Ajker Patrika

ভ্যান ছিনতাই করে বিক্রি, সোপর্দের পর মাদকের মামলা

নাটোর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ জুলাই ২০২২, ১৫: ৩৮
ভ্যান ছিনতাই করে বিক্রি, সোপর্দের পর মাদকের মামলা

নাটোরে ছিনতাইয়ের ঘটনায় অভিযুক্ত দুই ব্যক্তিকে মাদকের মামলা দিয়ে আদালতে হাজির করার অভিযোগ উঠেছে গুরুদাসপুর থানা-পুলিশের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় পুলিশের তিন উপপরিদর্শককে (এসআই) সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন নাটোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সাঈদ।

ওই তিন পুলিশ কর্মকর্তা হলেন গুরুদাসপুর থানার উপপরিদর্শক মো. মাহবুবুর রহমান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মো. জাহিদ হোসেন এবং অপর উপপরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (দায়িত্বপ্রাপ্ত) মো. আখতারুজ্জামান। আগামী ২৮ জুলাই তাঁদের আদালতে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দেওয়ার আদেশ দেন বিচারক।

আদালত সূত্র জানা গেছে, গত শুক্রবার গুরুদাসপুর থানার মধ্যপাড়া এলাকায় মো. স্বপন ও মো. প্রামাণিক নামের দুজন ভ্যান ছিনতাইকারীকে আটক করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ সময় তাঁদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়। স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ওই দুজনকে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। এরপর গত শনিবার তাঁদের বিরুদ্ধে মাদক মামলা দিয়ে নাটোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় ম্যাজিস্ট্রেট আসামিদের কাছে গ্রেপ্তারের কারণ জানতে চান। তাঁরা দুজনে বলেন, তাঁরা ভ্যান ছিনতাই করেছিলেন। কিন্তু, পুলিশ তাঁদের মাদক মামলায় আদালতে হাজির করেছে। এরপর ম্যাজিস্ট্রেট গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. সুজাউদ্দিনের দেওয়া চিকিৎসাপত্র দেখেন। এতে চিকিৎসক উল্লেখ করেন, ভ্যান চুরির ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ২৪ ঘণ্টা আগে শারীরিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হন।

আসামিদের বক্তব্য শুনে ও চিকিৎসাপত্রের মতামত বিশ্লেষণ করে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জানান, আসামিরা ভ্যান চুরি বা ছিনতাইয়ের ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন, তা বিশ্বাস করার যুক্তিসংগত কারণ আছে।

আদালতের স্যানোগ্রাফার মো. শহীদুজ্জামান বলেন, ‘গত শুক্রবার স্থানীয় কাউন্সিলর মোখলেস আসামি দুজনকে ভ্যান কেড়ে নিয়ে বিক্রি করার অভিযোগে এস আই মাহবুবুর রহমানের হাতে সোপর্দ করেন। পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। পরে তাঁদের কাছ থেকে ১০ গ্রাম করে মোট ২০ গ্রাম গাঁজা জব্দ করা হয়েছে উল্লেখ করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের অধীনে মামলা রেকর্ড করে আদালতে পাঠানো হয়।’

এ সময় বিচারক জানতে চান, ‘যদি ঘটনাটি ভ্যান চুরি বা ছিনতাইয়ের হয়ে থাকে তাহলে আসামিদের বিরুদ্ধে চুরি বা ছিনতাইয়ের এজাহার না করে মাদক আইনে কেন মামলা করা হলো? আসামিদের বক্তব্য যদি সঠিক হয়ে থাকে, তবে তাঁদের কাছ থেকে জব্দ করা ভ্যান ও সেটি বিক্রির টাকা কেন জব্দ তালিকায় নেই?’

এ বিষয়ে এস আই মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, কাউন্সিলর মোখলেছসহ স্থানীয় বাসিন্দারা আসামিদের আটক করে পুলিশে খবর দেন। পরে তাঁদের কাছ থেকে গাঁজা উদ্ধার করা হয়। সেভাবে জব্দ তালিকা করে আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়।

মামলার সাক্ষী ও গুরুদাসপুর পৌরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মোখলেছ বলেন, একজন ভ্যান চালককে মেরে তাঁর ভ্যান ছিনতাই করে বিক্রি করেছিলেন স্বপন ও প্রামাণিক। পরে ওই দুজনকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। তাঁদের কারও কাছে মাদক পাওয়া যায়নি। তাঁরা ভ্যান চুরির সঙ্গে জড়িত।

গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল মতিন জানান, খোঁজ নিয়ে তিনি জেনেছেন যে আসামিদের গাঁজাসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

ভারতের সঙ্গে সংঘাতে পাকিস্তানের ভাগ্যনিয়ন্তা সেনাপ্রধান জেনারেল মুনির

প্রবাসীর রেমিট্যান্সের অর্থ আত্মসাৎ, নারী ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

পাকিস্তানে কীভাবে হামলা চালাতে পারে ভারত, ইতিহাস যা বলছে

আইসিএক্স বাদ দিলে ঝুঁকিতে পড়বে দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব, বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত