Ajker Patrika

রেলওয়ের বাংলো ভেঙে অফিসার্স ক্লাবের দখল

জমির উদ্দিন, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১৩: ৪৩
রেলওয়ের বাংলো ভেঙে অফিসার্স ক্লাবের দখল

চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়ি এলাকায় রেলওয়ের বাংলো ভেঙে ফেলেছে জেলা প্রশাসন। সেই বাংলোর জায়গায় অফিসার্স ক্লাবের বিভিন্ন স্থাপনাও গড়ে তোলার অভিযোগ উঠেছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা প্রতিবাদ করেও কোনো প্রতিকার পায়নি। তবে প্রশাসন বলছে, এই জায়গা দখলের সঙ্গে তাদের কেউ জড়িত নয়। 

চট্টগ্রাম রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, কাজীর দেউড়ি এলাকায় রেলওয়ের ওই বাংলোর পাশে চট্টগ্রাম অফিসার্স ক্লাবকে ৯ দশমিক ১১ কাঠা জায়গা ১৯৯২ সালে লিজ দেওয়া হয়। গত শনিবার সেখানে গিয়ে দেখা যায়, লাল রঙের বিশাল বাংলোর এক পাশের কিছু অংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে। অফিসার্স ক্লাবের পাশের রেলের প্রায় ১০ কাঠা দখলে নিয়ে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে পাকা রান্নাঘরসহ কিছু স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে। কথা বলে জানা যায়, ওই স্থানে এখন বিয়েসহ সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। 

এই বাংলোর বয়স ৬৫ বছর বলে জানান পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘জায়গাটি জেলা প্রশাসন দখল করেছে। জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতেই আমাদের পুরোনো বাংলো ভাঙা হয়েছে। সেখানে রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যানও উপস্থিত ছিলেন। এ বিষয়ে ৯ সেপ্টেম্বর ও ২ জানুয়ারি জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’ 

তবে চট্টগ্রাম অফিসার্স ক্লাবের সভাপতি ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান এই অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, রেলের জায়গা দখলের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের কেউ জড়িত নন। 

রেল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত অফিসার্স  ক্লাবের সদস্যদের চিত্তবিনোদন এবং টেনিস ও ব্যাডমিন্টন কোর্ট নির্মাণ করতেই গত বছরের ৭ আগস্ট রাতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাকিব হাসান এবং সহকারী কমিশনার (শিক্ষা ও আইসিটি শাখা) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে কিছুসংখ্যক পুলিশ, আনসার ও ক্লাবের কর্মচারীরা বাংলোটির পাশের আউট হাউস ভেঙে ফেলেন। 

ছবি: আজকের পত্রিকাএ বিষয়ে গত ৯ সেপ্টেম্বর রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) জিষাণ দত্ত স্বাক্ষরিত এক চিঠি চট্টগ্রাম অফিসার্স ক্লাবের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক বরাবর দেওয়া হয়। চিঠিতে রেলের জমি জবরদখল বন্ধ করতে অনুরোধ জানানো হয়। সূত্র বলছে, সেই অনুরোধ আমলে না নিয়ে ১ জানুয়ারি রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান ও অফিসার্স ক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ কে এম এহেছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল এবং এডিসি রাকিব হাসান ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে বাংলোটির একটি অংশ ভেঙে প্রায় ১০ কাঠা জমিতে অফিসার্স ক্লাবের সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করা হয়। 

রেলওয়ের এই বাংলোতে ২০১১ সাল থেকে থাকেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সিনিয়র বাজেট অফিসার সুকেন্দ্রনাথ হালদার। তিনি বলেন, ১ জানুয়ারি কাজ করার সময় বাধা দিলে রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান মারধর ও চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন। ম্যাজিস্ট্রেট রাকিব হাসান ও আল মামুন বদলি এবং পেনশন আটকে রাখার হুমকি দেন। 

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এডিসি রাকিব হাসান। তিনি বলেন, ‘পদাধিকারবলে আমি অফিসার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক। জায়গা দখলের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’ 

সুকেন্দ্রনাথ হালদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘১ জানুয়ারি জায়গা দখল করে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের সময় ৯৯৯-এ কল দিই। পুলিশ এসে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে। একপর্যায়ে পুলিশ আমাদের জানায়, এর সঙ্গে জেলা প্রশাসন জড়িত। তাই কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা তাদের নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গ্রেপ্তার হয়ে অবাক ডন, বললেন—‘স্যার আমাকে কীভাবে গ্রেপ্তার করলেন’

সুদানে ‘গণহত্যা’য় আরব আমিরাতের গোপন তৎপরতা ও কলম্বিয়ার ভাড়াটে সেনা

একাত্তরের হত্যাযজ্ঞে সম্পৃক্ততার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন: জামায়াত

অবশেষে নতুন ঠিকানায় ১০০ সাজাপ্রাপ্ত বন্দী

ইসরায়েলকে খুশি করতে সাংবাদিক শিরিন হত্যাকাণ্ডের প্রতিবেদন ‘দুর্বল’ করে বাইডেন প্রশাসন

এলাকার খবর
Loading...