Ajker Patrika

তীরের ৬০ মিটার বিলীন, হুমকিতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ

শরীফুল ইসলাম ইন্না, সিরাজগঞ্জ 
Thumbnail image

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার পাঁচঠাকুরীতে যমুনা নদীর তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত শনিবার রাত থেকে গতকাল রোববার বেলা দুইটা পর্যন্ত যমুনাতীরের ৬০ মিটার এলাকা নদীতে বিলীন হয়েছে। এতে পাঁচটি ঘরবাড়ি ছাড়াও গাছপালা নদীগর্ভে চলে গেছে। ভাঙনের মুখে পড়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। নদী থেকে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের দূরত্ব মাত্র ২০ মিটার।

এলাকাবাসীর দাবি, পাঁচঠাকুরী এলাকায় নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তোলার কারণে এই ভাঙন দেখা দিয়েছে। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, নদীর তলদেশে ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হয়ে মাটি সরে ভাঙন শুরু হয়েছে। বালু উত্তোলন বন্ধে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি ও মানববন্ধন করেও কোনো লাভ হয়নি।

পাঁচঠাকুরী গ্রামের আব্দুল মোতালেব কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘সাতবার নদীভাঙনের মুখে পড়ে আমি নিঃস্ব। সহায়-সম্বল যা কিছু আছিল, সব নদী নিয়া গেছে। শেষবার পাঁচঠাকুরীতে বাঁধের নিচে আশ্রয় নিলাম। এহানেও নদীভাঙন। ১৫-২০ শতক জমির ওপরে আমার বাড়ি আছিল। এক রাইতের ভাঙনে সব শেষ।’

স্থানীয় বেলাল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে নদীভাঙন শুরু হইছে। বালু তোলা বন্ধের জন্য এলাকার মানুষ ডিসি বরাবর স্মারকলিপি দিছি। তারপরও বালু তোলা বন্ধ হয় নাই। ভোররাতে হঠাৎ চিৎকার শুনে আমার ঘুম ভাঙে।

ঘুম থেকে উঠে বাড়ির বাইরে আইসা দেহি নদীতে খুব ভাঙন। মানুষজন ছোটাছুটি করছে। ঘর থেকে মালামাল বাইর করে সরানোর চেষ্টা করছে। এভাবে নদীভাঙন কোনো দিন দেহি নাই।’

ভাঙনকবলিত এলাকার হেলানা বেওয়া বলেন, ‘নদীর তীব্র গর্জনে ঘুম ভাঙে এলাকার মানুষের। এক বছর আগে স্বামী মইরা গেছে। তিন মেয়ে আমার। তিনজনের বিয়া হইছে। স্বামীর বাড়ি থাকে। এখন আমি একাই থাকি। ভাঙন না থামাইলে আমার বাড়িও যে নদীতে চইলা যাবো। নদী থাইকা বালু তোলে। বারবার নিষেধ করা হইছিল। কেউ শোনে না। সবাই কইছিল, বালু তোলার কারণে বাড়িঘর ভাঙব। তাই হইল।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রনজিৎ কুমার সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, যমুনা নদীতে পানি কমতে থাকায় নদীতে তীব্র স্রোতের সৃষ্টি হয়েছে। নদীতীর রক্ষায় বালুর বস্তা ফেলা হয়েছিল। কিন্তু নদীর তলদেশে ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হয়ে মাটি সরে গিয়ে নদীতীর ভাঙনের মুখে পড়েছে। তবে এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। বালুর বস্তা ফেলে ভাঙন ঠেকানোর কাজ করা হচ্ছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত