Ajker Patrika

সড়ক সংস্কারকাজে অনিয়ম

চারঘাট প্রতিনিধি
আপডেট : ১৫ জানুয়ারি ২০২২, ১১: ১৯
সড়ক সংস্কারকাজে অনিয়ম

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার অনুপামপুর থেকে বাঘা উপজেলার আড়ানী পর্যন্ত প্রায় ১১ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারকাজে নিম্নমানের ইট, খোয়া ও বালু ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এতে স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এ অনিয়মের অভিযোগ জানিয়েও তাঁরা কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না।

উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চারঘাট থেকে আড়ানী পর্যন্ত প্রায় ১১ কিলোমিটার রাস্তার নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। কাজ শুরু সময় ছিল ২০২০ সালের ২৮ জানুয়ারি। শেষ করার কথা ছিল ২০২১ সালের ৯ আগস্টের মধ্যে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের পরও কাজ করা হয় মাত্র ৩০ শতাংশ। পরবর্তী সময়ে রাস্তার কাজে কিছু পরিবর্তন এনে ইটের খোয়ার পরিমাণ বাড়িয়ে বরাদ্দ আরও প্রায় ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা বাড়ানো হয়। অথচ বরাদ্দ বাড়লেও কাজে নিম্ন মানের ইট ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। কাজটি করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কামাল অ্যাসোসিয়েট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড।

এর আগে প্রায় এক বছর বক্স কেটে ফেলে রাখার পর সম্প্রতি বরাদ্দ বাড়িয়ে রাস্তাটির কাজ শুরু হয়। কিন্তু নিম্নমানের মিঠা আধলা (অর্ধেক) আকারের রাবিশযুক্ত ইটের খোয়া ও মাটিযুক্ত বালু দিয়ে কাজ করার অভিযোগ উঠেছে।

গত বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার ফরিদপুর মোড় এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, নির্দিষ্ট পরিমাপের খোয়া দিয়ে রাস্তা নির্মাণের কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। রাস্তাজুড়ে রাবিশযুক্ত নিম্ন মানের ইটের খোয়া ফেলে রাখা হয়েছে। এ সব নিম্নমানের খোয়া শ্রমিকেরা রাস্তায় ছড়িয়ে দিচ্ছেন। তাৎক্ষণিক খোয়ায় পানি ছিটিয়ে রোলার দিয়ে রাস্তায় পিষে দেওয়া হচ্ছে।

এ ব্যাপারে অনুপামপুর গ্রামের আরিফ হোসেন বলেন, সড়কে দায়সারা গোছের রাস্তার কাজ করলেও অজ্ঞাত কারণে দায়িত্বপ্রাপ্তরা দেখেও না দেখার ভান করছেন। নিম্নমানের গুঁড়া ইটের খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে। বরাদ্দ বাড়লেও রাস্তার কাজের মান বাড়েনি। এটি দুঃখজনক।

স্থানীয় মুংলি গ্রামের বাসিন্দা ওবাইদুর রহমান বলেন, ‘কাজের শুরু থেকে আমাদের ভোগান্তি। দীর্ঘদিন রাস্তা খুঁড়ে ফেলে রাখা হয়েছিল। এখন নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রতিবাদ করলে উল্টো ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে।’

এদিকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকরুল ইসলাম বলেন, ‘ওই সড়কে আমি নিজেও চলাচল করেছি। তা ছাড়া স্থানীয় বাসিন্দারা রাস্তার অনিয়মের বিষয়ে প্রতিনিয়ত অভিযোগ নিয়ে আসছেন। উপজেলা সমন্বয় সভাতেও বিষয়টা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তারপরও অনিয়মের অভিযোগ আসা বন্ধ হয়নি।’

ঠিকাদার আব্দুর রশিদ বলেন, ‘আমি বিটুইন সংগ্রহে চিটাগং ছিলাম। সে সময় ইটভাটা মালিক ভালো ইটের সাথে কিছু নিম্নমানের ইট পাঠিয়েছিল। তবে সেগুলো ফেরত পাঠানো হয়েছে। দরপত্র অনুযায়ী রাস্তার কাজ করা হচ্ছে। কাজে কোনো অনিয়ম হচ্ছে না।’

উপজেলা প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম বলেন, এডিবির সহযোগিতায় সড়কটি নির্মাণ করা হচ্ছে। উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ ছাড়াও ঊর্ধ্বতন পর্যায় থেকে সড়কটির কাজ নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে। কোনো অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত