্যকর ফসল উৎপাদনের ব্যবস্থা চালু করতে হবে। জমির অপব্যবহার, বেচাকেনা, পণ্য হিসেবে ব্যবহার করার প্রবণতা রোধ করতে হবে। স্থানীয় সরকার এবং উপজেলা প্রশাসনকে দুর্নীতিমুক্তভাবে কৃষিজ জমির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে বহুমুখী সমবায় সমিতি বা ব্যবস্থা চালুর মাধ্যমে কৃষি ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করার কোনো বিকল্প নেই।
ভারতে কয়েক যুগ ধরে বাজারব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একটি বিশেষ কমিশন কার্যকর ভূমিকা পালন করে আসছে। সে কারণে কোনো পণ্যের দামই যথেচ্ছভাবে সেখানে ওঠানামা করতে পারে না। আমাদের দেশে ২০১২ সালে কমপিটিশন কমিশন গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু এর কোনো কার্যকারিতা দেখা যাচ্ছে না। সরকারের এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী উৎপাদনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এর সঙ্গে যেসব সমস্যা প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করছে, সেগুলো দূর করতে হবে। কৃষিজ পণ্য উৎপাদনে কৃষকদের স্বার্থ সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় আইন এবং প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো পণ্য উৎপাদিত অঞ্চল থেকে কোথায়
কোথায় সরবরাহ করা যাবে দেশব্যাপী, এর একটি নেটওয়ার্কও কার্যকর করার উদ্যোগ নিতে হবে।
মধ্যস্বত্বভোগীর অবস্থান তুলে দিয়ে বাজার পর্যন্ত সমিতির মাধ্যমে সরবরাহের ব্যবস্থা করা আবশ্যক হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে যেসব পণ্য বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়, সেগুলোর ব্যাপারেও তথ্যভিত্তিক আমদানি সচল রাখতে হবে। একচেটিয়া কারবারি ও করপোরেট হাউসগুলোর আধিপত্য বিস্তার, বাজার মেনুপুলেট করার সব কারসাজি বন্ধ করতে হবে। এরপরই কেবল বাজার ব্যবস্থাপনা তৈরি হতে পারে। দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়া বাজার থেকে সরানোর বিকল্প কেবলই চাহিদা মোতাবেক পণ্যসামগ্রীর সরবরাহ ও মূল্যব্যবস্থা নিশ্চিত করার ওপর নির্ভর করবে।
লেখক: অধ্যাপক, ইতিহাসবিদ ও কলামিস্ট
মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী

এই মুহূর্তে সাধারণ মানুষের আলোচনা-সমালোচনার প্রধান বিষয় হচ্ছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। তবে এর শুরুটা বছর দুই আগে থেকেই লক্ষ করা গেছে। বাজারে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কিছু বাস্তব কারণ তখন ছিল। প্রথমত, করোনার অতিমারিতে বিশ্ব অর্থনীতি বড় ধরনের ধাক্কায় পড়েছিল। দ্বিতীয়ত, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। তৃতীয়ত, বর্তমানে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধও বিশ্ব অর্থনীতিতে নতুন করে সংকট বাড়িয়ে তোলে।
বাংলাদেশ প্রধানত আমদানিনির্ভর দেশ। বিশ্ব অর্থনৈতিক এই সংকটের কালে চরম মুদ্রাস্ফীতি, ডলারসংকট, টাকার অবমূল্যায়ন ইত্যাদি কারণে আমদানি করা পণ্যের দাম ও পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় বেশ কিছু পণ্যের দাম আকস্মিকভাবে বেড়ে গেছে। আমাদের বাজারব্যবস্থা এখন পর্যন্ত নিয়মনীতিতে পরিচালিত হয় না। সে কারণে আজ একটি পণ্যের দাম বাড়ছে তো কাল অন্যটির দামও বাড়ানো হচ্ছে। পণ্যের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে নানা অজুহাত, ডান হাত, বাম হাত, কালো হাত ও সিন্ডিকেটের হাতের কথা সবারই জানা বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ব্যবসা-বাণিজ্যে আগে যেটুকু নীতি মেনে চলা হতো, এখন সুযোগ বুঝে ব্যবসায়ীদের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করছে না। লাভ এবং লোভ কী পরিমাণ অনিয়ন্ত্রিতভাবে আমাদের বাজারব্যবস্থায় জায়গা করে নিয়েছে তা সবার জানা। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে কোনোভাবেই তাল মিলিয়ে চলা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে নিম্ন এবং সীমিত আয়ের মানুষদের কেনাকাটায় বড় ধরনের টান পড়ে গেছে। এ নিয়ে সাধারণ এমনকি মধ্যবিত্ত ঘরেও একধরনের চাপ পরিলক্ষিত হচ্ছে, যা সহজে মেটানোর কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
সরকার এক-দেড় বছর থেকে টিসিবির মাধ্যমে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ন্যায্যমূল্যে কয়েকটি পণ্য সরবরাহ করছে। যার সুফলভোগী প্রায় এক কোটি পরিবার। এটি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ—এতে সন্দেহ নেই। কিন্তু অতি ঘনবসতিপূর্ণ এ দেশে এমন সহায়তাও যেন যথেষ্ট নয়। সরকারের পক্ষে এভাবে সব মানুষকে ন্যায্যমূল্যে পণ্যসামগ্রী কেনাকাটার ব্যবস্থা করাও মোটের ওপর অসম্ভব ব্যাপার। সরকার দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি রোধ করার জন্য নানাভাবে নানা উদ্যোগ নিলেও খুব একটা সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক এই সংকটে অনেক দেশ এখন বেশ অস্থিরতার ভেতর দিয়ে সময় পার করছে। আমাদের অর্থনৈতিক ভিত্তি গত পনেরো বছরে যথেষ্ট সবল হওয়ায় দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক আচরণকে এখনো মানুষ হজম করে চলতে পারছে। মানুষের মধ্যে বাজার নিয়ে অস্বস্তি ও ক্ষোভ আছে, কিন্তু না খেয়ে থাকার মতো কোনো পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি। এর কারণ হচ্ছে প্রায় দেড় দশক ধরে খাদ্য উৎপাদনে আমাদের বড় ধরনের সফলতা অর্জিত হয়েছে। সে কারণে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীরও নিয়মিত মুখে অন্ন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় প্রয়োজনীয় কেনাকাটা অনেকের পক্ষেই করা সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থার মধ্যে একদিকে যেমন কিছু বাস্তবতা আছে, অন্যদিকে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির প্রবণতাও গোটা বাজারব্যবস্থার মধ্যে বিরাজ করছে। এখন প্রয়োজন হচ্ছে বাজারব্যবস্থা থেকে অব্যবস্থাপনা, মজুতদারি, কারসাজি, চাঁদাবাজি এবং কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির সূক্ষ্ম বিষয়গুলো রোধের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
গত দেড়-দুই বছরের বাজারের অস্বাভাবিক আচরণ দেখেই আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ইশতেহারে দ্রব্যমূল্যকে নিয়ন্ত্রণে আনার বিষয়টি এক নম্বর তালিকায় স্থান দিয়েছে। নির্বাচনে জয়লাভের পরপরই দলীয়প্রধান শেখ হাসিনা সরকারের অগ্রাধিকার পাওয়া বিষয়গুলোর মধ্যে দ্রব্যমূল্যের চ্যালেঞ্জ এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণের কথা জানিয়েছেন। সরকার গঠনেও এবার তিনি বেশ কিছু নতুন মুখ মন্ত্রিসভায় এনেছেন।
যাঁরা এরই মধ্যে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য নানাভাবে উদ্যোগ নিচ্ছেন বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় প্রতিদিনই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নামিয়ে আনার বিষয়ে তাঁর অবস্থান ও দৃষ্টিভঙ্গির কথা জানিয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন; বিশেষ করে যেসব কৃষিজ পণ্য দেশে উৎপাদিত হয়, সেগুলো আরও কীভাবে বেশি বেশি উৎপাদন করা যায়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন। দেশের এক ইঞ্চি জমিও যাতে পতিত না থাকে, সে জন্য তিনি সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছেন। অবশ্য তিনি অনেক আগে থেকেই এ কথাগুলো বলে আসছেন। বঙ্গবন্ধুও দেশ স্বাধীন হওয়ার পর একই কথা বলতেন। শেখ হাসিনা সরকার কৃষির ওপর শুরু থেকেই জোর দিয়েছিল বলেই দেশে খাদ্যশস্যের উৎপাদন অনেক গুণ বেড়েছে।
আমাদের জনসংখ্যা একদিকে যেমন দ্রুতগতিতে বাড়ছে, অন্যদিকে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও উন্নয়ন বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে বিপুলসংখ্যক মানুষ বাসস্থান নির্মাণের জন্য জমি ব্যবহার করছে। গ্রামাঞ্চলে খাল-বিল, পুকুর ভরাট করে বাড়িঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। চাষাবাদের জমিতেও রাস্তাঘাট, বসতি, এলাকা, বাজার, ইটভাটাসহ নানা স্থাপনা অপরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে। ফলে চাষাবাদযোগ্য জমি যেমন নষ্ট হচ্ছে, তেমনি খাল-বিল ও পুকুরে মাছ উৎপাদন ভয়ানকভাবে কমে গেছে। প্রয়োজনীয় তরিতরকারি, খাদ্যশস্য উৎপাদনের জায়গা অনেক এলাকাতেই ভয়ানকভাবে কমে গেছে।
আমাদের গ্রামীণ সমাজে অপরিকল্পিতভাবে উর্বর জমি নষ্ট করার ফলে এখন অনেক এলাকাতেই চাষাবাদের পরিসর কমে গেছে। মানুষ শহরের মতো বাজার থেকে কেনার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। কিন্তু বাজারের চাহিদা মোতাবেক তরিতরকারি, শাকসবজি, মাছ, মাংস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় শস্য কেনাকাটার ওপর নির্ভরশীলতা বেড়ে গেছে তাদের। তবে চাহিদা মোতাবেক গ্রামীণ বাজারগুলোতে এখন আর সরবরাহ হচ্ছে না। ফলে খাদ্যশস্য, মাছ-মাংস, তরিতরকারিসহ কাঁচামালের দাম শহরের মতোই সরবরাহের ওপর নির্ভর করছে, দামও সারা দেশেই মোবাইল এবং মিডিয়ার কল্যাণে গ্রাম-শহরভেদে একই রকম।
অন্যদিকে দেশের যেসব অঞ্চলে এসব পণ্যসামগ্রী উৎপাদিত হয়, সেখানকার উৎপাদকদের চেয়ে ফড়িয়া এবং আড়তদারেরা নিজেদের সুবিধামতো বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন, অধিক মুনাফা তুলে নেওয়ার ফন্দি-ফিকির করে যাচ্ছেন। প্রকৃত কৃষক এবং পণ্য উৎপাদনকারীরা দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতির সময়েও ফড়িয়া, মহাজন, আড়তদারদের কারসাজির কারণে খুব একটা লাভ ঘরে তুলে নিতে পারছেন না। অনেকেই কৃষিজ জমি এখন ফসল উৎপাদনে খরচের সঙ্গে তাল মেলাতে পারছেন না। ফলে চাষবাস করার যোগ্য জমি অনেক এলাকায় পতিত থেকে যাচ্ছে। জমি এখন কেনাবেচার লাভজনক পণ্যে পরিণত হয়েছে।
কিন্তু খাদ্যশস্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় তরিতরকারি উৎপাদনে আগ্রহী মানুষের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে আমাদের কাঁচাবাজারে। সুতরাং সরকারকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে খাদ্যশস্য, তরিতরকারি, কাঁচামাল উৎপাদনের বাস্তব চিত্রটি আগে জরিপ করে দেখতে হবে। এরপর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের সহায়তায় দেশে চাষযোগ্য ভূমির পরিকল্পনা এবং কার্যকর ফসল উৎপাদনের ব্যবস্থা চালু করতে হবে। জমির অপব্যবহার, বেচাকেনা, পণ্য হিসেবে ব্যবহার করার প্রবণতা রোধ করতে হবে। স্থানীয় সরকার এবং উপজেলা প্রশাসনকে দুর্নীতিমুক্তভাবে কৃষিজ জমির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে বহুমুখী সমবায় সমিতি বা ব্যবস্থা চালুর মাধ্যমে কৃষি ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করার কোনো বিকল্প নেই।
ভারতে কয়েক যুগ ধরে বাজারব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একটি বিশেষ কমিশন কার্যকর ভূমিকা পালন করে আসছে। সে কারণে কোনো পণ্যের দামই যথেচ্ছভাবে সেখানে ওঠানামা করতে পারে না। আমাদের দেশে ২০১২ সালে কমপিটিশন কমিশন গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু এর কোনো কার্যকারিতা দেখা যাচ্ছে না। সরকারের এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী উৎপাদনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এর সঙ্গে যেসব সমস্যা প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করছে, সেগুলো দূর করতে হবে। কৃষিজ পণ্য উৎপাদনে কৃষকদের স্বার্থ সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় আইন এবং প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো পণ্য উৎপাদিত অঞ্চল থেকে কোথায়
কোথায় সরবরাহ করা যাবে দেশব্যাপী, এর একটি নেটওয়ার্কও কার্যকর করার উদ্যোগ নিতে হবে।
মধ্যস্বত্বভোগীর অবস্থান তুলে দিয়ে বাজার পর্যন্ত সমিতির মাধ্যমে সরবরাহের ব্যবস্থা করা আবশ্যক হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে যেসব পণ্য বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়, সেগুলোর ব্যাপারেও তথ্যভিত্তিক আমদানি সচল রাখতে হবে। একচেটিয়া কারবারি ও করপোরেট হাউসগুলোর আধিপত্য বিস্তার, বাজার মেনুপুলেট করার সব কারসাজি বন্ধ করতে হবে। এরপরই কেবল বাজার ব্যবস্থাপনা তৈরি হতে পারে। দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়া বাজার থেকে সরানোর বিকল্প কেবলই চাহিদা মোতাবেক পণ্যসামগ্রীর সরবরাহ ও মূল্যব্যবস্থা নিশ্চিত করার ওপর নির্ভর করবে।
লেখক: অধ্যাপক, ইতিহাসবিদ ও কলামিস্ট

এই মুহূর্তে সাধারণ মানুষের আলোচনা-সমালোচনার প্রধান বিষয় হচ্ছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। তবে এর শুরুটা বছর দুই আগে থেকেই লক্ষ করা গেছে। বাজারে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কিছু বাস্তব কারণ তখন ছিল। প্রথমত, করোনার অতিমারিতে বিশ্ব অর্থনীতি বড় ধরনের ধাক্কায় পড়েছিল। দ্বিতীয়ত, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। তৃতীয়ত, বর্তমানে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধও বিশ্ব অর্থনীতিতে নতুন করে সংকট বাড়িয়ে তোলে।
বাংলাদেশ প্রধানত আমদানিনির্ভর দেশ। বিশ্ব অর্থনৈতিক এই সংকটের কালে চরম মুদ্রাস্ফীতি, ডলারসংকট, টাকার অবমূল্যায়ন ইত্যাদি কারণে আমদানি করা পণ্যের দাম ও পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় বেশ কিছু পণ্যের দাম আকস্মিকভাবে বেড়ে গেছে। আমাদের বাজারব্যবস্থা এখন পর্যন্ত নিয়মনীতিতে পরিচালিত হয় না। সে কারণে আজ একটি পণ্যের দাম বাড়ছে তো কাল অন্যটির দামও বাড়ানো হচ্ছে। পণ্যের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে নানা অজুহাত, ডান হাত, বাম হাত, কালো হাত ও সিন্ডিকেটের হাতের কথা সবারই জানা বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ব্যবসা-বাণিজ্যে আগে যেটুকু নীতি মেনে চলা হতো, এখন সুযোগ বুঝে ব্যবসায়ীদের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করছে না। লাভ এবং লোভ কী পরিমাণ অনিয়ন্ত্রিতভাবে আমাদের বাজারব্যবস্থায় জায়গা করে নিয়েছে তা সবার জানা। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে কোনোভাবেই তাল মিলিয়ে চলা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে নিম্ন এবং সীমিত আয়ের মানুষদের কেনাকাটায় বড় ধরনের টান পড়ে গেছে। এ নিয়ে সাধারণ এমনকি মধ্যবিত্ত ঘরেও একধরনের চাপ পরিলক্ষিত হচ্ছে, যা সহজে মেটানোর কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
সরকার এক-দেড় বছর থেকে টিসিবির মাধ্যমে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ন্যায্যমূল্যে কয়েকটি পণ্য সরবরাহ করছে। যার সুফলভোগী প্রায় এক কোটি পরিবার। এটি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ—এতে সন্দেহ নেই। কিন্তু অতি ঘনবসতিপূর্ণ এ দেশে এমন সহায়তাও যেন যথেষ্ট নয়। সরকারের পক্ষে এভাবে সব মানুষকে ন্যায্যমূল্যে পণ্যসামগ্রী কেনাকাটার ব্যবস্থা করাও মোটের ওপর অসম্ভব ব্যাপার। সরকার দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি রোধ করার জন্য নানাভাবে নানা উদ্যোগ নিলেও খুব একটা সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক এই সংকটে অনেক দেশ এখন বেশ অস্থিরতার ভেতর দিয়ে সময় পার করছে। আমাদের অর্থনৈতিক ভিত্তি গত পনেরো বছরে যথেষ্ট সবল হওয়ায় দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক আচরণকে এখনো মানুষ হজম করে চলতে পারছে। মানুষের মধ্যে বাজার নিয়ে অস্বস্তি ও ক্ষোভ আছে, কিন্তু না খেয়ে থাকার মতো কোনো পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি। এর কারণ হচ্ছে প্রায় দেড় দশক ধরে খাদ্য উৎপাদনে আমাদের বড় ধরনের সফলতা অর্জিত হয়েছে। সে কারণে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীরও নিয়মিত মুখে অন্ন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় প্রয়োজনীয় কেনাকাটা অনেকের পক্ষেই করা সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থার মধ্যে একদিকে যেমন কিছু বাস্তবতা আছে, অন্যদিকে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির প্রবণতাও গোটা বাজারব্যবস্থার মধ্যে বিরাজ করছে। এখন প্রয়োজন হচ্ছে বাজারব্যবস্থা থেকে অব্যবস্থাপনা, মজুতদারি, কারসাজি, চাঁদাবাজি এবং কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির সূক্ষ্ম বিষয়গুলো রোধের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
গত দেড়-দুই বছরের বাজারের অস্বাভাবিক আচরণ দেখেই আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ইশতেহারে দ্রব্যমূল্যকে নিয়ন্ত্রণে আনার বিষয়টি এক নম্বর তালিকায় স্থান দিয়েছে। নির্বাচনে জয়লাভের পরপরই দলীয়প্রধান শেখ হাসিনা সরকারের অগ্রাধিকার পাওয়া বিষয়গুলোর মধ্যে দ্রব্যমূল্যের চ্যালেঞ্জ এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণের কথা জানিয়েছেন। সরকার গঠনেও এবার তিনি বেশ কিছু নতুন মুখ মন্ত্রিসভায় এনেছেন।
যাঁরা এরই মধ্যে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য নানাভাবে উদ্যোগ নিচ্ছেন বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় প্রতিদিনই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নামিয়ে আনার বিষয়ে তাঁর অবস্থান ও দৃষ্টিভঙ্গির কথা জানিয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন; বিশেষ করে যেসব কৃষিজ পণ্য দেশে উৎপাদিত হয়, সেগুলো আরও কীভাবে বেশি বেশি উৎপাদন করা যায়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন। দেশের এক ইঞ্চি জমিও যাতে পতিত না থাকে, সে জন্য তিনি সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছেন। অবশ্য তিনি অনেক আগে থেকেই এ কথাগুলো বলে আসছেন। বঙ্গবন্ধুও দেশ স্বাধীন হওয়ার পর একই কথা বলতেন। শেখ হাসিনা সরকার কৃষির ওপর শুরু থেকেই জোর দিয়েছিল বলেই দেশে খাদ্যশস্যের উৎপাদন অনেক গুণ বেড়েছে।
আমাদের জনসংখ্যা একদিকে যেমন দ্রুতগতিতে বাড়ছে, অন্যদিকে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও উন্নয়ন বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে বিপুলসংখ্যক মানুষ বাসস্থান নির্মাণের জন্য জমি ব্যবহার করছে। গ্রামাঞ্চলে খাল-বিল, পুকুর ভরাট করে বাড়িঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। চাষাবাদের জমিতেও রাস্তাঘাট, বসতি, এলাকা, বাজার, ইটভাটাসহ নানা স্থাপনা অপরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে। ফলে চাষাবাদযোগ্য জমি যেমন নষ্ট হচ্ছে, তেমনি খাল-বিল ও পুকুরে মাছ উৎপাদন ভয়ানকভাবে কমে গেছে। প্রয়োজনীয় তরিতরকারি, খাদ্যশস্য উৎপাদনের জায়গা অনেক এলাকাতেই ভয়ানকভাবে কমে গেছে।
আমাদের গ্রামীণ সমাজে অপরিকল্পিতভাবে উর্বর জমি নষ্ট করার ফলে এখন অনেক এলাকাতেই চাষাবাদের পরিসর কমে গেছে। মানুষ শহরের মতো বাজার থেকে কেনার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। কিন্তু বাজারের চাহিদা মোতাবেক তরিতরকারি, শাকসবজি, মাছ, মাংস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় শস্য কেনাকাটার ওপর নির্ভরশীলতা বেড়ে গেছে তাদের। তবে চাহিদা মোতাবেক গ্রামীণ বাজারগুলোতে এখন আর সরবরাহ হচ্ছে না। ফলে খাদ্যশস্য, মাছ-মাংস, তরিতরকারিসহ কাঁচামালের দাম শহরের মতোই সরবরাহের ওপর নির্ভর করছে, দামও সারা দেশেই মোবাইল এবং মিডিয়ার কল্যাণে গ্রাম-শহরভেদে একই রকম।
অন্যদিকে দেশের যেসব অঞ্চলে এসব পণ্যসামগ্রী উৎপাদিত হয়, সেখানকার উৎপাদকদের চেয়ে ফড়িয়া এবং আড়তদারেরা নিজেদের সুবিধামতো বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন, অধিক মুনাফা তুলে নেওয়ার ফন্দি-ফিকির করে যাচ্ছেন। প্রকৃত কৃষক এবং পণ্য উৎপাদনকারীরা দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতির সময়েও ফড়িয়া, মহাজন, আড়তদারদের কারসাজির কারণে খুব একটা লাভ ঘরে তুলে নিতে পারছেন না। অনেকেই কৃষিজ জমি এখন ফসল উৎপাদনে খরচের সঙ্গে তাল মেলাতে পারছেন না। ফলে চাষবাস করার যোগ্য জমি অনেক এলাকায় পতিত থেকে যাচ্ছে। জমি এখন কেনাবেচার লাভজনক পণ্যে পরিণত হয়েছে।
কিন্তু খাদ্যশস্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় তরিতরকারি উৎপাদনে আগ্রহী মানুষের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে আমাদের কাঁচাবাজারে। সুতরাং সরকারকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে খাদ্যশস্য, তরিতরকারি, কাঁচামাল উৎপাদনের বাস্তব চিত্রটি আগে জরিপ করে দেখতে হবে। এরপর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের সহায়তায় দেশে চাষযোগ্য ভূমির পরিকল্পনা এবং কার্যকর ফসল উৎপাদনের ব্যবস্থা চালু করতে হবে। জমির অপব্যবহার, বেচাকেনা, পণ্য হিসেবে ব্যবহার করার প্রবণতা রোধ করতে হবে। স্থানীয় সরকার এবং উপজেলা প্রশাসনকে দুর্নীতিমুক্তভাবে কৃষিজ জমির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে বহুমুখী সমবায় সমিতি বা ব্যবস্থা চালুর মাধ্যমে কৃষি ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করার কোনো বিকল্প নেই।
ভারতে কয়েক যুগ ধরে বাজারব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একটি বিশেষ কমিশন কার্যকর ভূমিকা পালন করে আসছে। সে কারণে কোনো পণ্যের দামই যথেচ্ছভাবে সেখানে ওঠানামা করতে পারে না। আমাদের দেশে ২০১২ সালে কমপিটিশন কমিশন গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু এর কোনো কার্যকারিতা দেখা যাচ্ছে না। সরকারের এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী উৎপাদনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এর সঙ্গে যেসব সমস্যা প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করছে, সেগুলো দূর করতে হবে। কৃষিজ পণ্য উৎপাদনে কৃষকদের স্বার্থ সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় আইন এবং প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো পণ্য উৎপাদিত অঞ্চল থেকে কোথায়
কোথায় সরবরাহ করা যাবে দেশব্যাপী, এর একটি নেটওয়ার্কও কার্যকর করার উদ্যোগ নিতে হবে।
মধ্যস্বত্বভোগীর অবস্থান তুলে দিয়ে বাজার পর্যন্ত সমিতির মাধ্যমে সরবরাহের ব্যবস্থা করা আবশ্যক হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে যেসব পণ্য বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়, সেগুলোর ব্যাপারেও তথ্যভিত্তিক আমদানি সচল রাখতে হবে। একচেটিয়া কারবারি ও করপোরেট হাউসগুলোর আধিপত্য বিস্তার, বাজার মেনুপুলেট করার সব কারসাজি বন্ধ করতে হবে। এরপরই কেবল বাজার ব্যবস্থাপনা তৈরি হতে পারে। দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়া বাজার থেকে সরানোর বিকল্প কেবলই চাহিদা মোতাবেক পণ্যসামগ্রীর সরবরাহ ও মূল্যব্যবস্থা নিশ্চিত করার ওপর নির্ভর করবে।
লেখক: অধ্যাপক, ইতিহাসবিদ ও কলামিস্ট

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

এই মুহূর্তে সাধারণ মানুষের আলোচনা-সমালোচনার প্রধান বিষয় হচ্ছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। তবে এর শুরুটা বছর দুই আগে থেকেই লক্ষ করা গেছে। বাজারে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কিছু বাস্তব কারণ তখন ছিল। প্রথমত, করোনার অতিমারিতে বিশ্ব অর্থনীতি বড় ধরনের ধাক্কায় পড়েছিল। দ্বিতীয়ত, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। তৃতীয়ত, বর্তম
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

এই মুহূর্তে সাধারণ মানুষের আলোচনা-সমালোচনার প্রধান বিষয় হচ্ছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। তবে এর শুরুটা বছর দুই আগে থেকেই লক্ষ করা গেছে। বাজারে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কিছু বাস্তব কারণ তখন ছিল। প্রথমত, করোনার অতিমারিতে বিশ্ব অর্থনীতি বড় ধরনের ধাক্কায় পড়েছিল। দ্বিতীয়ত, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। তৃতীয়ত, বর্তম
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

এই মুহূর্তে সাধারণ মানুষের আলোচনা-সমালোচনার প্রধান বিষয় হচ্ছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। তবে এর শুরুটা বছর দুই আগে থেকেই লক্ষ করা গেছে। বাজারে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কিছু বাস্তব কারণ তখন ছিল। প্রথমত, করোনার অতিমারিতে বিশ্ব অর্থনীতি বড় ধরনের ধাক্কায় পড়েছিল। দ্বিতীয়ত, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। তৃতীয়ত, বর্তম
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

এই মুহূর্তে সাধারণ মানুষের আলোচনা-সমালোচনার প্রধান বিষয় হচ্ছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। তবে এর শুরুটা বছর দুই আগে থেকেই লক্ষ করা গেছে। বাজারে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কিছু বাস্তব কারণ তখন ছিল। প্রথমত, করোনার অতিমারিতে বিশ্ব অর্থনীতি বড় ধরনের ধাক্কায় পড়েছিল। দ্বিতীয়ত, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। তৃতীয়ত, বর্তম
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫