শিহাব আহমেদ

কোক স্টুডিওতে আপনার গাওয়া গানটি দর্শক অনেক পছন্দ করেছেন। কেমন লাগছে?
অনেক ভালো লাগতাছে। সকলে অনেক প্রশংসা করতাছে। এর আগে আমি টেলিভিশনে অনেক গাইছি। কিন্তু এভাবে সকলের স্বীকৃতি, এটা আগে কখনো হয় নাই। জনপ্রিয় ও বিশাল একটা মাধ্যমে আমাকে ডাকবে, এটা আমার কল্পনাতেও ছিল না। মালিকের দয়া হইছে, তাঁর দয়ার মাধ্যমেই ইমন চৌধুরী আমাকে ডাকছে।
ইমন চৌধুরীর সঙ্গে আপনার পরিচয় কীভাবে?
ইমন চৌধুরীর বাবা অনেক বড় ওস্তাদ। তাদের বাড়ি নরসিংদীতে। সেখানে পালাগান খুব জনপ্রিয়। ৩৫ বছর আগে যখন আমি পালাগান, বিচ্ছেদের ক্যাসেট বের করি, তখন থেকে ইমনের বাবা আমাকে পালাগান শিল্পী হিসেবে চেনেন। সেখান থেকেই ইমন আমার সম্পর্কে জানে। যখন ‘গুণিন’ সিনেমার গানটির জন্য বাউলশিল্পী খুঁজছিলেন সেলিম সাহেব ও তাঁর দল, তখন ইমন চৌধুরী তাঁদের জানায়, গানটি আলেয়া বেগমের কণ্ঠে ভালো হবে। সে সময়ে তাঁদের সঙ্গে আমার মেয়ে ছিল। সে বলল, আলেয়া বেগম আমার আম্মু। সেখান থেকেই ইমন চৌধুরীর সঙ্গে পরিচয়। তার মাধ্যমে গুণিন সিনেমায়ও গাওয়ার সুযোগ হইছিল। এবার কোক স্টুডিওতে গাইলাম।
‘কথা কইয়ো না’ গানটি করার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
কোক স্টুডিওর জন্য এ রকম একটা গান হবে, সেটা আমাকে বলা হয়নি। একেবারেই অপ্রস্তুত ছিলাম। নভেম্বর মাসের দিকে গানটি যখন রেকর্ড করি, তখন আমার সিজন চলছে। প্রতিদিন নানা জায়গায় স্টেজে স্টেজে সারা রাত প্রোগ্রাম করি। একদিন ইমন চৌধুরী ডাকল। আমি বললাম, বাবা, রেকর্ডিংয়ের জন্য অপ্রস্তুত। আমার কণ্ঠ তো একেবারে বসা, শরীরও ভালো না। সে বলল, সমস্যা নাই আন্টি। আপনি একটু আসেন। সে আমাকে সুরটি শুনাল। বললাম, বাবা, অনেক উঁচা সুর। এই মুহূর্তে এটা আমি পারমু না। পারবেন না ঠিক আছে, একবার একটু চেষ্টা করেন, বলল ইমন। যখন সুরটি দিলাম, তখন ইমন চৌধুরী বলল, আন্টি, আমার এই কণ্ঠটাই দরকার ছিল। বুঝলাম না কেন সে এমন কথা বলল। তাঁকে বললাম, এই কণ্ঠ দিয়া যদি গান বাইর করো, তাহলে যারা বায়না করছে, তারা সবাই ফিরায় নিয়া যাইব।
সে কয়, জানেন আন্টি, এই কণ্ঠটাই গানের জন্য পারফেক্ট। আমার কাছে কেমন জানি অবান্তর অবান্তর লাগল। কী করবে, এই কণ্ঠের গান দিয়া কী হবে! এখন কিন্তু সে রকম করে গাইতে পারব না। আমার কণ্ঠে কিন্তু ওইটা আসবে না। তখন যে ভিতর থেকে, অন্তর চেরা অনেক দুঃখের পরে একটা কান্না বা শেষ চিৎকারটা আসে, আমার মধ্য থেকে সে চিৎকারটা আসছিল। আমার মনে হয় মালিকের তরফ থেকে এই কণ্ঠটা ওই সময় বানানো হইছে।
আপনার কাছে কোক স্টুডিওর কোন দিকটা ভালো লেগেছে?
কোক স্টুডিও সুন্দর একেকটা সন্তান প্রসব করে। অনেক লালন-পালন করে এমন একটি ডেলিভারি দেয়, যেটায় সকলে মুগ্ধ হয়। তারা কোনো খুঁত রাখে না। আমার গাওয়ার মধ্যে একটা শব্দ আমার মতো করে করছিলাম। কথাটা হবে আইসে, সেটা গাওয়ার সময় হয়ে গেছে আইসা। এই একটা শব্দের জন্য ইমন চৌধুরী আমাকে বলল, আন্টি, আবার আসতে হবে। আমি বললাম, অবশ্যই। যারা একটি গানের জন্য এত কষ্ট করছে, তাদের জন্য আমি আবার গাইতে পারব। পরবর্তী সময়ে এই শব্দটার জন্য ওই পার্টটুকু আমাকে আবার গাইতে হয়েছিল। এই ব্যাপারটা আমার কাছে ভালো লেগেছে।
এ গানে আপনার সঙ্গে আপনার মেয়ে ইন্নিমা রোশনিও ছিল…
আমার মেয়ে পড়ালেখার পাশাপাশি সংগীতজগতেই আছে। সে আগে থেকেই ইমন চৌধুরীর স্টুডিওতে বেহালা বাজায়, গিটার বাজায়। এ ছাড়া আরও অনেক ব্যানারে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের সঙ্গে জড়িত। সিনেমার ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকেও কাজ করেছে। এবারই প্রথম আমার সঙ্গে বাজাল। সে আমার সঙ্গে একই মঞ্চে বাজাবে, এটা কোনো দিন ভাবিনি। সেও অনেক খুশি।
আপনি যাঁদের সঙ্গে গান করেন, তাঁরা কী বলছে?
যারা আমাকে ৫০ বছর ধরে চিনে, তাদের কাছে অবাক হওয়ার মতো কিছু নয়। সবাই বলছে, আপনার জন্যই এই গানটা, গানের সঙ্গে মিলে একাকার হয়ে গেছেন। তবে অনেকে বলেছে, কোক স্টুডিওর মতো জায়গায়, যেটা কি না সারা বিশ্বের কাছে আয়নার মতো, সেখানে গাওয়া কীভাবে সম্ভব হইছে! আসলে মালিকের তরফ থেকে সবই হয়ে যায়। মালিক সবার জীবনে এ রকম সুযোগ দেয়। সেটাকে কাজে লাগাতে হয় আর সম্মানের সহিত ধরে রাখতে হয়।
গুণিন সিনেমায় গেয়েছেন। আবারও কি আপনাকে সিনেমার গানে পাওয়া যাবে?
যদি ওই ধরনের গান হয়, যাতে আমার কণ্ঠ মানায়। মার্জিত হয়। যদি কোনো অশ্লীলতা না থাকে, তাহলে আবারও সিনেমায় গাইব।
দীর্ঘদিন ধরে বাউল গানের সঙ্গে জড়িত আপনি। শুরুটা কীভাবে হয়েছিল?
আমি সংগীত পরিবারের মানুষ। মাদারীপুরের সন্ন্যাসীচর গ্রামে আমাগো বাড়ির উঠানে গানের আসর বসত। আমার দাদা মারফতের মানুষ ছিল। তখন বাড়ির মইধ্যে পালাগান, জারিগান, সারিগান শুনতাম। আমার বাবা হইল আধ্যাত্মিক জগতের মানুষ। তাঁর কাছ থেকেই গানের হাতেখড়ি। আর প্রথম গান করেছি মিরপুর মাজারে। যুদ্ধের পর যখন ঢাকায় থাকা শুরু করি, তখন একদিন ছোট বোনরে নিয়া মাজারের কাছ দিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন দেখি এক অন্ধ মহিলা গান গাইতাছেন। আসর পাইতা সবাই তাঁর গান শুনতাছে। গান শ্যাষ হওয়ার পর কইলাম, আমি একটা গান গাব। তখন সবাই কইল, এত ছোট মানুষ কী গান গাইবা। একজন আমার বোনটাকে কোলে নিল। আমি গাইলাম। গান শুইনা অনেকেই ১০ পয়সা, চার আনা, আট আনা করে উপহার দিল। বোনরে চকলেট কিন্না দিল। সেই থেকে শুরু।
আপনাকে অনেকেই বাউলমাতা বলেন। এই বিষয়টি আপনার কাছে কেমন লাগে?
৫০ বছরের মতো সময় ধরে গান করছি। যারা আমার গান ভালোবাসে, তারা এই উপাধি দিয়েছে। তাদের ভালোবাসাই তো শক্তি। অনেক সময় নিজের কাছে লজ্জা লাগে। তবে কেউ আমাকে বাউলমাতা বলবে, এটা কখনোই চাইনি। আমার চাইতে আরও ভালো প্রবীণ শিল্পী রয়েছেন। অনেকে আবার বাউল গান নিয়ে গবেষণাও করেছেন।
দীর্ঘ এ পথচলায় কোনো বাধার সম্মুখীন হয়েছেন?
বাধার সম্মুখীন হয়েছি। তবে বেশি না, অল্পস্বল্প। কিছু মানুষ আছে, যারা গানটাকে ভালোবাসে না। দেখা যায় গান করতে গেলাম, সেখানে তারা বাধা দিল। তখন আলোচনা করে সমাধান করি সবাই মিলে। তবে গান একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে, এ রকম হয়নি। আসলে আমরা বাউলশিল্পীরা কখনোই ঝগড়া-বিবাদ করতে পৃথিবীতে আসি নাই। আমরা আসছি প্রেম, মানবতা বিতরণ করতে। মানুষের সঙ্গে বন্ধন সৃষ্টি করতে। যারা বাউল গানের আয়োজন করে আর যারা শোনে, তারা কিন্তু সন্ত্রাসী মনমানসিকতার নয়। একদম মাটির মানুষ। বাউল গান যেমন সহজ-সরল, আত্মার কথা বলে, মানবতার কথা বলে, তারাও ঠিক তেমন।
বিচ্ছেদ, পালাগানসহ বিভিন্ন ধরনের গান গেয়েছেন। কোন ধরনের গান গেয়ে বেশি তৃপ্তি পান?
আধ্যাত্মিক গান করে আত্মার শান্তি লাগে। তারপর আবেদন-নিবেদন। এটার মানে হলো, আমি তোমার কাছে নিজেকে অর্পণ করে দিতে চাই, তোমার মাঝে নিঃস্ব হতে চাই। তোমার মাঝেই ছিলাম, তোমার মাঝেই যেতে চাই। এখানে দুনিয়ার মোহে কিছু দোষ আমার অন্তরে প্রবেশ করে অন্তর্যামীকে তাড়িয়ে দিয়েছি। সে তো থাকতেই চেয়েছিল কিন্তু আমি তাকে উপযুক্ত অন্তর দিতে পারি নাই। অন্তরের মধ্যে দুনিয়াদারির কামনা-বাসনা, লোভ-লালসা, অহংকার বসিয়ে রেখেছি। এগুলোর কারণে অন্তর্যামী আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। এখন আমি মালিকশূন্য হয়ে গেছি। এই কথাগুলো নিয়ে ভাবরেখা রেখে যখন আমি স্টেজে আত্মনিবেদন করি, তখন নিজের মধ্যে শান্তি লাগে।
গানও লিখেছেন আপনি। আপনার লেখা গানের সংখ্যা কত হবে?
আমার লেখা গানের সংখ্যা এক হাজারের বেশি হবে। এর মধ্যে বিচ্ছেদের গানের সংখ্যা বেশি।
প্রযুক্তির উন্নতির কারণে গান প্রকাশের মাধ্যমেও পরিবর্তন এসেছে। আমাদের দেশের বাউলেরা এ প্রযুক্তির সঙ্গে কতটা মানিয়ে নিতে পেরেছেন?
আসলে একের পর উন্নতি হইতাছে। সব মানুষের নাগালে চলে আইতাছে। মোবাইল টিপলেই একটা গান চলে আসে। এটারে মেনে নিতে হবে। আমরা সহজ মানুষ, তাই একটু কষ্ট হচ্ছে। তবে প্রযুক্তির কারণে অনেক কিছু সহজ হয়েছে। অনেকে ইউটিউবে আমাদের গান দেখে যোগাযোগ করছেন গান করার জন্য। আগে এ ব্যাপারটা অনেক কঠিন ছিল। অনেক সময় আমরা নিজেরা মাইলের পর মাইল পাড়ি দিয়ে গান কমিটির সঙ্গে আলাপ করতে যেতাম। এ ছাড়া আগে একটা গান লাইভ রেকর্ড হতো। ভুল হলে সেটাই রেকর্ড করে চালিয়ে দিত। এখন একটা গান ভুল হলে আবার গাওয়ার সুযোগ আছে।
বাউলশিল্পীদের কি সঠিক মূল্যায়ন করা হচ্ছে?
আমরা যখন আসরে থাকি, তখন আমাদেরকে সবাই ভালোবাসে। যখন আসর থেকে নেমে যাই, তখন সমাজের বড় একটা অংশের কাছে আমরা ভালো মানুষ না। গান গাওয়া কোনো কাজ হইল নাকি? এটাই তাদের মনোভাব। সমাজের বেশির ভাগ মানুষ আমাদের ভালো চোখে দেখে না। এই মনোভাবটা পাল্টানো দরকার। সরকারিভাবেও বাউলশিল্পীদের দিকে একটু দৃষ্টি দেওয়া দরকার। শিল্পীরা সরকারিভাবে অনেক অবহেলিত।
১৯৮৯ সাল থেকে বিটিভি ও রেডিওতে নিয়মিত গান করি। সেখানেও পারিশ্রমিক সঠিক সময়ে দেওয়া হয় না। আমি তো গান করেই রুটি-রুজির ব্যবস্থা করি। আমারও তো অভাব আছে। সবাই তো শখের বসে গান করে না। পেটের জন্যও অনেকে গান করে। দেখা গেল নিজের টাকা খরচ করে দল নিয়ে গান করলাম, অথচ আমার পারিশ্রমিক সঠিক সময়ে এল না। কবে যে পারিশ্রমিক পাব, এটা কিন্তু আমার জানা নাই। অনেক সময় দেখা যায় গান গাওয়ার ছয় মাস পর আমরা চেক পাই।
নতুন প্রজন্মের যাঁরা বাউল গানের সঙ্গে জড়িত আছেন, তাঁদের মধ্যে সাধনার ব্যাপারটি কতটা লক্ষ করেন?
এখনকার সময়ে যাঁরা বাউল গান করেন, তাঁদের মধ্যে সাধনার বিষয়টি খুব কম। নতুন যাঁরা গান করেন, তাঁদের মধ্যে বাণিজ্যিক মনমানসিকতা বেশি। কয়েকটা গান করেই শুরু করে দিলাম টাকা কামানোর ধান্ধা। এটার মধ্যে কোনো জীবন নাই। এমন চিন্তার মানুষের মধ্যে সংগীত বেঁচে থাকবে না।
তাঁদের উদ্দেশে কিছু বলতে চান?
যাঁরা গানের সঙ্গে নিজেকে জড়াতে চান, তাঁরা যেন নিয়মিত গানের চর্চাটা করেন। বাউল গানের ওপর অনেক বই আছে। সেগুলো পড়তে হবে। বই পড়লে জ্ঞান চর্চা হয় এবং নিজের পথচলা সহজ হয়। বাণিজ্যিক উদ্দেশে নয়, পরমকে সন্তুষ্ট করার জন্য যেন গানটা করা হয়। তাহলে এমনিতেই নিজের ওপর দয়া এবং রহমত চলে আসবে।

কোক স্টুডিওতে আপনার গাওয়া গানটি দর্শক অনেক পছন্দ করেছেন। কেমন লাগছে?
অনেক ভালো লাগতাছে। সকলে অনেক প্রশংসা করতাছে। এর আগে আমি টেলিভিশনে অনেক গাইছি। কিন্তু এভাবে সকলের স্বীকৃতি, এটা আগে কখনো হয় নাই। জনপ্রিয় ও বিশাল একটা মাধ্যমে আমাকে ডাকবে, এটা আমার কল্পনাতেও ছিল না। মালিকের দয়া হইছে, তাঁর দয়ার মাধ্যমেই ইমন চৌধুরী আমাকে ডাকছে।
ইমন চৌধুরীর সঙ্গে আপনার পরিচয় কীভাবে?
ইমন চৌধুরীর বাবা অনেক বড় ওস্তাদ। তাদের বাড়ি নরসিংদীতে। সেখানে পালাগান খুব জনপ্রিয়। ৩৫ বছর আগে যখন আমি পালাগান, বিচ্ছেদের ক্যাসেট বের করি, তখন থেকে ইমনের বাবা আমাকে পালাগান শিল্পী হিসেবে চেনেন। সেখান থেকেই ইমন আমার সম্পর্কে জানে। যখন ‘গুণিন’ সিনেমার গানটির জন্য বাউলশিল্পী খুঁজছিলেন সেলিম সাহেব ও তাঁর দল, তখন ইমন চৌধুরী তাঁদের জানায়, গানটি আলেয়া বেগমের কণ্ঠে ভালো হবে। সে সময়ে তাঁদের সঙ্গে আমার মেয়ে ছিল। সে বলল, আলেয়া বেগম আমার আম্মু। সেখান থেকেই ইমন চৌধুরীর সঙ্গে পরিচয়। তার মাধ্যমে গুণিন সিনেমায়ও গাওয়ার সুযোগ হইছিল। এবার কোক স্টুডিওতে গাইলাম।
‘কথা কইয়ো না’ গানটি করার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
কোক স্টুডিওর জন্য এ রকম একটা গান হবে, সেটা আমাকে বলা হয়নি। একেবারেই অপ্রস্তুত ছিলাম। নভেম্বর মাসের দিকে গানটি যখন রেকর্ড করি, তখন আমার সিজন চলছে। প্রতিদিন নানা জায়গায় স্টেজে স্টেজে সারা রাত প্রোগ্রাম করি। একদিন ইমন চৌধুরী ডাকল। আমি বললাম, বাবা, রেকর্ডিংয়ের জন্য অপ্রস্তুত। আমার কণ্ঠ তো একেবারে বসা, শরীরও ভালো না। সে বলল, সমস্যা নাই আন্টি। আপনি একটু আসেন। সে আমাকে সুরটি শুনাল। বললাম, বাবা, অনেক উঁচা সুর। এই মুহূর্তে এটা আমি পারমু না। পারবেন না ঠিক আছে, একবার একটু চেষ্টা করেন, বলল ইমন। যখন সুরটি দিলাম, তখন ইমন চৌধুরী বলল, আন্টি, আমার এই কণ্ঠটাই দরকার ছিল। বুঝলাম না কেন সে এমন কথা বলল। তাঁকে বললাম, এই কণ্ঠ দিয়া যদি গান বাইর করো, তাহলে যারা বায়না করছে, তারা সবাই ফিরায় নিয়া যাইব।
সে কয়, জানেন আন্টি, এই কণ্ঠটাই গানের জন্য পারফেক্ট। আমার কাছে কেমন জানি অবান্তর অবান্তর লাগল। কী করবে, এই কণ্ঠের গান দিয়া কী হবে! এখন কিন্তু সে রকম করে গাইতে পারব না। আমার কণ্ঠে কিন্তু ওইটা আসবে না। তখন যে ভিতর থেকে, অন্তর চেরা অনেক দুঃখের পরে একটা কান্না বা শেষ চিৎকারটা আসে, আমার মধ্য থেকে সে চিৎকারটা আসছিল। আমার মনে হয় মালিকের তরফ থেকে এই কণ্ঠটা ওই সময় বানানো হইছে।
আপনার কাছে কোক স্টুডিওর কোন দিকটা ভালো লেগেছে?
কোক স্টুডিও সুন্দর একেকটা সন্তান প্রসব করে। অনেক লালন-পালন করে এমন একটি ডেলিভারি দেয়, যেটায় সকলে মুগ্ধ হয়। তারা কোনো খুঁত রাখে না। আমার গাওয়ার মধ্যে একটা শব্দ আমার মতো করে করছিলাম। কথাটা হবে আইসে, সেটা গাওয়ার সময় হয়ে গেছে আইসা। এই একটা শব্দের জন্য ইমন চৌধুরী আমাকে বলল, আন্টি, আবার আসতে হবে। আমি বললাম, অবশ্যই। যারা একটি গানের জন্য এত কষ্ট করছে, তাদের জন্য আমি আবার গাইতে পারব। পরবর্তী সময়ে এই শব্দটার জন্য ওই পার্টটুকু আমাকে আবার গাইতে হয়েছিল। এই ব্যাপারটা আমার কাছে ভালো লেগেছে।
এ গানে আপনার সঙ্গে আপনার মেয়ে ইন্নিমা রোশনিও ছিল…
আমার মেয়ে পড়ালেখার পাশাপাশি সংগীতজগতেই আছে। সে আগে থেকেই ইমন চৌধুরীর স্টুডিওতে বেহালা বাজায়, গিটার বাজায়। এ ছাড়া আরও অনেক ব্যানারে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের সঙ্গে জড়িত। সিনেমার ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকেও কাজ করেছে। এবারই প্রথম আমার সঙ্গে বাজাল। সে আমার সঙ্গে একই মঞ্চে বাজাবে, এটা কোনো দিন ভাবিনি। সেও অনেক খুশি।
আপনি যাঁদের সঙ্গে গান করেন, তাঁরা কী বলছে?
যারা আমাকে ৫০ বছর ধরে চিনে, তাদের কাছে অবাক হওয়ার মতো কিছু নয়। সবাই বলছে, আপনার জন্যই এই গানটা, গানের সঙ্গে মিলে একাকার হয়ে গেছেন। তবে অনেকে বলেছে, কোক স্টুডিওর মতো জায়গায়, যেটা কি না সারা বিশ্বের কাছে আয়নার মতো, সেখানে গাওয়া কীভাবে সম্ভব হইছে! আসলে মালিকের তরফ থেকে সবই হয়ে যায়। মালিক সবার জীবনে এ রকম সুযোগ দেয়। সেটাকে কাজে লাগাতে হয় আর সম্মানের সহিত ধরে রাখতে হয়।
গুণিন সিনেমায় গেয়েছেন। আবারও কি আপনাকে সিনেমার গানে পাওয়া যাবে?
যদি ওই ধরনের গান হয়, যাতে আমার কণ্ঠ মানায়। মার্জিত হয়। যদি কোনো অশ্লীলতা না থাকে, তাহলে আবারও সিনেমায় গাইব।
দীর্ঘদিন ধরে বাউল গানের সঙ্গে জড়িত আপনি। শুরুটা কীভাবে হয়েছিল?
আমি সংগীত পরিবারের মানুষ। মাদারীপুরের সন্ন্যাসীচর গ্রামে আমাগো বাড়ির উঠানে গানের আসর বসত। আমার দাদা মারফতের মানুষ ছিল। তখন বাড়ির মইধ্যে পালাগান, জারিগান, সারিগান শুনতাম। আমার বাবা হইল আধ্যাত্মিক জগতের মানুষ। তাঁর কাছ থেকেই গানের হাতেখড়ি। আর প্রথম গান করেছি মিরপুর মাজারে। যুদ্ধের পর যখন ঢাকায় থাকা শুরু করি, তখন একদিন ছোট বোনরে নিয়া মাজারের কাছ দিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন দেখি এক অন্ধ মহিলা গান গাইতাছেন। আসর পাইতা সবাই তাঁর গান শুনতাছে। গান শ্যাষ হওয়ার পর কইলাম, আমি একটা গান গাব। তখন সবাই কইল, এত ছোট মানুষ কী গান গাইবা। একজন আমার বোনটাকে কোলে নিল। আমি গাইলাম। গান শুইনা অনেকেই ১০ পয়সা, চার আনা, আট আনা করে উপহার দিল। বোনরে চকলেট কিন্না দিল। সেই থেকে শুরু।
আপনাকে অনেকেই বাউলমাতা বলেন। এই বিষয়টি আপনার কাছে কেমন লাগে?
৫০ বছরের মতো সময় ধরে গান করছি। যারা আমার গান ভালোবাসে, তারা এই উপাধি দিয়েছে। তাদের ভালোবাসাই তো শক্তি। অনেক সময় নিজের কাছে লজ্জা লাগে। তবে কেউ আমাকে বাউলমাতা বলবে, এটা কখনোই চাইনি। আমার চাইতে আরও ভালো প্রবীণ শিল্পী রয়েছেন। অনেকে আবার বাউল গান নিয়ে গবেষণাও করেছেন।
দীর্ঘ এ পথচলায় কোনো বাধার সম্মুখীন হয়েছেন?
বাধার সম্মুখীন হয়েছি। তবে বেশি না, অল্পস্বল্প। কিছু মানুষ আছে, যারা গানটাকে ভালোবাসে না। দেখা যায় গান করতে গেলাম, সেখানে তারা বাধা দিল। তখন আলোচনা করে সমাধান করি সবাই মিলে। তবে গান একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে, এ রকম হয়নি। আসলে আমরা বাউলশিল্পীরা কখনোই ঝগড়া-বিবাদ করতে পৃথিবীতে আসি নাই। আমরা আসছি প্রেম, মানবতা বিতরণ করতে। মানুষের সঙ্গে বন্ধন সৃষ্টি করতে। যারা বাউল গানের আয়োজন করে আর যারা শোনে, তারা কিন্তু সন্ত্রাসী মনমানসিকতার নয়। একদম মাটির মানুষ। বাউল গান যেমন সহজ-সরল, আত্মার কথা বলে, মানবতার কথা বলে, তারাও ঠিক তেমন।
বিচ্ছেদ, পালাগানসহ বিভিন্ন ধরনের গান গেয়েছেন। কোন ধরনের গান গেয়ে বেশি তৃপ্তি পান?
আধ্যাত্মিক গান করে আত্মার শান্তি লাগে। তারপর আবেদন-নিবেদন। এটার মানে হলো, আমি তোমার কাছে নিজেকে অর্পণ করে দিতে চাই, তোমার মাঝে নিঃস্ব হতে চাই। তোমার মাঝেই ছিলাম, তোমার মাঝেই যেতে চাই। এখানে দুনিয়ার মোহে কিছু দোষ আমার অন্তরে প্রবেশ করে অন্তর্যামীকে তাড়িয়ে দিয়েছি। সে তো থাকতেই চেয়েছিল কিন্তু আমি তাকে উপযুক্ত অন্তর দিতে পারি নাই। অন্তরের মধ্যে দুনিয়াদারির কামনা-বাসনা, লোভ-লালসা, অহংকার বসিয়ে রেখেছি। এগুলোর কারণে অন্তর্যামী আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। এখন আমি মালিকশূন্য হয়ে গেছি। এই কথাগুলো নিয়ে ভাবরেখা রেখে যখন আমি স্টেজে আত্মনিবেদন করি, তখন নিজের মধ্যে শান্তি লাগে।
গানও লিখেছেন আপনি। আপনার লেখা গানের সংখ্যা কত হবে?
আমার লেখা গানের সংখ্যা এক হাজারের বেশি হবে। এর মধ্যে বিচ্ছেদের গানের সংখ্যা বেশি।
প্রযুক্তির উন্নতির কারণে গান প্রকাশের মাধ্যমেও পরিবর্তন এসেছে। আমাদের দেশের বাউলেরা এ প্রযুক্তির সঙ্গে কতটা মানিয়ে নিতে পেরেছেন?
আসলে একের পর উন্নতি হইতাছে। সব মানুষের নাগালে চলে আইতাছে। মোবাইল টিপলেই একটা গান চলে আসে। এটারে মেনে নিতে হবে। আমরা সহজ মানুষ, তাই একটু কষ্ট হচ্ছে। তবে প্রযুক্তির কারণে অনেক কিছু সহজ হয়েছে। অনেকে ইউটিউবে আমাদের গান দেখে যোগাযোগ করছেন গান করার জন্য। আগে এ ব্যাপারটা অনেক কঠিন ছিল। অনেক সময় আমরা নিজেরা মাইলের পর মাইল পাড়ি দিয়ে গান কমিটির সঙ্গে আলাপ করতে যেতাম। এ ছাড়া আগে একটা গান লাইভ রেকর্ড হতো। ভুল হলে সেটাই রেকর্ড করে চালিয়ে দিত। এখন একটা গান ভুল হলে আবার গাওয়ার সুযোগ আছে।
বাউলশিল্পীদের কি সঠিক মূল্যায়ন করা হচ্ছে?
আমরা যখন আসরে থাকি, তখন আমাদেরকে সবাই ভালোবাসে। যখন আসর থেকে নেমে যাই, তখন সমাজের বড় একটা অংশের কাছে আমরা ভালো মানুষ না। গান গাওয়া কোনো কাজ হইল নাকি? এটাই তাদের মনোভাব। সমাজের বেশির ভাগ মানুষ আমাদের ভালো চোখে দেখে না। এই মনোভাবটা পাল্টানো দরকার। সরকারিভাবেও বাউলশিল্পীদের দিকে একটু দৃষ্টি দেওয়া দরকার। শিল্পীরা সরকারিভাবে অনেক অবহেলিত।
১৯৮৯ সাল থেকে বিটিভি ও রেডিওতে নিয়মিত গান করি। সেখানেও পারিশ্রমিক সঠিক সময়ে দেওয়া হয় না। আমি তো গান করেই রুটি-রুজির ব্যবস্থা করি। আমারও তো অভাব আছে। সবাই তো শখের বসে গান করে না। পেটের জন্যও অনেকে গান করে। দেখা গেল নিজের টাকা খরচ করে দল নিয়ে গান করলাম, অথচ আমার পারিশ্রমিক সঠিক সময়ে এল না। কবে যে পারিশ্রমিক পাব, এটা কিন্তু আমার জানা নাই। অনেক সময় দেখা যায় গান গাওয়ার ছয় মাস পর আমরা চেক পাই।
নতুন প্রজন্মের যাঁরা বাউল গানের সঙ্গে জড়িত আছেন, তাঁদের মধ্যে সাধনার ব্যাপারটি কতটা লক্ষ করেন?
এখনকার সময়ে যাঁরা বাউল গান করেন, তাঁদের মধ্যে সাধনার বিষয়টি খুব কম। নতুন যাঁরা গান করেন, তাঁদের মধ্যে বাণিজ্যিক মনমানসিকতা বেশি। কয়েকটা গান করেই শুরু করে দিলাম টাকা কামানোর ধান্ধা। এটার মধ্যে কোনো জীবন নাই। এমন চিন্তার মানুষের মধ্যে সংগীত বেঁচে থাকবে না।
তাঁদের উদ্দেশে কিছু বলতে চান?
যাঁরা গানের সঙ্গে নিজেকে জড়াতে চান, তাঁরা যেন নিয়মিত গানের চর্চাটা করেন। বাউল গানের ওপর অনেক বই আছে। সেগুলো পড়তে হবে। বই পড়লে জ্ঞান চর্চা হয় এবং নিজের পথচলা সহজ হয়। বাণিজ্যিক উদ্দেশে নয়, পরমকে সন্তুষ্ট করার জন্য যেন গানটা করা হয়। তাহলে এমনিতেই নিজের ওপর দয়া এবং রহমত চলে আসবে।
শিহাব আহমেদ

কোক স্টুডিওতে আপনার গাওয়া গানটি দর্শক অনেক পছন্দ করেছেন। কেমন লাগছে?
অনেক ভালো লাগতাছে। সকলে অনেক প্রশংসা করতাছে। এর আগে আমি টেলিভিশনে অনেক গাইছি। কিন্তু এভাবে সকলের স্বীকৃতি, এটা আগে কখনো হয় নাই। জনপ্রিয় ও বিশাল একটা মাধ্যমে আমাকে ডাকবে, এটা আমার কল্পনাতেও ছিল না। মালিকের দয়া হইছে, তাঁর দয়ার মাধ্যমেই ইমন চৌধুরী আমাকে ডাকছে।
ইমন চৌধুরীর সঙ্গে আপনার পরিচয় কীভাবে?
ইমন চৌধুরীর বাবা অনেক বড় ওস্তাদ। তাদের বাড়ি নরসিংদীতে। সেখানে পালাগান খুব জনপ্রিয়। ৩৫ বছর আগে যখন আমি পালাগান, বিচ্ছেদের ক্যাসেট বের করি, তখন থেকে ইমনের বাবা আমাকে পালাগান শিল্পী হিসেবে চেনেন। সেখান থেকেই ইমন আমার সম্পর্কে জানে। যখন ‘গুণিন’ সিনেমার গানটির জন্য বাউলশিল্পী খুঁজছিলেন সেলিম সাহেব ও তাঁর দল, তখন ইমন চৌধুরী তাঁদের জানায়, গানটি আলেয়া বেগমের কণ্ঠে ভালো হবে। সে সময়ে তাঁদের সঙ্গে আমার মেয়ে ছিল। সে বলল, আলেয়া বেগম আমার আম্মু। সেখান থেকেই ইমন চৌধুরীর সঙ্গে পরিচয়। তার মাধ্যমে গুণিন সিনেমায়ও গাওয়ার সুযোগ হইছিল। এবার কোক স্টুডিওতে গাইলাম।
‘কথা কইয়ো না’ গানটি করার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
কোক স্টুডিওর জন্য এ রকম একটা গান হবে, সেটা আমাকে বলা হয়নি। একেবারেই অপ্রস্তুত ছিলাম। নভেম্বর মাসের দিকে গানটি যখন রেকর্ড করি, তখন আমার সিজন চলছে। প্রতিদিন নানা জায়গায় স্টেজে স্টেজে সারা রাত প্রোগ্রাম করি। একদিন ইমন চৌধুরী ডাকল। আমি বললাম, বাবা, রেকর্ডিংয়ের জন্য অপ্রস্তুত। আমার কণ্ঠ তো একেবারে বসা, শরীরও ভালো না। সে বলল, সমস্যা নাই আন্টি। আপনি একটু আসেন। সে আমাকে সুরটি শুনাল। বললাম, বাবা, অনেক উঁচা সুর। এই মুহূর্তে এটা আমি পারমু না। পারবেন না ঠিক আছে, একবার একটু চেষ্টা করেন, বলল ইমন। যখন সুরটি দিলাম, তখন ইমন চৌধুরী বলল, আন্টি, আমার এই কণ্ঠটাই দরকার ছিল। বুঝলাম না কেন সে এমন কথা বলল। তাঁকে বললাম, এই কণ্ঠ দিয়া যদি গান বাইর করো, তাহলে যারা বায়না করছে, তারা সবাই ফিরায় নিয়া যাইব।
সে কয়, জানেন আন্টি, এই কণ্ঠটাই গানের জন্য পারফেক্ট। আমার কাছে কেমন জানি অবান্তর অবান্তর লাগল। কী করবে, এই কণ্ঠের গান দিয়া কী হবে! এখন কিন্তু সে রকম করে গাইতে পারব না। আমার কণ্ঠে কিন্তু ওইটা আসবে না। তখন যে ভিতর থেকে, অন্তর চেরা অনেক দুঃখের পরে একটা কান্না বা শেষ চিৎকারটা আসে, আমার মধ্য থেকে সে চিৎকারটা আসছিল। আমার মনে হয় মালিকের তরফ থেকে এই কণ্ঠটা ওই সময় বানানো হইছে।
আপনার কাছে কোক স্টুডিওর কোন দিকটা ভালো লেগেছে?
কোক স্টুডিও সুন্দর একেকটা সন্তান প্রসব করে। অনেক লালন-পালন করে এমন একটি ডেলিভারি দেয়, যেটায় সকলে মুগ্ধ হয়। তারা কোনো খুঁত রাখে না। আমার গাওয়ার মধ্যে একটা শব্দ আমার মতো করে করছিলাম। কথাটা হবে আইসে, সেটা গাওয়ার সময় হয়ে গেছে আইসা। এই একটা শব্দের জন্য ইমন চৌধুরী আমাকে বলল, আন্টি, আবার আসতে হবে। আমি বললাম, অবশ্যই। যারা একটি গানের জন্য এত কষ্ট করছে, তাদের জন্য আমি আবার গাইতে পারব। পরবর্তী সময়ে এই শব্দটার জন্য ওই পার্টটুকু আমাকে আবার গাইতে হয়েছিল। এই ব্যাপারটা আমার কাছে ভালো লেগেছে।
এ গানে আপনার সঙ্গে আপনার মেয়ে ইন্নিমা রোশনিও ছিল…
আমার মেয়ে পড়ালেখার পাশাপাশি সংগীতজগতেই আছে। সে আগে থেকেই ইমন চৌধুরীর স্টুডিওতে বেহালা বাজায়, গিটার বাজায়। এ ছাড়া আরও অনেক ব্যানারে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের সঙ্গে জড়িত। সিনেমার ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকেও কাজ করেছে। এবারই প্রথম আমার সঙ্গে বাজাল। সে আমার সঙ্গে একই মঞ্চে বাজাবে, এটা কোনো দিন ভাবিনি। সেও অনেক খুশি।
আপনি যাঁদের সঙ্গে গান করেন, তাঁরা কী বলছে?
যারা আমাকে ৫০ বছর ধরে চিনে, তাদের কাছে অবাক হওয়ার মতো কিছু নয়। সবাই বলছে, আপনার জন্যই এই গানটা, গানের সঙ্গে মিলে একাকার হয়ে গেছেন। তবে অনেকে বলেছে, কোক স্টুডিওর মতো জায়গায়, যেটা কি না সারা বিশ্বের কাছে আয়নার মতো, সেখানে গাওয়া কীভাবে সম্ভব হইছে! আসলে মালিকের তরফ থেকে সবই হয়ে যায়। মালিক সবার জীবনে এ রকম সুযোগ দেয়। সেটাকে কাজে লাগাতে হয় আর সম্মানের সহিত ধরে রাখতে হয়।
গুণিন সিনেমায় গেয়েছেন। আবারও কি আপনাকে সিনেমার গানে পাওয়া যাবে?
যদি ওই ধরনের গান হয়, যাতে আমার কণ্ঠ মানায়। মার্জিত হয়। যদি কোনো অশ্লীলতা না থাকে, তাহলে আবারও সিনেমায় গাইব।
দীর্ঘদিন ধরে বাউল গানের সঙ্গে জড়িত আপনি। শুরুটা কীভাবে হয়েছিল?
আমি সংগীত পরিবারের মানুষ। মাদারীপুরের সন্ন্যাসীচর গ্রামে আমাগো বাড়ির উঠানে গানের আসর বসত। আমার দাদা মারফতের মানুষ ছিল। তখন বাড়ির মইধ্যে পালাগান, জারিগান, সারিগান শুনতাম। আমার বাবা হইল আধ্যাত্মিক জগতের মানুষ। তাঁর কাছ থেকেই গানের হাতেখড়ি। আর প্রথম গান করেছি মিরপুর মাজারে। যুদ্ধের পর যখন ঢাকায় থাকা শুরু করি, তখন একদিন ছোট বোনরে নিয়া মাজারের কাছ দিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন দেখি এক অন্ধ মহিলা গান গাইতাছেন। আসর পাইতা সবাই তাঁর গান শুনতাছে। গান শ্যাষ হওয়ার পর কইলাম, আমি একটা গান গাব। তখন সবাই কইল, এত ছোট মানুষ কী গান গাইবা। একজন আমার বোনটাকে কোলে নিল। আমি গাইলাম। গান শুইনা অনেকেই ১০ পয়সা, চার আনা, আট আনা করে উপহার দিল। বোনরে চকলেট কিন্না দিল। সেই থেকে শুরু।
আপনাকে অনেকেই বাউলমাতা বলেন। এই বিষয়টি আপনার কাছে কেমন লাগে?
৫০ বছরের মতো সময় ধরে গান করছি। যারা আমার গান ভালোবাসে, তারা এই উপাধি দিয়েছে। তাদের ভালোবাসাই তো শক্তি। অনেক সময় নিজের কাছে লজ্জা লাগে। তবে কেউ আমাকে বাউলমাতা বলবে, এটা কখনোই চাইনি। আমার চাইতে আরও ভালো প্রবীণ শিল্পী রয়েছেন। অনেকে আবার বাউল গান নিয়ে গবেষণাও করেছেন।
দীর্ঘ এ পথচলায় কোনো বাধার সম্মুখীন হয়েছেন?
বাধার সম্মুখীন হয়েছি। তবে বেশি না, অল্পস্বল্প। কিছু মানুষ আছে, যারা গানটাকে ভালোবাসে না। দেখা যায় গান করতে গেলাম, সেখানে তারা বাধা দিল। তখন আলোচনা করে সমাধান করি সবাই মিলে। তবে গান একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে, এ রকম হয়নি। আসলে আমরা বাউলশিল্পীরা কখনোই ঝগড়া-বিবাদ করতে পৃথিবীতে আসি নাই। আমরা আসছি প্রেম, মানবতা বিতরণ করতে। মানুষের সঙ্গে বন্ধন সৃষ্টি করতে। যারা বাউল গানের আয়োজন করে আর যারা শোনে, তারা কিন্তু সন্ত্রাসী মনমানসিকতার নয়। একদম মাটির মানুষ। বাউল গান যেমন সহজ-সরল, আত্মার কথা বলে, মানবতার কথা বলে, তারাও ঠিক তেমন।
বিচ্ছেদ, পালাগানসহ বিভিন্ন ধরনের গান গেয়েছেন। কোন ধরনের গান গেয়ে বেশি তৃপ্তি পান?
আধ্যাত্মিক গান করে আত্মার শান্তি লাগে। তারপর আবেদন-নিবেদন। এটার মানে হলো, আমি তোমার কাছে নিজেকে অর্পণ করে দিতে চাই, তোমার মাঝে নিঃস্ব হতে চাই। তোমার মাঝেই ছিলাম, তোমার মাঝেই যেতে চাই। এখানে দুনিয়ার মোহে কিছু দোষ আমার অন্তরে প্রবেশ করে অন্তর্যামীকে তাড়িয়ে দিয়েছি। সে তো থাকতেই চেয়েছিল কিন্তু আমি তাকে উপযুক্ত অন্তর দিতে পারি নাই। অন্তরের মধ্যে দুনিয়াদারির কামনা-বাসনা, লোভ-লালসা, অহংকার বসিয়ে রেখেছি। এগুলোর কারণে অন্তর্যামী আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। এখন আমি মালিকশূন্য হয়ে গেছি। এই কথাগুলো নিয়ে ভাবরেখা রেখে যখন আমি স্টেজে আত্মনিবেদন করি, তখন নিজের মধ্যে শান্তি লাগে।
গানও লিখেছেন আপনি। আপনার লেখা গানের সংখ্যা কত হবে?
আমার লেখা গানের সংখ্যা এক হাজারের বেশি হবে। এর মধ্যে বিচ্ছেদের গানের সংখ্যা বেশি।
প্রযুক্তির উন্নতির কারণে গান প্রকাশের মাধ্যমেও পরিবর্তন এসেছে। আমাদের দেশের বাউলেরা এ প্রযুক্তির সঙ্গে কতটা মানিয়ে নিতে পেরেছেন?
আসলে একের পর উন্নতি হইতাছে। সব মানুষের নাগালে চলে আইতাছে। মোবাইল টিপলেই একটা গান চলে আসে। এটারে মেনে নিতে হবে। আমরা সহজ মানুষ, তাই একটু কষ্ট হচ্ছে। তবে প্রযুক্তির কারণে অনেক কিছু সহজ হয়েছে। অনেকে ইউটিউবে আমাদের গান দেখে যোগাযোগ করছেন গান করার জন্য। আগে এ ব্যাপারটা অনেক কঠিন ছিল। অনেক সময় আমরা নিজেরা মাইলের পর মাইল পাড়ি দিয়ে গান কমিটির সঙ্গে আলাপ করতে যেতাম। এ ছাড়া আগে একটা গান লাইভ রেকর্ড হতো। ভুল হলে সেটাই রেকর্ড করে চালিয়ে দিত। এখন একটা গান ভুল হলে আবার গাওয়ার সুযোগ আছে।
বাউলশিল্পীদের কি সঠিক মূল্যায়ন করা হচ্ছে?
আমরা যখন আসরে থাকি, তখন আমাদেরকে সবাই ভালোবাসে। যখন আসর থেকে নেমে যাই, তখন সমাজের বড় একটা অংশের কাছে আমরা ভালো মানুষ না। গান গাওয়া কোনো কাজ হইল নাকি? এটাই তাদের মনোভাব। সমাজের বেশির ভাগ মানুষ আমাদের ভালো চোখে দেখে না। এই মনোভাবটা পাল্টানো দরকার। সরকারিভাবেও বাউলশিল্পীদের দিকে একটু দৃষ্টি দেওয়া দরকার। শিল্পীরা সরকারিভাবে অনেক অবহেলিত।
১৯৮৯ সাল থেকে বিটিভি ও রেডিওতে নিয়মিত গান করি। সেখানেও পারিশ্রমিক সঠিক সময়ে দেওয়া হয় না। আমি তো গান করেই রুটি-রুজির ব্যবস্থা করি। আমারও তো অভাব আছে। সবাই তো শখের বসে গান করে না। পেটের জন্যও অনেকে গান করে। দেখা গেল নিজের টাকা খরচ করে দল নিয়ে গান করলাম, অথচ আমার পারিশ্রমিক সঠিক সময়ে এল না। কবে যে পারিশ্রমিক পাব, এটা কিন্তু আমার জানা নাই। অনেক সময় দেখা যায় গান গাওয়ার ছয় মাস পর আমরা চেক পাই।
নতুন প্রজন্মের যাঁরা বাউল গানের সঙ্গে জড়িত আছেন, তাঁদের মধ্যে সাধনার ব্যাপারটি কতটা লক্ষ করেন?
এখনকার সময়ে যাঁরা বাউল গান করেন, তাঁদের মধ্যে সাধনার বিষয়টি খুব কম। নতুন যাঁরা গান করেন, তাঁদের মধ্যে বাণিজ্যিক মনমানসিকতা বেশি। কয়েকটা গান করেই শুরু করে দিলাম টাকা কামানোর ধান্ধা। এটার মধ্যে কোনো জীবন নাই। এমন চিন্তার মানুষের মধ্যে সংগীত বেঁচে থাকবে না।
তাঁদের উদ্দেশে কিছু বলতে চান?
যাঁরা গানের সঙ্গে নিজেকে জড়াতে চান, তাঁরা যেন নিয়মিত গানের চর্চাটা করেন। বাউল গানের ওপর অনেক বই আছে। সেগুলো পড়তে হবে। বই পড়লে জ্ঞান চর্চা হয় এবং নিজের পথচলা সহজ হয়। বাণিজ্যিক উদ্দেশে নয়, পরমকে সন্তুষ্ট করার জন্য যেন গানটা করা হয়। তাহলে এমনিতেই নিজের ওপর দয়া এবং রহমত চলে আসবে।

কোক স্টুডিওতে আপনার গাওয়া গানটি দর্শক অনেক পছন্দ করেছেন। কেমন লাগছে?
অনেক ভালো লাগতাছে। সকলে অনেক প্রশংসা করতাছে। এর আগে আমি টেলিভিশনে অনেক গাইছি। কিন্তু এভাবে সকলের স্বীকৃতি, এটা আগে কখনো হয় নাই। জনপ্রিয় ও বিশাল একটা মাধ্যমে আমাকে ডাকবে, এটা আমার কল্পনাতেও ছিল না। মালিকের দয়া হইছে, তাঁর দয়ার মাধ্যমেই ইমন চৌধুরী আমাকে ডাকছে।
ইমন চৌধুরীর সঙ্গে আপনার পরিচয় কীভাবে?
ইমন চৌধুরীর বাবা অনেক বড় ওস্তাদ। তাদের বাড়ি নরসিংদীতে। সেখানে পালাগান খুব জনপ্রিয়। ৩৫ বছর আগে যখন আমি পালাগান, বিচ্ছেদের ক্যাসেট বের করি, তখন থেকে ইমনের বাবা আমাকে পালাগান শিল্পী হিসেবে চেনেন। সেখান থেকেই ইমন আমার সম্পর্কে জানে। যখন ‘গুণিন’ সিনেমার গানটির জন্য বাউলশিল্পী খুঁজছিলেন সেলিম সাহেব ও তাঁর দল, তখন ইমন চৌধুরী তাঁদের জানায়, গানটি আলেয়া বেগমের কণ্ঠে ভালো হবে। সে সময়ে তাঁদের সঙ্গে আমার মেয়ে ছিল। সে বলল, আলেয়া বেগম আমার আম্মু। সেখান থেকেই ইমন চৌধুরীর সঙ্গে পরিচয়। তার মাধ্যমে গুণিন সিনেমায়ও গাওয়ার সুযোগ হইছিল। এবার কোক স্টুডিওতে গাইলাম।
‘কথা কইয়ো না’ গানটি করার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
কোক স্টুডিওর জন্য এ রকম একটা গান হবে, সেটা আমাকে বলা হয়নি। একেবারেই অপ্রস্তুত ছিলাম। নভেম্বর মাসের দিকে গানটি যখন রেকর্ড করি, তখন আমার সিজন চলছে। প্রতিদিন নানা জায়গায় স্টেজে স্টেজে সারা রাত প্রোগ্রাম করি। একদিন ইমন চৌধুরী ডাকল। আমি বললাম, বাবা, রেকর্ডিংয়ের জন্য অপ্রস্তুত। আমার কণ্ঠ তো একেবারে বসা, শরীরও ভালো না। সে বলল, সমস্যা নাই আন্টি। আপনি একটু আসেন। সে আমাকে সুরটি শুনাল। বললাম, বাবা, অনেক উঁচা সুর। এই মুহূর্তে এটা আমি পারমু না। পারবেন না ঠিক আছে, একবার একটু চেষ্টা করেন, বলল ইমন। যখন সুরটি দিলাম, তখন ইমন চৌধুরী বলল, আন্টি, আমার এই কণ্ঠটাই দরকার ছিল। বুঝলাম না কেন সে এমন কথা বলল। তাঁকে বললাম, এই কণ্ঠ দিয়া যদি গান বাইর করো, তাহলে যারা বায়না করছে, তারা সবাই ফিরায় নিয়া যাইব।
সে কয়, জানেন আন্টি, এই কণ্ঠটাই গানের জন্য পারফেক্ট। আমার কাছে কেমন জানি অবান্তর অবান্তর লাগল। কী করবে, এই কণ্ঠের গান দিয়া কী হবে! এখন কিন্তু সে রকম করে গাইতে পারব না। আমার কণ্ঠে কিন্তু ওইটা আসবে না। তখন যে ভিতর থেকে, অন্তর চেরা অনেক দুঃখের পরে একটা কান্না বা শেষ চিৎকারটা আসে, আমার মধ্য থেকে সে চিৎকারটা আসছিল। আমার মনে হয় মালিকের তরফ থেকে এই কণ্ঠটা ওই সময় বানানো হইছে।
আপনার কাছে কোক স্টুডিওর কোন দিকটা ভালো লেগেছে?
কোক স্টুডিও সুন্দর একেকটা সন্তান প্রসব করে। অনেক লালন-পালন করে এমন একটি ডেলিভারি দেয়, যেটায় সকলে মুগ্ধ হয়। তারা কোনো খুঁত রাখে না। আমার গাওয়ার মধ্যে একটা শব্দ আমার মতো করে করছিলাম। কথাটা হবে আইসে, সেটা গাওয়ার সময় হয়ে গেছে আইসা। এই একটা শব্দের জন্য ইমন চৌধুরী আমাকে বলল, আন্টি, আবার আসতে হবে। আমি বললাম, অবশ্যই। যারা একটি গানের জন্য এত কষ্ট করছে, তাদের জন্য আমি আবার গাইতে পারব। পরবর্তী সময়ে এই শব্দটার জন্য ওই পার্টটুকু আমাকে আবার গাইতে হয়েছিল। এই ব্যাপারটা আমার কাছে ভালো লেগেছে।
এ গানে আপনার সঙ্গে আপনার মেয়ে ইন্নিমা রোশনিও ছিল…
আমার মেয়ে পড়ালেখার পাশাপাশি সংগীতজগতেই আছে। সে আগে থেকেই ইমন চৌধুরীর স্টুডিওতে বেহালা বাজায়, গিটার বাজায়। এ ছাড়া আরও অনেক ব্যানারে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের সঙ্গে জড়িত। সিনেমার ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকেও কাজ করেছে। এবারই প্রথম আমার সঙ্গে বাজাল। সে আমার সঙ্গে একই মঞ্চে বাজাবে, এটা কোনো দিন ভাবিনি। সেও অনেক খুশি।
আপনি যাঁদের সঙ্গে গান করেন, তাঁরা কী বলছে?
যারা আমাকে ৫০ বছর ধরে চিনে, তাদের কাছে অবাক হওয়ার মতো কিছু নয়। সবাই বলছে, আপনার জন্যই এই গানটা, গানের সঙ্গে মিলে একাকার হয়ে গেছেন। তবে অনেকে বলেছে, কোক স্টুডিওর মতো জায়গায়, যেটা কি না সারা বিশ্বের কাছে আয়নার মতো, সেখানে গাওয়া কীভাবে সম্ভব হইছে! আসলে মালিকের তরফ থেকে সবই হয়ে যায়। মালিক সবার জীবনে এ রকম সুযোগ দেয়। সেটাকে কাজে লাগাতে হয় আর সম্মানের সহিত ধরে রাখতে হয়।
গুণিন সিনেমায় গেয়েছেন। আবারও কি আপনাকে সিনেমার গানে পাওয়া যাবে?
যদি ওই ধরনের গান হয়, যাতে আমার কণ্ঠ মানায়। মার্জিত হয়। যদি কোনো অশ্লীলতা না থাকে, তাহলে আবারও সিনেমায় গাইব।
দীর্ঘদিন ধরে বাউল গানের সঙ্গে জড়িত আপনি। শুরুটা কীভাবে হয়েছিল?
আমি সংগীত পরিবারের মানুষ। মাদারীপুরের সন্ন্যাসীচর গ্রামে আমাগো বাড়ির উঠানে গানের আসর বসত। আমার দাদা মারফতের মানুষ ছিল। তখন বাড়ির মইধ্যে পালাগান, জারিগান, সারিগান শুনতাম। আমার বাবা হইল আধ্যাত্মিক জগতের মানুষ। তাঁর কাছ থেকেই গানের হাতেখড়ি। আর প্রথম গান করেছি মিরপুর মাজারে। যুদ্ধের পর যখন ঢাকায় থাকা শুরু করি, তখন একদিন ছোট বোনরে নিয়া মাজারের কাছ দিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন দেখি এক অন্ধ মহিলা গান গাইতাছেন। আসর পাইতা সবাই তাঁর গান শুনতাছে। গান শ্যাষ হওয়ার পর কইলাম, আমি একটা গান গাব। তখন সবাই কইল, এত ছোট মানুষ কী গান গাইবা। একজন আমার বোনটাকে কোলে নিল। আমি গাইলাম। গান শুইনা অনেকেই ১০ পয়সা, চার আনা, আট আনা করে উপহার দিল। বোনরে চকলেট কিন্না দিল। সেই থেকে শুরু।
আপনাকে অনেকেই বাউলমাতা বলেন। এই বিষয়টি আপনার কাছে কেমন লাগে?
৫০ বছরের মতো সময় ধরে গান করছি। যারা আমার গান ভালোবাসে, তারা এই উপাধি দিয়েছে। তাদের ভালোবাসাই তো শক্তি। অনেক সময় নিজের কাছে লজ্জা লাগে। তবে কেউ আমাকে বাউলমাতা বলবে, এটা কখনোই চাইনি। আমার চাইতে আরও ভালো প্রবীণ শিল্পী রয়েছেন। অনেকে আবার বাউল গান নিয়ে গবেষণাও করেছেন।
দীর্ঘ এ পথচলায় কোনো বাধার সম্মুখীন হয়েছেন?
বাধার সম্মুখীন হয়েছি। তবে বেশি না, অল্পস্বল্প। কিছু মানুষ আছে, যারা গানটাকে ভালোবাসে না। দেখা যায় গান করতে গেলাম, সেখানে তারা বাধা দিল। তখন আলোচনা করে সমাধান করি সবাই মিলে। তবে গান একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে, এ রকম হয়নি। আসলে আমরা বাউলশিল্পীরা কখনোই ঝগড়া-বিবাদ করতে পৃথিবীতে আসি নাই। আমরা আসছি প্রেম, মানবতা বিতরণ করতে। মানুষের সঙ্গে বন্ধন সৃষ্টি করতে। যারা বাউল গানের আয়োজন করে আর যারা শোনে, তারা কিন্তু সন্ত্রাসী মনমানসিকতার নয়। একদম মাটির মানুষ। বাউল গান যেমন সহজ-সরল, আত্মার কথা বলে, মানবতার কথা বলে, তারাও ঠিক তেমন।
বিচ্ছেদ, পালাগানসহ বিভিন্ন ধরনের গান গেয়েছেন। কোন ধরনের গান গেয়ে বেশি তৃপ্তি পান?
আধ্যাত্মিক গান করে আত্মার শান্তি লাগে। তারপর আবেদন-নিবেদন। এটার মানে হলো, আমি তোমার কাছে নিজেকে অর্পণ করে দিতে চাই, তোমার মাঝে নিঃস্ব হতে চাই। তোমার মাঝেই ছিলাম, তোমার মাঝেই যেতে চাই। এখানে দুনিয়ার মোহে কিছু দোষ আমার অন্তরে প্রবেশ করে অন্তর্যামীকে তাড়িয়ে দিয়েছি। সে তো থাকতেই চেয়েছিল কিন্তু আমি তাকে উপযুক্ত অন্তর দিতে পারি নাই। অন্তরের মধ্যে দুনিয়াদারির কামনা-বাসনা, লোভ-লালসা, অহংকার বসিয়ে রেখেছি। এগুলোর কারণে অন্তর্যামী আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। এখন আমি মালিকশূন্য হয়ে গেছি। এই কথাগুলো নিয়ে ভাবরেখা রেখে যখন আমি স্টেজে আত্মনিবেদন করি, তখন নিজের মধ্যে শান্তি লাগে।
গানও লিখেছেন আপনি। আপনার লেখা গানের সংখ্যা কত হবে?
আমার লেখা গানের সংখ্যা এক হাজারের বেশি হবে। এর মধ্যে বিচ্ছেদের গানের সংখ্যা বেশি।
প্রযুক্তির উন্নতির কারণে গান প্রকাশের মাধ্যমেও পরিবর্তন এসেছে। আমাদের দেশের বাউলেরা এ প্রযুক্তির সঙ্গে কতটা মানিয়ে নিতে পেরেছেন?
আসলে একের পর উন্নতি হইতাছে। সব মানুষের নাগালে চলে আইতাছে। মোবাইল টিপলেই একটা গান চলে আসে। এটারে মেনে নিতে হবে। আমরা সহজ মানুষ, তাই একটু কষ্ট হচ্ছে। তবে প্রযুক্তির কারণে অনেক কিছু সহজ হয়েছে। অনেকে ইউটিউবে আমাদের গান দেখে যোগাযোগ করছেন গান করার জন্য। আগে এ ব্যাপারটা অনেক কঠিন ছিল। অনেক সময় আমরা নিজেরা মাইলের পর মাইল পাড়ি দিয়ে গান কমিটির সঙ্গে আলাপ করতে যেতাম। এ ছাড়া আগে একটা গান লাইভ রেকর্ড হতো। ভুল হলে সেটাই রেকর্ড করে চালিয়ে দিত। এখন একটা গান ভুল হলে আবার গাওয়ার সুযোগ আছে।
বাউলশিল্পীদের কি সঠিক মূল্যায়ন করা হচ্ছে?
আমরা যখন আসরে থাকি, তখন আমাদেরকে সবাই ভালোবাসে। যখন আসর থেকে নেমে যাই, তখন সমাজের বড় একটা অংশের কাছে আমরা ভালো মানুষ না। গান গাওয়া কোনো কাজ হইল নাকি? এটাই তাদের মনোভাব। সমাজের বেশির ভাগ মানুষ আমাদের ভালো চোখে দেখে না। এই মনোভাবটা পাল্টানো দরকার। সরকারিভাবেও বাউলশিল্পীদের দিকে একটু দৃষ্টি দেওয়া দরকার। শিল্পীরা সরকারিভাবে অনেক অবহেলিত।
১৯৮৯ সাল থেকে বিটিভি ও রেডিওতে নিয়মিত গান করি। সেখানেও পারিশ্রমিক সঠিক সময়ে দেওয়া হয় না। আমি তো গান করেই রুটি-রুজির ব্যবস্থা করি। আমারও তো অভাব আছে। সবাই তো শখের বসে গান করে না। পেটের জন্যও অনেকে গান করে। দেখা গেল নিজের টাকা খরচ করে দল নিয়ে গান করলাম, অথচ আমার পারিশ্রমিক সঠিক সময়ে এল না। কবে যে পারিশ্রমিক পাব, এটা কিন্তু আমার জানা নাই। অনেক সময় দেখা যায় গান গাওয়ার ছয় মাস পর আমরা চেক পাই।
নতুন প্রজন্মের যাঁরা বাউল গানের সঙ্গে জড়িত আছেন, তাঁদের মধ্যে সাধনার ব্যাপারটি কতটা লক্ষ করেন?
এখনকার সময়ে যাঁরা বাউল গান করেন, তাঁদের মধ্যে সাধনার বিষয়টি খুব কম। নতুন যাঁরা গান করেন, তাঁদের মধ্যে বাণিজ্যিক মনমানসিকতা বেশি। কয়েকটা গান করেই শুরু করে দিলাম টাকা কামানোর ধান্ধা। এটার মধ্যে কোনো জীবন নাই। এমন চিন্তার মানুষের মধ্যে সংগীত বেঁচে থাকবে না।
তাঁদের উদ্দেশে কিছু বলতে চান?
যাঁরা গানের সঙ্গে নিজেকে জড়াতে চান, তাঁরা যেন নিয়মিত গানের চর্চাটা করেন। বাউল গানের ওপর অনেক বই আছে। সেগুলো পড়তে হবে। বই পড়লে জ্ঞান চর্চা হয় এবং নিজের পথচলা সহজ হয়। বাণিজ্যিক উদ্দেশে নয়, পরমকে সন্তুষ্ট করার জন্য যেন গানটা করা হয়। তাহলে এমনিতেই নিজের ওপর দয়া এবং রহমত চলে আসবে।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

কোক স্টুডিওতে আপনার গাওয়া গানটি দর্শক অনেক পছন্দ করেছেন। কেমন লাগছে? অনেক ভালো লাগতাছে। সকলে অনেক প্রশংসা করতাছে। এর আগে আমি টেলিভিশনে অনেক গাইছি। কিন্তু এভাবে সকলের স্বীকৃতি, এটা আগে কখনো হয় নাই। জনপ্রিয় ও বিশাল একটা মাধ্যমে আমাকে ডাকবে, এটা আমার কল্পনাতেও ছিল না। মালিকের দয়া হইছে, তাঁর দয়ার মাধ্য
১৫ জুন ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

কোক স্টুডিওতে আপনার গাওয়া গানটি দর্শক অনেক পছন্দ করেছেন। কেমন লাগছে? অনেক ভালো লাগতাছে। সকলে অনেক প্রশংসা করতাছে। এর আগে আমি টেলিভিশনে অনেক গাইছি। কিন্তু এভাবে সকলের স্বীকৃতি, এটা আগে কখনো হয় নাই। জনপ্রিয় ও বিশাল একটা মাধ্যমে আমাকে ডাকবে, এটা আমার কল্পনাতেও ছিল না। মালিকের দয়া হইছে, তাঁর দয়ার মাধ্য
১৫ জুন ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

কোক স্টুডিওতে আপনার গাওয়া গানটি দর্শক অনেক পছন্দ করেছেন। কেমন লাগছে? অনেক ভালো লাগতাছে। সকলে অনেক প্রশংসা করতাছে। এর আগে আমি টেলিভিশনে অনেক গাইছি। কিন্তু এভাবে সকলের স্বীকৃতি, এটা আগে কখনো হয় নাই। জনপ্রিয় ও বিশাল একটা মাধ্যমে আমাকে ডাকবে, এটা আমার কল্পনাতেও ছিল না। মালিকের দয়া হইছে, তাঁর দয়ার মাধ্য
১৫ জুন ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

কোক স্টুডিওতে আপনার গাওয়া গানটি দর্শক অনেক পছন্দ করেছেন। কেমন লাগছে? অনেক ভালো লাগতাছে। সকলে অনেক প্রশংসা করতাছে। এর আগে আমি টেলিভিশনে অনেক গাইছি। কিন্তু এভাবে সকলের স্বীকৃতি, এটা আগে কখনো হয় নাই। জনপ্রিয় ও বিশাল একটা মাধ্যমে আমাকে ডাকবে, এটা আমার কল্পনাতেও ছিল না। মালিকের দয়া হইছে, তাঁর দয়ার মাধ্য
১৫ জুন ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫