Ajker Patrika

যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা: অফার লেটার পাওয়ার পর

হাবিবুর রহমান রাব্বি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২২, ১৬: ০১
যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা: অফার লেটার পাওয়ার পর

অফার লেটার আসার পর আপনাকে i20 নামের একটা পেপার ইউনিভার্সিটি থেকে ইস্যু করতে হবে। এ পেপারটি নিয়ে আপনি দূতাবাসে যাবেন। i20 হচ্ছে আপনার ফাইনাল অফার লেটার। i20 ইস্যু করার সময় কিছু ইউনিভার্সিটি কোনো পেমেন্ট নেয় না, আবার কিছু কিছু ইউনিভার্সিটি টিউশন ফি থেকে দুই বা তিন হাজার ডলার অগ্রিম ডিপোজিট চাইতে পারে। অল্প কিছু ইউনিভার্সিটি আছে যারা i20-এর জন্য আলাদা করে অফেরতযোগ্য পেমেন্ট নেয় (৫০ থেকে ১০০ ডলারের মধ্যে)। এটা নেওয়ার কারণ, শিক্ষার্থী যেন তাদের কাছে আবদ্ধ থাকে। পরে ওই শিক্ষার্থী ভর্তি না হলে ওদের অনেক কাজ বাড়তি করতে হয় বা বৃথা যায়। তাই অনেক ইউনিভার্সিটি সিকিউরিটি ডিপোজিট নিয়ে থাকে। i20 পাওয়ার পর DS 160 পূরণ করতে হবে। গুগলে গিয়ে ds 160 লিখে সার্চ দিলে শুরুতে যেই ওয়েবসাইট আসবে, সেটাতে গিয়ে ‘Start an application’ থেকে পূরণ করতে হবে। নিজের সব তথ্য সঠিকভাবে দিতে হবে। একেবারে শেষে যা যা ডাউনলোড বা প্রিন্ট করতে হবে। DS 160-এর জন্য ছবিও তুলতে হবে দূতাবাসের পলিসি অনুযায়ী। DS 160 পূরণের বিষয়ে বিস্তারিত হয়তো ইউটিউবে পেয়ে যাবেন। ইউটিউবে DS 160 নিয়ে হালকা ঘাঁটাঘাঁটি করলে বুঝে যাবেন আশা করি। 

অ্যাকাউন্ট খুলবেন যেভাবে
এবার আমেরিকান অ্যাম্বাসি ঢাকার ওয়েবসাইটে একটা অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। অ্যাকাউন্ট খোলার পর প্রোফাইল সম্পন্ন করে এবং পেমেন্ট স্লিপ ডাউনলোড করে ইস্টার্ন ব্যাংকে গিয়ে টাকা জমা দিয়ে আসতে হবে (১৬০ ইউএস ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি টাকা)। ২৪ ঘণ্টা পর ইন্টারভিউ অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়ার জন্য অ্যাকাউন্ট অ্যাকটিভ হবে, তখন দূতাবাসের ওয়েবসাইটের নির্দিষ্ট ট্যাবে প্রদর্শিত ক্যালেন্ডার ও তারিখ থেকে নিজের পছন্দের তারিখ ইন্টারভিউয়ের জন্য নির্বাচন করতে হবে। উল্লেখ্য, ওই নির্দিষ্ট ট্যাবে ক্যালেন্ডার প্রদর্শিত না হওয়া মানে ইন্টারভিউ দেওয়ার জন্য কোনো শিডিউল খালি নেই। তখন আপনাকে দিনে চার-পাঁচ ঘণ্টার ব্যবধানে চেক করতে হবে ক্যালেন্ডার প্রদর্শিত হচ্ছে কি না। অল্প সময়ের মধ্যে অনেকবার চেক করলে আপনার অ্যাকাউন্ট ১২-৭২ ঘণ্টা অথবা এর বেশি সময়ের জন্য ব্লক করে দিতে পারে।

ইন্টারভিউ ও ভিসা
ইন্টারভিউ অ্যাপয়েন্টমেন্ট কনফার্ম করে ফেললে ওই তারিখে ঢাকায় অবস্থিত আমেরিকান অ্যাম্বাসিতে আপনাকে ইন্টারভিউ দিতে যেতে হবে। সেদিনই আপনাকে বলে দেবে, ভিসা দেবে কি দেবে না। ভিসা ইন্টারভিউয়ের জন্য একটু ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। কারণ এটাই ফাইনাল স্টেপ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কী কী প্রশ্ন করে ইউএস অ্যাম্ব্যাসিতে, সেগুলোর উত্তর কী দিলে ভালো হয়, এগুলো নিয়ে একটু রিসার্চ করবেন ইউটিউব বা গুগলে অথবা পরিচিত কেউ ইন্টারভিউ ফেইস করে থাকলে বা আপনার আগে 
যাঁরা ইন্টারভিউ দেবেন, তাঁদের থেকে জানবেন। 

ইন্টারভিউয়ের ফি
ইন্টারভিউয়ের ন্যূনতম সাত দিন আগে (দুই-তিন দিন আগে দিলেও হয়, তবে সাত দিন আগে জমা করে দেওয়া নিরাপদ) ৩৫০ ডলারের আরেকটি ফি দিতে হয়, যেটাকে SEVIS FEE বলে। এই টাকাটা ডুয়েল কারেন্সি কার্ডের মাধ্যমে দিতে হবে অথবা দেশের বাইরে কোনো আত্মীয় থাকলে তাঁদের মাধ্যমে দিতে পারবেন। যদি দেশ থেকে দিতে চান, তবে ইবিএল বা ইসলামী ব্যাংকের ডুয়েল কারেন্সি কার্ড থেকে দিতে পারবেন। এ জন্য প্রথমে আপনার পাসপোর্টে ডলার ইনডোর্স করতে হবে। ডলার ইনডোর্স করার পর ৩৫০ ডলার পে করার জন্য ব্যাংক থেকে পারমিশন নিতে হবে, কারণ বাংলাদেশের সিস্টেম অনুযায়ী সিঙ্গেল ট্রান্সজেকশনে ৩০০ ডলারের বেশি ট্রান্সফার করা যায় না দেশের বাইরে। পারমিশন নেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পেমেন্ট করে ফেলতে হবে, না হলে পারমিশন ক্যানসেল হয়ে যাবে।

ইন্টারভিউয়ে যেসব কাগজপত্র নেবেন
ইন্টারভিউয়ের দিন সব ডকুমেন্ট সঙ্গে নিয়ে যাবেন, যা যা শুরু থেকে ব্যবহার হয়েছে। যেমন সব একাডেমিক ডকুমেন্ট, পাসপোর্ট ELTS/Duolingo/MOI Certificate, bank statement, i20,160 dollar embassy fee payment slip, 350 dollar SEVIS fee payment slip, DS 160 Confirmation Page, Appointment page, passport size pictures-সহ আপনার ভিসা পেতে সাহায্য করবে এমন কোনো সাপোর্টিভ ডকুমেন্ট থাকলে সঙ্গে নিয়ে নেবেন। ইন্টারভিউয়ের শেষে জানিয়ে দেবে আপনাকে ভিসা দেবে কি দেবে না। ভিসা দিলে আপনাকে একটা নীল লিফলেট দেবে, যেখানে ভিসা হওয়ায় অভিনন্দন বার্তা থাকবে, আর রিজেক্ট করলে একটা সাদা কাগজের লিফলেট দেবে, যেখানে ভিসা রিজেক্ট হওয়ার কারণ লেখা থাকবে।

টিকিট কাটুন পোর্টালে
ভিসা হয়ে গেলে এরপর টিকিট কেটে ফ্লাই করবেন। টিকিট করার ক্ষেত্রে স্টুডেন্ট প্রোমো কোড/অ্যাকাউন্ট ইউজ করে কিছু ডিসকাউন্টও নিয়ে নিতে পারবেন। টিকিটের সময় তাই কোনো এজেন্সিতে না গিয়ে সরাসরি এয়ারলাইনসের পোর্টাল থেকে টিকিট করা যায়। কাতার এয়ারওয়েজ, ফ্লাই এমিরেটস অথবা টার্কিশ এয়ারলাইনস থেকে টিকিট কাটতে পারবেন ওদের পোর্টালের মাধ্যমে। কাতার এয়ারওয়েজ, ফ্লাই এমিরেটসের টিকিটের টাকা ওদের অফিসে গিয়ে জমা দিয়ে আসা যায় সরাসরি।

অনুলিখন: জুবায়ের আহম্মেদ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঢাবিতে ‘তুর্কি এনজিও সমর্থিত’ সংগঠনের ‘বৃহত্তর বাংলাদেশ’ মানচিত্রে ভারতের অংশ, বললেন জয়শঙ্কর

কালো জাদুর অভিযোগে মবের তাণ্ডব, এক পরিবারে পাঁচজনকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা

খিলগাঁওয়ে পুরি-শিঙাড়া বিক্রেতাকে পিটিয়ে হত্যা

নারী আসন নিয়ে সিদ্ধান্ত হচ্ছে নারীদের ছাড়াই

সাপের বিষে তৈরি যে মদ পাওয়া যায় এশিয়ার বিভিন্ন দেশে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত